প্রবন্ধ
হজ্ব না করলে আল্লাহ শাস্তি দেবেন না! হেযবুত তওহীদ। পর্ব–৯০
হজ্ব আল্লাহ তাআলা কর্তৃক একটি গুরুত্বপূর্ণ হুকুম। যা অমান্য করা চরম অন্যায় ও জাহান্নামে যাওয়ার একটি পথ।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
তারা এ বিষয়টা মানতেই নারাজ যে হজ্ব না করলে জাহান্নামে যেতে হবে। দেখুন, তারা লিখেছে,
আল্লাহ কোথাও বলেন নাই যে, সালাত (নামাজ) ত্যাগ করলে বা সওম (রোজা) ত্যাগ করলে বা হজ্ব ত্যাগ করলে বা অন্য যে কোন এবাদত ত্যাগ করলে কঠিন শাস্তি দিয়ে এই দীন থেকেই বহিস্কৃত করবেন শুধু জেহাদ (সংগ্রাম) এবং আল্লাহর রাস্তায় (জেহাদে) ব্যয় ছাড়া। –ইসলামের প্রকৃত সালাহ, পৃ. ১৫
ইসলাম কী বলে?
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন,
وَ لِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا ؕ وَ مَنْ كَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ
মানুষের মধ্যে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তাদের উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্জ করা ফরয। কেউ (এটা) অস্বীকার করলে আল্লাহ তো বিশ্ব জগতের সমস্ত মানুষ হতে অমুখাপেক্ষী। –সুরা আলে ইমরান : ৯৭
উপরিউক্ত আয়াত হজ্বের বিপক্ষ শক্তিকে কাফের বলে আখ্যায়িত করেছেন মহান আল্লাহ। এজন্য উক্ত আয়াতের তাফসীরে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. মুজাহিদ রহি. সহ অনেকেই বলেন
أَيْ وَمَنْ جَحَد فَرِيضَةَ الْحَجِّ فَقَدْ كَفَرَ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি হজ্বের আবশ্যকীয়তা অস্বীকার করবে, সে কাফের। –তাফসীরে ইবনে কাসীর, খ. ১ পৃ. ৬০
আর এ আয়াতের কারণেই হাদিস শরীফে এসেছে, হযরত আলী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ مَلَكَ زَادًا وَرَاحِلَةً تُبَلِّغُهُ إِلَى بَيْتِ اللَّهِ وَلَمْ يَحُجَّ فَلَا عَلَيْهِ أَنْ يَمُوتَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا وَذَلِكَ أَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ: (وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حَجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِليهِ سَبِيلا)
যে ব্যক্তি ’বায়তুল্লাহ’ পৌঁছার পথের খরচের মালিক হয়েছে অথচ হজ্ব পালন করেনি সে ইয়াহুদী বা খ্রীস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করুক এতে কিছু যায় আসে না। আর এটা এ কারণে যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ’’মানুষের জন্য বায়তুল্লাহর হজ্ব পালন করা ফরয, যে ব্যক্তি ওখানে পৌঁছার সামর্থ্য লাভ করেছে। –জামে তিরমিযী, হাদিস নং : ৮১২
হযরত আবূ উমামাহ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنَ الْحَجِّ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ أَوْ سُلْطَانٌ جَائِرٌ أَوْ مَرَضٌ حَابِسٌ فَمَاتَ وَلَمْ يَحُجَّ فَلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَهُودِيًّا وَإِنْ شَاءَ نَصْرَانِيًّا
যে ব্যক্তি সুস্পষ্ট অভাব অথবা অত্যাচারী শাসকের বাধা, অথবা সাংঘাতিক রোগে আক্রান্ত হওয়া ছাড়া হজ্ব পালন না করে মৃত্যুপথে যাত্রা করেছে, সে যেন মৃত্যুবরণ করে ইয়াহুদী হয়ে অথবা নাসারা হয়ে। –সুনানে দারিমী, হাদিস নং : ১৮২৬
আমিরুল মুমিনিন হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন,
من أطاق الحج فلم يحج فسواء عليه مات يهوديا أو نصرانيا
যে ব্যক্তি হজ্ব করার সামর্থ্য রাখে, তবুও হজ্ব করে না , সে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খ্রীস্টান হয়ে তার কোনো পরোয়া আল্লাহ'র নেই। –তাফসীরে ইবনে কাসীর ,খ. ১ পৃ. ৫৭৮
হযরত উমার রা. আরও কঠিন ভাষায় বলেন,
لقد هممتُ أن أبعثَ رجالًا إلى هذِهِ الأمصارِ فلينظُروا كلَّ من كان له جِدَةٌ ولم يَحُجَّ فيضربوا عليهِمُ الجزيَةَ ما هم بِمسلِمينَ ما هم بِمسلِمينَ
আমার ইচ্ছে হয়, বিভিন্ন শহরে আমি লোক পাঠাই, তারা যেন দেখে সামর্থ্যবান হওয়ার পরেও কে হজ্ব করেনি, তাদের ওপর যেন তারা জিযিয়া আরোপ করে দেয়। কারণ, তারা মুসলিম নয়, তারা মুসলিম নয়। –দুররে মানসুর, খ. ৩ পৃ. ৬৯৩
এরপরও যারা হজ্বের ব্যাপারে এমন মন্তব্য করে ‘হজ্ব না করলে কী আল্লাহ শাস্তি দেবেন না’ তারা নিঃসন্দেহে ইসলামের ঘোর শত্রু।
মন্তব্য (...)
এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ
قضية الخلق وسقوط نظرية دارون
...
সত্য ইমাম মাহদী ও ভণ্ড ইমাম মাহদী [১ম পর্ব]
...
খ্রিস্টানদের মহাসভা : খ্রিস্টধর্ম বিকৃতির এক প্রকৃষ্ট প্রমাণ
ভূমিকা প্রচলিত খ্রিস্টবাদ বিকৃত ধর্ম হওয়া একটি সাধারণ বাস্তবতা। তেমনি বাইবেল বা প্রচলিত ‘ইঞ্জিল শরীফ...
تحریک استشراق کی حقیقت اور استشراقی لٹریچر کے اثرات
تعارف: استشراق( Orientalism ) اور مستشرق کا لغوی و اصطلاحی معنی استشراق عربی زبان کے مادہ( ش۔ر۔ق) سے...

মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন