আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
২০- যাকাতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২ টি
হাদীস নং: ১৩৭৬
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৬১
- যাকাতের অধ্যায়
৯২৬. নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেওয়া। নবী (ﷺ) বলেনঃ এরূপ দাতার দ্বিগুণ সাওয়াব। আত্মীয়কে দান করার সাওয়াব এবং যাকাত দেওয়ার সাওয়াব।
১৩৭৬। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদীনার আনসারীগণের মধ্যে আবু তালহা (রাযিঃ) সব চাইতে অধিক খেজুর বাগানের মালিক ছিলেন। মসজিদে নববীর নিকটবর্তী বায়রুহা নামক বাগানটি তাঁর কাছে অধিক প্রিয় ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর বাগানে প্রবেশ করে এর সুপেয় পানি পান করতেন। আনাস (রাযিঃ) বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলঃ তোমরা যা ভালোবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পূণ্য লাভ করবে না (৩৮ঃ ৯২) তখন আবু তালহা (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে গিয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ বলেছেনঃ তোমরা যা ভালোবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পূণ্য লাভ করবেনা। আর বায়রুহা বাগানটি আমার কাছে অধিক প্রিয়। এটি আল্লাহর নামে সাদ্কা করা হল, আমি এর কল্যাণ কামনা করি এবং তা আল্লাহর নিকট আমার সঞ্চয়রূপে থাকবে। কাজেই আপনি যাকে দান করা ভাল মনে করেন তাকে দান করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমাকে ধন্যবাদ! এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ, এ হচ্ছে লাভজনক সম্পদ। তুমি যা বলেছ তা শুনলাম। আমি মনে করি তোমার আপনজনদের মধ্যে তা বন্টন করে দাও। আবু তালহা (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তাই করব। তারপর তিনি তাঁর আত্মীয়-স্বজন, আপন চাচার বংশধরের মধ্যে তা বন্টন করে দিলেন।
রাবী রাওহ (রাহঃ) رَابِحٌ শব্দে আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। আর রাবী ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ও ইসমা‘ঈল (রাহঃ) মালিক (রাহঃ) থেকে رَايِحٌ শব্দ বলেছেন।
রাবী রাওহ (রাহঃ) رَابِحٌ শব্দে আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। আর রাবী ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ও ইসমা‘ঈল (রাহঃ) মালিক (রাহঃ) থেকে رَايِحٌ শব্দ বলেছেন।
كتاب الزكاة
بَابُ الزَّكَاةِ عَلَى الأَقَارِبِ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَهُ أَجْرَانِ أَجْرُ القَرَابَةِ وَالصَّدَقَةِ»
1461 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّهُ [ص:120] سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: كَانَ أَبُو طَلْحَةَ أَكْثَرَ الأَنْصَارِ بِالْمَدِينَةِ مَالًا مِنْ نَخْلٍ، وَكَانَ أَحَبُّ أَمْوَالِهِ إِلَيْهِ بَيْرُحَاءَ، وَكَانَتْ مُسْتَقْبِلَةَ المَسْجِدِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْخُلُهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَاءٍ فِيهَا طَيِّبٍ، قَالَ أَنَسٌ: فَلَمَّا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {لَنْ تَنَالُوا البِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ} [آل عمران: 92] قَامَ أَبُو طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ: {لَنْ تَنَالُوا البِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ} [آل عمران: 92] وَإِنَّ أَحَبَّ أَمْوَالِي إِلَيَّ بَيْرُحَاءَ، وَإِنَّهَا صَدَقَةٌ لِلَّهِ، أَرْجُو بِرَّهَا وَذُخْرَهَا عِنْدَ اللَّهِ، فَضَعْهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ حَيْثُ أَرَاكَ اللَّهُ، قَالَ: فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَخٍ، ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ، ذَلِكَ مَالٌ رَابِحٌ، وَقَدْ سَمِعْتُ مَا قُلْتَ، وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَجْعَلَهَا فِي الأَقْرَبِينَ» فَقَالَ أَبُو طَلْحَةَ: أَفْعَلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَسَمَهَا أَبُو طَلْحَةَ فِي أَقَارِبِهِ وَبَنِي عَمِّهِ، تَابَعَهُ رَوْحٌ، وَقَالَ يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَإِسْمَاعِيلُ: عَنْ مَالِكٍ «رَايِحٌ»
হাদীস নং: ১৩৭৭
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৬২
- যাকাতের অধ্যায়
৯২৬. নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেওয়া।
১৩৭৭। ইবনে আবু মারয়াম (রাহঃ) ......... আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিতরের দিনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঈদগাহে গেলেন এবং নামায শেষ করলেন। পরে লোকদের উপদেশ দিলেন এবং তাদের সাদ্কা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন আর বললেনঃ লোক সকল! তোমরা সাদ্কা দিবে। তারপর মহিলাগণের নিকট গিয়ে বললেনঃ মহিলাগণ তোমরা সাদ্কা দাও। আমাকে জাহান্নামে তোমাদেরকে অধিক সংখ্যক দেখানো হয়েছে। তারা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এর কারণ কি? তিনি বললেনঃ তোমরা বেশী অভিশাপ দিয়ে থাক এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞ হয়ে থাক। হে মহিলাগণ! জ্ঞান ও দ্বীনে অপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও দৃঢ়চেতা পুরুষের বুদ্ধি হরণকারিণী তোমাদের মত কাউকে দেখিনি।
যখন তিনি ফিরে এসে ঘরে পৌঁছলেন, তখন ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) এর স্ত্রী যায়নাব (রাযিঃ) তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যায়নাব এসেছেন। তিনি বললেন, কোন যায়নাব? বলা হল, ইবনে মাসউদের স্ত্রী। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাকে আসতে দাও। তাকে অনুমতি দেওয়া হল। তিনি বললেন, ইয়া নবীয়াল্লাহ! আজ আপনি সাদ্কা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার অলংকার আছে। আমি তা সাদ্কা করব ইচ্ছা করেছি। ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) মনে করেন, আমার এ সাদ্কায় তাঁর এবং তাঁর সন্তানদেরই হক বেশী। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) ঠিক বলেছে। তোমার স্বামী ও সন্তানই তোমার এ সাদ্কায় অধিক হকদার।*
*এখানে সাদ্কা বলতে যাকাত উদ্দেশ্য নয়; বরং এখানে অনুদান উদ্দেশ্য । সাদ্কা বা যাকাত আপন সন্তান ও স্বামীকে দেয়া জায়েয নয়। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মালিক (রাহঃ) এ অভিমত পোষণ করেন।
যখন তিনি ফিরে এসে ঘরে পৌঁছলেন, তখন ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) এর স্ত্রী যায়নাব (রাযিঃ) তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যায়নাব এসেছেন। তিনি বললেন, কোন যায়নাব? বলা হল, ইবনে মাসউদের স্ত্রী। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাকে আসতে দাও। তাকে অনুমতি দেওয়া হল। তিনি বললেন, ইয়া নবীয়াল্লাহ! আজ আপনি সাদ্কা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার অলংকার আছে। আমি তা সাদ্কা করব ইচ্ছা করেছি। ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) মনে করেন, আমার এ সাদ্কায় তাঁর এবং তাঁর সন্তানদেরই হক বেশী। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) ঠিক বলেছে। তোমার স্বামী ও সন্তানই তোমার এ সাদ্কায় অধিক হকদার।*
*এখানে সাদ্কা বলতে যাকাত উদ্দেশ্য নয়; বরং এখানে অনুদান উদ্দেশ্য । সাদ্কা বা যাকাত আপন সন্তান ও স্বামীকে দেয়া জায়েয নয়। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মালিক (রাহঃ) এ অভিমত পোষণ করেন।
كتاب الزكاة
باب الزَّكَاةِ عَلَى الأَقَارِبِ
1462 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي زَيْدٌ هُوَ ابْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَضْحًى أَوْ فِطْرٍ إِلَى المُصَلَّى، ثُمَّ انْصَرَفَ، فَوَعَظَ النَّاسَ، وَأَمَرَهُمْ بِالصَّدَقَةِ، فَقَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ، تَصَدَّقُوا» ، فَمَرَّ عَلَى النِّسَاءِ، فَقَالَ: «يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ، تَصَدَّقْنَ، فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ» فَقُلْنَ: وَبِمَ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ، وَتَكْفُرْنَ العَشِيرَ، مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ، أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الحَازِمِ، مِنْ إِحْدَاكُنَّ، يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ» ثُمَّ انْصَرَفَ، فَلَمَّا صَارَ إِلَى مَنْزِلِهِ، جَاءَتْ زَيْنَبُ، امْرَأَةُ ابْنِ مَسْعُودٍ، تَسْتَأْذِنُ عَلَيْهِ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذِهِ زَيْنَبُ، فَقَالَ: «أَيُّ الزَّيَانِبِ؟» فَقِيلَ: امْرَأَةُ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: «نَعَمْ، ائْذَنُوا لَهَا» فَأُذِنَ لَهَا، قَالَتْ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ، إِنَّكَ أَمَرْتَ اليَوْمَ بِالصَّدَقَةِ، وَكَانَ عِنْدِي حُلِيٌّ لِي، فَأَرَدْتُ أَنْ أَتَصَدَّقَ بِهِ، فَزَعَمَ ابْنُ مَسْعُودٍ: أَنَّهُ وَوَلَدَهُ أَحَقُّ مَنْ تَصَدَّقْتُ بِهِ عَلَيْهِمْ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَدَقَ ابْنُ مَسْعُودٍ، زَوْجُكِ وَوَلَدُكِ أَحَقُّ مَنْ تَصَدَّقْتِ بِهِ عَلَيْهِمْ»