আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৩- সন্ধি - আপোষরফা সংক্রান্ত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ২৫১১
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৯০
- সন্ধি - আপোষরফা সংক্রান্ত অধ্যায়
১৬৭৩. মানুষের মধ্যে আপোষ মিমাংসা করে দেওয়া। মহান আল্লাহর বাণীঃ তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই। তবে কল্যাণ আছে যে খয়রাত, সৎকার্য ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের নির্দেশ দেয় তার পরামর্শে ... শেষ পর্যন্ত। (৪ঃ ১১৪) মানুষের মধ্যে আপোষ করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সঙ্গীদের নিয়ে ইমামের স্থানে যাওয়া।
২৫১১। সাঈদ ইবনে আবি মারয়াম (রাহঃ) .... সাহ্‌ল ইবনে সা‘দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমর ইবনে আওফ গোত্রের কিছু লোকের মধ্যে সামান্য বিবাদ ছিল। তাই নবী (ﷺ) সাহাবীগণের একটি জামাআত নিয়ে তাদের মধ্যে আপোষ-মিমাংশা করে দেওয়ার জন্য সেখানে গেলেন। এদিকে নামাযের সময় হয়ে গেল। কিন্তু নবী (ﷺ) মসজিদে নববীতে এসে পৌছেননি। বিলাল (রাযিঃ) নামাযের আযান দিলেন, কিন্তু নবী (ﷺ) তখনও এসে পৌছেননি। পরে বিলাল (রাযিঃ) আবু বকর (রাযিঃ)-এর কাছে এসে বললেন, নবী (ﷺ) কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে নামাযেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি কি লোকদের নিয়ে নামায আদায় করবেন (ইমামত করবেন)? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি ইচ্ছা কর।’
তারপর বিলাল (রাযিঃ) নামাযের ইকামত বললেন, আর আবু বকর (রাযিঃ) এগিয়ে গেলেন। পরে নবী (ﷺ) এলেন এবং কাতারগুলো অতিক্রম করে প্রথম কাতারে এসে দাঁড়ালেন। (তা দেখে) লোকেরা হাততালি দিতে শুরু করল এবং তা অধিক মাত্রায় দিতে লাগলেন। আবু বকর (রাযিঃ) নামায অবস্থায় কোন দিকে তাকাতেন না, কিন্তু (হাততালির কারণে) তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, নবী (ﷺ) তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছেন। নবী (ﷺ) তাঁকে হাতের ইশারায় আগের ন্যায় নামায আদায় করতে নির্দেশ দিলেন। আবু বকর (রাযিঃ) তাঁর দু’হাত উপরে তুলে আল্লাহর হামদ বর্ণনা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পেছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন।
তখন নবী (ﷺ) আগে বেড়ে লোকদের ইমামত করলেন এবং নামায শেষ করে লোকদের দিকে ফিরে বললেন, ‘হে লোক সকল! নামায অবস্থায় তোমাদের কিছু ঘটলে তোমরা হাততালি দিতে শুরু কর। অথচ হাততালি দেয়া মহিলাদের কাজ। নামায অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন সুব্হা‌নাল্লাহ সুব্হা‌নাল্লাহ বলে। কেননা এটা শুনলে কেউ তার দিকে দৃষ্টিপাত না করে পারতো না। ‘হে আবু বকর! তোমাকে যখন ইশারা করলাম, তখন নামায আদায় করাতে তোমার কিসের বাধা ছিল?’ তিনি বললেন, আবু কূহাফার পুত্রের জন্য শোভা পায় না নবী (ﷺ) এর সামনে ইমামত করা।
كتاب الصلح
باب مَا جَاءَ فِي الإِصْلاَحِ بَيْنَ النَّاسِ وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {لاَ خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلاَّ مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلاَحٍ بَيْنَ النَّاسِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا} وَخُرُوجِ الإِمَامِ إِلَى الْمَوَاضِعِ لِيُصْلِحَ بَيْنَ النَّاسِ بِأَصْحَابِهِ
2690 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ أُنَاسًا مِنْ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ كَانَ بَيْنَهُمْ شَيْءٌ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ يُصْلِحُ بَيْنَهُمْ، فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ، وَلَمْ يَأْتِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:183]، فَجَاءَ بِلاَلٌ، فَأَذَّنَ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ، وَلَمْ يَأْتِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ، فَقَالَ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُبِسَ وَقَدْ حَضَرَتِ الصَّلاَةُ، فَهَلْ لَكَ أَنْ تَؤُمَّ النَّاسَ؟ فَقَالَ: نَعَمْ، إِنْ شِئْتَ، فَأَقَامَ الصَّلاَةَ فَتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ، ثُمَّ جَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَمْشِي فِي الصُّفُوفِ حَتَّى قَامَ فِي الصَّفِّ الأَوَّلِ، فَأَخَذَ النَّاسُ بِالتَّصْفِيحِ حَتَّى أَكْثَرُوا، وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ لاَ يَكَادُ يَلْتَفِتُ فِي الصَّلاَةِ، فَالْتَفَتَ فَإِذَا هُوَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَاءَهُ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ بِيَدِهِ فَأَمَرَهُ أَنْ يُصَلِّيَ كَمَا هُوَ، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ يَدَهُ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ رَجَعَ القَهْقَرَى وَرَاءَهُ حَتَّى دَخَلَ فِي الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى بِالنَّاسِ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِذَا نَابَكُمْ شَيْءٌ فِي صَلاَتِكُمْ أَخَذْتُمْ بِالتَّصْفِيحِ، إِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلاَتِهِ، فَلْيَقُلْ: سُبْحَانَ اللَّهِ، فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُهُ أَحَدٌ إِلَّا التَفَتَ، يَا أَبَا بَكْرٍ، مَا مَنَعَكَ حِينَ أَشَرْتُ إِلَيْكَ لَمْ تُصَلِّ بِالنَّاسِ "، فَقَالَ: مَا كَانَ يَنْبَغِي لِابْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَيِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ২৫১২
আন্তর্জাতিক নং: ২৬৯১
- সন্ধি - আপোষরফা সংক্রান্ত অধ্যায়
১৬৭৩. মানুষের মধ্যে আপোষ মিমাংসা করে দেওয়া।
২৫১২। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) কে বলা হল, আপনি যদি আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কাছে একটু যেতেন (তবে ভালো হতো)। নবী (ﷺ) তার কাছে যাওয়ার জন্য গাধায় আরোহণ করলেন এবং মুসলিমগণ তাঁর সঙ্গে হেটে চললো। আর সে পথ ছিল কংকরময়। নবী (ﷺ) তাঁর কাছে এসে পৌছলে সে বলল, ‘সরো আমার সম্মুখ থেকে। তোমার গাধার দুর্গন্ধ আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।’
তাঁদের মধ্য থেকে একজন আনসারী বললোঃ আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর গাধার সুগন্ধ তোমার চাইতে উত্তম। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর গোত্রের এক ব্যক্তি রেগে উঠল এবং উভয়ে একে অপরকে গালাগালি করলো। এভাবে উভয়ের পক্ষের সঙ্গীরা ক্রুদ্ধ হয়ে উঠল এবং উভয় দলের মধ্যে লাঠালাঠি, হাতাহাতি ও জুতা মারামারি হল। আমাদের জানানো হয়েছে যে, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হলঃ ‏(‏وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا‏) অর্থঃ মুমিনদের দু’দল দ্বন্ধে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। (৪৯ঃ ৯)
আবু আব্দুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রাহঃ) বলেন, ‘মুসাদ্দাদ (রাহঃ) বসার এবং হাদীস বর্ণনার পূর্বে আমি তার থেকে এ হাদীস হাসিল করেছি।
كتاب الصلح
باب مَا جَاءَ فِي الإِصْلاَحِ بَيْنَ النَّاسِ
2691 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبِي، أَنَّ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قِيلَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْ أَتَيْتَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَيٍّ، «فَانْطَلَقَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَكِبَ حِمَارًا، فَانْطَلَقَ المُسْلِمُونَ يَمْشُونَ مَعَهُ وَهِيَ أَرْضٌ سَبِخَةٌ» ، فَلَمَّا أَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: إِلَيْكَ عَنِّي، وَاللَّهِ لَقَدْ آذَانِي نَتْنُ حِمَارِكَ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ مِنْهُمْ: وَاللَّهِ لَحِمَارُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَطْيَبُ رِيحًا مِنْكَ، فَغَضِبَ لِعَبْدِ اللَّهِ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ، فَشَتَمَهُ، فَغَضِبَ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَصْحَابُهُ، فَكَانَ بَيْنَهُمَا ضَرْبٌ بِالْجَرِيدِ وَالأَيْدِي وَالنِّعَالِ، فَبَلَغَنَا أَنَّهَا أُنْزِلَتْ: {وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ المُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا} [الحجرات: 9] قَالَ أَبُو عَبْدِ اللهِ هَذَا مِمَّا انْتَخَبْتُ مِنْ مُسَدَّدٍ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ وَيُحَدِّثَ