আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
হাদীস নং: ৩৮৮১
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৯৫
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮১। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... সুওয়াইদ ইবনে নু‘মান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি (সুওয়াইদ ইবনে নু‘মান) খায়বারের বছর নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বার অভিযানে বেরিয়েছিলেন। [সুওয়াইদ ইবনে নু‘মান (রাযিঃ) বলেন] যখন আমরা খায়বারের ঢালু এলাকার ‘সাহবা’ নামক স্থানে পৌঁছলাম, তখন নবী কারীম (ﷺ) আসরের নামায আদায় করলেন। তারপর সাথে করে আনা খাবার পরিবেশন করতে হুকুম দিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত আর কিছুই দেওয়া সম্ভব হল না। তাই তিনি ছাতুগুলোকে গুলতে বললেন। ছাতুগুলোকে গুলানো হল। এরপর (তা থেকে) তিনিও খেলেন, আমরাও খেলাম। তারপর তিনি মাগরিবের নামাযের জন্য উঠে পড়লেন এবং কুলি করলেন। আমরাও কুলি করলাম। তারপর তিনি নতুন ওযু না করেই নামায আদায় করলেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4195 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّ سُوَيْدَ بْنَ النُّعْمَانِ، أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ خَيْبَرَ، حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالصَّهْبَاءِ، وَهِيَ مِنْ أَدْنَى خَيْبَرَ، «صَلَّى العَصْرَ، ثُمَّ دَعَا بِالأَزْوَادِ فَلَمْ يُؤْتَ إِلَّا بِالسَّوِيقِ، فَأَمَرَ بِهِ فَثُرِّيَ، فَأَكَلَ وَأَكَلْنَا، ثُمَّ قَامَ إِلَى المَغْرِبِ، فَمَضْمَضَ وَمَضْمَضْنَا، ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৩৮৮২
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৯৬
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮২। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... সালামা ইবনে আকওয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বার অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলা পথ অতিক্রম করছিলাম, এমন সময় কাফেলার জনৈক ব্যক্তি আমির (রাযিঃ)- কে লক্ষ্য করে বলল, হে আমির! তোমার সমর সঙ্গীত থেকে আমাদেরকে কিছু শোনাবে কি? আমির (রাযিঃ) ছিলেন একজন কবি। তখন তিনি সওয়ারী থেকে নেমে গেলেন এবং সঙ্গীতের তালে তালে গোটা কাফেলা হাঁকিয়ে চললেন।
সঙ্গীতে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনার তাওফীক না হলে আমরা হেদায়েত লাভ করতাম না, সাদ্কা দিতাম না আর নামায আদায় করতাম না। তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন। যতদিন আমরা বেঁচে থাকব ততদিন আপনার জন্য সমর্পিত-প্রাণ হয়ে থাকব। আর আমরা যখন শত্রুর মুকাবিলায় যাব তখন আপনি আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন এবং আমাদের উপর ‘সাকিনা’ (শান্তি) বর্ষণ করুন। আমাদেরকে যখন (কুফরের দিকে) সজোরে আওয়াজে ডাকা হয় আমরা তখন তা প্রত্যাখ্যান করি। আর এ কারণে তারা চিৎকার দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লোক-লস্কর জমা করে।
(কবিতাগুলো শুনে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এ সঙ্গীতের গায়ক কে? তাঁরা বললেন, আমির ইবনুল আকওয়া। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। কাফেলার একজন বললোঃ হে আল্লাহর নবী! তার জন্য (শাহাদাত) নিশ্চিত হয়ে গেলো। (আহ) আমাদেরকে যদি তার কাছ থেকে আরো উপকার হাসিল করার সুযোগ দিতেন। এরপর আমরা এসে খায়বার পৌঁছলাম এবং তাদেরকে অবরোধ করলাম। অবশেষে এক পর্যায়ে আমাদেরকে কঠিন ক্ষুধার জ্বালাও বরণ করতে হল।
কিন্তু পরেই মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করলেন। বিজয়ের দিন সন্ধ্যায় মুসলমানগণ (রান্নাবান্নার জন্য) অনেক আগুন জ্বালালেন। (তা দেখে) নবী কারীম (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ সব কিসের আগুন? তোমরা কি পাকাচ্ছ? তারা জানালেন, গোশত পাকাচ্ছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কিসের গোশত? লোকজন উত্তর করলেন, গৃহপালিত গাধার গোশত। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এগুলি ঢেলে দাও এবং ডেকচি গুলো ভেঙ্গে ফেল। একজন বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! গোশতগুলো ঢেলে দিয়ে যদি পাত্রগুলো ধুয়ে নেই তাতে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেন, তাও করতে পারো।
এরপর যখন সবাই যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন, আর আমির ইবনুল আকওয়া (রাযিঃ)-এর তরবারিখানা ছিলো খাটো, তা দিয়ে তিনি জনৈক ইয়াহুদীর পায়ের গোছায় আঘাত করলে তরবারীর তীক্ষ্ম ভাগ ঘুরে গিয়ে তাঁর নিজের হাঁটুতে লেগে পড়ে। তিনি এ আঘাতের কারণে মারা যান। সালামা ইবনুল আকওয়া (রাযিঃ) বলেনঃ তারপর সব লোক খায়বার থেকে প্রত্যাবর্তন শুরু করলে এক সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বললেন, কি খবর?
আমি বললামঃ আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক! লোকজন ধারণা করেছে যে, (স্বীয় হস্তের আঘাতে মারা যাওয়ার কারণে) আমির (রাযিঃ)- এর আমল বাতিল হয়ে গিয়েছে। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এ কথা যে বলেছে সে ভুল বলেছে। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর দুটি আঙ্গুল একত্রিত করে সেদিকে ইঙ্গিত করে বললেন, বরং আমিরের রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। অবশ্যই সে একজন কর্মতৎপর ব্যক্তি এবং আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ। তাঁর মত গুণসম্পন্ন আরবী খুব কমই আছে।
সঙ্গীতে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনার তাওফীক না হলে আমরা হেদায়েত লাভ করতাম না, সাদ্কা দিতাম না আর নামায আদায় করতাম না। তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন। যতদিন আমরা বেঁচে থাকব ততদিন আপনার জন্য সমর্পিত-প্রাণ হয়ে থাকব। আর আমরা যখন শত্রুর মুকাবিলায় যাব তখন আপনি আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন এবং আমাদের উপর ‘সাকিনা’ (শান্তি) বর্ষণ করুন। আমাদেরকে যখন (কুফরের দিকে) সজোরে আওয়াজে ডাকা হয় আমরা তখন তা প্রত্যাখ্যান করি। আর এ কারণে তারা চিৎকার দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লোক-লস্কর জমা করে।
(কবিতাগুলো শুনে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এ সঙ্গীতের গায়ক কে? তাঁরা বললেন, আমির ইবনুল আকওয়া। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। কাফেলার একজন বললোঃ হে আল্লাহর নবী! তার জন্য (শাহাদাত) নিশ্চিত হয়ে গেলো। (আহ) আমাদেরকে যদি তার কাছ থেকে আরো উপকার হাসিল করার সুযোগ দিতেন। এরপর আমরা এসে খায়বার পৌঁছলাম এবং তাদেরকে অবরোধ করলাম। অবশেষে এক পর্যায়ে আমাদেরকে কঠিন ক্ষুধার জ্বালাও বরণ করতে হল।
কিন্তু পরেই মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করলেন। বিজয়ের দিন সন্ধ্যায় মুসলমানগণ (রান্নাবান্নার জন্য) অনেক আগুন জ্বালালেন। (তা দেখে) নবী কারীম (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ সব কিসের আগুন? তোমরা কি পাকাচ্ছ? তারা জানালেন, গোশত পাকাচ্ছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কিসের গোশত? লোকজন উত্তর করলেন, গৃহপালিত গাধার গোশত। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এগুলি ঢেলে দাও এবং ডেকচি গুলো ভেঙ্গে ফেল। একজন বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! গোশতগুলো ঢেলে দিয়ে যদি পাত্রগুলো ধুয়ে নেই তাতে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেন, তাও করতে পারো।
এরপর যখন সবাই যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন, আর আমির ইবনুল আকওয়া (রাযিঃ)-এর তরবারিখানা ছিলো খাটো, তা দিয়ে তিনি জনৈক ইয়াহুদীর পায়ের গোছায় আঘাত করলে তরবারীর তীক্ষ্ম ভাগ ঘুরে গিয়ে তাঁর নিজের হাঁটুতে লেগে পড়ে। তিনি এ আঘাতের কারণে মারা যান। সালামা ইবনুল আকওয়া (রাযিঃ) বলেনঃ তারপর সব লোক খায়বার থেকে প্রত্যাবর্তন শুরু করলে এক সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বললেন, কি খবর?
আমি বললামঃ আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক! লোকজন ধারণা করেছে যে, (স্বীয় হস্তের আঘাতে মারা যাওয়ার কারণে) আমির (রাযিঃ)- এর আমল বাতিল হয়ে গিয়েছে। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এ কথা যে বলেছে সে ভুল বলেছে। নবী কারীম (ﷺ) তাঁর দুটি আঙ্গুল একত্রিত করে সেদিকে ইঙ্গিত করে বললেন, বরং আমিরের রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। অবশ্যই সে একজন কর্মতৎপর ব্যক্তি এবং আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ। তাঁর মত গুণসম্পন্ন আরবী খুব কমই আছে।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4196 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى خَيْبَرَ، فَسِرْنَا لَيْلًا، فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ لِعَامِرٍ: يَا عَامِرُ أَلاَ تُسْمِعُنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ؟ وَكَانَ عَامِرٌ رَجُلًا شَاعِرًا، فَنَزَلَ يَحْدُو بِالقَوْمِ يَقُولُ:
[البحر الرجز]
اللَّهُمَّ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا ... وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا
[ص:131]
فَاغْفِرْ فِدَاءً لَكَ مَا أَبْقَيْنَا ... وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا
وَأَلْقِيَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا ... إِنَّا إِذَا صِيحَ بِنَا أَبَيْنَا
وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ هَذَا السَّائِقُ» ، قَالُوا: عَامِرُ بْنُ الأَكْوَعِ، قَالَ: «يَرْحَمُهُ اللَّهُ» قَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: وَجَبَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، لَوْلاَ أَمْتَعْتَنَا بِهِ؟ فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَاصَرْنَاهُمْ حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيدَةٌ، ثُمَّ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى فَتَحَهَا عَلَيْهِمْ، فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ مَسَاءَ اليَوْمِ الَّذِي فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ، أَوْقَدُوا نِيرَانًا كَثِيرَةً، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا هَذِهِ النِّيرَانُ عَلَى أَيِّ شَيْءٍ تُوقِدُونَ؟» قَالُوا: عَلَى لَحْمٍ، قَالَ: «عَلَى أَيِّ لَحْمٍ؟» قَالُوا: لَحْمِ حُمُرِ الإِنْسِيَّةِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَهْرِيقُوهَا وَاكْسِرُوهَا» ، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَوْ نُهَرِيقُهَا وَنَغْسِلُهَا؟ قَالَ: «أَوْ ذَاكَ» . فَلَمَّا تَصَافَّ القَوْمُ كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ قَصِيرًا، فَتَنَاوَلَ بِهِ سَاقَ يَهُودِيٍّ لِيَضْرِبَهُ، وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ، فَأَصَابَ عَيْنَ رُكْبَةِ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ، قَالَ: فَلَمَّا قَفَلُوا قَالَ سَلَمَةُ: رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِي، قَالَ: «مَا لَكَ» قُلْتُ لَهُ: فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي، زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ؟ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَذَبَ مَنْ قَالَهُ، إِنَّ لَهُ لَأَجْرَيْنِ - وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ - إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ، قَلَّ عَرَبِيٌّ مَشَى بِهَا مِثْلَهُ» ، حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ قَالَ: «نَشَأَ بِهَا»
[البحر الرجز]
اللَّهُمَّ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا ... وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا
[ص:131]
فَاغْفِرْ فِدَاءً لَكَ مَا أَبْقَيْنَا ... وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا
وَأَلْقِيَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا ... إِنَّا إِذَا صِيحَ بِنَا أَبَيْنَا
وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ هَذَا السَّائِقُ» ، قَالُوا: عَامِرُ بْنُ الأَكْوَعِ، قَالَ: «يَرْحَمُهُ اللَّهُ» قَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: وَجَبَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، لَوْلاَ أَمْتَعْتَنَا بِهِ؟ فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَاصَرْنَاهُمْ حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيدَةٌ، ثُمَّ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى فَتَحَهَا عَلَيْهِمْ، فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ مَسَاءَ اليَوْمِ الَّذِي فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ، أَوْقَدُوا نِيرَانًا كَثِيرَةً، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا هَذِهِ النِّيرَانُ عَلَى أَيِّ شَيْءٍ تُوقِدُونَ؟» قَالُوا: عَلَى لَحْمٍ، قَالَ: «عَلَى أَيِّ لَحْمٍ؟» قَالُوا: لَحْمِ حُمُرِ الإِنْسِيَّةِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَهْرِيقُوهَا وَاكْسِرُوهَا» ، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَوْ نُهَرِيقُهَا وَنَغْسِلُهَا؟ قَالَ: «أَوْ ذَاكَ» . فَلَمَّا تَصَافَّ القَوْمُ كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ قَصِيرًا، فَتَنَاوَلَ بِهِ سَاقَ يَهُودِيٍّ لِيَضْرِبَهُ، وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ، فَأَصَابَ عَيْنَ رُكْبَةِ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ، قَالَ: فَلَمَّا قَفَلُوا قَالَ سَلَمَةُ: رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِي، قَالَ: «مَا لَكَ» قُلْتُ لَهُ: فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي، زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ؟ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَذَبَ مَنْ قَالَهُ، إِنَّ لَهُ لَأَجْرَيْنِ - وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ - إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ، قَلَّ عَرَبِيٌّ مَشَى بِهَا مِثْلَهُ» ، حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ قَالَ: «نَشَأَ بِهَا»
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৩৮৮৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৯৭
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৩। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রাত্রিতে খায়বারে পৌঁছলেন। আর তাঁর নিয়ম ছিল, তিনি যদি (কোনো অভিযানে) কোন গোত্রের এলাকায় রাত্রিকালে গিয়ে পৌঁছতেন, তা হলে ভোর না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর আক্রমণ পরিচালনা করতেন না (বরং অপেক্ষা করতেন)। ভোর হলে ইয়াহুদীরা তাদের কৃষি সরঞ্জামাদি ও টুকরি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলো, আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে যখন (সসৈন্য) দেখতে পেলো, তখন তারা (ভীত হয়ে) বলতে লাগলো, মুহাম্মাদ, আল্লাহর কসম, মুহাম্মাদ তার সেনাদলসহ এসে পড়েছে। তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যখনই কোনো গোত্রের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছি তখন সেই সতর্ককৃত গোত্রের রাত পোহায় অশুভভাবে।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4197 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَى خَيْبَرَ لَيْلًا، وَكَانَ إِذَا أَتَى قَوْمًا بِلَيْلٍ لَمْ يُغِرْ بِهِمْ حَتَّى يُصْبِحَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ خَرَجَتِ اليَهُودُ بِمَسَاحِيهِمْ، وَمَكَاتِلِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوا: مُحَمَّدٌ وَاللَّهِ، مُحَمَّدٌ وَالخَمِيسُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " خَرِبَتْ خَيْبَرُ، إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ {فَسَاءَ صَبَاحُ المُنْذَرِينَ} [الصافات: 177] "
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৯৮
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৪। সাদ্কা ইবনে ফযল (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা প্রত্যূষে খায়বার এলাকায় গিয়ে পৌঁছলাম। তখন সেখানকার অধিবাসীরা কৃষি সরঞ্জামাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। তারা যখন নবী কারীম (ﷺ)- কে দেখতে পেলো তখন বলতে শুরু করল মুহাম্মাদ, আল্লাহর কসম, মুহাম্মাদ তার সেনাদলসহ এসে পড়েছে। নবী কারীম (ﷺ) (এ কথা শুনে) আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে বললেন, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যখনই কোনো গোত্রের এলাকায় গিয়ে পৌঁছি, তখন সেই সতর্ককৃত গোত্রের রাত পোহায় অশুভভাবে। [আনাস (রাযিঃ) বলেন] এ যুদ্ধে আমরা (গনীমত হিসেবে) গাধার গোশত লাভ করেছিলাম। (আর তা পাকানোও হচ্ছিল)। এমন সময়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর পক্ষ থেকে জনৈক ঘোষণাকারী ঘোষণা করলেন, আল্লাহ ও তার রাসূল (ﷺ) তোমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা তা নাপাক।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4198 - أَخْبَرَنَا صَدَقَةُ بْنُ الفَضْلِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَبَّحْنَا خَيْبَرَ بُكْرَةً، فَخَرَجَ أَهْلُهَا بِالْمَسَاحِي، فَلَمَّا بَصُرُوا بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا: مُحَمَّدٌ وَاللَّهِ، مُحَمَّدٌ وَالخَمِيسُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " اللَّهُ أَكْبَرُ، خَرِبَتْ خَيْبَرُ، إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ {فَسَاءَ صَبَاحُ المُنْذَرِينَ} [الصافات: 177] " فَأَصَبْنَا مِنْ لُحُومِ الحُمُرِ، فَنَادَى مُنَادِي النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يَنْهَيَانِكُمْ عَنْ لُحُومِ الحُمُرِ، فَإِنَّهَا رِجْسٌ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৯৯
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৫। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে একজন আগন্তুক এসে বললো, (গনীমতের) গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চুপ রইলেন। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসে বলল, গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখনোও চুপ থাকলেন। লোকটি তৃতীয়বার এসে বলল, গৃহপালিত গাধাগুলো খতম করে দেয়া হচ্ছে। তখন তিনি একজন ঘোষণাকারীকে হুকুম দিলেন, সে লোকজনের সামনে গিয়ে ঘোষণা দিলো, আল্লাহ এবং তার রাসূল (ﷺ) তোমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। (ঘোষণা শুনে) ডেকচিগুলো উল্টিয়ে দেয়া হল। অথচ ডেকচিগুলোতে গাধার গোশত তখন টগবগ করে ফুটছিল।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4199 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَهُ جَاءٍ، فَقَالَ: أُكِلَتِ الحُمُرُ، فَسَكَتَ، ثُمَّ أَتَاهُ الثَّانِيَةَ [ص:132]، فَقَالَ: أُكِلَتِ الحُمُرُ، فَسَكَتَ، ثُمَّ أَتَاهُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ: أُفْنِيَتِ الحُمُرُ، فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى فِي النَّاسِ: «إِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يَنْهَيَانِكُمْ عَنْ لُحُومِ الحُمُرِ الأَهْلِيَّةِ» . فَأُكْفِئَتِ القُدُورُ وَإِنَّهَا لَتَفُورُ بِاللَّحْمِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০০
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৬। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) খায়বারের নিকটবর্তী এক স্থানে প্রত্যুষে সামান্য অন্ধকার থাকতেই ফজরের নামায আদায় করলেন। তারপর আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে বললেন, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যখনই কোনো গোত্রের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছি তখনই সতর্ককৃত সেই গোত্রের সকাল হয় অশুভ রূপ নিয়ে। এ সময়ে খায়বার অধিবাসীরা (ভয়ে) বিভিন্ন অলি-গলিতে গিয়ে আশ্রয় নিতে আরম্ভ করল। নবী কারীম (ﷺ) তাদের মধ্যেকার যুদ্ধে সক্ষম লোকদের হত্যা করলেন। আর শিশু (ও মহিলাদের)-কে বন্দী করলেন।
বন্দীদের মধ্যে ছিলেন সাফিয়্যা [বিনতে হুইয়াই (রাযিঃ)] প্রথমে তিনি দাহইয়াতুল কালবীর অংশে এবং পরে নবী কারীম (ﷺ)- এর অংশে বন্টিত হন। নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে আযাদ করত এই আযাদীকে মোহর ধার্য করেন (এবং বিবাহ করে নেন)। আব্দুল আযীয ইবনে সুহায়ব (রাহঃ) সাবিত (রাহঃ)- কে বললেন, হে আবু মুহাম্মাদ! আপনি কি আনাস (রাযিঃ)—কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁর [সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর] মোহর ধার্য করেছেন? তখন সাবিত (রাহঃ) ‘হ্যাঁ-সূচক’ ইঙ্গিত করে মাথা নাড়লেন।
বন্দীদের মধ্যে ছিলেন সাফিয়্যা [বিনতে হুইয়াই (রাযিঃ)] প্রথমে তিনি দাহইয়াতুল কালবীর অংশে এবং পরে নবী কারীম (ﷺ)- এর অংশে বন্টিত হন। নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে আযাদ করত এই আযাদীকে মোহর ধার্য করেন (এবং বিবাহ করে নেন)। আব্দুল আযীয ইবনে সুহায়ব (রাহঃ) সাবিত (রাহঃ)- কে বললেন, হে আবু মুহাম্মাদ! আপনি কি আনাস (রাযিঃ)—কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁর [সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর] মোহর ধার্য করেছেন? তখন সাবিত (রাহঃ) ‘হ্যাঁ-সূচক’ ইঙ্গিত করে মাথা নাড়লেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4200 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصُّبْحَ قَرِيبًا مِنْ خَيْبَرَ بِغَلَسٍ، ثُمَّ قَالَ: " اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ، إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ {فَسَاءَ صَبَاحُ المُنْذَرِينَ} [الصافات: 177] " فَخَرَجُوا يَسْعَوْنَ فِي السِّكَكِ، فَقَتَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المُقَاتِلَةَ، وَسَبَى الذُّرِّيَّةَ، وَكَانَ فِي السَّبْيِ صَفِيَّةُ، فَصَارَتْ إِلَى دَحْيَةَ الكَلْبِيِّ، ثُمَّ صَارَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلَ عِتْقَهَا صَدَاقَهَا فَقَالَ عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ لِثَابِتٍ: يَا أَبَا مُحَمَّدٍ، آنْتَ قُلْتَ لِأَنَسٍ: مَا أَصْدَقَهَا؟ فَحَرَّكَ ثَابِتٌ رَأْسَهُ تَصْدِيقًا لَهُ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০১
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৭। আদম (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (খায়বারের যুদ্ধে) নবী কারীম (ﷺ) সাফিয়্যা (রাযিঃ)- কে (প্রথমত) বন্দী করেছিলেন। পরে তিনি তাঁকে আযাদ করে বিয়ে করেছিলেন। সাবিত (রাহঃ) আনাস (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবী কারীম (ﷺ) তাঁর মোহর কত ধার্য করেছিলেন? আনাস (রাযিঃ) বললেনঃ স্বয়ং সাফিয়্যা (রাযিঃ)-কেই মোহর ধার্য করছিলেন এবং তাঁকে আযাদ করে দিয়েছিলেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4201 - حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ العَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «سَبَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَفِيَّةَ فَأَعْتَقَهَا وَتَزَوَّجَهَا» فَقَالَ ثَابِتٌ لِأَنَسٍ مَا أَصْدَقَهَا؟ قَالَ: «أَصْدَقَهَا نَفْسَهَا فَأَعْتَقَهَا»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০২
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৮। কুতায়বা (রাহঃ) .... সাহল ইবনে সা‘দ সাঈদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, (খায়বার যুদ্ধে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মুশরিকরা মুখোমুখি হলেন। পরস্পরের মধ্যে তুমুল লড়াই হল। (দিনের শেষে) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সেনা ছাউনিতে ফিরে আসলেন আর অন্যরাও (মুশরিকরা) তাদের ছাউনিতে ফিরে গেল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাহাবীগণের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে তার তরবারি থেকে একাকী কিংবা দলবদ্ধ কোনো শত্রু সৈন্যকেই রেহাই দেয়নি। বরং পিছু ধাওয়া করে তাকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছে। (সাহাবাগণের মধ্যে তার আলোচনা উঠলো) তাদের কেউ বললেন, অমুক ব্যক্তি আজ যা করেছে আমাদের মধ্যে তার অন্য কেউ এমনটি করতে সক্ষম হয়নি। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কিন্তু সে তো জাহান্নামী। (সকলের কাছে কথাটি আশ্চর্য মনে হল) সাহাবীগণের একজন বললেন, (ব্যাপারটি) দেখার জন্য আমি তার সঙ্গী হব।
সাহল ইবনে সা‘দ সাঈদী (রাযিঃ) বলেন, পরে তিনি ঐ লোকটির সাথে বের হলেন, লোকটি যখন থেমে যেতো তিনিও তার সাথে থেমে যেতেন, আর যখন লোকটি দ্রুত চলতো তিনিও তার সাথে দ্রুত চলতেন। বর্ণনাকারী বলেন, এক সময়ে লোকটি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং (যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে) সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করল। তাই সে (এক পর্যায়ে) তার তরবারির গোড়ার অংশ মাটিতে রেখে এর তীক্ষ্ম ভাগ বুকের বরাবর রাখলো। এরপর সে তরবারির উপর নিজেকে সজোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করলো। এ অবস্থা দেখে অনুসরণকারী সাহাবী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে ছুটে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কি ব্যাপার? তিনি বললেন, একটু পূর্বে আপনি যে লোকটির ব্যাপারে মন্তব্য করেছিলেন যে, লোকটি জাহান্নামী, আর তার সম্পর্কে এরূপ কথা সকলের কাছে আশ্চর্যকর অনুভূত হয়েছিল। তখন আমি তাদেরকে বলেছিলাম, আমি লোকটির অনুসরণ করে ব্যাপারটি দেখে আসব। কাজেই আমি ব্যাপারটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম। এরপর (এক সময়ে দেখলাম) লোকটি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং দ্রুত নিজের মৃত্যু কামনা করল, তাই সে নিজের তরবারির উপর নিজেকে সজোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করল। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, অনেক সময় মানুষ (বাহ্যত) জান্নাতীদের ন্যায় আমল করতে থাকে, যা দেখে অন্যরা তাকে জান্নাতীই মনে করে। অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জাহান্নামী। আবার অনেক সময় মানুষ (বাহ্যত) জাহান্নামীদের মত আমল করতে থাকে যা দেখে লোকজনও সেইরূপই মনে করে থাকে, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জান্নাতী।
সাহল ইবনে সা‘দ সাঈদী (রাযিঃ) বলেন, পরে তিনি ঐ লোকটির সাথে বের হলেন, লোকটি যখন থেমে যেতো তিনিও তার সাথে থেমে যেতেন, আর যখন লোকটি দ্রুত চলতো তিনিও তার সাথে দ্রুত চলতেন। বর্ণনাকারী বলেন, এক সময়ে লোকটি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং (যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে) সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করল। তাই সে (এক পর্যায়ে) তার তরবারির গোড়ার অংশ মাটিতে রেখে এর তীক্ষ্ম ভাগ বুকের বরাবর রাখলো। এরপর সে তরবারির উপর নিজেকে সজোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করলো। এ অবস্থা দেখে অনুসরণকারী সাহাবী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে ছুটে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কি ব্যাপার? তিনি বললেন, একটু পূর্বে আপনি যে লোকটির ব্যাপারে মন্তব্য করেছিলেন যে, লোকটি জাহান্নামী, আর তার সম্পর্কে এরূপ কথা সকলের কাছে আশ্চর্যকর অনুভূত হয়েছিল। তখন আমি তাদেরকে বলেছিলাম, আমি লোকটির অনুসরণ করে ব্যাপারটি দেখে আসব। কাজেই আমি ব্যাপারটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম। এরপর (এক সময়ে দেখলাম) লোকটি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং দ্রুত নিজের মৃত্যু কামনা করল, তাই সে নিজের তরবারির উপর নিজেকে সজোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করল। এ সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, অনেক সময় মানুষ (বাহ্যত) জান্নাতীদের ন্যায় আমল করতে থাকে, যা দেখে অন্যরা তাকে জান্নাতীই মনে করে। অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জাহান্নামী। আবার অনেক সময় মানুষ (বাহ্যত) জাহান্নামীদের মত আমল করতে থাকে যা দেখে লোকজনও সেইরূপই মনে করে থাকে, অথচ প্রকৃতপক্ষে সে জান্নাতী।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4202 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَقَى هُوَ وَالمُشْرِكُونَ فَاقْتَتَلُوا، فَلَمَّا مَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى عَسْكَرِهِ وَمَالَ الآخَرُونَ إِلَى عَسْكَرِهِمْ، وَفِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ لاَ يَدَعُ لَهُمْ شَاذَّةً وَلاَ فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا يَضْرِبُهَا بِسَيْفِهِ، فَقِيلَ: مَا أَجْزَأَ مِنَّا اليَوْمَ أَحَدٌ كَمَا أَجْزَأَ فُلاَنٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ» ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: أَنَا صَاحِبُهُ، قَالَ: فَخَرَجَ مَعَهُ كُلَّمَا وَقَفَ وَقَفَ مَعَهُ، وَإِذَا أَسْرَعَ أَسْرَعَ مَعَهُ، قَالَ: فَجُرِحَ الرَّجُلُ جُرْحًا شَدِيدًا، فَاسْتَعْجَلَ المَوْتَ، فَوَضَعَ سَيْفَهُ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ، ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَى سَيْفِهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَخَرَجَ الرَّجُلُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ، قَالَ: «وَمَا ذَاكَ؟» قَالَ: الرَّجُلُ الَّذِي ذَكَرْتَ آنِفًا أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَأَعْظَمَ النَّاسُ ذَلِكَ، فَقُلْتُ: أَنَا لَكُمْ بِهِ، فَخَرَجْتُ فِي طَلَبِهِ، ثُمَّ جُرِحَ جُرْحًا شَدِيدًا، فَاسْتَعْجَلَ المَوْتَ، فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ فِي الأَرْضِ، وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ، ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ ذَلِكَ: «إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الجَنَّةِ، فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ، وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ، فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৩
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৮৯। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খায়বার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন তাঁর সঙ্গীদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি যে মুসলমান বলে দাবি করতো, তার সম্পর্কে বললেন, লোকটি জাহান্নামী। এরপর যুদ্ধ আরম্ভ হলে লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ চালিয়ে গেল, এমনকি তার দেহের অনেক স্থান ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেল। এতে কারো কারো (রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ভবিষ্যতবাণীর উপর) সন্দেহের উপক্রম হল।
(কিন্তু তারপরেই দেখা গেল) লোকটি আঘাতের যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে তুণীরের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে সেখান থেকে তীর বের করে আনল। আর তীরটি নিজের বক্ষদেশে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। তা দেখে কতিপয় মুসলমান দ্রুত ছুটে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ আপনার কথা সত্য বলে প্রমাণিত করেছেন। ঐ লোকটি নিজেই নিজের বক্ষে আঘাত করে আত্মহত্যা করেছে। তখন তিনি বললেন, হে অমুক! দাঁড়াও, এবং ঘোষণা দাও যে, মু’মিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অবশ্য আল্লাহ (কখনো কখনো) ফাসিক ব্যক্তি দ্বারাও দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন।
মা‘মার (রাহঃ) যুহরী (রাহঃ) থেকে উক্ত হাদীস বর্ণনায় শুআয়ব (রাহঃ)- এর অনুসরণ করেছেন।
শাবীব (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম ....। (আব্দুল্লাহ) ইবনে মুবারক হাদীসটি ইউনুস-যুহরী-সাঈদ [ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ)] সূত্রে নবী কারীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
সালিহ (রাহঃ) যুহরী (রাহঃ) থেকে ইবনে মুবারক (রাযিঃ)-এর মতই বর্ণনা করেছেন। আর যুবায়দী (রাহঃ) হাদীসটি যুহরী, আব্দুর রহমান ইবনে কা‘ব, উবাইদুল্লাহ ইবনে কা‘ব (রাহঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বারে অংশগ্রহণকারী জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। (যুবায়দী আরো বলেন) যুহরী (রাহঃ) এ হাদীসটিতে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ এবং সাঈদ (ইবনুল মুসাইয়্যাব) (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
(কিন্তু তারপরেই দেখা গেল) লোকটি আঘাতের যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে তুণীরের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে সেখান থেকে তীর বের করে আনল। আর তীরটি নিজের বক্ষদেশে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। তা দেখে কতিপয় মুসলমান দ্রুত ছুটে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ আপনার কথা সত্য বলে প্রমাণিত করেছেন। ঐ লোকটি নিজেই নিজের বক্ষে আঘাত করে আত্মহত্যা করেছে। তখন তিনি বললেন, হে অমুক! দাঁড়াও, এবং ঘোষণা দাও যে, মু’মিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অবশ্য আল্লাহ (কখনো কখনো) ফাসিক ব্যক্তি দ্বারাও দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন।
মা‘মার (রাহঃ) যুহরী (রাহঃ) থেকে উক্ত হাদীস বর্ণনায় শুআয়ব (রাহঃ)- এর অনুসরণ করেছেন।
শাবীব (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম ....। (আব্দুল্লাহ) ইবনে মুবারক হাদীসটি ইউনুস-যুহরী-সাঈদ [ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাহঃ)] সূত্রে নবী কারীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
সালিহ (রাহঃ) যুহরী (রাহঃ) থেকে ইবনে মুবারক (রাযিঃ)-এর মতই বর্ণনা করেছেন। আর যুবায়দী (রাহঃ) হাদীসটি যুহরী, আব্দুর রহমান ইবনে কা‘ব, উবাইদুল্লাহ ইবনে কা‘ব (রাহঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে খায়বারে অংশগ্রহণকারী জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। (যুবায়দী আরো বলেন) যুহরী (রাহঃ) এ হাদীসটিতে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ এবং সাঈদ (ইবনুল মুসাইয়্যাব) (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4203 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ، أَنَّ [ص:133] أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: شَهِدْنَا خَيْبَرَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ مِمَّنْ مَعَهُ يَدَّعِي الإِسْلاَمَ: «هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ» . فَلَمَّا حَضَرَ القِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ أَشَدَّ القِتَالِ، حَتَّى كَثُرَتْ بِهِ الجِرَاحَةُ، فَكَادَ بَعْضُ النَّاسِ يَرْتَابُ، فَوَجَدَ الرَّجُلُ أَلَمَ الجِرَاحَةِ، فَأَهْوَى بِيَدِهِ إِلَى كِنَانَتِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهَا أَسْهُمًا فَنَحَرَ بِهَا نَفْسَهُ، فَاشْتَدَّ رِجَالٌ مِنَ المُسْلِمِينَ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، صَدَّقَ اللَّهُ حَدِيثَكَ، انْتَحَرَ فُلاَنٌ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَقَالَ: «قُمْ يَا فُلاَنُ، فَأَذِّنْ أَنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ إِلَّا مُؤْمِنٌ، إِنَّ اللَّهَ يُؤَيِّدُ الدِّينَ بِالرَّجُلِ الفَاجِرِ» تَابَعَهُ مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَالَ شَبِيبٌ، عَنْ يُونُسَ، عَنْ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ المُسَيِّبِ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: «شَهِدْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُنَيْنًا» ، وَقَالَ ابْنُ المُبَارَكِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. تَابَعَهُ صَالِحٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَالَ: الزُّبَيْدِيُّ، أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ كَعْبٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عُبَيْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبٍ قَالَ: «أَخْبَرَنِي مَنْ شَهِدَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْبَرَ» ، قَالَ لزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَسَعِيدٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯০
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৫
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯০। মুসা ইবনে ঈসমাঈল (রাহঃ) .... আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন খায়বার যুদ্ধের জন্য বের হলেন কিংবা রাবী বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন খায়বার অভিমুখে যাত্রা করলেন, তখন সাথী লোকজন একটি উপত্যকায় পৌঁছে এই বলে উচ্চস্বরে তাকবীর দিতে শুরু করলে- আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু! (আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই) তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা নিজেদের প্রতি সদয় হও। কারণ তোমরা এমন কোন সত্তাকে ডাকছ না যিনি বধির বা অনুপস্থিত। বরং তোমরা তো ডাকছ সেই সত্তাকে যিনি শ্রবণকারী ও অতি নিকটে অবস্থানকারী, যিনি তোমাদের সাথেই আছেন।
[আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) বলেন] আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সওয়ারীর পেছনে ছিলাম। তিনি আমাকে লা’ হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’ বলতে শুনে বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে কায়েস! আমি বললাম, আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, আমি তোমাকে এমন একটি কথা শিখিয়ে দেব কি যা জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের মধ্যে একটি ভাণ্ডার? আমি বললাম, হ্যাঁ! ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কথাটি হল ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’
[আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) বলেন] আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সওয়ারীর পেছনে ছিলাম। তিনি আমাকে লা’ হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’ বলতে শুনে বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে কায়েস! আমি বললাম, আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, আমি তোমাকে এমন একটি কথা শিখিয়ে দেব কি যা জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের মধ্যে একটি ভাণ্ডার? আমি বললাম, হ্যাঁ! ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কথাটি হল ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4205 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: لَمَّا غَزَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْبَرَ، أَوْ قَالَ: لَمَّا تَوَجَّهَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَشْرَفَ النَّاسُ عَلَى وَادٍ، فَرَفَعُوا أَصْوَاتَهُمْ بِالتَّكْبِيرِ: اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ، لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ارْبَعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ، إِنَّكُمْ لاَ تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا، إِنَّكُمْ تَدْعُونَ سَمِيعًا قَرِيبًا وَهُوَ مَعَكُمْ» ، وَأَنَا خَلْفَ دَابَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَمِعَنِي وَأَنَا أَقُولُ: لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، فَقَالَ لِي: «يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسٍ» . قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى كَلِمَةٍ مِنْ كَنْزٍ مِنْ كُنُوزِ الجَنَّةِ» قُلْتُ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي، قَالَ: «لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ»
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৩৮৯১
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৬
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯১। মক্কী ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... ইয়াযীদ ইবনে আবু উবাইদ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি সালামা (ইবনে আকওয়া) (রাযিঃ)- এর পায়ের নলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আবু মুসলিম! এ আঘাতটি কিসের? তিনি বললেন, এটি খায়বার যুদ্ধে প্রাপ্ত আঘাত। (যুদ্ধক্ষেত্রে আমাকে আঘাতটি মারার পর) লোকজন বলাবলি শুরু করে দিল যে, সালামা মারা যাবে। কিন্তু এরপর আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে আসলাম। তিনি ক্ষতস্থানটিতে তিনবার ফুঁ দিয়ে দিলেন। ফলে আজ পর্যন্ত আমি এতে কোনো ব্যথা অনুভব করিনি।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4206 - حَدَّثَنَا المَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ، قَالَ: رَأَيْتُ أَثَرَ ضَرْبَةٍ فِي سَاقِ سَلَمَةَ، فَقُلْتُ يَا أَبَا مُسْلِمٍ، مَا هَذِهِ الضَّرْبَةُ؟ فَقَالَ: هَذِهِ ضَرْبَةٌ أَصَابَتْنِي يَوْمَ خَيْبَرَ، فَقَالَ النَّاسُ: أُصِيبَ سَلَمَةُ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «فَنَفَثَ فِيهِ ثَلاَثَ نَفَثَاتٍ، فَمَا اشْتَكَيْتُهَا حَتَّى السَّاعَةِ»
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৩৮৯২
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৭
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯২। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... সাহল (ইবনে সা‘দ) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং মুশরিকরা মুখোমুখি হলেন। পরস্পরের মধ্যে তুমুল লড়াই হল। (শেষে) সকলেই নিজ নিজ সেনা ছাউনিতে ফিরে গেল। মুসলিম সৈন্যদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে মুশরিকদের কোনো একাকী কিংবা দলবদ্ধ কোন শত্রুকেই তার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেয়নি বরং সবাইকেই তাড়া করে তার তরবারির আঘাতে হত্যা করেছে। তখন (তার ব্যাপারে) বলা হলঃ হে আল্লাহর রাসূল! অমুক ব্যক্তি আজ যে পরিমাণ আমল করেছে অন্য কেউ আজ সে পরিমাণ করতে পারেনি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, সে ব্যক্তি তো জাহান্নামী। তারা বললো, তা হলে আমাদের মধ্যে আর কে জান্নাতবাসী হতে পারবে যদি এ ব্যক্তিই জাহান্নামী হয়?
তখন কাফেলার মধ্য থেকে একজন বলল, অবশ্যই আমি তাকে অনুসরণ করে দেখব (যে, তার পরিণাম কি ঘটে) (তিনি বলেন) লোকটি যখন দ্রুত চলতো আর ধীরে চলতো সর্বাবস্থায় আমি তার সাথে থাকতাম। পরিশেষে লোকটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে আর (আঘাতের যন্ত্রণায়) সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করে তার তরবারির বাট মাটিতে স্থাপন করল এবং ধারালো ভাগ নিজের বুক বরাবর রেখে এর উপর সজোরে ঝুঁকে পড়ে আত্মহত্য করলো।
তখন (অনুসরণকারী) সাহাবী নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি (নবী কারীম (ﷺ)) জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তিনি তখন নবী কারীম (ﷺ)- কে সব ঘটনা জানালেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, কেউ কেউ (দৃশ্যত) জান্নাতবাসীদের মত আমল করতে থাকে আর লোকজন তাকে অনুরূপই মনে করে থাকে প্রকৃতপক্ষে সে জাহান্নামী। আবার কেউ কেউ জাহান্নামীর মত আমল করে থাকে আর লোকজনও তাকে তাই মনে করে অথচ সে জান্নাতী।
তখন কাফেলার মধ্য থেকে একজন বলল, অবশ্যই আমি তাকে অনুসরণ করে দেখব (যে, তার পরিণাম কি ঘটে) (তিনি বলেন) লোকটি যখন দ্রুত চলতো আর ধীরে চলতো সর্বাবস্থায় আমি তার সাথে থাকতাম। পরিশেষে লোকটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে আর (আঘাতের যন্ত্রণায়) সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করে তার তরবারির বাট মাটিতে স্থাপন করল এবং ধারালো ভাগ নিজের বুক বরাবর রেখে এর উপর সজোরে ঝুঁকে পড়ে আত্মহত্য করলো।
তখন (অনুসরণকারী) সাহাবী নবী কারীম (ﷺ)- এর কাছে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি (নবী কারীম (ﷺ)) জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তিনি তখন নবী কারীম (ﷺ)- কে সব ঘটনা জানালেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, কেউ কেউ (দৃশ্যত) জান্নাতবাসীদের মত আমল করতে থাকে আর লোকজন তাকে অনুরূপই মনে করে থাকে প্রকৃতপক্ষে সে জাহান্নামী। আবার কেউ কেউ জাহান্নামীর মত আমল করে থাকে আর লোকজনও তাকে তাই মনে করে অথচ সে জান্নাতী।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4207 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ [ص:134]، عَنْ سَهْلٍ، قَالَ: التَقَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالمُشْرِكُونَ فِي بَعْضِ مَغَازِيهِ، فَاقْتَتَلُوا، فَمَالَ كُلُّ قَوْمٍ إِلَى عَسْكَرِهِمْ، وَفِي المُسْلِمِينَ رَجُلٌ لاَ يَدَعُ مِنَ المُشْرِكِينَ شَاذَّةً وَلاَ فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا فَضَرَبَهَا بِسَيْفِهِ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا أَجْزَأَ أَحَدٌ مَا أَجْزَأَ فُلاَنٌ، فَقَالَ: «إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ» ، فَقَالُوا: أَيُّنَا مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ، إِنْ كَانَ هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: لَأَتَّبِعَنَّهُ، فَإِذَا أَسْرَعَ وَأَبْطَأَ كُنْتُ مَعَهُ، حَتَّى جُرِحَ، فَاسْتَعْجَلَ المَوْتَ، فَوَضَعَ نِصَابَ سَيْفِهِ بِالأَرْضِ، وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ، ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَجَاءَ الرَّجُلُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالَ: «وَمَا ذَاكَ» . فَأَخْبَرَهُ، فَقَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الجَنَّةِ، فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ، وَإِنَّهُ لَمِنْ أَهْلِ النَّارِ، وَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ، فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ، وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৮
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৩। মুহাম্মাদ ইবনে সাঈদ খুযাই (রাহঃ) .... আবু ইমরান (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক জুমআর দিনে আনাস (রাযিঃ) লোকজনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন তাদের (মাথায়) তায়ালিসা* চাঁদর। তখন তিনি বললেন, এ মুহূর্তে এদেরকে যেন খায়বারের ইয়াহুদীদের মতো দেখাচ্ছে।
*তায়ালিস শব্দটি তায়ালসান শব্দটির বহুবচন। মূল শব্দটি ফারসী। পরবর্তীতে এটি সামান্য বিকৃত হয়ে আরবী ভাষায় রূপান্তরিত হয়। এটি এক প্রকার চাঁদরের নাম। খায়বারের ইয়াহুদি সম্প্রদায় এ চাঁদর অধিক ব্যবহার করতো। তাদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে এ চাঁদর ব্যবহার করতে আনাস (রাযিঃ) কখনো দেখেননি। তাই তিনি যখন বসরায় আসলেন আর খুতবা দিতে দাঁড়িয়ে মুসল্লীদের গায়ে ঐ চাঁদর দেখে খায়বারের ইয়াহুদিদের তুলনা দিয়ে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
*তায়ালিস শব্দটি তায়ালসান শব্দটির বহুবচন। মূল শব্দটি ফারসী। পরবর্তীতে এটি সামান্য বিকৃত হয়ে আরবী ভাষায় রূপান্তরিত হয়। এটি এক প্রকার চাঁদরের নাম। খায়বারের ইয়াহুদি সম্প্রদায় এ চাঁদর অধিক ব্যবহার করতো। তাদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে এ চাঁদর ব্যবহার করতে আনাস (রাযিঃ) কখনো দেখেননি। তাই তিনি যখন বসরায় আসলেন আর খুতবা দিতে দাঁড়িয়ে মুসল্লীদের গায়ে ঐ চাঁদর দেখে খায়বারের ইয়াহুদিদের তুলনা দিয়ে নিজ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4208 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ، قَالَ: نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَرَأَى طَيَالِسَةً، فَقَالَ: «كَأَنَّهُمُ السَّاعَةَ يَهُودُ خَيْبَرَ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪২০৯
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) .... সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, চক্ষু রোগে আক্রান্ত থাকার দরুণ আলী (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর থেকে খায়বার অভিযানে পেছনে ছিলেন। [নবী কারীম (ﷺ) মদীনা থেকে রওয়ানা দিয়ে এসে পড়লে] আলী (রাযিঃ) বললেন, নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথে (যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে) আমি পেছনে বসে থাকবো! সুতরাং তিনি গিয়ে তাঁর সাথে মিলিত হলেন। [সালামা (রাযিঃ) বলেন] খায়বার বিজিত হওয়ার পূর্ব রাতে তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] বললেন, আগামী কাল সকালে আমি এমন একজন ব্যক্তির হাতে ঝান্ডা অর্পন করব অথবা তিনি বলেছিলেন, আগামীকাল সকালে এমন এক ব্যক্তি ঝান্ডা গ্রহণ করবে যাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভালোবাসেন। আর তাঁর হাতেই খায়বার বিজিত হবে। কাজেই আমরা সবাই তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করছিলাম। তখন বলা হল, ইনি তো আলী (রাযিঃ)! এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে ঝান্ডা প্রদান করলেন এবং তাঁর হাতেই খায়বার বিজিত হল।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4209 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، تَخَلَّفَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خَيْبَرَ، وَكَانَ رَمِدًا، فَقَالَ: أَنَا أَتَخَلَّفُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَحِقَ بِهِ، فَلَمَّا بِتْنَا اللَّيْلَةَ الَّتِي فُتِحَتْ قَالَ: «لَأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ غَدًا أَوْ لَيَأْخُذَنَّ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلٌ يُحِبُّهُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ، يُفْتَحُ عَلَيْهِ» فَنَحْنُ نَرْجُوهَا، فَقِيلَ: هَذَا عَلِيٌّ فَأَعْطَاهُ، فَفُتِحَ عَلَيْهِ
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং: ৩৮৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১০
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৫। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... সাহল ইবনে সা‘দ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বারের যুদ্ধে একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আগামীকাল সকালে আমি এমন এক ব্যক্তির হাতে ঝান্ডা অর্পণ করব যার হাতে আল্লাহ খায়বারে বিজয় দান করবেন এবং যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালবাসেন আর সেও আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সাহল (রাযিঃ) বলেন, (ঘোষণাটি শুনে) মুসলমানগণ এ জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই রাত কাটালো যে, তাদের মধ্যে কাকে অর্পন করা হবে এই ঝান্ডা। সকাল হল, সবাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে আসলেন, আর প্রত্যেকেই মনে মনে এ ঝান্ডা লাভ করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) কোথায়? সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি তো চক্ষুরোগে আক্রান্ত অবস্থায় আছেন। তিনি বললেন, তাকে লোক পাঠিয়ে সংবাদ দাও। সে মতে তাঁকে আনা হল।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উভয় চোখে থুথু লাগিয়ে তাঁর জন্য দু'আ করলেন। ফলে তাঁর চোখ এরূপ সুস্থ হয়ে উঠলো যে, যেন কখনো চোখে কোনো রোগই ছিল না। এরপর তিনি তাঁর হাতে ঝান্ডা অর্পণ করলেন। তখন আলী (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তারা আমাদের মত (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি বর্তমান অবস্থায়ই তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপনিত হও, এরপর তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি আহবান করো (যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে) ইসলামী বিধানে ওদের উপর যেসব হক বর্তায় সেসব সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করে দাও। কারণ আল্লাহর কসম! তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যদি মাত্র একজন মানুষকেও হেদায়েত দেন তা হলে তা তোমার জন্য লোহিত বর্ণের (মূল্যবান) উটের মালিক হওয়া অপেক্ষা অনেক উত্তম।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উভয় চোখে থুথু লাগিয়ে তাঁর জন্য দু'আ করলেন। ফলে তাঁর চোখ এরূপ সুস্থ হয়ে উঠলো যে, যেন কখনো চোখে কোনো রোগই ছিল না। এরপর তিনি তাঁর হাতে ঝান্ডা অর্পণ করলেন। তখন আলী (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তারা আমাদের মত (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি বর্তমান অবস্থায়ই তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে উপনিত হও, এরপর তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি আহবান করো (যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে) ইসলামী বিধানে ওদের উপর যেসব হক বর্তায় সেসব সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করে দাও। কারণ আল্লাহর কসম! তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যদি মাত্র একজন মানুষকেও হেদায়েত দেন তা হলে তা তোমার জন্য লোহিত বর্ণের (মূল্যবান) উটের মালিক হওয়া অপেক্ষা অনেক উত্তম।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4210 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَوْمَ خَيْبَرَ: «لَأُعْطِيَنَّ هَذِهِ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلًا يَفْتَحُ اللَّهُ عَلَى يَدَيْهِ، يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيُحِبُّهُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ» ، قَالَ: فَبَاتَ النَّاسُ يَدُوكُونَ لَيْلَتَهُمْ أَيُّهُمْ يُعْطَاهَا، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ غَدَوْا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّهُمْ يَرْجُو أَنْ يُعْطَاهَا، فَقَالَ: «أَيْنَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ» . فَقِيلَ: هُوَ يَا رَسُولَ اللَّهِ يَشْتَكِي عَيْنَيْهِ، قَالَ: «فَأَرْسَلُوا إِلَيْهِ» . فَأُتِيَ بِهِ فَبَصَقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي عَيْنَيْهِ وَدَعَا لَهُ، فَبَرَأَ حَتَّى كَأَنْ لَمْ يَكُنْ بِهِ وَجَعٌ، فَأَعْطَاهُ الرَّايَةَ، فَقَالَ عَلِيٌّ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أُقَاتِلُهُمْ حَتَّى يَكُونُوا مِثْلَنَا؟ فَقَالَ: «انْفُذْ عَلَى رِسْلِكَ حَتَّى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ، ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلاَمِ، وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَقِّ اللَّهِ فِيهِ، فَوَاللَّهِ لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا، خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ»
হাদীস নং: ৩৮৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১১
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৬। আব্দুল গাফফার ইবনে দাউদ ও আহমদ (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খায়বারে এসে পৌঁছলাম। এরপর যখন আল্লাহ তাঁকে খায়বার দুর্গের বিজয় দান করলেন তখন তাঁর কাছে (ইয়াহুদী দলপতি) হুয়াঈ ইবনে আখতাবের কন্যা সাফিয়্যা (রাযিঃ)- এর সৌন্দর্যের কথা আলোচনা করা হল। তার স্বামী (কেনানা ইবনুর রাবী এ যুদ্ধে) নিহত হয়। সে ছিল নববধূ। নবী কারীম (ﷺ) তাকে নিজের জন্য মনোনীত করেন এবং তাঁকে সঙ্গে করে (খায়বার থেকে) রওয়ানা হন। এরপর আমরা যখন সাদ্দুস সাহবা নামক স্থান পর্যন্ত দিয়ে পৌঁছলাম তখন সাফিয়্যা (রাযিঃ) তাঁর মাসিক ঋতুস্রাব থেকে পবিত্রতা লাভ করলেন।
এ সময়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সাথে বাসরঘরে সাক্ষাত করলেন। তারপর একটি ছোট দস্তরখানে (খেজুর-ঘি ও ছাতু মেশানো এক প্রকার) হায়স নামক খাদ্য সাজিয়ে আমাকে বললেন, তোমার আশেপাশে যারা আছে সবাইকে ডাকো। আর এটাই ছিল সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর সাথে বিয়ের ওয়ালীমা। তারপর আমরা মদীনার দিকে রওয়ানা হলাম, আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে তাঁর পেছনে (সওয়ারীর পিঠে) সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর জন্য একটি চাঁদর বিছাতে দেখেছি। এরপর তিনি তাঁর সওয়ারীর উপর হাঁটুদয় মেলে বসতেন আর সাফিয়্যা (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর হাঁটুর উপর পা রেখে সওয়ারীতে আরোহণ করতেন।
এ সময়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর সাথে বাসরঘরে সাক্ষাত করলেন। তারপর একটি ছোট দস্তরখানে (খেজুর-ঘি ও ছাতু মেশানো এক প্রকার) হায়স নামক খাদ্য সাজিয়ে আমাকে বললেন, তোমার আশেপাশে যারা আছে সবাইকে ডাকো। আর এটাই ছিল সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর সাথে বিয়ের ওয়ালীমা। তারপর আমরা মদীনার দিকে রওয়ানা হলাম, আমি নবী কারীম (ﷺ)- কে তাঁর পেছনে (সওয়ারীর পিঠে) সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর জন্য একটি চাঁদর বিছাতে দেখেছি। এরপর তিনি তাঁর সওয়ারীর উপর হাঁটুদয় মেলে বসতেন আর সাফিয়্যা (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর হাঁটুর উপর পা রেখে সওয়ারীতে আরোহণ করতেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4211 - حَدَّثَنَا عَبْدُ الغَفَّارِ بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، ح وحَدَّثَنِي أَحْمَدُ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الزُّهْرِيُّ، عَنْ عَمْرٍو، مَوْلَى المُطَّلِبِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَدِمْنَا خَيْبَرَ فَلَمَّا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ الحِصْنَ، ذُكِرَ لَهُ جَمَالُ صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيِّ بْنِ أَخْطَبَ، وَقَدْ قُتِلَ زَوْجُهَا وَكَانَتْ عَرُوسًا، فَاصْطَفَاهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِنَفْسِهِ، فَخَرَجَ بِهَا حَتَّى بَلَغْنَا سَدَّ الصَّهْبَاءِ حَلَّتْ، فَبَنَى بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَنَعَ حَيْسًا فِي نِطَعٍ صَغِيرٍ، ثُمَّ قَالَ لِي: «آذِنْ مَنْ حَوْلَكَ» . فَكَانَتْ تِلْكَ وَلِيمَتَهُ عَلَى صَفِيَّةَ، ثُمَّ خَرَجْنَا إِلَى المَدِينَةِ، فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحَوِّي لَهَا وَرَاءَهُ بِعَبَاءَةٍ، ثُمَّ يَجْلِسُ عِنْدَ بَعِيرِهِ فَيَضَعُ رُكْبَتَهُ، وَتَضَعُ صَفِيَّةُ رِجْلَهَا عَلَى رُكْبَتِهِ حَتَّى تَرْكَبَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১২
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৭। ইসমাঈল (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) খায়বার থেকে প্রত্যাবর্তন করার পথে সাফিয়্যা (রাযিঃ) বিনতে হুয়াঈ-এর কাছে তিন দিন অবস্থান করে তাঁর সাথে বাসর যাপন করেছেন। আর সাফিয়্যা (রাযিঃ) ছিলেন সে সব মহিলাদের একজন যাদের জন্য পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।*
*পর্দার ব্যবস্থার কারণে বোঝা গেলো যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে উম্মুল মু'মিনীন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কেননা মিলকে ইয়ামীন যা ক্রীতদাসী হিসেবে গ্রহণ করে থাকলে তার মৌলিক সতর ছাড়া দেহের অন্যান্য অঙ্গের জন্য পর্দার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হতো না
*পর্দার ব্যবস্থার কারণে বোঝা গেলো যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে উম্মুল মু'মিনীন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কেননা মিলকে ইয়ামীন যা ক্রীতদাসী হিসেবে গ্রহণ করে থাকলে তার মৌলিক সতর ছাড়া দেহের অন্যান্য অঙ্গের জন্য পর্দার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হতো না
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4212 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَخِي، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ، سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَقَامَ عَلَى صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيٍّ بِطَرِيقِ خَيْبَرَ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، حَتَّى أَعْرَسَ بِهَا، وَكَانَتْ فِيمَنْ ضُرِبَ عَلَيْهَا الحِجَابُ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১৩
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৮। সাঈদ ইবনে আবু মারয়াম (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম (ﷺ) খায়বার ও মদীনার মধ্যবর্তী এক জায়গায় তিন দিন অবস্থান করেছিলেন আর এ সময় তিনি সাফিয়্যা (রাযিঃ)- এর সঙ্গে বাসর যাপন করেছেন। আমি মুসলমানগণকে তাঁর ওয়ালীমার জন্য দাওয়াত দিলাম। অবশ্য এ ওয়ালীমাতে গোশত রুটির ব্যবস্থা ছিল না, কেবল এতটুকু ছিল যে, তিনি বিলাল (রাযিঃ)- কে দস্তরখান বিছাতে বললেন। দস্তরখান বিছানো হল। এরপর তাতে কিছু খেজুর, পনির ও ঘি রাখা হল।
এ অবস্থা দেখে মুসলিমগণ পরস্পর বলাবলি করতে লাগলো যে, তিনি [সাফিয়্যা (রাযিঃ)] কি উম্মাহাতুল মু’মীনিনেরই একজন, না ক্রীতদাসীদের একজন? তাঁরা (আরো) বললেন, যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর জন্য পর্দার ব্যবস্থা করেন তাহলে তিনি উম্মাহাতুল মু’মিনীনেরই একজন বোঝা যাবে।আর পর্দার ব্যবস্থা না করলে ক্রীতদাসী হিসেবেই বুঝতে হবে। এরপর যখন তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] রওয়ানা দিলেন তখন তিনি নিজের পেছনে সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর জন্য বসার জায়গা করে দিয়ে পর্দা টানিয়ে দিলেন।
এ অবস্থা দেখে মুসলিমগণ পরস্পর বলাবলি করতে লাগলো যে, তিনি [সাফিয়্যা (রাযিঃ)] কি উম্মাহাতুল মু’মীনিনেরই একজন, না ক্রীতদাসীদের একজন? তাঁরা (আরো) বললেন, যদি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর জন্য পর্দার ব্যবস্থা করেন তাহলে তিনি উম্মাহাতুল মু’মিনীনেরই একজন বোঝা যাবে।আর পর্দার ব্যবস্থা না করলে ক্রীতদাসী হিসেবেই বুঝতে হবে। এরপর যখন তিনি [নবী কারীম (ﷺ)] রওয়ানা দিলেন তখন তিনি নিজের পেছনে সাফিয়্যা (রাযিঃ)-এর জন্য বসার জায়গা করে দিয়ে পর্দা টানিয়ে দিলেন।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4213 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدٌ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «أَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ خَيْبَرَ، وَالمَدِينَةِ ثَلاَثَ لَيَالٍ يُبْنَى عَلَيْهِ بِصَفِيَّةَ» ، فَدَعَوْتُ المُسْلِمِينَ إِلَى وَلِيمَتِهِ، وَمَا كَانَ فِيهَا مِنْ خُبْزٍ وَلاَ لَحْمٍ، وَمَا كَانَ فِيهَا إِلَّا أَنْ أَمَرَ بِلاَلًا بِالأَنْطَاعِ فَبُسِطَتْ، فَأَلْقَى عَلَيْهَا التَّمْرَ وَالأَقِطَ وَالسَّمْنَ، فَقَالَ المُسْلِمُونَ: إِحْدَى أُمَّهَاتِ المُؤْمِنِينَ، أَوْ مَا مَلَكَتْ يَمِينُهُ؟ قَالُوا: إِنْ حَجَبَهَا فَهِيَ إِحْدَى أُمَّهَاتِ المُؤْمِنِينَ، وَإِنْ لَمْ يَحْجُبْهَا فَهِيَ مِمَّا مَلَكَتْ يَمِينُهُ، فَلَمَّا ارْتَحَلَ وَطَّأَ لَهَا خَلْفَهُ، وَمَدَّ الحِجَابَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৮৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১৪
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৮৯৯। আবুল ওয়ালীদ ও আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খায়বারের দুর্গ অবরোধ করে রাখলাম, এমন সময়ে এক ব্যক্তি একটি থলে নিক্ষেপ করল। তাতে ছিল কিছু চর্বি। আমি সেটি কুড়িয়ে নেয়ার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসলাম, হঠাৎ পেছনে ফিরে তাকাতেই দেখলাম নবী কারীম (ﷺ) (আমার দিকে তাকিয়ে আছেন) তাই আমি লজ্জিত হয়ে গেলাম।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4214 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَهْبٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كُنَّا مُحَاصِرِي خَيْبَرَ، فَرَمَى إِنْسَانٌ بِجِرَابٍ فِيهِ شَحْمٌ، فَنَزَوْتُ لِآخُذَهُ، فَالْتَفَتُّ فَإِذَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَحْيَيْتُ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯০০
আন্তর্জাতিক নং: ৪২১৫
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৯০০। উবাইদ ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রসুন এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি রসুন খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি কেবল নাফি থেকে বর্ণিত হয়েছে, আর গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি সালিম [ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ)] থেকে বর্ণিত হয়েছে।
كتاب المغازى
باب غَزْوَةُ خَيْبَرَ
4215 - حَدَّثَنِي عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، وَسَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «نَهَى يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ أَكْلِ الثُّومِ، وَعَنْ لُحُومِ الحُمُرِ الأَهْلِيَّةِ» نَهَى عَنْ أَكْلِ الثُّومِ «هُوَ عَنْ نَافِعٍ وَحْدَهُ،» وَلُحُومِ الحُمُرِ الأَهْلِيَّةِ " عَنْ سَالِمٍ
তাহকীক: