আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৪০০৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪১
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০০৫। মুসা (রাহঃ) .... আবু বুরদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু মুসা এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, তৎকালে ইয়ামানে দু’টি প্রদেশ ছিলো। তিনি তাদের প্রত্যেককে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে বলে দিলেন, তোমরা (এলাকাবাসীদের সাথে) কোমল আচরণ করবে, কঠিন আচরণ করবে না। এলাকাবাসীদের মনে সুসংবাদের মাধ্যমে উৎসাহ সৃষ্টি করবে, অনীহা সৃষ্টি হতে দেবে না। এরপর তাঁরা দু’জনে নিজ নিজ শাসন এলাকায় চলে গেলেন। আবু বুরদা (রাযিঃ) বললেন, তাঁদের প্রত্যেকেই যখন নিজ নিজ এলাকায় সফর করতেন এবং অন্যজনের কাছাকাছি স্থানে পৌঁছে যেতেন তখন তাঁর সাথে সাক্ষাত হলে তাদের সালাম বিনিময় করতেন।
এভাবে মু‘আয (রাযিঃ) একবার তাঁর এলাকায় এমন স্থানে সফর করছিলেন, যে স্থানটি তাঁর সাথী আবু মুসা (রাযিঃ)- এর এলাকার নিকটবর্তী ছিল। সুযোগ পেয়ে তিনি খচ্চরের পিঠে চড়ে (আবু মুসার এলাকায়) পৌঁছে গেলেন। তখন তিনি দেখলেন যে, আবু মুসা (রাযিঃ) বসে আছেন আর তাঁর চারপাশে অনেক লোক জমায়েত হয়ে রয়েছে। আরো দেখলেন, পাশে এক লোককে তার গলার সাথে উভয় হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। মু‘আয (রাযিঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে কায়স (আবু মুসা), এ লোকটি কে? তিনি উত্তর দিলেন, এ লোকটি ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে।
মু‘আয (রাযিঃ) বললেন, তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি সওয়ারী থেকে অবতরণ করবো না। আবু মুসা (রাযিঃ) বললেন, এ উদ্দেশ্যেই তাকে এখানে আনা হয়েছে। সুতরাং আপনি অবতরণ করুন। তিনি বললেন, না তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি নামবো না। ফলে আবু মুসা (রাযিঃ) হুকুম করলেন এবং লোকটিকে হত্যা করা হল। এরপর মু‘আয (রাযিঃ) অবতরণ করলেন। মু‘আয (রাযিঃ) বললেন, ওহে আব্দুল্লাহ! আপনি কিভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি বললেন, আমি (রাত-দিনের সব সময়ই) কিছুক্ষণ পরপর কিছু অংশ করে তেলাওয়াত করে থাকি। তিনি বললেন, আর আপনি কিভাবে তিলাওয়াত করেন, হে মু‘আয? উত্তরে তিনি বললেন, আমি রাতের প্রথম ভাগে শুয়ে পড়ি এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিদ্রা যাওয়ার পর আমি উঠে পড়ি। এরপর আল্লাহ্ আমাকে যতটুকু তাওফীক দান করেন তিলাওয়াত করতে থাকি। এ পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য আমি আমার নিদ্রার অংশকেও সাওয়াবের বিষয় বলে মনে করি, যেভাবে আমি আমার তিলাওয়াতকে সাওয়াবের বিষয় বলে মনে করে থাকি।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4341 - حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ المَلِكِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبَا مُوسَى، وَمُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ إِلَى اليَمَنِ، قَالَ: وَبَعَثَ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى مِخْلاَفٍ، قَالَ: وَاليَمَنُ مِخْلاَفَانِ، ثُمَّ قَالَ: «يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا، وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا» ، فَانْطَلَقَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِلَى عَمَلِهِ، وَكَانَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِذَا سَارَ فِي أَرْضِهِ كَانَ قَرِيبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَحْدَثَ بِهِ عَهْدًا، فَسَلَّمَ عَلَيْهِ، فَسَارَ مُعَاذٌ فِي أَرْضِهِ قَرِيبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَبِي مُوسَى، فَجَاءَ يَسِيرُ عَلَى بَغْلَتِهِ حَتَّى انْتَهَى إِلَيْهِ، وَإِذَا هُوَ جَالِسٌ، وَقَدِ اجْتَمَعَ إِلَيْهِ النَّاسُ وَإِذَا رَجُلٌ عِنْدَهُ قَدْ جُمِعَتْ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ، فَقَالَ لَهُ مُعَاذٌ: يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسٍ أَيُّمَ هَذَا؟ قَالَ: هَذَا رَجُلٌ كَفَرَ بَعْدَ إِسْلاَمِهِ، قَالَ: لاَ أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ، قَالَ: إِنَّمَا جِيءَ بِهِ لِذَلِكَ فَانْزِلْ، قَالَ: مَا أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ، فَأَمَرَ بِهِ فَقُتِلَ، ثُمَّ نَزَلَ فَقَالَ: يَا عَبْدَ اللَّهِ، كَيْفَ تَقْرَأُ القُرْآنَ؟ قَالَ: أَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا، قَالَ: فَكَيْفَ تَقْرَأُ أَنْتَ يَا مُعَاذُ؟ قَالَ: أَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ، فَأَقُومُ وَقَدْ قَضَيْتُ جُزْئِي مِنَ النَّوْمِ، فَأَقْرَأُ مَا كَتَبَ اللَّهُ لِي، فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِي كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِي
হাদীস নং: ৪০০৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪৩
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০০৬। ইসহাক (রাহঃ) .... আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে (আবু মুসাকে গভর্নর নিযুক্ত করে) ইয়ামানে পাঠিয়েছেন। তখন তিনি ইয়ামানে তৈরী করা হয় এমন কতিপয় শরাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ঐগুলো কি কি? আবু মুসা (রাযিঃ) বললেন, তা হল বিত্উ ও মিযর শরাব। বর্ণনাকারী সাঈদ (রাহঃ) বলেন, (কথার ফাঁকে) আমি আবু বুরদাকে জিজ্ঞাসা করলাম, বিত্উ কি? তিনি বললেন, বিত্উ হল মধু থেকে গ্যাজানো রস, আর মিযর হল যবের গ্যাজানো রস। (সাঈদ বলেন) তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, সকল নেশা উৎপাদক বস্তুই হারাম। হাদীসটি জারীর এবং আব্দুল ওয়াহিদ শায়বানী (রাহঃ)- এর মাধ্যমে আবু বুরদা (রাযিঃ) সূত্রেও বর্ণনা করেছেন।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4343 - حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَهُ [ص:162] إِلَى اليَمَنِ، فَسَأَلَهُ عَنْ أَشْرِبَةٍ تُصْنَعُ بِهَا، فَقَالَ: «وَمَا هِيَ؟» قَالَ: البِتْعُ وَالمِزْرُ، فَقُلْتُ لِأَبِي بُرْدَةَ: مَا البِتْعُ؟ قَالَ: نَبِيذُ العَسَلِ، وَالمِزْرُ نَبِيذُ الشَّعِيرِ، فَقَالَ: «كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ» رَوَاهُ جَرِيرٌ، وَعَبْدُ الوَاحِدِ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ
হাদীস নং: ৪০০৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪৪
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০০৭। মুসলিম (রাহঃ) .... আবু বুরদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তার দাদা আবু মুসা ও মু‘আয (রাযিঃ)- কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (গভর্নর হিসেবে) ইয়ামানে পাঠালেন। এ সময় তিনি (উপদেশ স্বরূপ) বলে দিয়েছিলেন, তোমরা লোকজনের সাথে কোমল আচরণ করবে। কখনো কঠিন আচরণ করবে না। মানুষের মনে সুসংবাদের মাধ্যমে উৎসাহ সৃষ্টি করবে। কখনো তাদের মনে অনীহা আসতে দিবে না এবং একে অপরকে মেনে চলবে। আবু মুসা বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমাদের এলাকায় মিযর নামের এক প্রকার শরাব যব থেকে তৈরী হয় আর বিত্উ নামের এক প্রকার শরাব মধু থেকে তৈরী করা হয় (অতএব এগুলোর হুকুম কি?)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, নেশা উৎপাদনকারী সকল বস্তুই হারাম।
এরপর দু’জনেই চলে গেলেন। মু‘আয আবু মুসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কিভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি উত্তর দিলেন, দাঁড়িয়ে, বসে, সওয়ারীর পিঠে সওয়ার অবস্থায় এবং কিছুক্ষণ পরপরই তিলাওয়াত করি। তিনি বললেন, তবে আমি রাতের প্রথমদিকে ঘুমিয়ে পড়ি তারপর (শেষ ভাগে তিলাওয়াতের জন্য নামাযে দাঁড়িয়ে যাই। এ রকমে আমি আমার নিদ্রার সময়কেও সাওয়াবের অন্তর্ভুক্ত মনে করি, যেভাবে আমি আমার নামাযে দাঁড়ানোকে সাওয়াবের বিষয় মনে করে থাকি।
এরপর (প্রত্যেকেই নিজ নিজ শাসন এলাকায় কার্য পরিচালনার জন্য) তাঁবু খাটালেন। এবং পরস্পরের সাক্ষাত বজায় রেখে চললেন। (সে মতে এক সময়) মু‘আয (রাযিঃ) আবু মুসা (রাযিঃ)- এর সাক্ষাতে এসে দেখলেন, সেখানে এক ব্যক্তি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ লোকটি কে? আবু মুসা (রাযিঃ) বললেন, লোকটি ইয়াহুদী ছিলো, ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে। মু‘আয (রাযিঃ) বললেন, আমি ওর গর্দান উড়িয়ে দেবো।
শু‘বা (ইবনুল হাজ্জাজ) থেকে আফাদী এবং ওয়াহাব অনু্রূপ বর্ণনা করেছে।
আর ওকী (রাহঃ) নযর ও আবু দাউদ (রাহঃ) এ হাদীসের সনদে শু‘বা (রাহঃ)-সাঈদ-সাঈদের পিতা- সাঈদের দাদা নবী কারীম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি জারীর ইবনে আব্দুল হামীদ (রাহঃ) শায়বানী (রাহঃ)- এর মাধ্যমে আবু বুরদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4344 - حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: بَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَدَّهُ أَبَا مُوسَى وَمُعَاذًا إِلَى اليَمَنِ، فَقَالَ: «يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا، وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا وَتَطَاوَعَا» ، فَقَالَ أَبُو مُوسَى: يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّ أَرْضَنَا بِهَا شَرَابٌ مِنَ الشَّعِيرِ المِزْرُ، وَشَرَابٌ مِنَ العَسَلِ البِتْعُ، فَقَالَ: «كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ» . فَانْطَلَقَا، فَقَالَ مُعَاذٌ لِأَبِي مُوسَى: كَيْفَ تَقْرَأُ القُرْآنَ؟ قَالَ: قَائِمًا وَقَاعِدًا وَعَلَى رَاحِلَتِي، وَأَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا، قَالَ: أَمَّا أَنَا فَأَنَامُ وَأَقُومُ، فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِي كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِي، وَضَرَبَ فُسْطَاطًا، فَجَعَلاَ يَتَزَاوَرَانِ، فَزَارَ مُعَاذٌ أَبَا مُوسَى فَإِذَا رَجُلٌ مُوثَقٌ، فَقَالَ: مَا هَذَا؟ فَقَالَ أَبُو مُوسَى: يَهُودِيٌّ أَسْلَمَ ثُمَّ ارْتَدَّ، فَقَالَ مُعَاذٌ: لَأَضْرِبَنَّ عُنُقَهُ تَابَعَهُ العَقَدِيُّ، وَوَهْبٌ، عَنْ شُعْبَةَ، وَقَالَ وَكِيعٌ، وَالنَّضْرُ، وَأَبُو دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَوَاهُ جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ الحَمِيدِ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ
হাদীস নং: ৪০০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪৬
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০০৮। আব্বাস ইবনে ওয়ালীদ (রাহঃ) .... আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে আমার গোত্রের এলাকায় (গভর্নর নিযুক্ত করে) পাঠালেন। (আমি সেখানেই রয়ে গেলাম। এরপর বিদায় হজ্জের বছর আমিও হজ্জ করার জন্য আসলাম)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবতাহ নামক স্থানে অবস্থান করার সময় আমি তাঁর সাক্ষাতে উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে কাইস, তুমি ইহরাম বেঁধেছ কি? আমি বললাম, জ্বী, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, (তালবিয়া) কিরূপে বলেছিলে? আমি উত্তর দিলাম, আমি তালবিয়া এরূপ বলেছি যে, হে আল্লাহ্, আমি হাজির হয়েছি এবং আপনার [নবী (ﷺ)- এর] ইহরামের মতো ইহরাম বাঁধলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা, তুমি কি তোমার সঙ্গে কুরবানীর পশু এনেছ? আমি জবাব দিলাম, আনিনি। তিনি বললেন, (ঠিক আছে) বায়তুল্লাহ্ তাওয়াফ করো এবং সাফা ও মারওয়ার সা‘ঈ আদায় করো, তারপর হালাল হয়ে যাও। আমি সে রকমই করলাম। এমন কি বনী কাইসের জনৈক মহিলা আমার চুল পর্যন্ত আঁচড়িয়ে দিয়েছিলো। আমি উমর (ইবনে খাত্তাব) (রাযিঃ)- এর খিলাফত আমল পর্যন্ত এ রকম আমলকেই অব্যাহত রেখেছি।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4346 - حَدَّثَنِي عَبَّاسُ بْنُ الوَلِيدِ هُوَ النَّرْسِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ عَائِذٍ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ طَارِقَ بْنَ شِهَابٍ، يَقُولُ: حَدَّثَنِي أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَرْضِ قَوْمِي، فَجِئْتُ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُنِيخٌ بِالأَبْطَحِ، فَقَالَ: «أَحَجَجْتَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسٍ» قُلْتُ: نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «كَيْفَ قُلْتَ؟» قَالَ: قُلْتُ: لَبَّيْكَ إِهْلاَلًا كَإِهْلاَلِكَ، قَالَ: «فَهَلْ سُقْتَ مَعَكَ هَدْيًا» قُلْتُ: لَمْ أَسُقْ، قَالَ: «فَطُفْ بِالْبَيْتِ، وَاسْعَ بَيْنَ الصَّفَا وَالمَرْوَةِ، ثُمَّ حِلَّ» . فَفَعَلْتُ حَتَّى مَشَطَتْ لِي امْرَأَةٌ مِنْ نِسَاءِ بَنِي قَيْسٍ، وَمَكُثْنَا بِذَلِكَ حَتَّى اسْتُخْلِفَ عُمَرُ
হাদীস নং: ৪০০৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪৭
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০০৯। হিব্বান (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মু‘আয ইবনে জাবালকে (গভর্নর বানিয়ে) ইয়ামানে পাঠানোর সময় তাঁকে বললেন, অচিরেই তুমি আহলে কিতাবদের এক গোত্রের কাছে যাচ্ছ। যখন তুমি তাদের কাছে গিয়ে পৌঁছবে তখন তাদেরকে এ দাওয়াত দেবে তারা যেন সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল’ এরপর তারা যদি তোমার এ কথা মেনে নেয়, তখন তাদেরকে এ কথা জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ্ তোমাদের উপর দিনে ও রাতে পাঁচবার নামায ফরয করে দিয়েছেন। তারা তোমার এ কথা মেনে নিলে তুমি তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ্ তোমাদের উপর যাকাত ফরয করে দিয়েছেন, যা তাদের (মুসলমানদের) সম্পদশালীদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের অভাবগ্রস্থদের মাঝে বিতরন করা হবে। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়, তা হলে (তাদের সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহণ করার সময়) তাদের মালের উৎকৃষ্টতম অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। মজলুমের বদদু'আকে ভয় করবে, কেননা মজলুমের বদদু'আ এবং আল্লাহর মাঝখানে কোন পর্দার আড়াল থাকে না। আবু আব্দুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রাহঃ)] বলেন, طَوَّعَتْ - طَاعَتْ এবং أَطَاعَتْ সমার্থবোধক শব্দ, طِعْتُ - طُعْتُ এবং أَطَعْتُ এর অর্থ একই।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4347 - حَدَّثَنِي حِبَّانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَيْفِيٍّ، عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ حِينَ بَعَثَهُ إِلَى اليَمَنِ: «إِنَّكَ سَتَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الكِتَابِ، فَإِذَا جِئْتَهُمْ فَادْعُهُمْ إِلَى أَنْ يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ [ص:163]، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ، فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ، فَإِنْ هُمْ طَاعُوا لَكَ بِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ، وَاتَّقِ دَعْوَةَ المَظْلُومِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ» قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ: طَوَّعَتْ طَاعَتْ، وَأَطَاعَتْ لُغَةٌ، طِعْتُ وَطُعْتُ وَأَطَعْتُ
হাদীস নং: ৪০১০
আন্তর্জাতিক নং: ৪৩৪৮
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২২৪. বিদায় হজ্জের পূর্বে আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) এবং মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযিঃ)- কে ইয়ামানের উদ্দেশ্যে প্রেরণ
৪০১০। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... আমর ইবনে মায়মুন (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, মু‘আয (ইবনে জাবাল) (রাযিঃ) ইয়ামানে পৌঁছার পর লোকজনকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করতে গিয়ে তিনি وَاتَّخَذَ اللَّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلاً (অর্থাৎ, আল্লাহ্ ইবরাহীমকে বন্ধু বানিয়ে নিলেন) আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন। তখন কওমের এক ব্যক্তি বলে উঠলো, ইবরাহীমের মায়ের চোখ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। মু‘আয (ইবনে মু‘আয বসরী), শু‘বা-হাবীব-সাঈদ (রাহঃ) আমর (রাযিঃ) থেকে এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মু‘আয (ইবনে জাবাল) (রাযিঃ)- কে ইয়ামানে পাঠালেন। (সেখানে পৌঁছে) মু‘আয (রাযিঃ) ফজরের নামায সূরা নিসা তিলাওয়াত করলেন। যখন তিনি (তিলাওয়াত করতে করতে) وَاتَّخَذَ اللَّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلاً পাঠ করলেন তখন তাঁর পেছন থেকে জনৈক ব্যক্তি বলে উঠলো ইবরাহীমের মায়ের চোখ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।
كتاب المغازى
بَابُ بَعْثُ أَبِي مُوسَى وَمُعَاذٍ إِلَى الْيَمَنِ قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ
4348 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، أَنَّ مُعَاذًا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، لَمَّا قَدِمَ اليَمَنَ، صَلَّى بِهِمُ الصُّبْحَ، فَقَرَأَ: " {وَاتَّخَذَ اللَّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا} [النساء: 125] فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: لَقَدْ قَرَّتْ عَيْنُ أُمِّ إِبْرَاهِيمَ " زَادَ مُعَاذٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ حَبِيبٍ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى اليَمَنِ، فَقَرَأَ مُعَاذٌ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ سُورَةَ النِّسَاءِ، فَلَمَّا قَالَ: {وَاتَّخَذَ اللَّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا} [النساء: 125] قَالَ رَجُلٌ خَلْفَهُ: قَرَّتْ عَيْنُ أُمِّ إِبْرَاهِيمَ
tahqiq

তাহকীক: