আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৬৫- অনুমতি গ্রহণ - প্রদান সংক্রান্ত - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৫৭৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬২২৮
- অনুমতি গ্রহণ - প্রদান সংক্রান্ত
৩২৯২. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে, যে পর্যন্ত সে ঘরের লোকেরা অনুমতি না দেবে এবং তোমরা গৃহবাসীকে সালাম না করবে, প্রবেশ করো না। এ ব্যবস্থা তোমাদের জন্য অতি কল্যাণকর, যাতে তোমরা নসীহত গ্রহণ কর। যদি তোমরা সে ঘরে কাউকে জবাবদাতা না পাও, তবে তোমাদের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তাতে প্রবেশ করবে না। যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্য পবিত্রতম কাজ। আর তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আল্লাহ বিশেষ অবহিত। অবশ্য যেসব ঘরে কেউ বসবাস করে না, আর তাতে যদি তোমাদের মাল আসবাব থাকে, সেসব ঘরে প্রবেশ করলে তোমাদের কোন গুনাহ হবে না। তোমরা প্রকাশ্যে অথবা গোপনে যা কিছুই কর না কেন, তা সবই আল্লাহ জানেন (নূরঃ ২৮)।
সাঈদ ইবনে আবুল হাসান রাহঃ হাসান (রাঃ) কে বললেনঃ অনারব মহিলারা তাদের মাথা ও বক্ষ খোলা রাখে। তিনি বললেনঃ তোমার চোখ ফিরিয়ে রেখো।
আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে নবী! আপনি ঈমানদার পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত করে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে (নূরঃ ৩০)। –কাতাদা (রাহঃ) বলেন, অর্থাৎ যারা তাদের জন্য হালাল নয়, তাদের থেকে– হে নবী! আপনি ঈমানদার মহিলাদেরকেও বলে দিন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে (নূরঃ ৩১)।
আর আল্লাহ তাআলার বাণীঃ خَائِنَةَ الأَعْيُنِ (অর্থাৎ খেয়ানতকারী চোখ) অর্থাৎ নিষিদ্ধ স্থানের দিকে তাকানো সম্পর্কে। আর ঋতুবতী হয়নি, এমন মেয়েদের দিকে তাকানো সম্পর্কে ইমাম যুহরী (রাহঃ) বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্কা হলেও এসব মেয়েদের এমন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দিকে তাকানো নাজায়েয, যা দেখলে বাসনা সৃষ্টি হতে পারে।
আতা ইবনে আবু রাবাহ রাহঃ ঐসব বাঁদীর দিকে তাকানোও মাকরূহ বলতেন, যাদের মক্কার বাজারে বিক্রির জন্য আনা হতো, তবে কেনার উদ্দেশ্যে হলে তা স্বতন্ত্র কথা।
৫৭৯৫। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী ﷺ কুরবানীর দিনে ফযল ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) কে আপন সওয়ারীর পিঠে নিজের পেছনে বসালেন। ফযল (রাযিঃ) একজন সুদর্শন ব্যক্তি ছিলেন। নবী (ﷺ) লোকদের মাসায়েল বাতলে দেওয়ার জন্য আসলেন। এ সময় খাশআম গোত্রের একজন সুন্দরী মহিলা রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এর নিকট একটা মাসআলা জিজ্ঞাসা করার জন্য আসল। তখন ফযল (রাযিঃ) তার দিকে তাকাতে লাগলেন। মহিলাটির সৌন্দর্য তাকে আকৃষ্ট করল। নবী (ﷺ) ফযল (রাযিঃ) এর দিকে ফিরে দেখলেন যে, ফযল তার দিকে তাকাচ্ছেন। তিনি নিজের হাত পেছনের দিকে নিয়ে ফযল (রাযিঃ) এর চিবুক ধরে ঐ মহিলার দিকে না তাকানোর জন্য তার চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর মহিলাটি জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তার বান্দাদের উপর যে হজ্জ ফরয হওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে, আমার পিতার উপর তা এমন অবস্থায় এসেছে যে, বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে সওয়ারীর উপর বসতে তিনি সক্ষম নন। যদি আমি তার তরফ থেকে হজ্জ আদায় করে নেই, তবে কি তার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
كتاب الاستئذان
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا، وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَّكَّرُونَ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلاَ تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ، وَإِنْ قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ، وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ، لَيْسَ [ص:51] عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ مَسْكُونَةٍ فِيهَا مَتَاعٌ لَكُمْ، وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ} [النور: 28] وَقَالَ سَعِيدُ بْنُ أَبِي الحَسَنِ، لِلْحَسَنِ: إِنَّ نِسَاءَ العَجَمِ يَكْشِفْنَ صُدُورَهُنَّ وَرُءُوسَهُنَّ؟ قَالَ: «اصْرِفْ بَصَرَكَ عَنْهُنَّ» ، قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: {قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ} [النور: 30] وَقَالَ قَتَادَةُ: " عَمَّا لاَ يَحِلُّ لَهُمْ {وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ} [النور: 31] {خَائِنَةَ الأَعْيُنِ} [غافر: 19] : مِنَ النَّظَرِ إِلَى مَا نُهِيَ عَنْهُ " وَقَالَ الزُّهْرِيُّ: فِي النَّظَرِ إِلَى الَّتِي لَمْ تَحِضْ مِنَ النِّسَاءِ: لاَ يَصْلُحُ النَّظَرُ إِلَى شَيْءٍ مِنْهُنَّ، مِمَّنْ يُشْتَهَى النَّظَرُ إِلَيْهِ، وَإِنْ كَانَتْ صَغِيرَةً وَكَرِهَ عَطَاءٌ، النَّظَرَ إِلَى الجَوَارِي الَّتِي يُبَعْنَ بِمَكَّةَ إِلَّا أَنْ يُرِيدَ أَنْ يَشْتَرِيَ
6228 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: أَرْدَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ يَوْمَ النَّحْرِ خَلْفَهُ عَلَى عَجُزِ رَاحِلَتِهِ، وَكَانَ الفَضْلُ رَجُلًا وَضِيئًا، فَوَقَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلنَّاسِ يُفْتِيهِمْ، وَأَقْبَلَتِ امْرَأَةٌ مِنْ خَثْعَمَ وَضِيئَةٌ تَسْتَفْتِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَطَفِقَ الفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا، وَأَعْجَبَهُ حُسْنُهَا، فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا، فَأَخْلَفَ بِيَدِهِ فَأَخَذَ بِذَقَنِ الفَضْلِ، فَعَدَلَ وَجْهَهُ عَنِ النَّظَرِ إِلَيْهَا، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ فَرِيضَةَ اللَّهِ فِي الحَجِّ عَلَى عِبَادِهِ، أَدْرَكَتْ أَبِي شَيْخًا كَبِيرًا، لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْتَوِيَ عَلَى الرَّاحِلَةِ، فَهَلْ يَقْضِي عَنْهُ أَنْ أَحُجَّ عَنْهُ؟ قَالَ: «نَعَمْ»
হাদীস নং: ৫৭৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৬২২৯
- অনুমতি গ্রহণ - প্রদান সংক্রান্ত
৩২৯২. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে, যে পর্যন্ত সে ঘরের লোকেরা অনুমতি না দেবে এবং তোমরা গৃহবাসীকে সালাম না করবে, প্রবেশ করো না.........(সূরা নূর)।
৫৭৯৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নবী (ﷺ) বললেনঃ তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। তারা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের রাস্তায় বসা ছাড়া গত্যন্তর নেই, আমরা সেখানে কথাবার্তা বলি। তিনি বললেনঃ যদি তোমাদের রাস্তায় মজলিস করা ছাড়া উপায় না থাকে, তবে তোমরা রাস্তার হক আদায় করবে। তারা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাস্তার হক কি? তিনি বললেনঃ তা হল, চোখ অবনত রাখা, কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। সালামের জবাব দেওয়া এবং সৎকাজের নির্দেশ দেওয়া আর অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা।
كتاب الاستئذان
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا، وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَّكَّرُونَ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلاَ تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ، وَإِنْ قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ، وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ،
6229 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِيَّاكُمْ وَالجُلُوسَ بِالطُّرُقَاتِ» فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا لَنَا مِنْ مَجَالِسِنَا بُدٌّ نَتَحَدَّثُ فِيهَا، فَقَالَ: «إِذْ أَبَيْتُمْ إِلَّا المَجْلِسَ، فَأَعْطُوا الطَّرِيقَ حَقَّهُ» قَالُوا: وَمَا حَقُّ الطَّرِيقِ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «غَضُّ البَصَرِ، وَكَفُّ الأَذَى، وَرَدُّ السَّلاَمِ، وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ، وَالنَّهْيُ عَنِ المُنْكَرِ»