মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১১ টি

হাদীস নং: ১১৯৪
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : যখন তোমাদের কেহ রাতে উঠে, তখন সে যেন দুই রাকআত সংক্ষিপ্ত নামায দ্বারা (নামায) আরম্ভ করে। মুসলিম
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَفْتَحِ الصَّلَاة بِرَكْعَتَيْنِ خفيفتين. رَوَاهُ مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১১৯৫
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৫। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একবার আমি আমার খালা 'উন্মুল মু'মিনীন' হযরত মায়মুনার গৃহে রাত্রি যাপন করিলাম, আর নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সেই রাতে তাঁহার গৃহেই ছিলেন। তিনি (এশার পর) তাহার পরিবারের সহিত কিছু সময় আলাপ করিলেন, অতঃপর নিদ্রা গেলেন। যখন রাত্রির শেষ তৃতীয়াংশ অথবা উহার কিয়দাংশ অবশিষ্ট রহিল, তিনি উঠিয়া বসিলেন। অতঃপর আকাশের দিকে দৃষ্টি করিয়া এই আয়াত পাঠ করিতে লাগিলেন

“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত্র-দিনের পরিবর্তনের মধ্যে জ্ঞানবানগণের জন্য নিদর্শনসমূহ রহিয়াছে।" —এমন কি তিনি সূরা (আলে ইমরান) শেষ করিয়া ফেলিলেন। অতঃপর তিনি মশকের দিকে গেলেন এবং উহার মুখের রশি খুলিয়া দিলেন। তৎপর একটি বড় পেয়ালায় পানি ঢালিলেন এবং পানি কম ও বেশী ব্যয় না করিয়া উত্তমরূপে ওযু করিলেন। অর্থাৎ, পানি অতিরিক্ত ব্যয় করিলেন না, অথচ ওযূর সর্বাঙ্গে পানি পৌঁছাইলেন। ইহার পর দাঁড়াইলেন এবং নামায পড়িতে আরম্ভ করিলেন। এসময় আমি উঠিলাম এবং ওযু করিয়া তাহার বাম পার্শ্বে দাড়াইয়া গেলাম। তখন হুযুর আমার কান ধরিলেন এবং ঘুরাইয়া আমাকে তাঁহার ডান পার্শ্বে লইয়া গেলেন। দেখিলাম, তাহার নামায (বিতিরসহ) তের রাকআতে সমাপ্ত হইল। অতঃপর (ডান) পার্শ্বে শয়ন করিলেন এবং ঘুমাইয়া পড়িলেন, যাহাতে তাহার নাক ডাকা আরম্ভ হইল—তিনি যখন ঘুমাইতেন তাহার নাক ডাকিত। অতঃপর হযরত বেলাল আসিয়া তাহাকে ফজরের নামাযের কথা স্মরণ করাইয়া দিলেন। তখন তিনি উঠিয়া নামায পড়িলেন, অথচ ওযু করিলেন না। এসময় ফজরের সুন্নত ও ফরযের মধ্যবর্তীকালে তাহার দোআ ছিল এইরূপ- "আল্লাহ্! তুমি সৃষ্টি কর আমার অন্তরে নূর (আলো), আমার চোখে নূর, আমার কানে নূর, আমার ডান দিকে নূর, আমার বাম দিকে নূর, আমার উপরে নূর, আমার নীচে নূর, আমার সম্মুখে নূর, আমার পিছনে নূর। আল্লাহ, তুমি আমার জন্য সৃষ্টি কর নূর।"

কোন কোন রাবী (হাদীসের অংশরূপে) ইহা অধিক বলিয়াছেন, "আর আমার জিহ্বায় নূর” এবং আরও অধিক বলিয়াছেন, "আমার শিরা-উপশিরায়, আমার গোশতে, আমার রক্তে, আমার পশমে ও আমার চর্মে (নূর)।" এ পর্যন্ত বোখারী ও মুসলিম এক রাবী হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাহাদের অপর বর্ণনায় অপর রাবী প্রমুখাৎ রহিয়াছে, “(আল্লাহ্) সৃষ্টি কর তুমি আমার প্রাণে নূর এবং মহান কর আমার নূর।" মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় রহিয়াছে, “(আল্লাহ্!) আমাকে দান কর নূর।
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ لَيْلَةً وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَهَا فَتَحَدَّثَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ أَوْ بَعْضُهُ قَعَدَ فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَرَأَ: (إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْل وَالنَّهَار لآيَات لأولي الْأَلْبَاب حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الْقِرْبَةِ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ صَبَّ فِي الْجَفْنَةِ ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا حَسَنًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ لَمْ يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ وَتَوَضَّأْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَتَتَامَّتْ صَلَاتُهُ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ فَآذَنَهُ بِلَالٌ بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ وَكَانَ فِي دُعَائِهِ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وتحتي نورا وأمامي نورا وَخَلْفِي نُورًا وَاجْعَلْ لِي نُورًا» وَزَادَ بَعْضُهُمْ: «وَفِي لِسَانِي نُورًا» وَذُكِرَ: وَعَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشِعَرِي وبشري)

وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: «وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا وَأَعْظِمْ لِي نُورًا» وَفِي أُخْرَى لِمُسْلِمٍ: «اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نورا»
হাদীস নং: ১১৯৬
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৬। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি একবার রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শয়ন করিলেন। তিনি জাগরিত হইলেন এবং মেসওয়াক ও ওযু করিলেন, আর এই আয়াত পাঠ করিলেন, "আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে? —এমন কি সূরা শেষ করিলেন। অতঃপর নামাযের জন্য দাড়াইলেন এবং দুই রাকআত নামায পড়িলেন—যাহাতে কেয়াম, রুকু ও সজদা দীর্ঘ করিলেন। নামায শেষ করিয়া তিনি পুনঃ নিদ্রা গেলেন—যাহাতে তাহার নাক ডাকিতে লাগিল। এইরূপ তিনি তিনবার করিলেন— যাহাতে নামায ছয় রাকআত হইল। প্রত্যেকবারই তিনি মেসওয়াক করিলেন, ওযু করিলেন এবং সেই আয়াতসমূহ পাঠ করিলেন। অতঃপর তিন রাকআত দ্বারা বিতির সমাপ্ত করিলেন।
- মুসলিম
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَنْهُ: أَنَّهُ رَقَدَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَيْقَظَ فَتَسَوَّكَ وَتَوَضَّأَ وَهُوَ يَقُول: (إِن فِي خلق السَّمَاوَات وَالْأَرْض. . .)

حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ أَطَالَ فِيهِمَا الْقِيَامَ وَالرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ثُمَّ انْصَرَفَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ثُمَّ فَعَلَ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ سِتَّ رَكَعَاتٍ كُلُّ ذَلِكَ يَسْتَاكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيَقْرَأُ هَؤُلَاءِ الْآيَاتِ ثُمَّ أَوْتَرَ بِثَلَاثٍ. رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ১১৯৭
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৭। হযরত যায়দ ইবনে খালেদ জুহানী (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একদা তিনি বলিলেন, অদ্য রাতে নিশ্চয় আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায পড়ার নিয়ম লক্ষ্য করিব। দেখিলেন, তিনি দুই রাকআত নামায পড়িলেন সংক্ষিপ্ত, অতঃপর দুই রাকআত পড়িলেন——দীর্ঘ, দীর্ঘ, দীর্ঘ। অতঃপর দুই রাকআত পড়িলেন ইহা অপেক্ষা খাট, আবার দুই রাকআত পড়িলেন ইহা অপেক্ষা খাট, অতঃপর দুই রাকআত পড়িলেন ইহা অপেক্ষাও খাট।

অতঃপর বিতির পড়িলেন— যাহাতে নামায মোট তের রাকআত হইল। (মেশকাতের মূল কিতাব 'মাসাবীহ্'তে দীর্ঘ দুই রাকআতের পর দুই দুই রাকআত করিয়া তিনবার পড়ারই উল্লেখ রহিয়াছে যাহাতে নামায মোট ১১ রাকআত হয়। মেশকাত প্রণেতা বলেন, কিন্তু মূল মুসলিম শরীফ, হুমাইদীর কিতাব (الجمع بين الصحيحين) জামেউল উসূল, মোয়াত্তায়ে মালেক ও সুনানে আবু দাউদ শরীফে ৪ বারেরই উল্লেখ রহিয়াছে— যাহাতে মোট নামায ১৩ রাকাত হয়)।
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَن زيد بن خَالِد الْجُهَنِيّ أَنَّهُ قَالَ: لَأَرْمُقَنَّ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّيْلَةَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ طَوِيلَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا [ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَهُمَا دُونَ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا] ثُمَّ أَوْتَرَ فَذَلِكَ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

قَوْله: ثمَّ صلى رَكْعَتَيْنِ وهما دون اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ هَكَذَا فِي صَحِيحِ مُسْلِمٍ وأفراده من كتاب الْحميدِي وموطأ مَالك وَسنَن أبي دَاوُد وجامع الْأُصُول
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১১৯৮
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৮। হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের বয়স বেশী হইল এবং শরীর ভারী হইয়া গেল, তখন তিনি তাহার অধিকাংশ (নফল) নামাযই বসিয়া পড়িতেন। মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: لَمَّا بَدَّنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَثَقُلَ كَانَ أَكْثَرُ صَلَاتِهِ جَالِسًا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১১৯৯
- নামাযের অধ্যায়
৩১. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১১৯৯। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসকল সামঞ্জস্যপূর্ণ সূরাকে (তাহাজ্জুদে ) এক সঙ্গে পাঠ করিতেন, সেসকল সূরা আমার জানা আছে।

পরবর্তী রাবী বলেন, অতঃপর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ নিজের সন্নিবেশীত কোরআন হইতে মোফাসসাল সূরাসমূহের প্রথম হইতে আরম্ভ করিয়া বিশটি সূরার নাম উল্লেখ করিলেন, যাহাদের দুই দুইটি হুযুর (ﷺ) এক সঙ্গে পাঠ করিতেন। এই বিশটি সুরার শেষ দুই সুরা হইল সূরা হা-মীমুদ্দুখান ও সূরা আম্মা ইয়াতাসাআলুন। – মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ صَلَاةِ اللَّيْلِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: لَقَدْ عَرَفْتُ النَّظَائِرَ الَّتِي كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرِنُ بَيْنَهُنَّ فَذَكَرَ عِشْرِينَ سُورَةً مِنْ أَوَّلِ الْمُفَصَّلِ عَلَى تَأْلِيفِ ابْنِ مَسْعُودٍ سُورَتَيْنِ فِي رَكْعَةٍ آخِرُهُنَّ (حم الدُّخان)

و (عَم يتساءلون)
হাদীস নং: ১২০০
- নামাযের অধ্যায়
৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১২০০। হযরত হুযায়ফা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি একবার নবী করীম (ﷺ)-কে রাতে নামায পড়িতে দেখিলেন, তিনি বলিতেছেনঃ আল্লাহ্ অতি মহান (তিনবার), সর্বস্বত্বের অধিকারী, প্রভাবশালী, মহোত্তম ও সম্মানিত। অতঃপর (তকবীরে তাহরীমা বলিয়া) প্রারম্ভিক দোআ পাঠ করিলেন এবং (সূরা ফাতেহার পর সূরা বাকারা পড়িলেন। অতঃপর রুকূ করিলেন প্রায় কেয়ামের সমপরিমাণ সময় এবং রুকূতে বলিলেন, সোবহানা রাব্বিয়াল আযীম। তৎপর রুকূ হইতে মাথা উঠাইলেন এবং প্রায় রুকূর সমপরিমাণ সময় দাঁড়াইয়া 'লি রাব্বিয়াল হামদ' পড়িতে রহিলেন। অতঃপর সজদাতে গেলেন, প্রায় কেয়ামের সমপরিমাণ সময় সজদাতে থাকিয়া 'সোবহানা রাব্বিয়াল আ'লা' বলিতে রহিলেন। তৎপর সজদা হইতে মাথা উঠাইলেন এবং দুই সজদার মধ্যখানে প্রায় সজদা পরিমাণ সময় বসিয়া 'রাব্বিগফির-লী' রাব্বিগফির-লী (পরওয়ারদেগার আমায় ক্ষমা কর! পরওয়ারদেগার আমায় ক্ষমা কর !!) বলিতে রহিলেন। এইরূপে তিনি চারি রাকআত নামায পড়িলেন যাহাতে সূরা বাকারা, সূরা আলে ইমরান, সূরা নেসা ও সূরা মায়েদা বা আনআম পাঠ করিলেন। —আবু দাউদ
كتاب الصلاة
عَنْ حُذَيْفَةَ: أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ وَكَانَ يَقُولُ: «الله أكبر» ثَلَاثًا «ذُو الْمَلَكُوتِ وَالْجَبَرُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ» ثُمَّ اسْتَفْتَحَ فَقَرَأَ الْبَقَرَةَ ثُمَّ رَكَعَ فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ فَكَانَ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ» ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَكَانَ قِيَامُهُ نَحْوًا مِنْ رُكُوعِهِ يَقُولُ: «لِرَبِّيَ الْحَمْدُ» ثُمَّ سَجَدَ فَكَانَ سُجُودُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ فَكَانَ يَقُولُ فِي سُجُودِهِ: «سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى» ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ وَكَانَ يَقْعُدُ فِيمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ نَحْوًا مِنْ سُجُودِهِ وَكَانَ يَقُولُ: «رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي» فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قَرَأَ فِيهِنَّ (الْبَقَرَةَ وَآلَ عِمْرَانَ وَالنِّسَاءَ وَالْمَائِدَةَ أَوِ الْأَنْعَامَ)

شَكَّ شُعْبَة)

رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ১২০১
- নামাযের অধ্যায়
৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১২০১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে নামাযে দাঁড়াইয়া দশটি আয়াত পাঠ করিবে, তাহাকে অলসদের (গাফেলীনদের) মধ্যে গণ্য করা হইবে না এবং যে ব্যক্তি একশত আয়াত পাঠ করিবে তাহাকে বিনয়ীদের (কানেতীনদের) মধ্যে গণ্য করা হইবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত পাঠ করিবে, তাহাকে অধিক কার্যকারীদের মধ্যে গণ্য করা হইবে। —আবু দাউদ
كتاب الصلاة
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَامَ بِعَشْرِ آيَاتٍ لَمْ يُكْتَبْ مِنَ الْغَافِلِينَ وَمَنْ قَامَ بِمِائَةِ آيَةٍ كُتِبَ مِنَ الْقَانِتِينَ وَمَنْ قَامَ بِأَلْفِ آيَةٍ كُتِبَ من المقنطرين» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১২০২
- নামাযের অধ্যায়
৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১২০২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ)-এর রাত্রির নামাযের কেরাআত ছিল, তিনি উহা কখনও বড় আওয়াযে পড়িতেন আর কখনও ছোট আওয়াযে। –আবু দাউদ
كتاب الصلاة
وَعَن أبي هُرَيْرَة قَالَ: كَانَ قِرَاءَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاللَّيْلِ يَرْفَعُ طَوْرًا وَيَخْفِضُ طَوْرًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১২০৩
- নামাযের অধ্যায়
৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১২০৩। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ)-এর রাত্রির নামাযের কেরাআত এই পরিমাণ (উচ্চ) হইত—যখন তিনি ঘরে নামায পড়িতেন বারান্দায় যাহারা থাকিতেন তাহারা তাহা শুনিতে পাইতেন। –আবু দাউদ
كتاب الصلاة
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَتْ قِرَاءَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَدْرِ مَا يَسْمَعُهُ مَنْ فِي الْحُجْرَةِ وَهُوَ فِي الْبَيْتِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ১২০৪
- নামাযের অধ্যায়
৩১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - রাতের সালাত
১২০৪। হযরত আবু কাতাদা (রাঃ) বলেন, একদা রাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আপন ঘর হইতে বাহির হইলেন, দেখিলেন, হযরত আবু বকর নামায পড়িতেছেন, অথচ তিনি তাঁহার স্বরকে খুব নীচু করিতেছেন। এইরূপে তিনি হযরত ওমরের নিকট দিয়া যাইতে দেখিলেন, তিনি তাঁহার স্বরকে খুব উঁচু করিতেছেন।
হযরত আবু কাতাদা (রাঃ) বলেন, অতঃপর যখন তাঁহারা উভয়ে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট একত্রিত হইলেন, তিনি বলিলেনঃ আবু বকর, আমি আপনার নিকট দিয়া যাইতে দেখিলাম, আপনি নামায পড়িতেছেন আর আপনার স্বরকে খুব নীচু করিতে ছেন। তখন আবু বকর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ইহা তাঁহাকেই শুনাইতেছিলাম যিনি আমার কানেকানের কথাও শুনিতে পান। অতঃপর হুযূর হযরত ওমরকে বলিলেন, ওমর, আমি আপনার নিকট দিয়া যাইতে দেখিলাম, আপনি নামায পড়িতেছেন আর আপনার স্বরকে বেশ উঁচু করিতেছেন। তখন হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি উহা দ্বারা অলস-নিদ্রিতদের জাগাইতেছিলাম এবং শয়তানকে তাড়াইতেছিলাম। তখন নবী করীম (ﷺ) বলিলেন, হে আবু বকর! আপনি আপনার স্বরকে আরও কিছু উঁচু করিবেন এবং ওমরকে বলিলেন, ওমর! আপনি আপনার স্বরকে আরও কিছু নীচু করিবেন। — আবু দাউদ, তিরমিযী উহার অনুরূপ।
كتاب الصلاة
وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ لَيْلَةً فَإِذَا هُوَ بِأَبِي بَكْرٍ يُصَلِّي يَخْفِضُ مِنْ صَوْتِهِ وَمَرَّ بِعُمَرَ وَهُوَ يُصَلِّي رَافِعًا صَوْتَهُ قَالَ: فَلَمَّا اجْتَمَعَا عِنْدَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ مَرَرْتُ بِكَ وَأَنْتَ تُصَلِّي تَخْفِضُ صَوْتَكَ» قَالَ: قَدْ أَسْمَعْتُ مَنْ نَاجَيْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَقَالَ لِعُمَرَ: «مَرَرْتُ بِكَ وَأَنْتَ تُصَلِّي رَافِعًا صَوْتَكَ» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أُوقِظُ الْوَسْنَانَ وَأَطْرُدُ الشَّيْطَانَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ ارْفَعْ مِنْ صَوْتِكَ شَيْئًا» وَقَالَ لِعُمَرَ: «اخْفِضْ مِنْ صَوْتِكَ شَيْئًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وروى التِّرْمِذِيّ نَحوه
tahqiq

তাহকীক: