মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ১২১৯
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২১৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: যখন তোমাদের কেহ ঘুমায় শয়তান তাহার মাথার পিছন দিকে তিনটি গিরা দেয়। এবং প্রত্যেক গিরার উপর মোহর মারে" এখনও ঢের রাত্রি আছে, তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও।" যদি সে জাগে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে, একটি গিরা খুলিয়া যায়। অতঃপর যদি সে ওযু করে আরও একটি গিরা খুলিয়া যায়। তৎপর যদি সে নামায পড়ে তবে অপর গিরাটিও খুলিয়া যায় এবং সে প্রভাতে উঠে প্রফুল্ল মন পবিত্র অন্তরে, অন্যথায় সে প্রভাতে উঠে কলুষিত অন্তর ও অলস মনে। মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ عَلَى كُلِّ عُقْدَةٍ: عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ. فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طيب النَّفس وَإِلَّا أصبح خَبِيث النَّفس كسلانا
হাদীস নং: ১২২০
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২০। হযরত মুগীরা ইবনে শো'বা (রাঃ) বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার তাহাজ্জুদ নামাযে) এত দাঁড়াইলেন, যাহাতে তাহার দুই পায়ের পাতা ফুলিয়া গেল। তখন তাঁহাকে বলা হইল, হুযুর! আপনি এইরূপ কেন করেন? আল্লাহ্ তো আপনার পূর্বাপর সমস্ত গোনাহ্ মাফ করিয়া দিয়াছেন। উত্তরে তিনি বলিলেন: বল কি, আমি আল্লাহর একজন কৃতজ্ঞ বান্দা হইব না? – মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنِ الْمُغِيرَةِ قَالَ: قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى تَوَرَّمَتْ قَدَمَاهُ فَقِيلَ لَهُ: لِمَ تَصْنَعُ هَذَا وَقَدْ غُفِرَ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكِ وَمَا تَأَخَّرَ؟ قَالَ: «أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا»
হাদীস নং: ১২২১
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২১। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এক ব্যক্তির উল্লেখ করা হইল এবং বলা হইল, সে সারা রাত্রি ঘুমাইতে রহিল, যাবৎ না প্রভাত হইল, নামাযের জন্য উঠিল না। শুনিয়া হুযুর বলিলেন, সে এমন ব্যক্তি যাহার কানে অথবা হুযুর বলিয়াছেন যাহার দুই কানে শয়তান প্রস্রাব করিয়া দিয়াছে। — মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقيل لَهُ مازال نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحَ مَا قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ قَالَ: «ذَلِكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيْطَانُ فِي أُذُنِهِ» أَو قَالَ: «فِي أُذُنَيْهِ»
হাদীস নং: ১২২২
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২২। উম্মুল মু'মিনীন হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে বড় সন্ত্রস্তভাবে জাগরিত হইলেন এবং বলিতে লাগিলেন, সোবহানাল্লাহ্, এ রাত্রিতে কত রহমত নাযিল হইল এবং কত বিপদ আসিয়া পৌঁছিল! কে জাগাইয়া দিবে এই হুজরাবাসিনীদিগকে। ইহা দ্বারা তিনি তাহার বিবিগণের প্রতিই ইঙ্গিত করিতেছিলেন, যাহাতে তাঁহারা নামায পড়ে। আহা! দুনিয়াতে সুশোভিতা কত নারী আখেরাতে সম্পূর্ণ উলঙ্গিনী হইবে। -বোখারী
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَن أم سَلمَة قَالَتْ: اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَزِعًا يَقُولُ: «سُبْحَانَ اللَّهِ مَاذَا أُنْزِلَ اللَّيْلَةَ مِنَ الْخَزَائِنِ؟ وَمَاذَا أُنْزِلَ مِنَ الْفِتَنِ؟ مَنْ يُوقِظُ صَوَاحِبَ الْحُجُرَاتِ» يُرِيدُ أَزْوَاجَهُ «لِكَيْ يُصَلِّينَ؟ رُبَّ كَاسِيَةٍ فِي الدُّنْيَا عَارِيَةٍ فِي الْآخِرَة» أخرجه البُخَارِيّ
হাদীস নং: ১২২৩
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২৩। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আমাদের পরওয়ারদেগার তাবারাকা ও তাআলা প্রত্যেক রাতেই এই নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন, যখন রাত্রির শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে এবং বলিতে থাকেন, কে আছ, যে আমায় ডাকিবে আর আমি তাহার ডাকে সাড়া দিব? কে আছ যে আমার নিকট কিছু চাহিবে, আর আমি তাহাকে তাহা দান করিব এবং কে আছ যে আমার নিকট ক্ষমা চাহিবে, আর আমি তাহাকে ক্ষমা করিব। – মোত্তাঃ

মুসলিমের এক বর্ণনায় ইহাও রহিয়াছে, অতঃপর তিনি আপন দুই হাত পাতিয়া বলিতে থাকেন, কে আছ, যে ঋণ দিবে অ-দরিদ্র এবং অ-অত্যাচারীকে যাবৎ না উষার উদয় হয়।
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ؟ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ؟ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ؟

وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: ثُمَّ يَبْسُطُ يَدَيْهِ وَيَقُولُ: «مَنْ يُقْرِضُ غَيْرَ عَدُومٍ وَلَا ظَلُومٍ؟ حَتَّى ينفجر الْفجْر»
হাদীস নং: ১২২৪
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২৪। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিতেছেন, রাত্রির মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি কোন মুসলমান উহা লাভ করে এবং আল্লাহর নিকট ইহ-পরকালের কোন কল্যাণ চায়, আল্লাহ্ নিশ্চয় তাহাকে উহা দেন। আর এই মুহূর্তটি প্রত্যেক রাত্রিতেই রহিয়াছে। (জুমুআ প্রভৃতি কোন বিশেষ রাতে সীমাবদ্ধ নহে।) — মুসলিম
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاه وَذَلِكَ كل لَيْلَة» رَوَاهُ مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১২২৫
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২৫। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আল্লাহ্ তা'আলার নিকট প্রিয়তর নামায হইতেছে দাউদ নবীর নামায এবং প্রিয়তর রোযা হইতেছে দাউদ নবীর রোযা। তিনি প্রথমে অর্ধরাত্রি ঘুমাইতেন, অতঃপর এক তৃতীয় ভাগ রাত্রি নামায়ে কাটাইতেন, পুনরায় এক-ষষ্ঠাংশ রাত্রি ঘুমাইতেন। এইরূপে তিনি একদিন রোযা রাখিতেন এবং একদিন রোযা ছাড়িতেন। মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَحَبُّ الصَّلَاةِ إِلَى اللَّهِ صَلَاةُ دَاوُدَ وَأَحَبُّ الصِّيَامِ إِلَى اللَّهِ صِيَامُ دَاوُدَ كَانَ يَنَامُ نِصْفَ اللَّيْلِ وَيَقُومُ ثُلُثَهُ وَيَنَامُ سُدُسَهُ وَيَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا»
হাদীস নং: ১২২৬
- নামাযের অধ্যায়
৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান
১২২৬। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণত রাত্রির প্রথম ভাগে ঘুমাইতেন এবং শেষভাগে (এবাদতে) জাগরিত থাকিতেন। অতঃপর আপন পরিবারের প্রতি নিজের কোন আকর্ষণ থাকিলে তাহা পূর্ণ করিতেন। তৎপর কিছুক্ষণ ঘুমাইতেন। যদি আযানের প্রাক্কালেও নাপাকী অবস্থায় থাকিতেন, তাড়াতাড়ি উঠিয়া গোসল করিতেন। নাপাকী অবস্থায় না থাকিলে শুধু নামাযের জন্য ওযূ করিতেন এবং ফজরের দুই রাকআত সুন্নত পড়িতেন। —মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ تَعْنِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ وَيُحْيِي آخِرَهُ ثُمَّ إِنْ كَانَتْ لَهُ حَاجَةٌ إِلَى أَهْلِهِ قَضَى حَاجَتَهُ ثُمَّ يَنَامُ فَإِنْ كَانَ عِنْدَ النداء الأول جنبا وثب فَأَفَاضَ عَلَيْهِ الماس وَإِنْ لَمْ يَكُنْ جُنُبًا تَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ صلى رَكْعَتَيْنِ