মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৬- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ১৭২১
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির দাফনের বর্ণনা
১৭২১। হযরত আমর ইবনে হাযম (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) আমাকে একটি কবরের প্রতি হেলান দিয়া বসিতে দেখিয়া বলিলেনঃ কবরবাসীকে কষ্ট দিও না অথবা তিনি বলিলেন, (রাবীর সন্দেহ) তাহাকে কষ্ট দিও না। – আহমদ ব্যাখ্যাঃ ইহাতে বুঝা গেল যে, জীবিত ব্যক্তিরা যে যে কারণে কষ্ট পায় মৃত ব্যক্তিরাও তাহাতে কষ্ট পায় এবং সুখ-দুঃখ অনুভব করে।
كتاب الجنائز
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ قَالَ: رَآنِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَّكِئًا عَلَى قَبْرٍ فَقَالَ: لَا تؤذ صَاحب هَذَا الْقَبْر أَولا تؤذه. رَوَاهُ أَحْمد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১৭২৩
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭২৩। হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রাঃ) বলেন, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা (আবুল আসের স্ত্রী হযরত যয়নব) তাহার নিকট একটি লোক মারফত বলিয়া পাঠাইলেন যে, (আব্বাজান!) আমার একটি শিশু ওষ্ঠাগত প্রাণ, আপনি আমাদের এখানে আসুন। উত্তরে হুযুর লোক মারফত সালাম পাঠাইয়া বলিলেন: আল্লাহ্ যাহা গ্রহণ করেন, তাহা তাঁহারই আর যাহা দান করেন, তাহাও তাঁহারই এবং প্রত্যেকেই দুনিয়াতে থাকিবে তাহার নিকট নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। সুতরাং সবর করিবে এবং তাহার নিকট সওয়াবের আশা রাখিবে।। অতঃপর তিনি (যয়নব) তাহাকে কসম দিয়া পাঠাইলেন যে, তিনি যেন অবশ্যই তাহাদের সেখানে যান। এবার হুযুর চলিলেন এবং তাহার সহিত সা'দ ইবনে উবাদা, মুআয ইবনে জাবাল, উবাই ইবনে কা'ব, যায়দ ইবনে সাতে এবং আরও কতক লোক চলিলেন। (তাহারা তথায় পৌঁছিলে) শিশুটিকে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উঠাইয়া আনা হইল। তখন তাহার প্রাণ ছট্‌ফট্ করিতেছিল। (ইহা দেখিয়া) হুজুরের দুই চক্ষু অশ্রু বিসর্জন করিতে লাগিল। এ সময় সা'দ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্, ইহা কি? হুযুর বলিলেন ইহা দয়া, আল্লাহ্ তা'আলা ইহা তাহার বান্দাদের অন্তরে স্থাপন করিয়াছেন। নিশ্চয়, আল্লাহ দয়া করেন তাহার বন্দাদের মধ্যে দয়াবানদেরকে। মোত্তাঃ
كتاب الجنائز
اَلْبُكَاءُ عَلَى الْمَيِّتِ
وَعَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ: أَرْسَلَتِ ابْنَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِ: إِنَّ ابْنًا لِي قُبِضَ فَأْتِنَا. فَأَرْسَلَ يُقْرِئُ السَّلَامَ وَيَقُولُ: «إِنَّ لِلَّهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى وَكُلٌّ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمًّى فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ» . فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ تُقْسِمُ عَلَيْهِ لَيَأْتِيَنَّهَا فَقَامَ وَمَعَهُ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ وَمُعَاذُ بْنُ جبل وَأبي بن كَعْب وَزيد ابْن ثَابِتٍ وَرِجَالٌ فَرُفِعَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّبِيُّ وَنَفْسُهُ تَتَقَعْقَعُ فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ. فَقَالَ سَعْدٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا هَذَا؟ فَقَالَ: «هَذِهِ رَحْمَةٌ جَعَلَهَا اللَّهُ فِي قُلُوبِ عِبَادِهِ. فَإِنَّمَا يَرْحَمُ اللَّهُ مِنْ عِبَادِهِ الرُّحَمَاء»
হাদীস নং: ১৭২৪
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭২৪। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, সা'দ ইবনে উবাদা কোন এক রোগে ভুগিতেছিলেন। নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুর রহমান ইবনে আওফ, সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস ও আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদকে সাথে লইয়া তাহাকে দেখিতে গেলেন। তিনি যখন তাহার নিকট পৌঁছিলেন, তাহাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাইলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, সে কি মারা গিয়াছে? নিকটের লোকেরা বলিল, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। তখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাদিতে লাগিলেন। লোকেরা যখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাদিতে দেখিল তাহারাও কাঁদিতে লাগিল। এ সময় হুযূর বলিলেন: ওহে তোমরা শুনিয়া রাখ—আল্লাহ্ তাআলা চক্ষুর অশ্রু বিসর্জন দ্বারা কাহাকেও শাস্তি দেন না এবং অন্তরের শোক দ্বারাও নহে। কিন্তু শাস্তি দেন অথবা রহম করেন (পুরস্কার দেন) ইহার দ্বারা 'ইহার' বলিতে তিনি নিজের জিহ্বার প্রতি ইঙ্গিত করিলেন। অতঃপর বলিলেন, মৃত ব্যক্তিকে নিশ্চয় শাস্তি দেওয়া হয়, তাহার জন্য তাহার পরিবারের লোকদের রোদন করার দরুন। মোত্তাঃ
كتاب الجنائز
اَلْبُكَاءُ عَلَى الْمَيِّتِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: اشْتَكَى سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ شَكْوًى لَهُ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُهُ مَعَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَسَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ وَجَدَهُ فِي غَاشِيَةٍ فَقَالَ: (قَدْ قَضَى؟ قَالُوا: لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَبَكَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا رَأَى الْقَوْمُ بُكَاءَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَكَوْا فَقَالَ: أَلَا تَسْمَعُونَ؟ أَنَّ اللَّهَ لَا يُعَذِّبُ بِدَمْعِ الْعَيْنِ وَلَا بِحُزْنِ الْقَلْبِ وَلَكِنْ يُعَذِّبُ بِهَذَا وَأَشَارَ إِلَى لِسَانِهِ أَوْ يَرْحَمُ وَإِن الْمَيِّت لعيذب ببكاء أَهله
হাদীস নং: ১৭২৫
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭২৫। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন সে আমাদের দলভুক্ত নহে, যে মৃতের শোকে) আপন মুখমণ্ডলে করাঘাত করে, জামার গলা কাড়ে এবং জাহেলিয়াত যুগের হা-হুতাশের ন্যায় হা-হুতাশ করে। মোত্তাঃ
كتاب الجنائز
اَلْبُكَاءُ عَلَى الْمَيِّتِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ وَشَقَّ الْجُيُوبَ وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ»
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১৭২৬
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭২৬। তাবেয়ী আবু বুরদা ইবনে আবু মুসা (রাঃ) বলেন, একবার আমার পিতা আবু মুসা আশআরী অজ্ঞান হইয়া গেলেন। ইহাতে (আমার বিমাতা) তাহার স্ত্রী আব্দুল্লাহর মা সুর ধরিয়া বিলাপ করিতে লাগিল। অতঃপর তিনি সংজ্ঞা লাভ করিলেন এবং আব্দুল্লাহর মাকে একটি হাদীস বর্ণনা করিতে যাইয়া বলিলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ আমি তাহার সহিত সম্পর্কহীন যে মাথার চুল ছিঁড়ে, উচ্চ স্বরে বিলাপ করে এবং জামার গলা ফাঁড়ে। —বুখারী ও মুসলিম; কিন্তু পাঠ মুসলিমের।
كتاب الجنائز
اَلْبُكَاءُ عَلَى الْمَيِّتِ
وَعَن أبي بردة قَالَ: أُغمي على أبي مُوسَى فَأَقْبَلَتِ امْرَأَتُهُ أُمُّ عَبْدِ اللَّهِ تَصِيحُ بِرَنَّةٍ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: أَلَمْ تَعْلَمِي؟ وَكَانَ يُحَدِّثُهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَنَا بَرِيءٌ مِمَّنْ حَلَقَ وَصَلَقَ وَخَرَقَ» . وَلَفظه لمُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ১৭২৭
- জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মৃত ব্যক্তির জন্য কাঁদা
১৭২৭। হযরত আবু মালেক আশআরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আমার উম্মতের মধ্যে জাহেলিয়াত যুগের চারটি বিষয় রহিয়া গিয়াছে যাহা তাহারা ছাড়িতেছে না, (১) নিজের গুণের গর্ব, (২) কাহারও বংশের নিন্দা, (৩) গ্রহ-নক্ষত্র যোগে বৃষ্টি চাওয়া এবং (৪) বিলাপ করা। অতঃপর তিনি বলেন, বিলাপকারিণী যদি তাহার মৃত্যুর পূর্বে তওবা না করে, কিয়ামতের দিন তাহাকে উঠান হইবে তখন তাহার গায়ে থাকিবে আলকাতরার জামা ও ক্ষতের পিরান। মুসলিম
كتاب الجنائز
اَلْبُكَاءُ عَلَى الْمَيِّتِ
وَعَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَا يَتْرُكُونَهُنَّ: الْفَخْرُ فِي الْأَحْسَابِ وَالطَّعْنُ فِي الْأَنْسَابِ وَالِاسْتِسْقَاءُ بِالنُّجُومِ وَالنِّيَاحَةُ . وَقَالَ: «النَّائِحَةُ إِذَا لَمْ تَتُبْ قَبْلَ مَوْتِهَا تُقَامُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَعَلَيْهَا سِرْبَالٌ مِنْ قطران وَدرع من جرب» . رَوَاهُ مُسلم