মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

১৭- কিসাসের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৫৫৩
- কিসাসের অধ্যায়
৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৫৩। শারীক ইবনে শিহাব (রঃ) বলেন, আমার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল, যদি আমি নবী (ﷺ)-এর জনৈক সাহাবীর সাক্ষাৎ পাই, তবে তাঁহাকে খারেজীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিব। সৌভাগ্যবশতঃ এক ঈদের দিন আবু বারযাতুল আসলামী (রাঃ)-এর সঙ্গে তাঁহার কয়েকজন বন্ধুসমেত আমার সাক্ষাৎ হইল। তখন আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি কখনও রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে খারেজীদের সম্পর্কে আলোচনা করিতে শুনিয়াছেন কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি আমার দুই কানে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি এবং আমার দুই চক্ষে তাঁহাকে দেখিয়াছি। একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে কিছু মাল-সম্পদ আসিয়াছিল। তিনি উহা বিতরণ করিয়া দিলেন। যে তাঁহার ডানে আছে, তাহাকেও দিলেন এবং যে তাঁহার বামে আছে তাহাকেও দিলেন। কিন্তু যে তাঁহার পিছনে ছিল তাহাকে কিছুই দিলেন না। তখন এক ব্যক্তি পিছন হইতে দাড়াইয়া বলিল, হে মুহাম্মাদ! মাল বিতরণে আপনি ন্যায় ও ইন্‌সাফ করিতেছেন না! লোকটি ছিল কালো বর্ণের নেড়ে মাথা। গায়ের উপর ছিল সাদা দুইখানা কাপড় তাহার কথা শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ভীষণ রাগান্বিত হইলেন এবং বলিলেনঃ আল্লাহর কসম! তোমরা আমার পরে আর কোন ব্যক্তিকেই আমার চাইতে অধিক ন্যায়বান ও ইনসাফকারী পাইবে না। অতঃপর বলিলেনঃ শেষ যমানায় এমন এক দল লোকের আবির্ভাব ঘটিবে—এই লোকটিও তাহাদের একজন। তাহারা কোরআন পড়িবে বটে, তবে কোরআন তাহাদের গলদেশের নীচে অন্তরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করিবে না। তাহারা ইসলাম হইতে এমনভাবে বাহির হইয়া যাইবে যেমন নিক্ষিপ্ত তীর শিকারকে ছেদ করিয়া বাহির হইয়া যায়। তাহাদের পরিচয় হইল—তাহারা হইবে নেড়ে মাথা। অনবরত এই সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হইবে। অবশেষে তাহাদের সর্বশেষ দলটির আবির্ভাব ঘটিবে মসীহে দাজ্জালের সহিত। সুতরাং তোমরা যেখানেই তাহাদিগকে পাও কতল করিয়া দাও। কেননা, উহারা নিকৃষ্টতম সৃষ্টি ও সবচাইতে মন্দ লোক। —নাসায়ী
كتاب القصاص
وَعَنْ شَرِيكِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ: كُنْتُ أَتَمَنَّى أَنْ أَلْقَى رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْأَلُهُ عَنِ الْخَوَارِجِ فَلَقِيْتُ أَبَا بَرْزَةَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِهِ فَقُلْتُ لَهُ: هَلْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَذْكُرُ الْخَوَارِجَ؟ قَالَ: نعمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأُذُنَيَّ وَرَأَيْتُهُ بِعَيْنَيَّ: أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَالٍ فَقَسَمَهُ فَأَعْطَى مَنْ عَنْ يَمِينِهِ وَمَنْ عَنْ شِمَالِهِ وَلَمْ يُعْطِ مَنْ وَرَاءَهُ شَيْئًا. فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ وَرَائِهِ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ مَا عَدَلْتَ فِي الْقِسْمَةِ رَجُلٌ أَسْوَدُ مَطْمُومُ الشَّعْرِ عَلَيْهِ ثَوْبَانِ أَبْيَضَانِ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَضَبًا شَدِيدًا وَقَالَ: «وَاللَّهِ لَا تَجِدُونَ بَعْدِي رَجُلًا هُوَ أَعْدَلُ مِنِّي» ثُمَّ قَالَ: «يخرُجُ فِي آخرِ الزَّمانِ قومٌ كأنَّ هَذَا مِنْهُم يقرؤون الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ سِيمَاهُمُ التَّحْلِيقُ لَا يَزَالُونَ يَخْرُجُونَ حَتَّى يَخْرُجَ آخِرُهُمْ مَعَ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ والخليقة» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৫৫৪
- কিসাসের অধ্যায়
৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৫৪। আবু গালেব (রঃ) হইতে বর্ণিত, একদা হযরত আবু উমামা (রাঃ) দামেশকের সদর দরজায় (খারেজীদের) কতকগুলি ঝুলন্ত মুণ্ড দেখিলেন। তখন আবু উমামা বলিলেন, ইহারা হইল জাহান্নামের কুকুর। আসমানের নীচে সবচাইতে মন্দ ইহারা, যাহারা নিহত হইয়াছে এবং সবচাইতে উত্তম ব্যক্তি তাহারা, যাহারা ইহাদিগকে কতল করিয়াছে। অতঃপর তিনি কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করিলেন, কিয়ামতের দিন কিছুসংখ্যক মুখমণ্ডল হইবে জ্যোতির্ময় উজ্জ্বল আর কিছুসংখ্যক মুখ হইবে কালো কুৎসিত। এই সময় আবু উমামাকে জিজ্ঞাসা করা হইল, এই কথাগুলি কি আপনি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে শুনিয়াছেন? তিনি উত্তরে একবার, দুই বার কিংবা তিনবার নহে; বরং সাতবার শুনিয়াছেন । বলিয়া উল্লেখ করিয়া বলিলেন, যদি আমি স্বয়ং তাঁহার নিকট হইতে না শুনিতাম, তাহা হইলে আজ আমি উহা তোমাদিগকে বর্ণনা করিতাম না। তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্, তবে এই হাদীসটিকে হাসান বলিয়াছেন।
كتاب القصاص
وَعَن أبي غالبٍ رأى أَبُو أُمامةَ رؤوساً مَنْصُوبَةً عَلَى دَرَجِ دِمَشْقَ فَقَالَ أَبُو أُمَامَةَ: «كِلَابُ النَّارِ شَرُّ قَتْلَى تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ خَيْرُ قَتْلَى مَنْ قَتَلُوهُ» ثُمَّ قَرَأَ (يَوْمَ تبيَضُّ وُجوهٌ وتَسوَدُّ وُجوهٌ)

الْآيَةَ قِيلَ لِأَبِي أُمَامَةَ: أَنْتَ سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: لَوْ لَمْ أَسْمَعْهُ إِلَّا مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ أوْ ثَلَاثًا حَتَّى عَدَّ سَبْعًا مَا حَدَّثْتُكُمُوهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
tahqiq

তাহকীক: