আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ

كتاب الموطأ للإمام مالك

১. নামাযের সময়সূচী - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ২৫
নামাযের সময়সূচী
৬. নামায হইতে নিদ্রায় থাকা
রেওয়ায়ত ২৫. সাঈদ ইবনে মুসায়্যাব (রাহঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খায়বর হইতে প্রত্যাবর্তন করার সময় রাত্রিবেলা পথ চলিলেন; যখন রাত্রির শেষ সময় হইল তিনি (নিদ্রার জন্য) অবতরণ করিলেন এবং বিলাল (রাযিঃ)-কে বলিলেনঃ তুমি প্রত্যুষের প্রতি লক্ষ রাখ (ভোর হইলে আমাদিগকে জাগাইয়া দিবে)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং তাহার সাহাবীগণ ঘুমাইয়া পড়িলেন। বিলাল (রাযিঃ) যথাসাধ্য লক্ষ রাখিতে লাগিলেন। অতঃপর উটের হাওদার সাথে ঠেস দিয়া ভোরের আলোর উদয়ের স্থানকে সম্মুখে রাখিয়া বসিলেন। হঠাৎ তাহার উপর নিদ্রা ভর করিল। এই অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিলাল এবং কাফিলার অন্য কেউ জাগ্রত হইলেন না যতক্ষণ না সূর্যকিরণ তাহাদের উপর পতিত হইল।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘাবড়াইলেন; তারপর বলিলেনঃ বিলাল! ইহা কি? বিলাল বলিলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনাকে যিনি ঘুম পাড়াইয়াছেন তিনি আমাকেও ঘুম পাড়াইয়াছেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তোমরা উট চালিত কর (এবং স্থানান্তরিত হও)। তাহারা উটগুলিকে উঠাইলেন এবং কিছুদূর চলিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিলালকে নির্দেশ দিলেন (ইকামত বলার জন্য)। তিনি ইকামত বলিলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাহাদিগকে ফজরের নামায পড়াইলেন। নামায সমাপ্ত করার পর তিনি বলিলেনঃ যে নামাযকে ভুলিয়া যায় (অর্থাৎ নামায হইতে গাফিল হয় নিদ্রা অথবা ভুলের দরুন) নামাযের কথা স্মরণ হইলে পর সে উহা পড়িয়া নিবে। কারণ আল্লাহ্ তাআলা বলিয়াছেনঃ (أَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي) “আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।”
كتاب وقوت الصلاة
بَاب النَّوْمِ عَنْ الصَّلَاةِ
حَدَّثَنِي يَحْيَى، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ خَيْبَرَ أَسْرَى حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلاَلٍ " اكْلأْلَنَا الصُّبْحَ " . وَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ وَكَلأَ بِلاَلٌ مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ اسْتَنَدَ إِلَى رَاحِلَتِهِ وَهُوَ مُقَابِلُ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ بِلاَلٌ وَلاَ أَحَدٌ مِنَ الرَّكْبِ حَتَّى ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَفَزِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ بِلاَلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اقْتَادُوا " . فَبَعَثُوا رَوَاحِلَهُمْ وَاقْتَادُوا شَيْئًا ثُمَّ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِلاَلاً فَأَقَامَ الصَّلاَةَ فَصَلَّى بِهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصُّبْحَ ثُمَّ قَالَ حِينَ قَضَى الصَّلاَةَ " مَنْ نَسِيَ الصَّلاَةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ فِي كِتَابِهِ (أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي ) " .
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ২৬
নামাযের সময়সূচী
৬. নামায হইতে নিদ্রায় থাকা
রেওয়ায়ত ২৬. যায়দ ইবনে আসলাম (রাযিঃ) হইতে বর্ণিত, মক্কার পথে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (একবার বিশ্রাম গ্রহণের জন্য) রাত্রিতে অবতরণ করিলেন এবং বিলালকে নামাযের জন্য জাগাইয়া দেওয়ার দায়িত্বে নিযুক্ত করিলেন। তারপর বিলাল ঘুমাইলেন এবং অন্য সকলেও ঘুমাইলেন। এমন কি তাহারা জাগিলেন সূর্য ওঠার পর। হতচকিত অবস্থায় দলের লোকজন জাগ্রত হইলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাদিগকে সওয়ার হওয়ার এবং সেই উপত্যকা হইতে বাহিরে চলিয়া যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। আর তিনি বলিলেনঃ এই উপত্যকায় অবশ্যই শয়তান রহিয়াছে। তারপর তাহারা সওয়ার হইলেন এবং সেই উপত্যক হইতে বাহির হইয়া গেলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাহাদিগকে অবতরণ এবং ওযু করার নির্দেশ দিলেন। আর বিলালকে নামাযের জন্য আযান অথবা ইকামত বলার হুকুম করিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) লোকজনকে নামায পড়াইলেন। তারপর তাঁহাদের দিকে মুখ ফিরাইলেন এবং তাঁহাদের ঘাবড়ানোর অবস্থা অনুধাবন করিলেন।

তখন তিনি বলিলেনঃ হে লোকসমাজ! আল্লাহ আমাদের আত্মাসমূহকে কাবু করিয়াছিলেন, আর তিনি যদি ইচ্ছা করিতেন এই সময় ব্যতীত ভিন্ন সময়ে আত্মাসমূহকে আমাদের নিকট ফেরত দিতে পারিতেন। যদি তোমাদের কেউ নামায হইতে ঘুমাইয়া পড় অথবা উহাকে ভুলিয়া যাও, অতঃপর হঠাৎ নামাযের কথা স্মরণ হয়, তবে সেই নামাযকে উহার নির্ধারিত সময়ে যেইরূপে পড়িতে সেইভাবে পড়িবে। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবু বকর (রাযিঃ)-এর দিকে দৃষ্টি করিলেন। তারপর বলিলেনঃ বিলাল যখন দাঁড়াইয়া নামায পড়িতেছিল তখন তাহার কাছে শয়তান আসিল এবং তাহাকে ঠেস দেওয়াইয়া বসাইল এবং শিশুকে যেভাবে (থাপি দিয়া) শান্ত করা হয় ও ঘুম পাড়ানো হয় সেইভাবে তাহার সঙ্গে বারবার করিতে থাকিল। এমন কি (শেষ পর্যন্ত) বিলাল ঘুমাইয়া পড়িল।

তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিলালকে আহবান করিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আবু বকর (রাযিঃ)-কে যেরূপ বলিয়াছিলেন বিলালও অনুরূপ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট বর্ণনা করিলেন। ইহা শুনিয়া আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূল।
كتاب وقوت الصلاة
بَاب النَّوْمِ عَنْ الصَّلَاةِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّهُ قَالَ عَرَّسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً بِطَرِيقِ مَكَّةَ وَوَكَّلَ بِلاَلاً أَنْ يُوقِظَهُمْ لِلصَّلاَةِ فَرَقَدَ بِلاَلٌ وَرَقَدُوا حَتَّى اسْتَيْقَظُوا وَقَدْ طَلَعَتْ عَلَيْهِمُ الشَّمْسُ فَاسْتَيْقَظَ الْقَوْمُ وَقَدْ فَزِعُوا فَأَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَرْكَبُوا حَتَّى يَخْرُجُوا مِنْ ذَلِكَ الْوَادِي وَقَالَ " إِنَّ هَذَا وَادٍ بِهِ شَيْطَانٌ " . فَرَكِبُوا حَتَّى خَرَجُوا مِنْ ذَلِكَ الْوَادِي ثُمَّ أَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَنْزِلُوا وَأَنْ يَتَوَضَّئُوا وَأَمَرَ بِلاَلاً أَنْ يُنَادِيَ بِالصَّلاَةِ أَوْ يُقِيمَ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالنَّاسِ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَيْهِمْ وَقَدْ رَأَى مِنْ فَزَعِهِمْ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ قَبَضَ أَرْوَاحَنَا وَلَوْ شَاءَ لَرَدَّهَا إِلَيْنَا فِي حِينٍ غَيْرِ هَذَا فَإِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ نَسِيَهَا ثُمَّ فَزِعَ إِلَيْهَا فَلْيُصَلِّهَا كَمَا كَانَ يُصَلِّيهَا فِي وَقْتِهَا " . ثُمَّ الْتَفَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ " إِنَّ الشَّيْطَانَ أَتَى بِلاَلاً وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي فَأَضْجَعَهُ فَلَمْ يَزَلْ يُهَدِّئُهُ كَمَا يُهَدَّأُ الصَّبِيُّ حَتَّى نَامَ " . ثُمَّ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِلاَلاً فَأَخْبَرَ بِلاَلٌ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ الَّذِي أَخْبَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا بَكْرٍ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ .
tahqiq

তাহকীক: