শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

২. নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ১৮৮৮
নামাযের অধ্যায়
৩৭. যুদ্ধক্ষেত্রে সালাতের সময় হলে সওয়ারীর উপর সালাত পড়বে কিনা ?
১৮৮৮। আলী ইবন মা’বদ (রাহঃ) ..... হুযায়ফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ খন্দকের (পরিখা) যুদ্ধের দিন আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তারা (কাফির) আমাদেরকে আসরের সালাত থেকে বিরত রেখেছে। রাবী বলেন, সেদিন তিনি আসরের সালাত আদায় করেননি; এমন কি সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। (তিনি কাফিরদেরকে বদ্ দু'আ করে বলেছেনঃ) আল্লাহ্ তা'আলা তাদের কবর অথবা অন্তর অথবা গৃহকে অগ্নি দিয়ে ভরে দিন।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এক দল আলিম বলেছেন যে, আরোহী নিজ সওয়ারীর উপর ফরয সালাত আদায় করবে না। যদিও এমন অবস্থার সম্মুখীন হয় যে, তাতে অবতরণের সুযোগ না থাকে। তারা বলেছেনঃ যেহেতু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সেদিন সওয়ারীর উপর আরোহী অবস্থায় সালাত পড়েননি।
পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেছেনঃ যদি এ আরোহী যুদ্ধরত হয় তাহলে সালাত পড়বে না। আর যদি আরোহী যুদ্ধরত না হয় এবং তার অবতরণের সুযোগ না থাকে তাহলে (সওয়ারীর) উপর সালাত পড়বে। সম্ভবত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তখন (খন্দকের যুদ্ধে এজন্য সালাত পড়েননি যেহেতু তিনি যুদ্ধরত ছিলেন। যুদ্ধ হচ্ছে (অধিক) (আমলে কাছীর) এবং আমল, সালাতের মধ্যে (অধিক) আমল (জায়িয) নয়। অথবা এমনও হতে পারে যে, তিনি তখন (সাওয়ারীর) উপর সালাত পড়েননি এজন্য যে, যেহেতু তখন পর্যন্ত সাওয়ারীর পিঠে সালাত পড়ার নির্দেশ তাঁকে দেয়া হয়নি। (অর্থাৎ উক্ত বিধান তখনও অবতীর্ণ হয়নি)। বস্তুত এ বিষয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখলামঃ
كتاب الصلاة
بَابُ الرَّجُلِ يَكُونُ فِي الْحَرْبِ فَتَحْضُرُهُ الصَّلَاةُ وَهُوَ رَاكِبٌ هَلْ يُصَلِّي أَمْ لَا؟
1888 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ هُوَ ابْنُ نُوحٍ , قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدِ بْنِ شَدَّادٍ , قَالَ: ثنا عُبَيْدِ اللهِ بْنُ عَمْرٍو , عَنْ زَيْدٍ , عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ , عَنْ زِرٍّ , عَنْ حُذَيْفَةَ , قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ: «شَغَلُونَا عَنْ صَلَاةِ الْعَصْرِ» قَالَ: وَلَمْ يُصَلِّهَا يَوْمَئِذٍ حَتَّى غَابَتِ الشَّمسُ مَلَأَ اللهُ قُبُورَهُمْ نَارًا وَقُلُوبَهُمْ نَارًا وَبُيُوتَهُمْ نَارًا " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ الرَّاكِبَ لَا يُصَلِّي الْفَرِيضَةَ عَلَى دَابَّتِهِ , وَإِنْ كَانَ فِي حَالٍ لَا يُمْكِنُهُ فِيهَا النُّزُولُ , قَالُوا: لِأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يُصَلِّ يَوْمَئِذٍ رَاكِبًا. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: إِنْ كَانَ هَذَا الرَّاكِبُ يُقَاتِلُ , فَلَا يُصَلِّي وَإِنْ كَانَ الرَّاكِبُ لَا يُقَاتِلُ وَلَا يُمْكِنُهُ النُّزُولُ صَلَّى , وَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يُصَلِّ يَوْمَئِذٍ ; لِأَنَّهُ كَانَ يُقَاتِلُ , فَالْقِتَالُ عَمَلٌ , وَالصَّلَاةُ لَا يَكُونُ فِيهَا عَمَلٌ وَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ لَمْ يُصَلِّ يَوْمَئِذٍ , لِأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ أُمِرَ حِينَئِذٍ أَنْ يُصَلِّيَ رَاكِبًا فَنَظَرْنَا فِي ذَلِكَ
হাদীস নং: ১৮৮৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৮৯০
নামাযের অধ্যায়
যুদ্ধক্ষেত্রে সালাতের সময় হলে সওয়ারীর উপর সালাত পড়বে কিনা ?
১৮৮৯-১৮৯০। ইবরাহীম ইবন মারযূক (রাহঃ) এবং ইউনুস (রাহঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ খন্দকের যুদ্ধের দিন আমরা যুদ্ধে আটকিয়ে গেলাম, এমনকি মাগরিবের পর রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হয়ে গেল এবং (আল্লাহ্ তা'আলা) আমাদেরকে (শত্রুদের অনিষ্ট থেকে) হিফাযত করেছেন এর প্রতিই আল্লাহ্ তা'আলা ইঙ্গিত করে বলেছেনঃ

وَكَفَى اللهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ وَكَانَ اللهُ قَوِيًّا عَزِيزًا

অর্থাৎঃ যুদ্ধে মু'মিনদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী। (৩৩ঃ ২৫)

রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বিলাল (রাযিঃ)-কে ডাকলেন এবং বিলাল (রাযিঃ) যুহরের ইকামত দেন আর তিনি যুহরের সালাত উত্তমরূপে আদায় করেন যেমনিভাবে তিনি এটিকে যথাসময়ে আদায় করতেন। তারপর তাঁকে নির্দেশ দিলে তিনি আসরের ইকামত দেন এবং তা তিনি অনুরূপভাবে আদায় করেন। এরপর তাঁকে নির্দেশ দিলে তিনি মাগরিবের ইকামত দেন এবং তিনি তা অনুরূপভাবে আদায় করেন। আর এটা ছিল আল্লাহ্ তা'আলা সালাতুল খাওফ সম্পর্কে فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا (যদি তোমরা আশংকা কর) “তবে পদচারী অথবা আরোহী অবস্থায়,” অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে ঘটনা।
আবু সাঈদ (রাযিঃ) খবর দিয়েছেন যে, তারা যে সেদিন (খন্দকের যুদ্ধে) আরোহী অবস্থায় সালাত পরিত্যাগ করেছেন তা ছিল তাঁদের জন্য সওয়ারীর উপর সালাত পড়া জায়িয হওয়ার পূর্বের ঘটনা, তারপর এ আয়াত দ্বারা তাঁদের জন্য তা জায়িয করা হয়।
অতএব এতে প্রমাণিত হলো যে, কারো যদি যুদ্ধক্ষেত্রে নিজ বাহন থেকে অবতরণের অবকাশ না থাকে তার জন্য সওয়ারীর উপর ইশারা করে সালাত আদায় করা জায়িয আছে। অনুরূপভাবে কেউ যদি এরূপ স্থানে থাকে যে, যদি সে সিজদা করে তাহলে তাকে হিংস্র জন্তু আক্রমণ করার অথবা কেউ (শত্রু) তাকে তরবারির আঘাতে হত্যা করার আশংকা থাকে তাহলে তার জন্য বসে সালাত পড়া জায়িয আছে। যদি (দাঁড়ানোর) মধ্যে এরূপ আশংকা থাকে তাহলে বসে ইশারা করে সালাত পড়বে। বস্তুত এ সমস্ত আবু হানীফা (রাহঃ), আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর উক্তি ও অভিমত।
كتاب الصلاة
1889 - فَإِذَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَدْ حَدَّثَنَا قَالَ: ثنا أَبُو عَامِرٍ وَبِشْرُ بْنُ عُمَرَ , عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ ح

1890 - وَحَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ , عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ , عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: " حُبِسْنَا يَوْمَ الْخَنْدَقِ حَتَّى كَانَ بَعْدَ الْمَغْرِبِ بِهَوِيٍّ مِنَ اللَّيْلِ حَتَّى إِذَا كُفِينَا , وَذَلِكَ قَوْلُ اللهِ تَعَالَى {وَكَفَى اللهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ وَكَانَ اللهُ قَوِيًّا عَزِيزًا} [الأحزاب: 25] , قَالَ: فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِلَالًا فَأَقَامَ الظُّهْرَ فَأَحْسَنَ صَلَاتَهَا كَمَا كَانَ يُصَلِّيهَا فِي وَقْتِهَا ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْعَصْرَ فَصَلَّاهَا كَذَلِكَ ثُمَّ أَمَرَهُ فَأَقَامَ الْمَغْرِبَ فَصَلَّاهَا كَذَلِكَ , وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُنْزِلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي صَلَاةِ الْخَوْفِ {فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا} [البقرة: 239] " فَأَخْبَرَ أَبُو سَعِيدٍ أَنَّ تَرْكَهُمْ لِلصَّلَاةِ يَوْمَئِذٍ رُكْبَانًا إِنَّمَا كَانَ قَبْلَ أَنْ يُبَاحَ لَهُمْ ذَلِكَ ثُمَّ أُبِيحَ لَهُمْ بِهَذِهِ الْآيَةِ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا كَانَ فِي الْحَرْبِ، وَلَا يُمْكِنُهُ النُّزُولُ عَنْ دَابَّتِهِ، أَنَّ لَهُ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَيْهَا إِيمَاءً وَكَذَلِكَ لَوْ أَنَّ رَجُلًا كَانَ عَلَى الْأَرْضِ , فَخَافَ إِنْ سَجَدَ أَنْ يَفْتَرِسَهُ سَبُعٌ أَوْ يَضْرِبَهُ رَجُلٌ بِسَيْفٍ , فَلَهُ أَنْ يُصَلِّيَ قَاعِدًا , إِنْ كَانَ يَخَافُ ذَلِكَ فِي الْقِيَامِ وَيُومِئُ إِيمَاءً , وَهَذَا كُلُّهُ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ , رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى