শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام
৬. হজ্বের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৮ টি
হাদীস নং: ৪১২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪১২৯
হজ্বের অধ্যায়
৩১. হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১২৮-২৯। মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ….. হাজ্জাজ ইব্ন আমর আনসারী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, নবী (ﷺ) কে বলতে শুনেছিঃ (ইহরামের পর) কেউ যদি খোঁড়া হয়ে যায় বা কারাে কোন অঙ্গ ভেঙ্গে যায় তবে সে হালাল হয়ে যাবে এবং তাকে আরেক বার হজ্জ আদায় করতে হবে। ইকরামা (রাহঃ) বলেন, আমি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) কে এই হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বললেন, হাজ্জাজ (রাযিঃ) সত্য বলেছেন।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... হাজ্জাজ আস সাওয়াফ (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর নিকট ইকরামা (রাহঃ) কর্তৃক জিজ্ঞাসা করার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... হাজ্জাজ আস সাওয়াফ (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর নিকট ইকরামা (রাহঃ) কর্তৃক জিজ্ঞাসা করার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
كتاب مناسك الحج
بَابُ حُكْمِ الْمُحْصَرِ بِالْحَجِّ
4128 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ , قَالَ: ثنا الْحُجَّاجُ الصَّوَّافُ , قَالَ: حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ , عَنْ عِكْرِمَةَ , عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو الْأَنْصَارِيِّ , قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " مَنْ عَرِجَ أَوْ كُسِرَ , فَقَدْ حَلَّ , وَعَلَيْهِ حَجَّةٌ أُخْرَى قَالَ: فَحَدَّثْتُ بِذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ , وَأَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ فَقَالَا: صَدَقَ "
4129 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا أَبُو عَاصِمٍ , عَنِ الْحَجَّاجِ الصَّوَّافِ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ , غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ «ذَكَرَ عِكْرِمَةُ ذَلِكَ لِابْنِ عَبَّاسٍ , وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ»
4129 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا أَبُو عَاصِمٍ , عَنِ الْحَجَّاجِ الصَّوَّافِ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ , غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ «ذَكَرَ عِكْرِمَةُ ذَلِكَ لِابْنِ عَبَّاسٍ , وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১২৯
হজ্বের অধ্যায়
empty
৪১২৯।
كتاب مناسك الحج
4129 -
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩০
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩০। ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ) ..... ইকরামা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, উম্মু সালামা (রাযিঃ)-এর আযাদকৃত দাস আব্দুল্লাহ ইব্ন রাফি' (রাহঃ) বলেছেন, আমি হাজ্জাজ ইব্ন আম্র (রাযিঃ) কে ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি, যে ইহরামরত অবস্থায় (হজ্জ থেকে) বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তারপর তিনি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (রাবী বলেন) আমি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর নিকট এই হাদীসটি বর্ণনা করলে তাঁরা বললেন, (হাজ্জাজ রা) সত্য বলছেন।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন যে, হজ্জের কিংবা উমরার ইহরামরত ব্যক্তির কোন অঙ্গ যখন ভেঙ্গে যায় বা সে খোঁড়া হয়ে যায় তখন সে হালাল হয়ে যাবে এবং যা থেকে সে হালাল হয়েছে তার কাযা তার উপর ওয়াজিব। যদি হজ্জ হয় তাহলে হজ্জের কাযা করবে আর যদি উমরা হয় তাহলে উমরার কাযা করবে। তাঁরা এ বিষয়ে এই হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরােধিতা করে বলেছেন যে, সে ততক্ষণ পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ তার পক্ষ থেকে কুরবানীর পশু যবাহ করা হবে; যখন তার পক্ষ থেকে কুরবানীর পশু যবাহ করা হবে তখন সে হালাল হয়ে যাবে। তাঁরা এ বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেছেনঃ
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, একদল আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন যে, হজ্জের কিংবা উমরার ইহরামরত ব্যক্তির কোন অঙ্গ যখন ভেঙ্গে যায় বা সে খোঁড়া হয়ে যায় তখন সে হালাল হয়ে যাবে এবং যা থেকে সে হালাল হয়েছে তার কাযা তার উপর ওয়াজিব। যদি হজ্জ হয় তাহলে হজ্জের কাযা করবে আর যদি উমরা হয় তাহলে উমরার কাযা করবে। তাঁরা এ বিষয়ে এই হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাঁদের বিরােধিতা করে বলেছেন যে, সে ততক্ষণ পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ তার পক্ষ থেকে কুরবানীর পশু যবাহ করা হবে; যখন তার পক্ষ থেকে কুরবানীর পশু যবাহ করা হবে তখন সে হালাল হয়ে যাবে। তাঁরা এ বিষয়ে নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দলীল পেশ করেছেনঃ
كتاب مناسك الحج
4130 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ , قَالَ ثنا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ الْوُحَاظِيُّ , قَالَ: ثنا مُعَاوِيَةُ بْنُ سَلَّامٍ , عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ , عَنْ عِكْرِمَةَ , قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَافِعٍ , مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ , أَنَّهُ قَالَ: أنا سَأَلْتُ الْحَجَّاجَ بْنَ عَمْرٍو , عَمَّنْ حُبِسَ وَهُوَ مُحْرِمٌ فَقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَذَكَرَ مِثْلَهُ. فَحَدَّثْتُ بِذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ , فَقَالَا: صَدَقَ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ الْمُحْرِمَ بِالْحَجِّ , أَوْ بِالْعُمْرَةِ إِذَا كُسِرَ أَوْ عَرِجَ , فَقَدْ حَلَّ حِينَئِذٍ فَعَلَيْهِ قَضَاءُ مَا حَلَّ مِنْهُ , إِنْ كَانَتْ حَجَّةً فَحَجَّةٌ , وَإِنْ كَانَتْ عُمْرَةً فَعُمْرَةٌ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ , بِهَذَا الْحَدِيثِ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: لَا يَحِلُّ حَتَّى يَنْحَرَ عَنْهُ الْهَدْيَ , فَإِذَا نَحَرَ عَنْهُ الْهَدْيَ حَلَّ. وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩১
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩১। মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ..... মিসওয়ার ইব্ন মাখরামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হুদায়বিয়ার দিন মাথা মুণ্ডন করার পূর্বে কুরবানী করেছেন এবং তাঁর সাহাবীগণকেও এর নির্দেশ প্রদান করেছেন।
كتاب مناسك الحج
4131 - بِمَا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الرُّومِيِّ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ الثَّوْرِ , قَالَ: أنا مَعْمَرٌ , عَنِ الزُّهْرِيِّ , عَنْ عُرْوَةَ , عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحَرَ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ , قَبْلَ أَنْ يَحْلِقَ وَأَمَرَ أَصْحَابَهُ بِذَلِكَ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩২
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩২। মুহাম্মাদ ইব্ন আম্র ইব্ন তাম্মাম (রাহঃ) ..... মাখরামা ইব্ন বুকাইর (রাহঃ)-এর পিতা থেকে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি বলেন, আমি ইব্ন উমর (রাযিঃ)-এর আযাদকৃত দাস নাফি' (রাহঃ)-কে বলতে শুনেছি, ইব্ন উমর (রাযিঃ) বলেছেন, যখন মুহরিমের পথে শত্রু বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন সে সেই সময়-ই হালাল হয়ে যাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে যখন কুরাইশের কাফিররা বায়তুল্লাহ্ শরীফের (উমরা) থেকে বাধা প্রদান করেছিল তখন তিনি অনুরূপ করেছেন। তিনি তাঁর হাদী যবাহ করেছেন, মাথা মুণ্ডন করেছেন এবং তিনি হালাল হয়েছেন তাঁর সাহাবীগণও হালাল হয়েছেন। তারপর তারা (মদীনা) প্রত্যাবর্তন করেছেন। তারপর পরের বছর তারা উমরা আদায় করেছেন।
যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উমরায় শত্রু কর্তৃক বাধা প্রদানের দ্বারা হালাল হননি যতক্ষণ না কুরবানী করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তির হুকুম হল অনুরূপ যে, বাধাপ্রাপ্তির দ্বারা সে হালাল হবে না যতক্ষণ না পশু কুরবানী করবে। যা কিছু আমরা শুরুতে রিওয়ায়াত করেছি তাতে আমাদের মতে এর পরিপন্থী কিছু নেই। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর ইরশাদ, “কোন ব্যক্তির কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে অথবা খোঁড়া হয়ে গেলে সে হালাল হয়ে যাবে।" এতে এই সম্ভবনাও রয়েছে যে, তার জন্য ইহরাম খুলে ফেলা তথা হালাল হয়ে যাওয়া জায়েয হয়ে গিয়েছে। এই অর্থ নয় যে, এর দ্বারা সে ইহরাম থেকে বের হয়ে হালাল হয়ে গিয়েছে। এটা অনুরূপ যে, যখন কোন নারীর আবশ্যকীয় ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তখন বলা হয় যে, সেই নারী পুরুষদের জন্য হালাল (বৈধ) হয়ে গিয়েছে। বস্তুত এর এই অর্থ নয় যে, এখন সে তাদের জন্য হালাল হয়ে গিয়েছে, এখন তারা তার সঙ্গে সঙ্গম করতে পারবে। বরং এর অর্থ হল, এখন তারা তাকে বিবাহ করতে পারবে, যার দ্বারা তার সঙ্গে সঙ্গম করা তাদের জন্য জায়েয হবে। এটা জায়েয ও বিশুদ্ধ কথা।
সুতরাং যখন এই হাদীসে আমাদের উল্লিখিত বিষয়ের সম্ভবনা রয়েছে এবং মিসওয়ার (রাযিঃ) সূত্রে উরওয়া (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে সেই বিষয়টি-ই বর্ণিত হয়েছে যা আমরা বর্ণনা করেছি, এতে এই বিষয়ে আমাদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সঠিক সাব্যস্ত হয়েছে। আল্লাহ্ তা'আলা নিজ কিতাবে বলেছেনঃ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ
কিন্তু তােমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে সহজলভ্য কুরবানী কর। যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু তার স্থানে না পৌছে তােমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। (সূরা বাকারা ২, আয়াত ১৯৬)
তাই যখন আল্লাহ্ তা'আলা অবরুদ্ধ ব্যক্তিকে হুকুম দিয়েছেন, সে যেন কুরবানীর পশু কুরবানী স্থলে না পৌঁছা পর্যন্ত নিজের মাথা মুণ্ডন না করে। এতে বুঝা গেল যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তি সেই সময়ে ইহরাম খুলবে যখন তার জন্য মাথা মুণ্ডন করা জায়েয হবে। আল্লাহ্ তা'আলার ইরশাদ এরই স্বপক্ষে প্রমাণ বহন করে। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হুদায়বিয়াতে অনুরূপ করেছেন।
ঐ বিশ্লেষণের বিশুদ্ধতার প্রমাণ এটিও একটিঃ হাজ্জাজ ইব্ন আম্র (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, ইকরামা (রাহঃ) উল্লেখ করেছেন যে, তিনি এই বিষয়টি (হাদীসটি) ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলে তাঁরা বললেনঃ 'তিনি (হাজ্জাজ রা) সত্য বলেছেন।' সুতরাং এই হাদীস ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকেও সাব্যস্ত হল। তারপর আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) অবরুদ্ধ ব্যক্তির ব্যাপারে ঐ বিষয়বস্তু ও বিশ্লেষণের অনুকূলে কথা বলেছেন, যা আমরা হাজ্জাজ (রাযিঃ)-এর হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছি। এই বিষয়বস্তুর উপর আলকামা (রাহঃ)-এর নিম্নোক্ত রিওয়ায়াতও প্রমাণ বহন করেঃ
যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উমরায় শত্রু কর্তৃক বাধা প্রদানের দ্বারা হালাল হননি যতক্ষণ না কুরবানী করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তির হুকুম হল অনুরূপ যে, বাধাপ্রাপ্তির দ্বারা সে হালাল হবে না যতক্ষণ না পশু কুরবানী করবে। যা কিছু আমরা শুরুতে রিওয়ায়াত করেছি তাতে আমাদের মতে এর পরিপন্থী কিছু নেই। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর ইরশাদ, “কোন ব্যক্তির কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে অথবা খোঁড়া হয়ে গেলে সে হালাল হয়ে যাবে।" এতে এই সম্ভবনাও রয়েছে যে, তার জন্য ইহরাম খুলে ফেলা তথা হালাল হয়ে যাওয়া জায়েয হয়ে গিয়েছে। এই অর্থ নয় যে, এর দ্বারা সে ইহরাম থেকে বের হয়ে হালাল হয়ে গিয়েছে। এটা অনুরূপ যে, যখন কোন নারীর আবশ্যকীয় ইদ্দত শেষ হয়ে যায় তখন বলা হয় যে, সেই নারী পুরুষদের জন্য হালাল (বৈধ) হয়ে গিয়েছে। বস্তুত এর এই অর্থ নয় যে, এখন সে তাদের জন্য হালাল হয়ে গিয়েছে, এখন তারা তার সঙ্গে সঙ্গম করতে পারবে। বরং এর অর্থ হল, এখন তারা তাকে বিবাহ করতে পারবে, যার দ্বারা তার সঙ্গে সঙ্গম করা তাদের জন্য জায়েয হবে। এটা জায়েয ও বিশুদ্ধ কথা।
সুতরাং যখন এই হাদীসে আমাদের উল্লিখিত বিষয়ের সম্ভবনা রয়েছে এবং মিসওয়ার (রাযিঃ) সূত্রে উরওয়া (রাহঃ)-এর রিওয়ায়াতে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে সেই বিষয়টি-ই বর্ণিত হয়েছে যা আমরা বর্ণনা করেছি, এতে এই বিষয়ে আমাদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সঠিক সাব্যস্ত হয়েছে। আল্লাহ্ তা'আলা নিজ কিতাবে বলেছেনঃ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ
কিন্তু তােমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে সহজলভ্য কুরবানী কর। যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু তার স্থানে না পৌছে তােমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। (সূরা বাকারা ২, আয়াত ১৯৬)
তাই যখন আল্লাহ্ তা'আলা অবরুদ্ধ ব্যক্তিকে হুকুম দিয়েছেন, সে যেন কুরবানীর পশু কুরবানী স্থলে না পৌঁছা পর্যন্ত নিজের মাথা মুণ্ডন না করে। এতে বুঝা গেল যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তি সেই সময়ে ইহরাম খুলবে যখন তার জন্য মাথা মুণ্ডন করা জায়েয হবে। আল্লাহ্ তা'আলার ইরশাদ এরই স্বপক্ষে প্রমাণ বহন করে। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হুদায়বিয়াতে অনুরূপ করেছেন।
ঐ বিশ্লেষণের বিশুদ্ধতার প্রমাণ এটিও একটিঃ হাজ্জাজ ইব্ন আম্র (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, ইকরামা (রাহঃ) উল্লেখ করেছেন যে, তিনি এই বিষয়টি (হাদীসটি) ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলে তাঁরা বললেনঃ 'তিনি (হাজ্জাজ রা) সত্য বলেছেন।' সুতরাং এই হাদীস ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকেও সাব্যস্ত হল। তারপর আব্দুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) অবরুদ্ধ ব্যক্তির ব্যাপারে ঐ বিষয়বস্তু ও বিশ্লেষণের অনুকূলে কথা বলেছেন, যা আমরা হাজ্জাজ (রাযিঃ)-এর হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছি। এই বিষয়বস্তুর উপর আলকামা (রাহঃ)-এর নিম্নোক্ত রিওয়ায়াতও প্রমাণ বহন করেঃ
كتاب مناسك الحج
4132 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ تَمَّامٍ , قَالَ ثنا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ , قَالَ: حَدَّثَنِي مَيْمُونُ بْنُ يَحْيَى , عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ بُكَيْرٍ , عَنْ أَبِيهِ , قَالَ: سَمِعْتُ نَافِعًا , مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ , يَقُولُ: قَالَ ابْنُ عُمَرَ: إِذَا عَرَضَ لِلْمُحْرِمِ عَدُوٌّ , فَإِنَّهُ يَحِلُّ حِينَئِذٍ , قَدْ فَعَلَ ذَلِكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ حَبَسَتْهُ كُفَّارُ قُرَيْشٍ فِي عُمْرَتِهِ , عَنِ الْبَيْتِ , فَنَحَرَ هَدْيَهُ وَحَلَقَ وَحَلَّ هُوَ وَأَصْحَابُهُ , ثُمَّ رَجَعُوا , حَتَّى اعْتَمَرُوا مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فَلَمَّا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَحِلَّ بِالِاخْتِصَارِ فِي عُمْرَتِهِ , بِحَصْرِ الْعَدُوِّ إِيَّاهُ حَتَّى نَحَرَ الْهَدْيَ «, دَلَّ ذَلِكَ أَنَّ كَذَلِكَ حُكْمَ الْمُحْصَرِ , لَا يَحِلُّ بِالْإِحْصَارِ حَتَّى يَنْحَرَ الْهَدْيَ. [ص:250] وَلَيْسَ فِيمَا رَوَيْنَاهُ أَوَّلُ خِلَافٍ لِهَذَا عِنْدَنَا , لِأَنَّ قَوْلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ , فَقَدْ حَلَّ «فَقَدْ يُحْتَمَلُ أَنْ يَكُونَ , فَقَدْ حَلَّ لَهُ أَنْ يَحِلَّ , لَا عَلَى أَنَّهُ قَدْ حَلَّ بِذَلِكَ مِنْ إِحْرَامِهِ. وَيَكُونُ هَذَا كَمَا يُقَالُ» قَدْ حَلَّتْ فُلَانَةُ لِلرِّجَالِ «إِذَا خَرَجَتْ مِنْ عِدَّةٍ عَلَيْهَا مِنْ زَوْجٍ قَدْ كَانَ لَهَا قَبْلَ ذَلِكَ , لَيْسَ عَلَى مَعْنَى أَنَّهَا قَدْ حَلَّتْ لَهُمْ , فَيَكُونُ لَهُمْ وَطْؤُهَا وَلَكِنْ عَلَى مَعْنَى أَنَّهُ قَدْ حَلَّ لَهُمْ أَنْ يَتَزَوَّجُوهَا تَزَوُّجًا , يَحِلُّ لَهُمْ وَطْؤُهَا. هَذَا كَلَامٌ جَائِزٌ مُسْتَسَاغٌ. فَلَمَّا كَانَ هَذَا الْحَدِيثُ قَدِ احْتَمَلَ مَا ذَكَرْنَا , وَجَاءَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَدِيثِ عُرْوَةَ عَنِ الْمِسْوَرِ , مَا قَدْ وَصَفْنَا ثَبَتَ بِذَلِكَ هَذَا التَّأْوِيلُ. وَقَدْ بَيَّنَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ ذَلِكَ فِي كِتَابِهِ بِقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ {فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ» } . فَلَمَّا أَمَرَ اللهُ تَعَالَى الْمُحْصَرَ أَنْ لَا يَحْلِقَ رَأْسَهُ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ , عُلِمَ بِذَلِكَ أَنَّهُ لَا يَحِلُّ الْمُحْصَرُ مِنْ إِحْرَامِهِ إِلَّا فِي وَقْتِ مَا يَحِلُّ لَهُ حَلْقُ رَأْسِهِ. فَهَذَا قَدْ دَلَّ عَلَيْهِ قَوْلُ اللهِ تَعَالَى ثُمَّ فَعَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَمَنَ الْحُدَيْبِيَةِ. وَالدَّلِيلُ عَلَى صِحَّةِ ذَلِكَ التَّأْوِيلِ أَيْضًا , أَنَّ حَدِيثَ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو قَدْ ذَكَرَ عِكْرِمَةُ أَنَّهُ حَدَّثَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فَقَالَ لَا: صَدَقَ. فَصَارَ ذَلِكَ الْحَدِيثُ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ أَيْضًا. وَقَدْ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي الْمُحْصَرِ , مَا قَدْ وَافَقَ التَّأْوِيلَ الَّذِي صَرَفْنَا إِلَيْهِ حَدِيثَ الْحَجَّاجِ
وَدَلَّ عَلَيْهِ ,
وَدَلَّ عَلَيْهِ ,
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৩
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩৩। ইয়াযীদ ইব্ন সিনান (রাহঃ) ..... আলকামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যাপারে বলেছেনঃ وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ - তােমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরা পূর্ণ কর, কিন্তু তােমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তবে সহজলভ্য কুরবানী কর। (সূরা বাকারাঃ ১৯৬) যখন কোন ব্যক্তি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পড়বে তখন সে হাদী পাঠিয়ে দিবে।
আল্লাহর ইরশাদঃ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ بِهِ أَذًى مِنْ رَأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ
যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু তার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ পীড়িত হয় কিংবা মাথায় ক্লেশ থাকে তবে সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা কুরবানী দ্বারা এর ফিয়া দিবে। (সূরা বাকারা : ১৯৬) তিন দিনের সিয়াম পালন করবে। যদি দ্রুত করতে গিয়ে হাদী কুরবানী স্থলে পৌঁছার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলে তবে তার উপর সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা কুরবানী দ্বারা এর ফিয়া দিবে। তিন দিন সিয়াম পালন করবে কিংবা ছয় মিসকীনকে আহার করাবে। প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধ সা (প্রায় পৌনে দুই কিলো গম ) দিবে। 'নুসুক' হল বকরী। যখন সেই বাধা থেকে নিরাপদ হয়ে যাবে তখন যে ব্যক্তি হজ্জ পালনের সঙ্গে উমরা দ্বারা লাভবান হতে চায়, যদি সে নিজের এই আমল অব্যাহত রাখে, তবে তার উপর হজ্জ আবশ্যক হবে। আর যদি উমরাকে আগামী বছর পর্যন্ত বিলম্বিত করে তবে তার উপর হজ্জ ও উমরা উভয়টি ওয়াজিব হবে। (আল্লাহ্ ইরশাদ) ‘এবং যে হাদী সহজলভ্য হবে' (সেটি যবাহ করবে)। কিন্তু যদি কেউ তা না পায় তবে সে হজ্জের সময় তিন দিন সিয়াম পালন করবে, যার আখেরী দিন হবে (৯ই যিলহজ্জ) আরাফাতের দিন। আর গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর সাতদিন (সিয়াম পালন করবে)। রাবী ইবরাহীম (রাহঃ) বলেন, আমি এই বিষয়টি সাঈদ ইব্ন জুবাইর (রাহঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেন, এটা ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর অভিমত এবং তিনি ত্রিশের গিরা করে দেখালেন ।
আল্লাহর ইরশাদঃ وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ بِهِ أَذًى مِنْ رَأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ
যে পর্যন্ত কুরবানীর পশু তার স্থানে না পৌঁছে তোমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ পীড়িত হয় কিংবা মাথায় ক্লেশ থাকে তবে সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা কুরবানী দ্বারা এর ফিয়া দিবে। (সূরা বাকারা : ১৯৬) তিন দিনের সিয়াম পালন করবে। যদি দ্রুত করতে গিয়ে হাদী কুরবানী স্থলে পৌঁছার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলে তবে তার উপর সিয়াম কিংবা সাদাকা অথবা কুরবানী দ্বারা এর ফিয়া দিবে। তিন দিন সিয়াম পালন করবে কিংবা ছয় মিসকীনকে আহার করাবে। প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধ সা (প্রায় পৌনে দুই কিলো গম ) দিবে। 'নুসুক' হল বকরী। যখন সেই বাধা থেকে নিরাপদ হয়ে যাবে তখন যে ব্যক্তি হজ্জ পালনের সঙ্গে উমরা দ্বারা লাভবান হতে চায়, যদি সে নিজের এই আমল অব্যাহত রাখে, তবে তার উপর হজ্জ আবশ্যক হবে। আর যদি উমরাকে আগামী বছর পর্যন্ত বিলম্বিত করে তবে তার উপর হজ্জ ও উমরা উভয়টি ওয়াজিব হবে। (আল্লাহ্ ইরশাদ) ‘এবং যে হাদী সহজলভ্য হবে' (সেটি যবাহ করবে)। কিন্তু যদি কেউ তা না পায় তবে সে হজ্জের সময় তিন দিন সিয়াম পালন করবে, যার আখেরী দিন হবে (৯ই যিলহজ্জ) আরাফাতের দিন। আর গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর সাতদিন (সিয়াম পালন করবে)। রাবী ইবরাহীম (রাহঃ) বলেন, আমি এই বিষয়টি সাঈদ ইব্ন জুবাইর (রাহঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেন, এটা ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর অভিমত এবং তিনি ত্রিশের গিরা করে দেখালেন ।
كتاب مناسك الحج
4133 - مَا حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ سِنَانٍ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ , عَنِ الْأَعْمَشِ , عَنْ إِبْرَاهِيمَ , عَنْ عَلْقَمَةَ {وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ} [البقرة: 196] قَالَ: إِذَا أُحْصِرَ الرَّجُلُ , بَعَثَ الْهَدْيَ {وَلَا تَحْلِقُوا رُءُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ بِهِ أَذًى مِنْ رَأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِنْ صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ «} فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ. فَإِنْ عَجَّلَ فَحَلَقَ قَبْلَ أَنْ يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ , فَعَلَيْهِ فِدْيَةٌ , مِنْ صِيَامٍ , أَوْ صَدَقَةٍ , أَوْ نُسُكٍ , صِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ , أَوْ تَصَدَّقَ عَلَى سِتَّةِ مَسَاكِينَ , كُلُّ مِسْكِينٍ نِصْفُ صَاعٍ , أَوِ النُّسُكُ شَاةٌ. فَإِذَا أَمِنَ مِمَّا كَانَ بِهِ {فَمَنْ تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ» } [البقرة: 196] فَإِنْ مَضَى مِنْ وَجْهِهِ ذَلِكَ , فَعَلَيْهِ حَجَّةٌ , وَإِنْ أَخَّرَ الْعُمْرَةَ إِلَى قَابِلٍ فَعَلَيْهِ حَجَّةٌ وَعُمْرَةٌ وَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ {فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ "} [البقرة: 196] آخِرُهَا يَوْمُ عَرَفَةَ , {وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ "} [البقرة: 196][ص:251] قَالَ: فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِسَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ فَقَالَ: هَذَا قَوْلُ ابْنِ عَبَّاسٍ وَعَقَدَ ثَلَاثِينَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৪
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩৪। আবু শুরায়হ মুহাম্মাদ ইব্ন যাকারিয়া ইব্ন ইয়াহ্ইয়া (রাহঃ) ….. আলকামা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আল্লাহ্ তা'আলার ইরশাদ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ (কিন্তু তােমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও) -এর ব্যাপারে বলেছেন যে, কোন ব্যক্তি বাধাগ্রস্ত কিংবা রােগাক্রান্ত হয়ে পড়লে। ইবরাহীম (রাহঃ) বলেন, আমি বিষয়টি সাঈদ ইব্ন জুবাইর (রাহঃ)-কে বললে তিনি বললেন, ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) এরূপ বলেছেন।
বস্তুত এখানে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে তার ইহরামকে সেই সময় খােলা জায়েয সাব্যস্ত করেছেন যখন তার পক্ষ থেকে হাদী যবাহ করা হবে। তিনি নবী(ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির (ইহরাম অবস্থায়) কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে বা লেংড়া হয়ে গেলে সে হালাল হয়ে যাবে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর মতে এর অর্থ হলঃ এখন তার জন্য ইহরাম খােলা জায়েয আছে; যেমনটি আমরা এটি গ্রহণ করে এই মতপােষণ করেছি। বিষয়টি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ব্যতীত রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর অন্য সাহাবীদের থেকেও বর্ণিত আছেঃ
বস্তুত এখানে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে তার ইহরামকে সেই সময় খােলা জায়েয সাব্যস্ত করেছেন যখন তার পক্ষ থেকে হাদী যবাহ করা হবে। তিনি নবী(ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির (ইহরাম অবস্থায়) কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে বা লেংড়া হয়ে গেলে সে হালাল হয়ে যাবে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর মতে এর অর্থ হলঃ এখন তার জন্য ইহরাম খােলা জায়েয আছে; যেমনটি আমরা এটি গ্রহণ করে এই মতপােষণ করেছি। বিষয়টি ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ব্যতীত রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর অন্য সাহাবীদের থেকেও বর্ণিত আছেঃ
كتاب مناسك الحج
4134 - حَدَّثَنَا أَبُو شُرَيْحٍ مُحَمَّدُ بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ يَحْيَى , قَالَ: ثنا الْفِرْيَابِيُّ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ , عَنِ الْأَعْمَشِ , عَنْ إِبْرَاهِيمَ , عَنْ عَلْقَمَةَ , أَنَّهُ قَالَ: فِي قَوْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَنَا {فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ "} [البقرة: 196] قَالَ: «مِنْ حَبْسٍ أَوْ مَرَضٍ» قَالَ إِبْرَاهِيمُ: فَحَدَّثْتُ بِهِ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ فَقَالَ: هَكَذَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فَهَذَا ابْنُ عَبَّاسٍ لَمْ يَجْعَلْهُ يَحِلُّ مِنْ إِحْرَامِهِ بِالْإِحْصَارِ حَتَّى يَنْحَرَ عَنْهُ الْهَدْيَ. وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ , فَقَدْ حَلَّ» فَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّ مَعْنَى «فَقَدْ حَلَّ» عِنْدَهُ , أَيْ: لَهُ أَنْ يَحِلَّ , عَلَى مَا ذَهَبْنَا إِلَيْهِ فِي ذَلِكَ , وَقَدْ رُوِيَ ذَلِكَ أَيْضًا , عَنْ غَيْرِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيْضًا
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৩৭
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩৫-৩৭। ফাহাদ (রাহঃ) ..... আলকামা (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমাদের এক সাথীকে এক বিষাক্ত সাপ দংশন করে, তখন সে উমরার ইহরাম অবস্থায় ছিল। বিষয়টি আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ল। আমরা আব্দুল্লাহ্ ইব্ন মাস্উদ (রাযিঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাঁকে তার বিষয়টি বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, সে তার হাদী পাঠিয়ে দিবে এবং নিজের সাথীদের সঙ্গে একটি সময় নির্দিষ্ট করে নিবে। যখন তার পক্ষ থেকে হাদী যবাহ হয়ে যাবে তখন সে হালাল হয়ে যাবে।
ফাহাদ (রাহঃ) ….. আব্দুর রহমান ইব্ন ইয়াযীদ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আব্দুল্লাহ (ইব্ন মাসউদ রা) বলেছেন, তারপর পরবর্তীতে তার উপর উমরা অবশ্যক হবে ।
মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ..... সুলায়মান আ’মাশ (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ফাহাদ (রাহঃ) ….. আব্দুর রহমান ইব্ন ইয়াযীদ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আব্দুল্লাহ (ইব্ন মাসউদ রা) বলেছেন, তারপর পরবর্তীতে তার উপর উমরা অবশ্যক হবে ।
মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ..... সুলায়মান আ’মাশ (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
كتاب مناسك الحج
4135 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدِ بْنِ شَدَّادٍ الْعَبْدِيُّ , صَاحِبُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ , قَالَ: ثنا جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ , عَنْ مَنْصُورٍ , عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ , قَالَ: لُدِغَ صَاحِبٌ لَنَا بِذَاتِ التَّنَانِينِ , وَهُوَ مُحْرِمٌ بِعُمْرَةٍ , فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْنَا , فَلَقِينَا عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَذَكَرْنَا لَهُ أَمْرَهُ. فَقَالَ: " يَبْعَثُ بِهَدْيٍ , وَيُوَاعِدُ أَصْحَابَهُ مَوْعِدًا , فَإِذَا نَحَرَ عَنْهُ حَلَّ
4136 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا عَلِيٌّ , قَالَ: ثنا جَرِيرٌ , عَنِ الْأَعْمَشِ , عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ , عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ , قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللهِ «ثُمَّ عَلَيْهِ عُمْرَةٌ بَعْدَ ذَلِكَ»
4137 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ , قَالَ: ثنا أَبُو عَوَانَةَ , عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
4136 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا عَلِيٌّ , قَالَ: ثنا جَرِيرٌ , عَنِ الْأَعْمَشِ , عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ , عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ , قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللهِ «ثُمَّ عَلَيْهِ عُمْرَةٌ بَعْدَ ذَلِكَ»
4137 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ , قَالَ: ثنا أَبُو عَوَانَةَ , عَنْ سُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৬
হজ্বের অধ্যায়
empty
৪১৩৬।
كتاب مناسك الحج
4136 -
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৭
হজ্বের অধ্যায়
empty
৪১৩৭।
كتاب مناسك الحج
4137 -
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৮
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩৮। ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ….. আব্দুর রহমান ইব্ন ইয়াযীদ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, 'নাখা' গােত্রের এক ব্যক্তি, যাকে উমাইর ইব্ন সাঈদ বলা হত, উমরার ইহরাম বাঁধে। তারপর (পথে) তাকে সাপে দংশন করে এবং সে পথে পড়ে থাকে। ঐ সময় তাদের নিকট একটি কাফেলা আসল, যাদের মধ্যে ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) ছিলেন। তারা ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে (তাঁকে) জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, হাদী পাঠিয়ে দাও এবং তােমাদের ও তার মাঝে একটি দিন আলামত হিসাবে নির্দিষ্ট করে নাও। যখন সেই দিন আসবে তখন সে হালাল হয়ে যাবে। হাকাম (রাহঃ) বলেন, আম্মারা ইব্ন উমাইর (রাহঃ) বলেছেন, আমি এই হাদীস আব্দুর রহমান ইব্ন ইয়াযীদ (রাহঃ) থেকে তােমাকে বর্ণনা করেছি যে, ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বলেছেন, তার উপর আগামী বছর উমরার কাযা ওয়াজিব হবে। শু'বা (রাহঃ) বলেন, আমি সুলায়মান (রাহঃ) থেকে শুনেছি, তিনি হাকাম (রাহঃ)-এর অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
كتاب مناسك الحج
4138 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ , قَالَ: ثنا شُعْبَةُ , عَنِ الْحَكَمِ , قَالَ: سَمِعْتُ إِبْرَاهِيمَ , يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ: أَهَلَّ رَجُلٌ مِنَ النَّخْعِ بِعُمْرَةٍ يُقَالُ لَهُ , عُمَيْرُ بْنُ سَعِيدٍ , فَلُدِغَ فَبَيْنَا هُوَ صَرِيعٌ فِي الطَّرِيقِ إِذْ طَلَعَ عَلَيْهِمْ رَكْبٌ فِيهِمُ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَسَأَلُوهُ. فَقَالَ: «ابْعَثُوا بِالْهَدْيِ , وَاجْعَلُوا بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ يَوْمًا أَمَارَةً , فَإِذَا كَانَ ذَلِكَ , فَلْيَحْلِلْ» قَالَ الْحَكَمُ: وَقَالَ عُمَارَةُ بْنُ عُمَيْرٍ , وَكَانَ حَدَّثَكَ بِهِ , عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ أَنَّ ابْنَ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: وَعَلَيْهِ الْعُمْرَةُ مِنْ قَابِلٍ. قَالَ: شُعْبَةُ وَسَمِعْتُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَهُ بِهِ , مِثْلَ مَا حَدَّثَ الْحَكَمُ سَوَاءً
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৩৯
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৩৯। ইউনুস (রাহঃ) ….. ইব্ন উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, বাধাগ্রস্ত ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত ইহরাম খুলে হালাল হতে পারবে না যতক্ষণ না বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করবে। যদি সে পােশাক পরিধান কিংবা ঔষধ ব্যবহারে বাধ্য হয় তবে তা করবে এবং ফিদয়া আদায় করবে।
রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর সাহাবীগণ থেকে বর্ণিত এই সমস্ত রিওয়ায়াত থেকেও সেই বিষয়টি-ই প্রমাণিত হয়েছে, যা আমরা হাজ্জাজ (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বর্ণনা করেছি।
তারপর (আলিমগণ) ঐ বাধাগ্রস্ত হওয়ার উল্লিখিত হুকুম সম্পর্কে মত বিরােধ করেছেন যে, এর কারণ কি? কোন্ জিনিসের দ্বারা বা কোন্ অর্থে বাধাগ্রস্ততা সাব্যস্ত হয় ? একদল ('আলিম) বলেন, যে ব্যক্তির মধ্যে রােগ ইত্যাদির কারণে বাধাগ্রস্ততা সৃষ্টি হয় (সেই হল বাধাগ্রস্ত ব্যক্তি)। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর এটাই অভিমত। আর আমরা এই বিষয়টি ইতিপূর্বে এই অনুচ্ছেদেই ইব্ন মাস্উদ (রাযিঃ) ও ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও বর্ণনা করেছি। অন্য একদল ('আলিম) বলেন যে, আমরা যে বাধাগ্রস্ততার হুকুম বর্ণনা করেছি, তা শুধু শক্র'র কারণে হয়ে থাকে, রােগের কারণে হয় না। আর এটা-ই হল ইব্ন উমার (রাযিঃ)-এর অভিমত।
রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর সাহাবীগণ থেকে বর্ণিত এই সমস্ত রিওয়ায়াত থেকেও সেই বিষয়টি-ই প্রমাণিত হয়েছে, যা আমরা হাজ্জাজ (রাযিঃ)-এর রিওয়ায়াতের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বর্ণনা করেছি।
তারপর (আলিমগণ) ঐ বাধাগ্রস্ত হওয়ার উল্লিখিত হুকুম সম্পর্কে মত বিরােধ করেছেন যে, এর কারণ কি? কোন্ জিনিসের দ্বারা বা কোন্ অর্থে বাধাগ্রস্ততা সাব্যস্ত হয় ? একদল ('আলিম) বলেন, যে ব্যক্তির মধ্যে রােগ ইত্যাদির কারণে বাধাগ্রস্ততা সৃষ্টি হয় (সেই হল বাধাগ্রস্ত ব্যক্তি)। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর এটাই অভিমত। আর আমরা এই বিষয়টি ইতিপূর্বে এই অনুচ্ছেদেই ইব্ন মাস্উদ (রাযিঃ) ও ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকেও বর্ণনা করেছি। অন্য একদল ('আলিম) বলেন যে, আমরা যে বাধাগ্রস্ততার হুকুম বর্ণনা করেছি, তা শুধু শক্র'র কারণে হয়ে থাকে, রােগের কারণে হয় না। আর এটা-ই হল ইব্ন উমার (রাযিঃ)-এর অভিমত।
كتاب مناسك الحج
4139 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ أنا ابْنُ وَهْبٍ , أَنَّ مَالِكًا , حَدَّثَهُ , عَنِ ابْنِ شِهَابٍ , عَنْ سَالِمٍ , عَنِ ابْنِ عُمَرَ , أَنَّهُ قَالَ: " [ص:252] الْمُحْصَرِ لَا يَحِلُّ حَتَّى يَطُوفَ بِالْبَيْتِ , وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ , وَإِنِ اضْطُرَّ إِلَى شَيْءٍ مِنْ لُبْسِ الثِّيَابِ الَّتِي لَا بُدَّ لَهُ مِنْهَا , وَالدَّوَاءِ , صَنَعَ ذَلِكَ وَافْتَدَى فَقَدْ ثَبَتَ بِهَذِهِ الرِّوَايَاتِ أَيْضًا , عَنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مَا يُوَافِقُ مَا تَأَوَّلْنَا عَلَيْهِ حَدِيثَ الْحَجَّاجِ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ. ثُمَّ اخْتَلَفَ النَّاسُ بَعْدَ هَذِهِ فِي الْإِحْصَارِ الَّذِي هَذَا حُكْمُهُ , بِأَيِّ شَيْءٍ هُوَ؟ أَوْ بِأَيِّ مَعْنًى يَكُونُ. فَقَالَ قَوْمٌ: يَكُونُ بِكُلِّ حَابِسٍ يَحْبِسُهُ مِنْ مَرَضٍ أَوْ غَيْرِهِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ وَقَدْ رَوَيْنَا ذَلِكَ أَيْضًا فِيمَا تَقَدَّمَ مِنْ هَذَا الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ. وَقَالَ آخَرُونَ: لَا يَكُونُ الْإِحْصَارُ الَّذِي حُكْمُهُ مَا وَصَفْنَا , إِلَّا بِالْعَدُوِّ خَاصَّةً , وَلَا يَكُونُ بِالْأَمْرَاضِ وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ عُمَرَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪০
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৪০। মুহাম্মাদ ইব্ন যাকারিয়া আবু শুরাইহ্ (রাহঃ) ….. ইব্ন উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, ইহসার তথা অবরুদ্ধতা শুধু দুশমনের কারণেই হয়ে থাকে।
كتاب مناسك الحج
4140 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زَكَرِيَّا أَبُو شُرَيْحٍ , قَالَ: ثنا الْفِرْيَابِيُّ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ , عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ , عَنْ نَافِعٍ , عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ. قَالَ: " لَا يَكُونُ الْإِحْصَارُ إِلَّا مِنْ عَدُوٍّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪১
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৪১। ইউনুস (রাহঃ) ….. সালিম (রাহঃ)-এর পিতা (আব্দুল্লাহ রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি রােগের কারণে বায়তুল্লাহ্ শরীফ থেকে দূরে আটকা পড়ে সে ততক্ষণ পর্যন্ত হালাল হবে না যতক্ষণ না বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করবে।
যখন এই বিষয়টিতে মতবিরােধ সৃষ্টি হয়েছে এবং আমরা হাজ্জাজ ইব্ন আম্র (রাযিঃ), ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর ইরশাদঃ “যে ব্যক্তির কোন অঙ্গ ভেঙ্গে যাবে কিংবা সে লেংড়া হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে”-এর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছি যে, তার উপর আরেকটি হজ্জ আবশ্যক হয়। এতে প্রমাণিত হল যে, অবরুদ্ধতা যেভাবে দুশমনের কারণে হয় অনুরূপভাবে রােগের কারণেও হয়। এই অনুচ্ছেদের হাদীসসমূহের সঠিক মর্ম নিরূপণের নীতিতে এটাই হল যথার্থ বিশ্লেষণ। পক্ষান্তরে যুক্তির ভিত্তিতে বিশ্লেষণ হল যে, আমরা ফকীহ্গণকে লক্ষ্য করেছি যে, তাঁরা এ বিষয়ে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, দুশমনের কারণে অবরুদ্ধ অবস্থায় অবরুদ্ধ ব্যক্তির উপরে হালাল হয়ে যাওয়া ওয়াজিব, যেমনটি আমরা বর্ণনা করেছি। কিন্তু তাঁরা রােগের ব্যাপারে মতবিরােধ করেছেন। একদল বলেন যে, এ বিষয়ে এর হুকুম দুশমনের হুকুমের অনুরূপ। কেননা এটাও, তার হজ্জকে অব্যাহত রাখতে বাধা প্রদান করা, দুশমনের বাধা প্রদান করার অনুরূপ। পক্ষান্তরে অপরদল বলেন যে, এর হুকুম দুশমনের হুকুম থেকে ভিন্নতর। আমরা দেখতে চাচ্ছি যে, সেই কাজ যা দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের ভিত্তিতে জায়েয হয় তা রােগের কারণেও জায়েয হয় কি-না? আমরা লক্ষ্য করছি যে, যখন কোন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে সক্ষম তখন তার জন্য দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা ফরয। যদি তার আশংকা হয় যে, দাঁড়ালে দুশমন তাকে দেখে হত্যা করে ফেলবে অথবা দুশমন তার মাথার উপর দাঁড়ালে এবং সে তাকে দাঁড়াতে বাধা দিচ্ছে, তবে সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, তার জন্য বসে সালাত আদায় করা জায়িয এবং তার জন্য কিয়াম (দাঁড়ান) ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে। আর এ বিষয়েও তাঁদের ঐকমত্য রয়েছে যে, যদি কোন ব্যক্তি রােগ বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার কারণে দাঁড়াতে না পারে, তবে তার জন্য কিয়াম ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে এবং তার জন্য বসে সালাত আদায় করা জায়িয। যদি সক্ষম হয় তাহলে রুকু সিজদা করবে অন্যথায় ইশারা দ্বারা তা আদায় করবে। সুতরাং আমরা দেখছি যে, তার জন্য যে কাজ দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের ভিত্তিতে জায়িয হয়; সেটা রোগের কারণেও প্রয়ােজনের নিরিখে জায়িয হয়। আমরা লক্ষ্য করছি যে, যখন কোন ব্যক্তি এবং পানির মাঝে দুশমন বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন তার জন্য উযূর ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যায়; সে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করবে। অনুরূপভাবে তার যদি এরূপ কোন রােগ হয় যাতে পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হয়, এ অবস্থায়ও তার জন্য উযূ ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যায়; সে তায়াম্মুম করবে এবং সালাত আদায় করবে। এই সমস্ত অবস্থায় যেখানে সে দুশমনের কারণে ওযরগ্রস্ত হয়েছে আর কখনও রােগের কারণে ওযরগ্রস্ত হয়, এ বিষয়ে অবস্থা ও হুকুম অভিন্ন। তারপর আমরা লক্ষ্য করছি যে, ঐ হজ্জ পালনকারী যে দুশমনের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এবং ওযরগ্রস্ত সাব্যস্ত হয়েছে। বস্তুত তার জন্য সেই আমল করার হুকুম রয়েছে যা বাধাগ্রস্ত ব্যক্তিকে করতে হয়, তারপর সে হালাল হয়। পক্ষান্তরে রােগের কারণে অবরুদ্ধ ব্যক্তির ব্যাপারে তারা (ফকীহ্গণ) মতবিরােধ করেছেন। এ বিষয়ে যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এর উপর যুক্তির দাবি হল যে, দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের নিরিখে তার জন্য আমল ওয়াজিব, ভােগের কারণেও প্রয়ােজনের নিরিখে তা ওয়াজিব হবে এবং এ দু’টির হুকুম অনুরূপভাবে অভিন্ন হবে, যেমনটি তাহারাত ও সালাতের ব্যাপারে উভয়ের হুকুম এক ও অভিন্ন।
তারপর সেই ব্যক্তির ব্যাপারে আলিমগণ মত বিরােধ করেছেন, যে উমরার ইহরাম বেঁধেছে এবং দুশমন কিংবা রােগের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেঃ একদল আলিম বলেন, সে হাদী পাঠিয়ে দিবে এবং সঙ্গীদের থেকে ওয়াদা নিবে, তারা তার পক্ষ থেকে তা যবাহ করবে। যখন তা যবাহ হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে । কিন্তু অপর দল বলেন, সে অবিরত ইহরাম বেঁধে রাখবে, তার জন্য হজ্জের ন্যায় ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই। যারা এ মত পােষণকারী যে, সে হাদীর সাথে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে তাদের দলীল হল রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর সেই হাদীস, যা আমরা এই অনুচ্ছেদের শুরুতে বর্ণনা করেছি যে, যখন তিনি হুদায়বিয়ার বছর উমরার ইহরামরত অবস্থায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। কুরায়শ এর কাফিররা তাঁকে অবরুদ্ধ করেছিল, তখন তিনি হাদী যবাহ করেছেন এবং ইহরাম খুলে হালাল হয়ে গিয়েছেন। আর এ ভিত্তিতে তিনি অবরুদ্ধতা সমাপ্ত হওয়ার অপেক্ষা করেন নি। যেহেতু এর জন্য হজ্জের ন্যায় ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই, বরং এর জন্য অবরুদ্ধতাকে অনুরূপভাবে ওযর সাব্যস্ত করেছেন যেমনিভাবে হজ্জের সাথে অবরুদ্ধতার কারণে ওযরগ্রস্ত হয়। এতে সাব্যস্ত হল যে, অবরুদ্ধতার অবস্থায় দু’টির হুকুম এক ও অভিন্ন যে, সে হাদী পাঠাবে এবং এরপরে ঐ অবরুদ্ধতার কারণে উভয়ের ইহরাম খুলে হালাল হয়ে যাবে। তবে তার উপর উমরার অবস্থায় উমরার কাযা হবে তার উমরার স্থলে এবং হজ্জের অবস্থায় কাযা হিসাবে একটি হজ্জ এবং ইহরাম খােলার কারণে উমরা পালন আবশ্যক হবে। ইতিপূর্বে এই অনুচ্ছেদে আমরা আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছি যে, উমরার জন্য ইহরাম পালনকারীও কখনও অবরুদ্ধ হয়। রিওয়ায়াতসমূহের নীতিতে এটাই হল
এই অনুচ্ছেদের সঠিক বিশ্লেষণ। এ বিষয়ে যুক্তির ভিত্তিতে আলােচনা হল এই যে, আমরা লক্ষ্য করছি যে, কিছু জিনিস যা বান্দাদের উপর ফরয। এর মধ্যে কতেকের জন্য বিশেষ সময় নির্ধারিত আছে। আবার তাদের উপর কিছু ফরয বিধানাবলী এরূপ রয়েছে, যার জন্য পূরা জীবন ওয়াক্ত নির্ধারিত করা হয়েছে। সেগুলাে থেকে সালাতসমূহ যা তাদের উপর বিশেষ ওয়াক্তসমূহে ফরয এবং সেই ওয়াক্তসমূহে ঐ সমস্ত কারণের সাথে ঐ আদায় করা হয়, যা সেই ওয়াক্তসমূহের পূর্বে পাওয়া যায়। যেমন পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা, সতর ঢাকা ইত্যাদি এবং সেই সমস্ত জিনিস থেকে যিহার, সিয়াম ও হত্যার কাফফারায় সিয়াম পালন। যা যিহারকারী ও হত্যাকারীর উপর নির্দিষ্ট দিনে আবশ্যক নয় বরং এর জন্য পুরােজীবন ওয়াক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে কসমের কাফফারা, যা আল্লাহ্ তা'আলা কসম ভঙ্গকারীর উপর ওয়াজিব করেছেন। আর তা হল اطعام عشرة مساكين أو کسوتهم أو تحرير رقبة দশ মিসকীনকে আহার করান কিংবা তাদের পােশাক পরিধান করান অথবা একটি ক্রীতদাস আযাদ করা।
তারপর যাদের উপর আল্লাহ্ তা'আলা পূর্বে পাওয়া যাওয়া কারণ এবং সালাতের মাঝে পাওয়া যাওয়া কারণের শর্তে সালাত ফরয করেছেন। যখন এগুলাে থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় তখন এটাকে ওযর সাব্যস্ত করেছেন। সেই সমস্ত জিনিস থেকে একটি হল, যে ব্যক্তি পানি না পায় তার জন্য পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা রহিত হয়ে যায় এবং তায়াম্মুমের বিধান কার্যকর হয়। তা থেকে আরেকটি হল যে, যদি সতর ঢাকার জন্য কিছু না পায় তাহলে উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করবে। আরেকটি হলঃ যে ব্যক্তি কিবলামুখী হতে না পারে সে কিবলা ব্যতীত অন্য দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে। আরেকটি হলঃ যে ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম সে বসে রুকূ-সিজদার সঙ্গে সালাত আদায় করবে। যদি এটাও করতে না পারে, তাহলে ইশারা দ্বারা সালাত আদায় করবে, তাকে এর অনুমতি দেয়া হয়েছে। যদিও এতটুকু ওয়াক্ত অবশিষ্ট থাকে যাতে এই ওযর খতম হয়ে যায় এবং সে ওই অবস্থার দিকে প্রত্যাবর্তন করে যা ওযরের পূর্বে বিদ্যমান ছিল, যদিও তখনাে তার ওয়াক্ত চলে যায় নি এবং সে ওয়াক্তের মধ্যেই থাকে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা'আলা কাফফার সিয়াম ওয়াজিব করেছেন, কোন রােগের কারণে সিয়াম পালনে সক্ষম না হয়, তা হলে ওযরগ্রস্ত হবে। অথচ এরপরে সে সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এবং তার সিয়াম পালনের শক্তি ফিরে আসে। এবং তার সিয়াম পালনের ব্যাপারে কোন কিছু প্রতিবন্ধক নেই। কেননা এর জন্য কোন ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই। এটা তার থেকে সিয়াম রহিত হওয়ার ব্যাপারে ওযর হিসাবে সাব্যস্ত করা হবে। অনুরূপভাবে কাফফারাসমূহের অবস্থায় আহার করানাে, ক্রীতদাস আযাদ করা অথবা পােশাক পরিধান করানাের হুকুম। যদি এগুলাে থেকে কোনটির উপর শক্তিমান না হয় তা হলে অন্যের সঙ্গে শক্তিমান গণ্য করা হবে এবং আগামীতে কোন সময়ে অর্জনযােগ্য শক্তির সম্ভবনা ধর্তব্য হবে না। তাই যখন প্রয়ােজনের সময় সেই সমস্ত জিনিসগুলাের ফরয হওয়া রহিত হয়ে যায় যদিও ওয়াক্ত ফওত হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকে। সুতরাং এ জিনিসগুলাে এবং ঐ সমস্তগুলাে যাতে ওয়াক্ত ফওত হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। যেমন আখেরী ওয়াক্তে সালাত ইত্যাদি অভিন্ন হুকুম -এর আওতাভুক্ত।
সুতরাং আমরা যা উল্লেখ করেছি এর উপর যুক্তির দাবি হল যে, উমরাও অনুরূপ হবে যে, উমরার জন্য এবং যার কোন ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই প্রয়ােজনের নিরিখে সে জিনিস জায়িয হবে, যা ঐ সমস্ত জিনিসের জন্য জায়িয হয়; যার নির্দিষ্ট ওয়াক্ত আছে। এতে সেই সমস্ত আলিমদের মাযহাব সাব্যস্ত হল যারা অভিন্নরূপে হজ্জের অবরুদ্ধতার ন্যায় উমরার জন্যও অবরুদ্ধতাকে স্বীকার করেন। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
তারপর এ বিষয়ে ফকীহদের মত বিরােধ রয়েছে যে, যখন অবরুদ্ধ ব্যক্তির হাদী যবাই হয়ে যাবে তখন সে মাথা মুণ্ডন করতে পারবে কি-না? একদল আলিম বলেন, তার উপর মাথা মুণ্ডন করা আবশ্যক নয়। কেননা তার হজ্জের সমস্ত আমলসমূহ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)ও এই মত পােষণ করেন। পক্ষান্তরে অন্য একদল আলিম বলেন, বরং সে মাথা মুণ্ডন করবে। যদি সে মাথা মুণ্ডন না করে তখনও ইহরাম খুলে হালাল হতে পারবে এবং তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। এই মত যারা পােষণ করেছেন। ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) তাঁদের অন্যতম। আরেক দল আলিম বলেছেন, সে মাথা মুণ্ডন করবে এবং এটা তার উপর অনুরূপভাবে ওয়াজিব যেমনিভাবে হজ্জ বা উমরা পালনকারীর উপর ওয়াজিব হয়।
এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর দলীল হলঃ ইহ্সার বা অবরুদ্ধতার কারণে তার থেকে তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ ইত্যাদি হজ্জের সমস্ত আমল রহিত হয়ে যায়। আর এটা সেই সমস্ত জিনিসের অন্তর্ভুক্ত যার দ্বারা ইহরামকারী তার ইহরাম থেকে বের হয়ে হালাল হয়ে যায়। আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, যখন সে কুরবানীর দিনে বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ করে তখন তার জন্য মাথা মুণ্ডন করা জায়িয হয়ে যায়, এবং এতে তার জন্য সুগন্ধি ব্যবহার, (সেলাই করা) পােশাক পরিধান করা ও স্ত্রী সঙ্গম হালাল হয়ে যায়। তাঁরা বলেন, যখন এটা (হলক) সেই সমস্ত জিনিসের অন্তর্ভুক্ত যেগুলাে হজ্জ পালনকারী ইহরাম খােলার পূর্বে সম্পাদন করে। আর অবরুদ্ধতার কারণে এইসব কিছু তার থেকে রহিত হয়ে গিয়েছে। তাই এখন তার থেকে সেই সমস্ত জিনিস রহিত হয়ে যাবে যেগুলাে ইহরামকারী অবরুদ্ধতার কারণে ছেড়ে দেয়। এটা হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর দলীল। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অন্যদের দলীল হল যে, বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া মাঝে সাঈ ও জামরাতে কংকর নিক্ষেপ করাসহ এই সমস্ত আমল থেকে ইহরামকারী বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এবং তার ও ঐ সমস্ত জিনিসের মাঝে 'অবরুদ্ধতা' বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তার থেকে সেই সমস্ত আমল সম্পাদন রহিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মাথা মুণ্ডন এবং তার মাঝে কোন কিছু আড়াল হয়নি, সে তা সম্পাদন করতে সক্ষম। সে অবরুদ্ধ অবস্থায় আমল করতে সক্ষম এর সে-ই হুকুমই হবে যা অবরুদ্ধতা ব্যতীত (মুক্ত) অবস্থায় হয় এবং যা সে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় আঞ্জাম দিতে পারে না তা অবরুদ্ধতার কারণে তার থেকে রহিত হয়ে যাবে। আমাদের নিকট এটাই যুক্তি সংগত। সুতরাং যখন অবরুদ্ধ অবস্থায় হলক ওয়াজিব হওয়ার হুকুম সেটাই যা অবরুদ্ধ থাকার অবস্থায় হয়। তাই তা ছাড়ার হুকুমও অবরুদ্ধতার অবস্থায় সেটাই হবে, যা অবরুদ্ধ না হওয়ার অবস্থায় হয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে এ বিষয়ে হাদীস বর্ণিত আছে যা এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের উপর হলকের হুকুম অনুরূপভাবে বাকী আছে যেমনিভাবে ঐ ব্যক্তির জন্য (বাকী), যে বায়তুল্লাহ্ শরীফ (হারাম) পর্যন্ত পৌঁছায়। আর তা হল নিম্নরূপঃ
যখন এই বিষয়টিতে মতবিরােধ সৃষ্টি হয়েছে এবং আমরা হাজ্জাজ ইব্ন আম্র (রাযিঃ), ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ(ﷺ)-এর ইরশাদঃ “যে ব্যক্তির কোন অঙ্গ ভেঙ্গে যাবে কিংবা সে লেংড়া হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে”-এর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছি যে, তার উপর আরেকটি হজ্জ আবশ্যক হয়। এতে প্রমাণিত হল যে, অবরুদ্ধতা যেভাবে দুশমনের কারণে হয় অনুরূপভাবে রােগের কারণেও হয়। এই অনুচ্ছেদের হাদীসসমূহের সঠিক মর্ম নিরূপণের নীতিতে এটাই হল যথার্থ বিশ্লেষণ। পক্ষান্তরে যুক্তির ভিত্তিতে বিশ্লেষণ হল যে, আমরা ফকীহ্গণকে লক্ষ্য করেছি যে, তাঁরা এ বিষয়ে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, দুশমনের কারণে অবরুদ্ধ অবস্থায় অবরুদ্ধ ব্যক্তির উপরে হালাল হয়ে যাওয়া ওয়াজিব, যেমনটি আমরা বর্ণনা করেছি। কিন্তু তাঁরা রােগের ব্যাপারে মতবিরােধ করেছেন। একদল বলেন যে, এ বিষয়ে এর হুকুম দুশমনের হুকুমের অনুরূপ। কেননা এটাও, তার হজ্জকে অব্যাহত রাখতে বাধা প্রদান করা, দুশমনের বাধা প্রদান করার অনুরূপ। পক্ষান্তরে অপরদল বলেন যে, এর হুকুম দুশমনের হুকুম থেকে ভিন্নতর। আমরা দেখতে চাচ্ছি যে, সেই কাজ যা দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের ভিত্তিতে জায়েয হয় তা রােগের কারণেও জায়েয হয় কি-না? আমরা লক্ষ্য করছি যে, যখন কোন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে সক্ষম তখন তার জন্য দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা ফরয। যদি তার আশংকা হয় যে, দাঁড়ালে দুশমন তাকে দেখে হত্যা করে ফেলবে অথবা দুশমন তার মাথার উপর দাঁড়ালে এবং সে তাকে দাঁড়াতে বাধা দিচ্ছে, তবে সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, তার জন্য বসে সালাত আদায় করা জায়িয এবং তার জন্য কিয়াম (দাঁড়ান) ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে। আর এ বিষয়েও তাঁদের ঐকমত্য রয়েছে যে, যদি কোন ব্যক্তি রােগ বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার কারণে দাঁড়াতে না পারে, তবে তার জন্য কিয়াম ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যাবে এবং তার জন্য বসে সালাত আদায় করা জায়িয। যদি সক্ষম হয় তাহলে রুকু সিজদা করবে অন্যথায় ইশারা দ্বারা তা আদায় করবে। সুতরাং আমরা দেখছি যে, তার জন্য যে কাজ দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের ভিত্তিতে জায়িয হয়; সেটা রোগের কারণেও প্রয়ােজনের নিরিখে জায়িয হয়। আমরা লক্ষ্য করছি যে, যখন কোন ব্যক্তি এবং পানির মাঝে দুশমন বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন তার জন্য উযূর ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যায়; সে তায়াম্মুম করে সালাত আদায় করবে। অনুরূপভাবে তার যদি এরূপ কোন রােগ হয় যাতে পানি ব্যবহার ক্ষতিকর হয়, এ অবস্থায়ও তার জন্য উযূ ফরয হওয়ার বিধান রহিত হয়ে যায়; সে তায়াম্মুম করবে এবং সালাত আদায় করবে। এই সমস্ত অবস্থায় যেখানে সে দুশমনের কারণে ওযরগ্রস্ত হয়েছে আর কখনও রােগের কারণে ওযরগ্রস্ত হয়, এ বিষয়ে অবস্থা ও হুকুম অভিন্ন। তারপর আমরা লক্ষ্য করছি যে, ঐ হজ্জ পালনকারী যে দুশমনের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এবং ওযরগ্রস্ত সাব্যস্ত হয়েছে। বস্তুত তার জন্য সেই আমল করার হুকুম রয়েছে যা বাধাগ্রস্ত ব্যক্তিকে করতে হয়, তারপর সে হালাল হয়। পক্ষান্তরে রােগের কারণে অবরুদ্ধ ব্যক্তির ব্যাপারে তারা (ফকীহ্গণ) মতবিরােধ করেছেন। এ বিষয়ে যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এর উপর যুক্তির দাবি হল যে, দুশমনের কারণে প্রয়ােজনের নিরিখে তার জন্য আমল ওয়াজিব, ভােগের কারণেও প্রয়ােজনের নিরিখে তা ওয়াজিব হবে এবং এ দু’টির হুকুম অনুরূপভাবে অভিন্ন হবে, যেমনটি তাহারাত ও সালাতের ব্যাপারে উভয়ের হুকুম এক ও অভিন্ন।
তারপর সেই ব্যক্তির ব্যাপারে আলিমগণ মত বিরােধ করেছেন, যে উমরার ইহরাম বেঁধেছে এবং দুশমন কিংবা রােগের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেঃ একদল আলিম বলেন, সে হাদী পাঠিয়ে দিবে এবং সঙ্গীদের থেকে ওয়াদা নিবে, তারা তার পক্ষ থেকে তা যবাহ করবে। যখন তা যবাহ হয়ে যাবে সে হালাল হয়ে যাবে । কিন্তু অপর দল বলেন, সে অবিরত ইহরাম বেঁধে রাখবে, তার জন্য হজ্জের ন্যায় ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই। যারা এ মত পােষণকারী যে, সে হাদীর সাথে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে তাদের দলীল হল রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর সেই হাদীস, যা আমরা এই অনুচ্ছেদের শুরুতে বর্ণনা করেছি যে, যখন তিনি হুদায়বিয়ার বছর উমরার ইহরামরত অবস্থায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। কুরায়শ এর কাফিররা তাঁকে অবরুদ্ধ করেছিল, তখন তিনি হাদী যবাহ করেছেন এবং ইহরাম খুলে হালাল হয়ে গিয়েছেন। আর এ ভিত্তিতে তিনি অবরুদ্ধতা সমাপ্ত হওয়ার অপেক্ষা করেন নি। যেহেতু এর জন্য হজ্জের ন্যায় ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই, বরং এর জন্য অবরুদ্ধতাকে অনুরূপভাবে ওযর সাব্যস্ত করেছেন যেমনিভাবে হজ্জের সাথে অবরুদ্ধতার কারণে ওযরগ্রস্ত হয়। এতে সাব্যস্ত হল যে, অবরুদ্ধতার অবস্থায় দু’টির হুকুম এক ও অভিন্ন যে, সে হাদী পাঠাবে এবং এরপরে ঐ অবরুদ্ধতার কারণে উভয়ের ইহরাম খুলে হালাল হয়ে যাবে। তবে তার উপর উমরার অবস্থায় উমরার কাযা হবে তার উমরার স্থলে এবং হজ্জের অবস্থায় কাযা হিসাবে একটি হজ্জ এবং ইহরাম খােলার কারণে উমরা পালন আবশ্যক হবে। ইতিপূর্বে এই অনুচ্ছেদে আমরা আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছি যে, উমরার জন্য ইহরাম পালনকারীও কখনও অবরুদ্ধ হয়। রিওয়ায়াতসমূহের নীতিতে এটাই হল
এই অনুচ্ছেদের সঠিক বিশ্লেষণ। এ বিষয়ে যুক্তির ভিত্তিতে আলােচনা হল এই যে, আমরা লক্ষ্য করছি যে, কিছু জিনিস যা বান্দাদের উপর ফরয। এর মধ্যে কতেকের জন্য বিশেষ সময় নির্ধারিত আছে। আবার তাদের উপর কিছু ফরয বিধানাবলী এরূপ রয়েছে, যার জন্য পূরা জীবন ওয়াক্ত নির্ধারিত করা হয়েছে। সেগুলাে থেকে সালাতসমূহ যা তাদের উপর বিশেষ ওয়াক্তসমূহে ফরয এবং সেই ওয়াক্তসমূহে ঐ সমস্ত কারণের সাথে ঐ আদায় করা হয়, যা সেই ওয়াক্তসমূহের পূর্বে পাওয়া যায়। যেমন পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা, সতর ঢাকা ইত্যাদি এবং সেই সমস্ত জিনিস থেকে যিহার, সিয়াম ও হত্যার কাফফারায় সিয়াম পালন। যা যিহারকারী ও হত্যাকারীর উপর নির্দিষ্ট দিনে আবশ্যক নয় বরং এর জন্য পুরােজীবন ওয়াক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে কসমের কাফফারা, যা আল্লাহ্ তা'আলা কসম ভঙ্গকারীর উপর ওয়াজিব করেছেন। আর তা হল اطعام عشرة مساكين أو کسوتهم أو تحرير رقبة দশ মিসকীনকে আহার করান কিংবা তাদের পােশাক পরিধান করান অথবা একটি ক্রীতদাস আযাদ করা।
তারপর যাদের উপর আল্লাহ্ তা'আলা পূর্বে পাওয়া যাওয়া কারণ এবং সালাতের মাঝে পাওয়া যাওয়া কারণের শর্তে সালাত ফরয করেছেন। যখন এগুলাে থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় তখন এটাকে ওযর সাব্যস্ত করেছেন। সেই সমস্ত জিনিস থেকে একটি হল, যে ব্যক্তি পানি না পায় তার জন্য পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা রহিত হয়ে যায় এবং তায়াম্মুমের বিধান কার্যকর হয়। তা থেকে আরেকটি হল যে, যদি সতর ঢাকার জন্য কিছু না পায় তাহলে উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করবে। আরেকটি হলঃ যে ব্যক্তি কিবলামুখী হতে না পারে সে কিবলা ব্যতীত অন্য দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে। আরেকটি হলঃ যে ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম সে বসে রুকূ-সিজদার সঙ্গে সালাত আদায় করবে। যদি এটাও করতে না পারে, তাহলে ইশারা দ্বারা সালাত আদায় করবে, তাকে এর অনুমতি দেয়া হয়েছে। যদিও এতটুকু ওয়াক্ত অবশিষ্ট থাকে যাতে এই ওযর খতম হয়ে যায় এবং সে ওই অবস্থার দিকে প্রত্যাবর্তন করে যা ওযরের পূর্বে বিদ্যমান ছিল, যদিও তখনাে তার ওয়াক্ত চলে যায় নি এবং সে ওয়াক্তের মধ্যেই থাকে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা'আলা কাফফার সিয়াম ওয়াজিব করেছেন, কোন রােগের কারণে সিয়াম পালনে সক্ষম না হয়, তা হলে ওযরগ্রস্ত হবে। অথচ এরপরে সে সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এবং তার সিয়াম পালনের শক্তি ফিরে আসে। এবং তার সিয়াম পালনের ব্যাপারে কোন কিছু প্রতিবন্ধক নেই। কেননা এর জন্য কোন ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই। এটা তার থেকে সিয়াম রহিত হওয়ার ব্যাপারে ওযর হিসাবে সাব্যস্ত করা হবে। অনুরূপভাবে কাফফারাসমূহের অবস্থায় আহার করানাে, ক্রীতদাস আযাদ করা অথবা পােশাক পরিধান করানাের হুকুম। যদি এগুলাে থেকে কোনটির উপর শক্তিমান না হয় তা হলে অন্যের সঙ্গে শক্তিমান গণ্য করা হবে এবং আগামীতে কোন সময়ে অর্জনযােগ্য শক্তির সম্ভবনা ধর্তব্য হবে না। তাই যখন প্রয়ােজনের সময় সেই সমস্ত জিনিসগুলাের ফরয হওয়া রহিত হয়ে যায় যদিও ওয়াক্ত ফওত হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকে। সুতরাং এ জিনিসগুলাে এবং ঐ সমস্তগুলাে যাতে ওয়াক্ত ফওত হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। যেমন আখেরী ওয়াক্তে সালাত ইত্যাদি অভিন্ন হুকুম -এর আওতাভুক্ত।
সুতরাং আমরা যা উল্লেখ করেছি এর উপর যুক্তির দাবি হল যে, উমরাও অনুরূপ হবে যে, উমরার জন্য এবং যার কোন ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নেই প্রয়ােজনের নিরিখে সে জিনিস জায়িয হবে, যা ঐ সমস্ত জিনিসের জন্য জায়িয হয়; যার নির্দিষ্ট ওয়াক্ত আছে। এতে সেই সমস্ত আলিমদের মাযহাব সাব্যস্ত হল যারা অভিন্নরূপে হজ্জের অবরুদ্ধতার ন্যায় উমরার জন্যও অবরুদ্ধতাকে স্বীকার করেন। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
তারপর এ বিষয়ে ফকীহদের মত বিরােধ রয়েছে যে, যখন অবরুদ্ধ ব্যক্তির হাদী যবাই হয়ে যাবে তখন সে মাথা মুণ্ডন করতে পারবে কি-না? একদল আলিম বলেন, তার উপর মাথা মুণ্ডন করা আবশ্যক নয়। কেননা তার হজ্জের সমস্ত আমলসমূহ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)ও এই মত পােষণ করেন। পক্ষান্তরে অন্য একদল আলিম বলেন, বরং সে মাথা মুণ্ডন করবে। যদি সে মাথা মুণ্ডন না করে তখনও ইহরাম খুলে হালাল হতে পারবে এবং তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। এই মত যারা পােষণ করেছেন। ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) তাঁদের অন্যতম। আরেক দল আলিম বলেছেন, সে মাথা মুণ্ডন করবে এবং এটা তার উপর অনুরূপভাবে ওয়াজিব যেমনিভাবে হজ্জ বা উমরা পালনকারীর উপর ওয়াজিব হয়।
এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর দলীল হলঃ ইহ্সার বা অবরুদ্ধতার কারণে তার থেকে তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ ইত্যাদি হজ্জের সমস্ত আমল রহিত হয়ে যায়। আর এটা সেই সমস্ত জিনিসের অন্তর্ভুক্ত যার দ্বারা ইহরামকারী তার ইহরাম থেকে বের হয়ে হালাল হয়ে যায়। আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, যখন সে কুরবানীর দিনে বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ করে তখন তার জন্য মাথা মুণ্ডন করা জায়িয হয়ে যায়, এবং এতে তার জন্য সুগন্ধি ব্যবহার, (সেলাই করা) পােশাক পরিধান করা ও স্ত্রী সঙ্গম হালাল হয়ে যায়। তাঁরা বলেন, যখন এটা (হলক) সেই সমস্ত জিনিসের অন্তর্ভুক্ত যেগুলাে হজ্জ পালনকারী ইহরাম খােলার পূর্বে সম্পাদন করে। আর অবরুদ্ধতার কারণে এইসব কিছু তার থেকে রহিত হয়ে গিয়েছে। তাই এখন তার থেকে সেই সমস্ত জিনিস রহিত হয়ে যাবে যেগুলাে ইহরামকারী অবরুদ্ধতার কারণে ছেড়ে দেয়। এটা হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর দলীল। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে অন্যদের দলীল হল যে, বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া মাঝে সাঈ ও জামরাতে কংকর নিক্ষেপ করাসহ এই সমস্ত আমল থেকে ইহরামকারী বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এবং তার ও ঐ সমস্ত জিনিসের মাঝে 'অবরুদ্ধতা' বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তার থেকে সেই সমস্ত আমল সম্পাদন রহিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মাথা মুণ্ডন এবং তার মাঝে কোন কিছু আড়াল হয়নি, সে তা সম্পাদন করতে সক্ষম। সে অবরুদ্ধ অবস্থায় আমল করতে সক্ষম এর সে-ই হুকুমই হবে যা অবরুদ্ধতা ব্যতীত (মুক্ত) অবস্থায় হয় এবং যা সে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় আঞ্জাম দিতে পারে না তা অবরুদ্ধতার কারণে তার থেকে রহিত হয়ে যাবে। আমাদের নিকট এটাই যুক্তি সংগত। সুতরাং যখন অবরুদ্ধ অবস্থায় হলক ওয়াজিব হওয়ার হুকুম সেটাই যা অবরুদ্ধ থাকার অবস্থায় হয়। তাই তা ছাড়ার হুকুমও অবরুদ্ধতার অবস্থায় সেটাই হবে, যা অবরুদ্ধ না হওয়ার অবস্থায় হয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে এ বিষয়ে হাদীস বর্ণিত আছে যা এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের উপর হলকের হুকুম অনুরূপভাবে বাকী আছে যেমনিভাবে ঐ ব্যক্তির জন্য (বাকী), যে বায়তুল্লাহ্ শরীফ (হারাম) পর্যন্ত পৌঁছায়। আর তা হল নিম্নরূপঃ
كتاب مناسك الحج
4141 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: أنا ابْنُ وَهْبٍ , أَنَّ مَالِكًا , حَدَّثَهُ , عَنِ ابْنِ شِهَابٍ , عَنْ سَالِمٍ , عَنْ أَبِيهِ , أَنَّهُ قَالَ: «مَنْ حُبِسَ , دُونَ الْبَيْتِ بِمَرَضٍ , فَإِنَّهُ لَا يَحِلُّ حَتَّى يَطُوفَ بِالْبَيْتِ , وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ» فَلَمَّا وَقَعَ فِي هَذَا , هَذَا الِاخْتِلَافُ , وَقَدْ رَوَيْنَا , عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مِنْ حَدِيثِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو , وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ مَا ذَكَرْنَا مِنْ قَوْلِهِ , يَعْنِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ , فَقَدْ حَلَّ» وَعَلَيْهِ حُجَّةٌ أُخْرَى " ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الْإِحْصَارَ يَكُونُ بِالْمَرَضِ , كَمَا يَكُونُ بِالْعَدُوِّ. فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ , مِنْ طَرِيقِ تَصْحِيحِ مَعَانِي الْآثَارِ. وَأَمَّا وَجْهُهُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَاهُمْ أَجْمَعُوا أَنَّ إِحْصَارَ الْعَدُوِّ , يَجِبُ بِهِ لِلْمُحْصَرِ , الْإِحْلَالُ كَمَا قَدْ ذَكَرْنَا. وَاخْتَلَفُوا فِي الْمَرَضِ , فَقَالَ قَوْمٌ: حُكْمُهُ حُكْمُ الْعَدُوِّ فِي ذَلِكَ , إِذَا كَانَ قَدْ مَنَعَهُ مِنَ الْمُضِيِّ فِي الْحَجِّ , كَمَا مَنَعَهُ الْعَدُوُّ. وَقَالَ آخَرُونَ: حُكْمُهُ بَائِنٌ مِنْ حُكْمِ الْعَدُوِّ. فَأَرَدْنَا أَنْ نَنْظُرَ , مَا أُبِيحَ بِالضَّرُورَةِ مِنَ الْعَدُوِّ , هَلْ يَكُونُ مُبَاحًا بِالضَّرُورَةِ بِالْمَرَضِ أَمْ لَا؟ فَوَجَدْنَا الرَّجُلَ إِذَا كَانَ يُطِيقُ الْقِيَامَ , كَانَ فَرْضًا أَنْ يُصَلِّيَ قَائِمًا , وَإِنْ كَانَ يَخَافُ إِنْ قَامَ أَنْ يُعَايِنَهُ الْعَدُوُّ فَيَقْتُلَهُ , أَوْ كَانَ الْعَدُوُّ قَائِمًا عَلَى رَأْسِهِ , فَمَنَعَهُ مِنَ الْقِيَامِ , فَكُلٌّ قَدْ أَجْمَعَ أَنَّهُ قَدْ حَلَّ لَهُ أَنْ يُصَلِّيَ قَاعِدًا , وَسَقَطَ عَنْهُ فَرْضُ الْقِيَامِ. [ص:253] وَأَجْمَعُوا أَنَّ رَجُلًا لَوْ أَصَابَهُ مَرَضٌ أَوْ زَمَانَةٌ فَمَنَعَهُ ذَلِكَ مِنَ الْقِيَامِ , أَنَّهُ قَدْ سَقَطَ عَنْهُ فَرْضُ الْقِيَامِ , وَحَلَّ لَهُ أَنْ يُصَلِّيَ قَاعِدًا , يَرْكَعُ وَيَسْجُدُ إِذَا أَطَاقَ ذَلِكَ , أَوْ يُومِئُ إِنْ كَانَ لَا يُطِيقُ ذَلِكَ. فَرَأَيْنَا مَا أُبِيحَ لَهُ مِنْ هَذَا بِالضَّرُورَةِ مِنَ الْعَدُوِّ , قَدْ أُبِيحَ لَهُ بِالضَّرُورَةِ مِنَ الْمَرَضِ وَرَأَيْنَا الرَّجُلَ إِذَا حَالَ الْعَدُوُّ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْمَاءِ , سَقَطَ عَنْهُ فَرْضُ الْوُضُوءِ , وَيَتَيَمَّمُ وَيُصَلِّي. فَكَانَتْ هَذِهِ الْأَشْيَاءُ الَّتِي قَدْ عُذِرَ فِيهَا بِالْعَدُوِّ , قَدْ عُذِرَ فِيهَا أَيْضًا بِالْمَرَضِ , وَكَانَ الْحَالُ فِي ذَلِكَ سَوَاءً. ثُمَّ رَأَيْنَا الْحَاجَّ الْمُحْصَرَ بِالْعَدُوِّ , قَدْ عُذِرَ فَجُعِلَ لَهُ فِي ذَلِكَ أَنْ يَفْعَلَ مَا جُعِلَ لِلْمُحْصَرِ أَنْ يَفْعَلَ , حَتَّى يَحِلَّ وَاخْتَلَفُوا فِي الْمُحْصَرِ بِالْمَرَضِ فَالنَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا مِنْ ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ مَا وَجَبَ لَهُ مِنَ الْعُذْرِ بِالضَّرُورَةِ بِالْعَدُوِّ , يَجِبُ لَهُ أَيْضًا بِالضَّرُورَةِ بِالْمَرَضِ , وَيَكُونُ حُكْمُهُ فِي ذَلِكَ سِوَاهُ , كَمَا كَانَ حُكْمُهُ فِي ذَلِكَ أَيْضًا سَوَاءً , فِي الطِّهَارَاتِ , وَالصَّلَوَاتِ. ثُمَّ اخْتَلَفَ النَّاسُ بَعْدَ هَذَا فِي الْمُحْرِمِ بِعُمْرَةٍ , يُحْصَرُ بِعَدُوٍّ أَوْ بِمَرَضٍ. فَقَالَ قَوْمٌ: يَبْعَثُ بِهَدْيٍ وَيُوَاعَدُهُمْ أَنْ يَنْحَرُوهُ عَنْهُ , فَإِذَا نَحَرَ حَلَّ. وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ يُقِيمُ عَلَى إِحْرَامِهِ أَبَدًا , وَلَيْسَ لَهَا وَقْتٌ كَوَقْتِ الْحَجِّ. وَكَانَ مِنَ الْحَجَّةِ لِلَّذِينَ ذَهَبُوا إِلَى أَنَّهُ يَحِلُّ مِنْهَا بِالْهَدْيِ , مَا رَوَيْنَا عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَوَّلِ هَذَا الْبَابِ , «لَمَّا أَحْصَرَ بِعُمْرَةٍ زَمَنَ الْحُدَيْبِيَةِ، حَصَرَتْهُ كُفَّارُ قُرَيْشٍ، فَنَحَرَ الْهَدْيَ وَحَلَّ وَلَمْ يَنْتَظِرْ أَنْ يَذْهَبَ عَنْهُ الْإِحْصَارُ» , إِذْ كَانَ لَا وَقْتَ لَهَا كَوَقْتِ الْحَجِّ , بَلْ جَعَلَ الْعُذْرَ فِي الْإِحْصَارِ بِهَا , كَالْعُذْرِ فِي الْإِحْصَارِ بِالْحَجِّ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ حُكْمَهَا فِي الْإِحْصَارِ فِيهِمَا سَوَاءٌ , وَأَنَّهُ يَبْعَثُ الْهَدْيَ حَتَّى يَحِلَّ بِهِ مِمَّا أُحْصِرَ بِهِ مِنْهُمَا. إِلَّا أَنَّ عَلَيْهِ فِي الْعُمْرَةِ قَضَاءَ عُمْرَةٍ مَكَانَ عُمْرَتِهِ , وَعَلَيْهِ فِي الْحَجَّةِ , حَجَّةً مَكَانَ حَجَّتِهِ وَعُمْرَةً لِإِخْلَالِهِ. وَقَدْ رَوَيْنَا فِي الْعُمْرَةِ أَنَّهُ قَدْ يَكُونُ الْمُحْرِمُ مُحْصَرًا بِهَا , مَا قَدْ تَقَدَّمَ فِي هَذَا الْبَابِ , عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ. فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا النَّظَرُ فِي ذَلِكَ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا أَشْيَاءَ قَدْ فُرِضَتْ عَلَى الْعِبَادِ , مِمَّا جُعِلَ لَهَا وَقْتٌ خَاصٌّ , وَأَشْيَاءُ فُرِضَتْ عَلَيْهِمْ , مِمَّا جُعِلَ الدَّهْرُ كُلُّهُ وَقْتًا لَهَا. مِنْهَا الصَّلَوَاتُ , فُرِضَتْ عَلَيْهِمْ فِي أَوْقَاتٍ خَاصَّةٍ , تُؤَدَّى فِي تِلْكَ الْأَوْقَاتِ بِأَسْبَابٍ مُتَقَدِّمَةٍ لَهَا , مِنَ التَّطَهُّرِ بِالْمَاءِ , وَسَتْرِ الْعَوْرَةِ. وَمِنْهَا الصِّيَامُ فِي كَفَّارَاتِ الظِّهَارِ وَكَفَّارَاتِ الصِّيَامِ , وَكَفَّارَاتِ الْقَتْلِ , جُعِلَ ذَلِكَ عَلَى الْمُظَاهِرِ , وَالْقَاتِلِ [ص:254] لَا فِي أَيَّامٍ بِعَيْنِهَا , بَلْ جُعِلَ الدَّهْرُ كُلُّهُ وَقْتًا لَهَا , وَكَذَلِكَ كَفَّارَةُ الْيَمِينِ جَعَلَهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى الْحَانِثِ فِي يَمِينِهِ , وَهِيَ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ. ثُمَّ جَعَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ مَنْ فُرِضَ عَلَيْهِ الصَّلَوَاتُ بِالْأَسْبَابِ الَّتِي يَتَقَدَّمُ , وَالْأَسْبَابُ الْمَفْعُولَةِ فِيهَا فِي ذَلِكَ , عُذْرًا إِذَا مُنِعَ مِنْهُ. فَمِنْ ذَلِكَ مَا جُعِلَ لَهُ فِي عَدَمِ الْمَاءِ , مِنْ سُقُوطِ الطَّهَارَةِ بِالْمَاءِ وَالتَّيَمُّمِ. وَمِنْ ذَلِكَ مَا جُعِلَ لِلَّذِي مُنِعَ مِنْ سَتْرِ الْعَوْرَةِ أَنْ يُصَلِّيَ بَادِيَ الْعَوْرَةِ. وَمِنْ ذَلِكَ مَا جُعِلَ لِمَنْ مُنِعَ مِنَ الْقُبْلَةِ أَنْ يُصَلِّيَ إِلَى غَيْرِ قِبْلَةٍ. وَمِنْ ذَلِكَ مَا جُعِلَ لِلَّذِي مُنِعَ مِنَ الْقِيَامِ , أَنْ يُصَلِّيَ قَاعِدًا , يَرْكَعُ وَيَسْجُدُ , فَإِنْ مُنِعَ مِنْ ذَلِكَ أَيْضًا , أَوْمَأَ إِيمَاءً , فَجُعِلَ لَهُ ذَلِكَ. وَإِنْ كَانَ قَدْ بَقِيَ عَلَيْهِ مِنَ الْوَقْتِ مَا قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَذْهَبَ عَنْهُ ذَلِكَ الْعُذْرُ , وَيَعُودُ إِلَى حَالِهِ قَبْلَ الْعُذْرِ , وَهُوَ فِي الْوَقْتِ , لَمْ يَفُتْهُ. وَكَذَلِكَ جُعِلَ لِمَنْ لَا يَقْدِرُ عَلَى الصَّوْمِ فِي الْكَفَّارَاتِ الَّتِي أَوْجَبَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْهِ فِيهَا الصَّوْمَ , لِمَرَضٍ حَلَّ بِهِ مِمَّا قَدْ يَجُوزُ بُرْؤُهُ مِنْهُ بَعْدَ ذَلِكَ , وَرُجُوعُهُ إِلَى حَالِ الطَّاقَةِ لِذَلِكَ الصَّوْمِ , فَجُعِلَ ذَلِكَ لَهُ عُذْرًا فِي إِسْقَاطِ الصَّوْمِ عَنْهُ بِهِ , وَلَمْ يُمْنَعْ مِنْ ذَلِكَ إِذَا كَانَ مَا جُعِلَ عَلَيْهِ مِنَ الصَّوْمِ لَا وَقْتَ لَهُ. وَكَذَلِكَ فِيمَا ذَكَرْنَا مِنَ الْإِطْعَامِ فِي الْكَفَّارَاتِ وَالْعِتْقِ فِيهَا , وَالْكِسْوَةِ , إِذَا كَانَ الَّذِي فُرِضَ ذَلِكَ عَلَيْهِ مُعْدِمًا. وَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَجِدَ بَعْدَ ذَلِكَ , فَيَكُونَ قَادِرًا عَلَى مَا أَوْجَبَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْهِ مِنْ ذَلِكَ , مِنْ غَيْرِ فَوَاتٍ لِوَقْتِ شَيْءٍ مِمَّا كَانَ أُوجِبَ عَلَيْهِ فِعْلُهُ فِيهِ. فَلَمَّا كَانَتْ هَذِهِ الْأَشْيَاءُ يَزُولُ فَرْضُهَا بِالضَّرُورَةِ فِيهَا , وَإِنْ كَانَ لَا يَخَافُ فَوْتَ وَقْتِهَا , فَجُعِلَ ذَلِكَ مَا خِيفَ فَوْتُ وَقْتِهِ , سَوَاءٌ مِنَ الصَّلَوَاتِ فِي أَوَاخِرِ أَوْقَاتِهَا , وَمَا أَشْبَهَ ذَلِكَ. فَالنَّظَرُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ , الْعُمْرَةُ , وَإِنْ كَانَ لَا وَقْتَ لَهَا أَنْ يُبَاحَ فِي الضَّرُورَةِ فِيهَا , مَا يُبَاحُ بِالضَّرُورَةِ فِي غَيْرِهَا , مِمَّا لَهُ وَقْتٌ مَعْلُومٌ. فَثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا , قَوْلُ مَنْ ذَهَبَ إِلَى أَنَّهُ قَدْ يَكُونُ الْإِحْصَارُ بِالْعُمْرَةِ , كَمَا يَكُونُ الْإِحْصَارُ بِالْحَجِّ سَوَاءً. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى. ثُمَّ تَكَلَّمَ النَّاسُ بَعْدَ هَذَا فِي الْمُحْصَرِ إِذَا نَحَرَ هَدْيَهُ , هَلْ يَحْلِقُ رَأْسَهُ أَمْ لَا؟ . فَقَالَ قَوْمٌ: لَيْسَ عَلَيْهِ أَنْ يَحْلِقَ لِأَنَّهُ قَدْ ذَهَبَ عَنْهُ النُّسُكُ كُلُّهُ , وَمِمَّنْ قَالَ ذَلِكَ , أَبُو حَنِيفَةَ , وَمُحَمَّدٌ رَحِمَهُمَا اللهُ. وَقَالَ آخَرُونَ: بَلْ يَحْلِقُ , فَإِنْ لَمْ يَحْلِقْ , حَلَّ وَلَا شَيْءَ عَلَيْهِ , وَمِمَّنْ قَالَ ذَلِكَ , أَبُو يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ. وَقَالَ آخَرُونَ يَحْلِقُ وَيَجِبُ ذَلِكَ عَلَيْهِ , كَمَا يَجِبُ عَلَى الْحَاجِّ وَالْمُعْتَمِرِ. [ص:255] فَكَانَ مِنْ حُجَّةِ أَبِي حَنِيفَةَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمَا اللهُ فِي ذَلِكَ , أَنَّهُ قَدْ سَقَطَ عَنْهُ بِالْإِحْصَارِ , جَمِيعُ مَنَاسِكِ الْحَجِّ , مِنَ الطَّوَافِ وَالسَّعْيِ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ , وَذَلِكَ مِمَّا يَحِلُّ الْمُحْرِمُ بِهِ مِنْ إِحْرَامِهِ. أَلَا تَرَى أَنَّهُ إِذَا طَافَ بِالْبَيْتِ يَوْمَ النَّحْرِ , حَلَّ لَهُ أَنْ يَحْلِقَ , فَيَحِلُّ لَهُ بِذَلِكَ , الطِّيبُ , وَاللِّبَاسُ , وَالنِّسَاءُ. قَالُوا: فَلَمَّا كَانَ ذَلِكَ مِمَّا يَفْعَلُهُ , حَتَّى يَحِلَّ , فَسَقَطَ ذَلِكَ عَنْهُ كُلُّهُ بِالْإِحْصَارِ , سَقَطَ أَيْضًا عَنْهُ سَائِرُ مَا يَحِلُّ بِهِ الْمُحْرِمُ بِسَبَبِ الْإِحْصَارِ , هَذِهِ حُجَّةٌ لِأَبِي حَنِيفَةَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمَا اللهُ تَعَالَى. وَكَانَ مِنْ حُجَّةِ الْآخَرِينَ عَلَيْهِمَا فِي ذَلِكَ , أَنَّ تِلْكَ الْأَشْيَاءَ مِنَ الطَّوَافِ بِالْبَيْتِ , وَالسَّعْيِ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ , وَرَمْيِ الْجِمَارِ , قَدْ صُدَّ عَنْهُ الْمُحْرِمُ , وَحِيلَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ , فَسَقَطَ عَنْهُ أَنْ يَفْعَلَهُ. وَالْحَلْقُ لَمْ يَحُلْ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ , وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يَفْعَلَهُ. فَمَا كَانَ يَصِلُ إِلَى أَنْ يَفْعَلَهُ , فَحُكْمُهُ فِيهِ , فِي حَالِ الْإِحْصَارِ , كَحُكْمِهِ فِيهِ , حَالَ الْإِحْصَارِ. وَمَا لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَفْعَلَهُ فِي حَالِ الْإِحْصَارِ , فَهُوَ الَّذِي يَسْقُطُ عَنْهُ بِالْإِحْصَارِ , فَهُوَ النَّظَرُ عِنْدَنَا. وَإِذَا كَانَ حُكْمُهُ فِي وَقْتِ الْحَلْقِ عَلَيْهِ , وَهُوَ مُحْصَرٌ , كَحُكْمِهِ فِي وُجُوبِهِ عَلَيْهِ , وَهُوَ غَيْرُ مُحْصَرٍ , كَانَ تَرْكُهُ إِيَّاهُ أَيْضًا , وَهُوَ مُحْصَرٌ , كَتَرْكِهِ إِيَّاهُ وَهُوَ غَيْرُ مُحْصَرٍ. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , مَا قَدْ دَلَّ عَلَى أَنَّ حُكْمَ الْحَلْقِ بَاقٍ عَلَى الْمُحْصَرِينَ , كَمَا هُوَ عَلَى مَنْ وَصَلَ إِلَى الْبَيْتِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৩
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৪২-৪৩। রবী'উল মুয়াযযিন (রাহঃ) ….. ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,হুদায়বিয়ার প্রাক্কালে কতিপয় সাহাবী মাথা মুণ্ডন করেন এবং কতিপয় সাহাবী চুল ছােট করে ছাটেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা রহম করুন মাথা মুণ্ডনকারীদের উপর। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! চুল ছােট করে কর্তনকারীদের হুকুম কি? তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা'আলা রহম করুন মাথা মুণ্ডনকারীদের উপর। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! চুল ছােট করে কর্তনকারীদের হুকুম কি? তিনি বললেন, আল্লাহ্ তাআলা রহম করুন মাথা মুণ্ডনকারীদের উপর। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহু ! চুল ছােট করে কর্তনকারীদের কি হবে ? তিনি বললেন, চুল ছােট করে কর্তনকারীদের উপরও। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, মাথা মুণ্ডনকারীদের কি বৈশিষ্ট্য যে, আপনি তাদেরকে রহমতের দু'আর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিলেন ? তিনি বললেন, তারা কোন অভিযােগ করে নি।
ফাহাদ (রাহঃ) ..... আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
ফাহাদ (রাহঃ) ..... আবু ইসহাক (রাহঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
كتاب مناسك الحج
4142 - وَذَلِكَ أَنَّ رَبِيعًا الْمُؤَذِّنَ حَدَّثَنَا , قَالَ: ثنا أَسَدُ بْنُ مُوسَى , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنُ أَبِي زَائِدَةَ , قَالَ: ثنا ابْنُ إِسْحَاقَ , قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي نَجِيحٍ , عَنْ مُجَاهِدٍ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ ": حَلَقَ رِجَالٌ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ , وَقَصَّرَ آخَرُونَ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَرْحَمُ اللهُ الْمُحَلِّقِينَ» , قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَالْمُقَصِّرِينَ؟ قَالَ: «يَرْحَمُ اللهُ الْمُحَلِّقِينَ» , قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ , وَالْمُقَصِّرِينَ؟ قَالَ: «يَرْحَمُ اللهُ الْمُحَلِّقِينَ» , قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ , وَالْمُقَصِّرِينَ؟ قَالَ: «وَالْمُقَصِّرِينَ» . [ص:256] قَالُوا: فَمَا بَالُ الْمُحَلِّقِينَ ظَاهَرْتُ لَهُمْ بِالتَّرَحُّمِ؟ قَالَ: «إِنَّهُمْ لَمْ يَشُكُّوا»
4143 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا ابْنُ إِدْرِيسَ , عَنْ ابْنُ إِسْحَاقَ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
4143 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا يُوسُفُ بْنُ بُهْلُولٍ , قَالَ: ثنا ابْنُ إِدْرِيسَ , عَنْ ابْنُ إِسْحَاقَ , فَذَكَرَ بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪৩
হজ্বের অধ্যায়
empty
৪১৪৩।
كتاب مناسك الحج
4143 -
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪১৪৫
হজ্বের অধ্যায়
হজ্জব্রত পালনে অবরুদ্ধ ব্যক্তির বিধান
৪১৪৪-৪৫। মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ….. আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি নবী(ﷺ) থেকে শুনেছি। তিনি হুদায়বিয়ার প্রাক্কালে মাথা মুণ্ডনকারীদের জন্য তিনবার এবং চুল ছােট করে কর্তনকারীদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করছিলেন।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) হুদায়বিয়ার বছর মাথা মুণ্ডনকারীদের জন্য একবার এবং চুল ছােট করে কর্তনকারীদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) এবং সাহাবীগণ (রাযিঃ) নিজেদের মাথা মুণ্ডন করেছেন তবে দু’ব্যক্তি, একজন আনসারী আরেকজন কুরায়শী মাথা মুণ্ডন করেননি।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, কিছু সংখ্যক ছাড়া সকলে মাথা মুণ্ডন করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ(ﷺ) চুল ছােট করে কর্তনকারীদের উপরে মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। এতে সাব্যস্ত হল যে, তাদের উপর মাথা মুণ্ডন করা এবং চুল ছােট করে কর্তন করা আবশ্যক ছিল যেমনিভাবে তাদের উপর আবশ্যক হত যদি তাঁরা কা'বা শরীফ পর্যন্ত পৌঁছাতেন। যদি এমনটি না হত তাহলে তাঁরা অভিন্ন হতেন এবং তাঁদের কতকের উপর কতেকের ফযীলত হত না। নবী(ﷺ) কর্তৃক মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে চুল ছােট করে কর্তনকারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানে এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, তাঁরা এ বিষয়ে যারা অবরুদ্ধ নয় তাদের অনুরূপ ছিলেন, যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি তাতে সাব্যস্ত হয়েছে যে, 'ইহসার বা অবরুদ্ধতা মাথা মুণ্ডন এবং চুল ছােট করে কর্তন করার হুকুমকে রহিত করে না। আল্লাহর নিকটই তাওফীক প্রার্থনা করছি।
ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ..... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) হুদায়বিয়ার বছর মাথা মুণ্ডনকারীদের জন্য একবার এবং চুল ছােট করে কর্তনকারীদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) এবং সাহাবীগণ (রাযিঃ) নিজেদের মাথা মুণ্ডন করেছেন তবে দু’ব্যক্তি, একজন আনসারী আরেকজন কুরায়শী মাথা মুণ্ডন করেননি।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেন, কিছু সংখ্যক ছাড়া সকলে মাথা মুণ্ডন করেছেন এবং রাসূলুল্লাহ(ﷺ) চুল ছােট করে কর্তনকারীদের উপরে মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। এতে সাব্যস্ত হল যে, তাদের উপর মাথা মুণ্ডন করা এবং চুল ছােট করে কর্তন করা আবশ্যক ছিল যেমনিভাবে তাদের উপর আবশ্যক হত যদি তাঁরা কা'বা শরীফ পর্যন্ত পৌঁছাতেন। যদি এমনটি না হত তাহলে তাঁরা অভিন্ন হতেন এবং তাঁদের কতকের উপর কতেকের ফযীলত হত না। নবী(ﷺ) কর্তৃক মাথা মুণ্ডনকারীদেরকে চুল ছােট করে কর্তনকারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানে এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, তাঁরা এ বিষয়ে যারা অবরুদ্ধ নয় তাদের অনুরূপ ছিলেন, যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি তাতে সাব্যস্ত হয়েছে যে, 'ইহসার বা অবরুদ্ধতা মাথা মুণ্ডন এবং চুল ছােট করে কর্তন করার হুকুমকে রহিত করে না। আল্লাহর নিকটই তাওফীক প্রার্থনা করছি।
كتاب مناسك الحج
4144 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَيْمُونٍ , قَالَ: ثنا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ , عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ , عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ , عَنْ أَبِي إِبْرَاهِيمَ الْأَنْصَارِيِّ , قَالَ: ثنا أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ , قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَغْفِرُ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ , لِلْمُحَلِّقِينَ ثَلَاثًا وَلِلْمُقَصِّرِينَ مَرَّةً "
4145 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا هَارُونُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْخَزَّازُ قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ , أَنَّ أَبَا إِبْرَاهِيمَ الْأَنْصَارِيَّ , حَدَّثَهُ , عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ، اسْتَغْفَرَ لِلْمُحَلِّقِينَ مَرَّةً , وَلِلْمُقَصِّرِينَ مَرَّةً. وَحَلَقَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ رُءُوسَهُمْ , غَيْرَ رَجُلَيْنِ , رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ , وَرَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَلَمَّا حَلَقُوا جَمِيعًا إِلَّا مَنْ قَصَّرَ مِنْهُمْ , وَفَضَّلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَلَقَ مِنْهُمْ عَلَى مَنْ قَصَّرَ , ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّهُمْ قَدْ كَانَ عَلَيْهِمُ الْحَلْقُ وَالتَّقْصِيرُ , كَمَا كَانَ عَلَيْهِمْ لَوْ وَصَلُوا إِلَى الْبَيْتِ , وَلَوْلَا ذَلِكَ لَمَا كَانُوا فِيهِ إِلَّا سَوَاءً وَلَا كَانَ لِبَعْضِهِمْ فِي ذَلِكَ فَضِيلَةٌ عَلَى بَعْضٍ. فَفِي تَفْضِيلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ , الْمُحَلِّقِينَ عَلَى الْمُقَصِّرِينَ , دَلِيلٌ عَلَى أَنَّهُمْ كَانُوا فِي ذَلِكَ , كَغَيْرِ الْمُحْصَرِينَ. فَقَدْ ثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ حُكْمَ الْحَلْقِ أَوِ التَّقْصِيرِ لَا يُزِيلُهُ الْإِحْصَارُ , وَاللهَ أَسْأَلُهُ التَّوْفِيقَ
4145 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ , قَالَ: ثنا هَارُونُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْخَزَّازُ قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ , أَنَّ أَبَا إِبْرَاهِيمَ الْأَنْصَارِيَّ , حَدَّثَهُ , عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ، اسْتَغْفَرَ لِلْمُحَلِّقِينَ مَرَّةً , وَلِلْمُقَصِّرِينَ مَرَّةً. وَحَلَقَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ رُءُوسَهُمْ , غَيْرَ رَجُلَيْنِ , رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ , وَرَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَلَمَّا حَلَقُوا جَمِيعًا إِلَّا مَنْ قَصَّرَ مِنْهُمْ , وَفَضَّلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَلَقَ مِنْهُمْ عَلَى مَنْ قَصَّرَ , ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّهُمْ قَدْ كَانَ عَلَيْهِمُ الْحَلْقُ وَالتَّقْصِيرُ , كَمَا كَانَ عَلَيْهِمْ لَوْ وَصَلُوا إِلَى الْبَيْتِ , وَلَوْلَا ذَلِكَ لَمَا كَانُوا فِيهِ إِلَّا سَوَاءً وَلَا كَانَ لِبَعْضِهِمْ فِي ذَلِكَ فَضِيلَةٌ عَلَى بَعْضٍ. فَفِي تَفْضِيلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ , الْمُحَلِّقِينَ عَلَى الْمُقَصِّرِينَ , دَلِيلٌ عَلَى أَنَّهُمْ كَانُوا فِي ذَلِكَ , كَغَيْرِ الْمُحْصَرِينَ. فَقَدْ ثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ حُكْمَ الْحَلْقِ أَوِ التَّقْصِيرِ لَا يُزِيلُهُ الْإِحْصَارُ , وَاللهَ أَسْأَلُهُ التَّوْفِيقَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪১৪৫
হজ্বের অধ্যায়
empty
৪১৪৫।
كتاب مناسك الحج
4145 -
তাহকীক: