শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

১৮. আদালত-বিচার-সাক্ষ্য-শুনানির বিধান - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৬১৫৯
আদালত-বিচার-সাক্ষ্য-শুনানির বিধান
যে আযাদ ব্যক্তির ওপর ঋণ ওয়াজিব অথচ তার কোন মাল নেই, তার হুকুম কি?
৬১৫৯। ইবন আবু দাউদ ..... যায়দ ইবন আসলাম আব্দুর রহমান ইবন বায়লামানী হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, একবার আমি মিসরে ছিলাম, তখন এক ব্যক্তি আমাকে বললাে, আমি কি আপনাকে নবী -এর একজন সাহাবীর কথা বলে দিব না? অতঃপর সে আমাকে নিয়ে এক ব্যক্তির নিকট গেল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার পরিচয় কি? আল্লাহ্ আপনার পতি রহমত করুন। লােকটি বললেন, আমি সুররাক। তখন আমি বললাম, আল্লহ্ আপনার ওপর রহমত করুন। আপনার জন্য এ নামে নামকরণ করা তো উচিত নয়। অথচ আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবী। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার নাম সুররাক রেখেছেন। সুতরাং এ নাম আমি কখনও ত্যাগ করব না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে তিনি সুররাক নামকরণ করছেন কি কারণে?
তিনি বললেন, একবার আমি একজন গ্রাম্য লোকের সাথে সাক্ষাত করলাম। যার নিকট বিক্রয়ের জন্য দুটো উট ছিল। অতঃপর আমি তার নিকট হতে উট দুটো ক্রয় করলাম। আর তাকে বললাম, তুমি আমার সাথে চল। আমি তােমাকে উটের মূল প্রদান করব। আমি আমার ঘরে প্রবেশ করলাম। অতঃপর পেছনে দরজা দিয়ে বের হয়ে পড়লাম এবং উটের মূল্য দ্বারা আমার প্রয়োজন পূর্ণ করে আমি গায়েব হয়ে গেলাম। এবং আমার ধারণা হলো গ্রাম্য লোকটি বের হয়ে পড়েছে। অতঃপর আমি বের হয়ে পড়লাম । অথচ গ্রাম্য লোকটি তখনও সেখানে অবস্থান করছিল। সে আমাকে পাকড়াও করত এবং আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) : -এর দরবারে উপস্থিত হলো। আমি তাকে ঘটনা শুনালাম তখন তিনি বললেন, তুমি যে কাজ করেছ তার জন্য তোমাকে কোন বস্তু উদ্বুদ্ধ করেছে: আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) তার উটের মূল্য দ্বারা আমি আমার প্রয়োজন সেরেছি। তিনি বললেন, তুমি তােমার ঋণ পরিশােধ কর। আমি বললাম, আমার নিকট তাে ঋণ পরিশােধ করার মত কিছু নেই। তিনি বললেন, তুমি সুররাক হে আরাবী! (গ্রাম্য লােক) তুমি একে নিয়ে যাও এবং বিক্রয় করে তোমার হক আদায় করে নাও। তিনি বলেন, তখন লােকেরা তার নিকট আমার ব্যাপারে নাম-দর করতে লাগলো এবং সে তাদের দিকে তাকাতে লাগলো। অতঃপর সে বলতে লাগল, তােমাদের ইচ্ছা কি? তারা বললো,আমরা তোমার নিকট হতে তাকে ক্রয় করতে চাচ্ছি। তখন সে বললাে, আল্লাহর কসম! তার নিকট আমার যত প্রয়োজন, তােমাদের কারাে তত প্রয়োজন নেই। এ কথা বলে সে বললাে, যাও তােমাকে আমি মুক্ত করে দিলাম।
كتاب القضاء والشهادات
بَابُ الْحُرِّ يَجِبُ عَلَيْهِ دَيْنٌ وَلَا يَكُونُ لَهُ مَالٌ كَيْفَ حُكْمُهُ؟
6159 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ صَالِحٍ الْوُحَاظِيُّ قَالَ: ثنا مُسْلِمُ بْنُ خَالِدٍ الزِّنْجِيُّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْبَيْلَمَانِيِّ قَالَ: كُنْتُ بِمِصْرَ فَقَالَ لِي رَجُلٌ: أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَذَهَبَ بِي إِلَى رَجُلٍ فَقُلْتُ: مِمَّنْ أَنْتَ يَرْحَمُكَ اللهُ؟ فَقَالَ: أَنَا سُرَّقٌ فَقُلْتُ: رَحِمَكَ اللهُ مَا يَنْبَغِي لَكَ أَنْ تُسَمَّى بِهَذَا الِاسْمِ وَأَنْتَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَمَّانِي سُرَّقًا فَلَنْ أَدَعَ ذَلِكَ أَبَدًا. قُلْتُ: وَلِمَ سَمَّاكَ سُرَّقًا؟ قَالَ: لَقِيَتْ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ بِبَعِيرَيْنِ لَهُ يَبِيعُهُمَا فَابْتَعْتُهُمَا مِنْهُ وَقُلْتُ لَهُ: انْطَلَقَ مَعِي حَتَّى أُعْطِيَكَ فَدَخَلْتُ بَيْتِي ثُمَّ خَرَجْتُ مِنْ خَلَفٍ لِي وَقَضَيْتُ بِثَمَنِ الْبَعِيرَيْنِ حَاجَتِي وَتَغَيَّبْتُ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّ الْأَعْرَابِيَّ قَدْ خَرَجَ. فَخَرَجَتْ وَالْأَعْرَابِيُّ مُقِيمٌ فَأَخَذَنِي فَقَدَّمَنِي إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ الْخَبَرَ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ؟» قُلْتُ: قَضَيْتُ بِثَمَنِهِمَا حَاجَتِي يَا رَسُولَ اللهِ. قَالَ: «فَاقْضِهِ» ، قَالَ: قُلْتُ لَيْسَ عِنْدِي قَالَ: «أَنْتَ سُرَّقٌ اذْهَبْ بِهِ يَا أَعْرَابِيُّ فَبِعْهُ حَتَّى تَسْتَوْفِيَ حَقَّكَ» . قَالَ: فَجَعَلَ النَّاسَ يَسُومُونَهُ فِي وَيَلْتَفِتُ إِلَيْهِمْ فَيَقُولُ: مَاذَا تُرِيدُونَ؟ فَيَقُولُونَ: نُرِيدُ أَنْ نَبْتَاعَهُ مِنْكَ , فَنُعْتِقُهُ قَالَ: فَوَاللهِ إِنْ مِنْكُمْ أَحَدٌ أَحْوَجُ إِلَيْهِ مِنِّي اذْهَبْ فَقَدْ أَعْتَقْتُكَ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৬১৬০
আদালত-বিচার-সাক্ষ্য-শুনানির বিধান
যে আযাদ ব্যক্তির ওপর ঋণ ওয়াজিব অথচ তার কোন মাল নেই, তার হুকুম কি?
৬১৬০। ইব্ন মারযুক...... যায়দ ইব্ন আসলাম বলেন, ইসকান্দারিয়ায় একজন লােকের সাথে আমার সাক্ষাত হলো, যাকে সুবরাক বলা হতো। আমি তাকে বললাম, এ কি নাম হলাে! তিনি বললেন, আমার এ নাম রাসূলুল্লাহ রেখেছেন। একবার আমি মদীনায় আগমন করলাম। অতঃপর আমি তাদেরকে বললাম, আমার মাল আসবে। তখন তারা আমার নিকট মাল বিক্রয় করলেন। অতঃপর আমি তাদের মাল হালাক করলাম। তারা অন্যকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ -এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তিনি বললেন, তুমি তাে 'সুররাক'। এ

একে দিয়ে তারা কি করবে? তিনি বললেন, একে তােমরা মুক্ত করে দাও। তারা বললো, আমরা আপনার চেয়ে সাওয়াবের অধিক মুখাপেক্ষী । অতঃপর তারা আমাকে মুক্ত করে দিলেন।
আবু জাফর বলেন, একজন আযাদ ব্যাক্তিকে ঋণের বিনিময়ে বিক্রয় করা যে জায়েয আছে, এ হাদীসে তার উল্লেখ রয়েছে। ইসলামের শুরুতে এ নিয়ম ছিল যে, কোন ব্যাক্তি ঋণগ্রস্ত হলে, ঋণ পরিশােধ করার মত যদি মাল না থাকত, তবে তাকে বিক্রয় করা হতাে। অবশেষে এই আয়াত দ্বারা এ হুকুম রহিত হয় وَإِنْ كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ “যদি কেউ দরিদ্র হয় তবে তার প্রাচুর্য লাভ হওয়া পর্যন্ত অবকাশ প্রদান করতে হবে"।
আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এমন ফয়সালাই করেছেন সেই ব্যক্তি সম্পর্কে, যে ফল ক্রয় করে বিপদগ্রস্ত হয়েছিল এবং ঋণের পরিমাণ অনেক বেশী হয়েছিল। তখন রাসুলুল্লাহ্ বললেন, তােমরা তাকে সদকা কর। তাকে সদকা করা হলাে, কিন্তু সদকার পরিমাণ এত হলাে না যে, তাতে তার ঋণ পরিশােধ হতে পারে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পাওনাদারদেরকে বললেন, তােমরা যা পেয়েছ তা-ই গ্রহণ কর। তােমাদের জন্য এছাড়া আর কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর এ হাদীস আমরা সনদসহ পূর্বেই এ কিতাবে উল্লেখ করেছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বক্তব্য যে, “তােমাদের জন্য এছাড়া আর কিছুই নেই" এ কথারই প্রমাণ যে, তাদের জন্য তাকে বিক্রয় করার কোন অধিকার থাকলে অবশ্যই তিনি তাদের অনুকূলে তাকে বিক্রি করতেন (যেমন সুররাক-কে তাদের ঋণ পরিশােধ করার জন্য বিক্রয় করা হয়েছিল)। এটাই উলামা-ই কিরামের মত।
كتاب القضاء والشهادات
6160 - حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ، قَالَ: ثنا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الوَارِثِ قَالَ: ثنا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، قَالَ: لَقِيتُ رَجُلًا بِالْإِسْكَنْدَرِيَّةِ يُقَالُ لَهُ سُرَّقٌ فَقُلْتُ: مَا هَذَا الِاسْمُ؟ فَقَالَ: سَمَّانِيهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَأَخْبَرْتُهُمْ أَنَّهُ يَقْدُمُ لِي مَالٌ فَبَايَعُونِي فَاسْتَهْلَكْتُ أَمْوَالَهُمْ فَأَتَوْا بِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَنْتَ سُرَّقٌ فَبَاعَنِي بِأَرْبَعَةِ أَبْعِرَةٍ» . فَقَالَ لَهُ غُرَمَاؤُهُ: مَا يَصْنَعُ بِهِ؟ قَالَ: «أُعْتِقُهُ» قَالُوا: مَا نَحْنُ بِأَزْهَدَ فِي الْآخَرِ مِنْكَ فَأَعْتَقُونِي قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ بَيْعُ الْحُرِّ فِي الدَّيْنِ وَقَدْ كَانَ ذَلِكَ فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ يَبْتَاعُ مَنْ عَلَيْهِ دَيْنٌ فِيمَا عَلَيْهِ مِنَ الدَّيْنِ إِذَا لَمْ يَكُنْ لَهُ مَالٌ يَقْضِيهِ عَنْ نَفْسِهِ حَتَّى نَسَخَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ ذَلِكَ فَقَالَ: {وَإِنْ كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ} [البقرة: 280] . وَقَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِذَلِكَ فِي الَّذِي ابْتَاعَ الثِّمَارَ فَأُصِيبَ بِهَا فَكَثُرَ دَيْنُهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَصَدَّقُوا» ، فَتَصَدَّقَ عَلَيْهِ فَلَمْ يَبْلُغْ ذَلِكَ وَفَاءَ دَيْنِهِ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذُوا مَا وَجَدْتُمْ وَلَيْسَ لَكُمْ إِلَّا ذَلِكَ» . وَقَدْ ذَكَرْنَا ذَلِكَ بِإِسْنَادِهِ فِيمَا تَقَدَّمَ مِنْ كِتَابِنَا هَذَا. فَفِي قَوْلِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِغُرَمَائِهِ: «لَيْسَ لَكُمْ إِلَّا ذَلِكَ» دَلِيلٌ عَلَى أَنْ لَا حَقَّ لَهُمْ فِي بَيْعِهِ وَلَوْلَا ذَلِكَ لَبَاعَهُ لَهُمْ كَمَا بَاعَ سُرَّقًا فِي دَيْنِهِ لِغُرَمَائِهِ وَهَذَا قَوْلُ أَهْلِ الْعِلْمِ جَمِيعًا رَحِمَهُمُ اللهُ
tahqiq

তাহকীক: