কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

৫. হজ্ব আদায়ের নিয়মাবলীর বিবরণ

হাদীস নং: ১৭৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৯৪
হজ্ব আদায়ের নিয়মাবলীর বিবরণ
২১. হজ্জে ইফরাদ।
১৭৯৪. মুসা আবু সালামা (রাহঃ) ..... মুআবিআ ইবনে আবু সুফিয়ান (রাযিঃ) নবী করীম (ﷺ) এর সাহাবীদের জিজ্ঞাসা করেন, আপনারা কি অবগত আছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অমুক, অমুক জিনিস ও চিতাবাঘের চামড়ার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করেছেন? তাঁরা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, আপনারা কি অবহিত আছেন যে, তিনি হজ্জ ও উমরা একত্রে করতে নিষেধ করেছেন? তাঁরা বলেন, এ সম্পর্কে আমরা কিছুই অবগত নই। তিনি আরও বলেন, এটাও ঐ সমস্ত নিষিদ্ধ বস্তুর অন্তর্গত; কিন্তু আপনারা তা ভুলে গেছেন।
كتاب المناسك
باب فِي إِفْرَادِ الْحَجِّ
حَدَّثَنَا مُوسَى أَبُو سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي شَيْخٍ الْهُنَائِيِّ، خَيْوَانَ بْنِ خَلْدَةَ مِمَّنْ قَرَأَ عَلَى أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ أَنَّ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ قَالَ لأَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ كَذَا وَكَذَا وَعَنْ رُكُوبِ جُلُودِ النُّمُورِ قَالُوا نَعَمْ . قَالَ فَتَعْلَمُونَ أَنَّهُ نَهَى أَنْ يُقْرَنَ بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَقَالُوا أَمَّا هَذَا فَلاَ . فَقَالَ أَمَا إِنَّهَا مَعَهُنَّ وَلَكِنَّكُمْ نَسِيتُمْ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটিতে বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর চামড়াকে বিছানা বানাতে কিংবা পশুর পিঠে বিছিয়ে তার উপর সওয়ার হতে নিষেধ করা হয়েছে। সেকালে অনারবরা এটা করত। এটা এক রকম অহমিকা। বিলাসিতাও বটে। অহংকারী লোক মানুষকে দেখানোর জন্য এ জাতীয় বিলাসিতা সেকালেও করত, এখনও করে থাকে। গৌরব দেখানো ভালো নয়। বিলাসিতাও পসন্দনীয় নয়। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে নিষেধ করে দিয়েছেন যে, তারা যেন বাঘ বা অন্য কোনও হিংস্র পশুর চামড়াকে বিছানা বানিয়ে তার উপর না বসে কিংবা তাতে সওয়ার না হয় অর্থাৎ তা দ্বারা সওয়ারীর জিন না বানায়। সারকথা একজন মুমিনের দৃষ্টি থাকবে সর্বদা আখিরাতের দিকে। কীভাবে আখিরাতের মুক্তিলাভ হতে পারে, তার যাবতীয় কাজকর্ম সে লক্ষ্যেই সম্পাদিত হবে। সে ভোগ-বিলাসিতায় লিপ্ত হয়ে আখিরাত থেকে উদাসীন হবে না। তার পোশাক-আশাক ও অন্যান্য ব্যবহার্য সামগ্রী হবে সাদামাটা। এসব বস্তু অতিরিক্ত দামি বা বিলাসিতাপূর্ণ হলে অন্তরে তার প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে এগুলো মানুষের সেবক থাকে না, উল্টো মানুষ এর সেবক হয়ে যায়। এভাবে মানুষ আখিরাত থেকে উদাসীন হয়ে এসব সামগ্রী সংগ্রহ ও এর সেবাযত্নে লিপ্ত হয়ে পড়ে, যা কিনা মানবসৃষ্টির উদ্দেশ্যেরও পরিপন্থি এবং দুনিয়ার বস্তুসামগ্রী সৃষ্টির উদ্দেশ্যের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

মুমিনদের উচিত সর্বপ্রকার বিলাসসামগ্রী ও অহমিকাজনক বস্তুর ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান