মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়

হাদীস নং: ৬১
নবীগণ (আ) সম্পর্কিত তথ্যাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: কারূণের মাটিতে ধ্বসে যাওয়া এবং আল্লাহর নবী মূসা (আ)-এর সাথে তার ঘটনা
(৬১) আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, একদা এক লোক (কারূন) তার এক জোড়া কাপড় পরিধান করে চলছিল। এ অবস্থায় আল্লাহ্ তা'আলার নির্দেশে যমিন তাকে গ্রাস করে নেয়। সে কিয়ামত পর্যন্ত সেখানে বহাল থাকবে।
كتاب أحاديث الأنبياء عليهم وعلى نبينا الصلاة والسلام
باب الخسف بقارون وقصة نبى الله موسى معه
عن أبى سعيد الخدرى (1) عن رسول الله صلي الله عليه وسلم قال بينا رجل يمشى بين بردين مختالا خسف الله به الأرض فهو يتجلجل فيها الى يوم القيامة

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে কার কথা বলা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় না। কেউ কেউ কারুনের নাম উল্লেখ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন সে ছিল পারস্যের জনৈক বেদুঈন। তা যেই হোক না কেন, এরূপ একটি ঘটনা যে ঘটেছিল তা সত্য। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেন, ওহীর মাধ্যমেই বলে থাকেন। তার সত্যতায় কোনও সন্দেহ নেই। এ জাতীয় ঘটনা বর্ণনা করা হয় উপদেশ গ্রহণের জন্য। উপদেশ গ্রহণের জন্য নাম জানা জরুরি নয়।

পোশাক পরার মূল উদ্দেশ্য সতর ঢাকা এবং শীত ও তাপ থেকে আত্মরক্ষা করা। তাছাড়া পোশাক মানুষের শোভাও বটে। প্রত্যেকে আপন সামর্থ্য অনুপাতে পোশাক পরলে তাতে দোষের কিছু নেই। তবে বিলাসিতা পসন্দনীয় নয়। অহংকার দেখানো তো সম্পূর্ণই অবৈধ। পোশাক আল্লাহর দান। এর জন্য তাঁর শোকর আদায় করা কর্তব্য। তার পরিবর্তে অহংকার দেখালে আল্লাহ তা'আলা নারাজ হন। ক্ষেত্রবিশেষে এর জন্য দুনিয়ায়ও শাস্তি দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে অন্যরা তা দ্বারা উপদেশ গ্রহণ করে। হাদীছে বর্ণিত ঘটনাটি সেরকমই।

হাদীছে বলা হয়েছে, লোকটি দামি পোশাক পরে রাস্তা দিয়ে দর্পভরে চলছিল। মানুষকে নিজের ডাটফাট দেখাচ্ছিল। এর পরিণামে আল্লাহ তা'আলা তাকে মাটির ভেতর ধসিয়ে দেন। কিয়ামত পর্যন্ত সে নিচের দিকে ধসে যেতে থাকবে। সে বাঁচার জন্য হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করছে। যতই এরকম করছে, ততোই নিচের দিকে দেবে যাচ্ছে। এভাবে অবিরাম দাবতেই থাকবে। এটা অহংকার ও দর্প দেখানোর পরিণাম।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. রাস্তা দিয়ে দর্পভরে চলতে নেই।

খ. পোশাক আল্লাহ তা'আলার নি'আমত। এর জন্য অহংকার দেখানো নয়; বরং শোকর আদায় করা কর্তব্য।

গ. অতীত জাতির ঘটনাবলি বর্ণনার উদ্দেশ্য তা দ্বারা উপদেশ দেওয়া। তাই উপেদেশের জন্য যতটুকু প্রয়োজন, কেবল ততটুকুই বর্ণনা করা হয়। কাজেই বর্ণনাকে ত্রুটিপূর্ণ মনে না করে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করাতেই মনোযোগী হওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান