মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
হাদীস নং: ১৭
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : দুই বাদশাহর কাহিনী যাঁরা দুনিয়া ও দুনিয়ার সাজসজ্জা থেকে বিমুখ হয়ে গিয়েছিলেন
(১৭) ইবন মাস'উদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি (বাদশাহ) তাঁর সাম্রাজ্যে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি গভীরভাবে চিন্তা করে অনুধাবন করতে পারলেন যে, তাঁর এই সাম্রাজ্য তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং তাঁর এই পরিবেশ তাঁকে তাঁর প্রভুর ইবাদত থেকে অমনোযোগী করে রেখেছে এবং তার ব্যস্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং এক রাতে (গোপনে) তিনি তাঁর প্রাসাদ ছেড়ে রওয়ানা হলেন এবং ভোর হতে হতে আরেক সাম্রাজ্যে পৌঁছে গেলেন। সেখানে তিনি সমুদ্রের তীরে আশ্রয় নিলেন এবং অর্থের বিনিময়ে নিজের শ্রম দিয়ে ইট তৈরীর কাজ গ্রহণ করলেন। এতে তাঁর খাবার খরচ বাদে অতিরিক্ত যে অর্থ থাকত, তা সাদকা করে দিতেন। এভাবেই তাঁর দিন মাস চলছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর ইবাদত, সাদকা ও রহস্যময় জীবন যাপনের বিষয়টি সেখানকার বাদশাহর নিকট পৌঁছে যায়। বাদশাহ তাঁকে তাঁর দরবারে ডেকে পাঠান; কিন্তু তিনি সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। এভাবে দ্বিতীয়বার এবং তৃতীয়বার বাদশাহ তাঁকে ডেকে পাঠান কিন্তু তিনি বারংবার অস্বীকার করেন এবং বলেন, বাদশাহর কাছে আমার কী প্রয়োজন আর বাদশাহরই বা কী প্রয়োজন আমার কাছে? অবশেষে বাদশাহ নিজেই তাঁর কাছে রওয়ানা দিলেন। বাদশাহকে দেখতে পেয়ে তিনি পালাতে লাগলেন। বাদশাহও সাওয়ারী নিয়ে তার পশ্চাদ্ধাবন করলো। কিন্তু তাঁর নাগাল পেলেননা। শেষে বাদশাহ ডাক দিয়ে বললেন, হে আবদুল্লাহ, আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না। তখন তিনি থামেন এবং বাদশাহ তাঁকে নাগালে পান। বাদশাহ জিজ্ঞেস করেন, আল্লাহ্ আপনার প্রতি রহমত করুন, আপনি কে? তখন তিনি উত্তরে বললেন, আমি অমুকের পুত্র অমুক এবং অমুক সাম্রাজ্যের অধিপতি। কিন্তু আমি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে বুঝতে পেরেছি যে, যে পরিবেশের মধ্যে আমি আবদ্ধ, তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং এই পরিবেশ আমাকে আমার রবের ইবাদত থেকে গাফেল করে রেখেছে; তাই আমি তা ছেড়ে এসেছি এবং এখানে এসে আমার মহাপ্রভুর ইবাদত-বন্দেগী করছি। তখন বাদশাহ বললেন, আপনি যা করেছেন, তার প্রয়োজনীয়তা আপনার চেয়ে আমার কাছে মোটেও কম নয়। এই বলে তিনি তাঁর সাওয়ারী থেকে অবতরণ করে সাওয়ারী ছেড়ে দেন এবং তাঁর অনুসরণ করতে থাকেন। তাঁরা দু'জন মিলে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হন। তাঁরা একসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন তাঁদের মৃত্যু যেন একই সময়ে হয়। অতঃপর তাঁরা মৃত্যুবরণ করেন। আবদুল্লাহ (এই হাদীসের রাবী) বলেন, আমি যদি এক্ষণে মিশরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে যেসব চিহ্ন-বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দিয়েছেন, সে সবের আলোকে তাঁদের দু'জনের কবর দেখিয়ে দিতে পারতাম।
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা।)
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة الملكين اللذين تخليا عن الدنيا وزخرفها
عن ابن مسعود (3) قال بينما رجل فيمن كان قبلكم كان في مملكته فتفكر فعلم إن ذلك منقطع عنه وأن ما هو فيه قد شغله عن عبادة ربه فتسرب فانساب ذات ليلة من قصره فأصبح في مملكة غيره، وأتى ساحل البحر وكان به يضرب اللبن (1) بالأجر فيأكل ويتصدق بالفضل، فلم يزل كذلك حتى رقى أمره إلى ملكهم وعبادته وفضله، فأرسل ملكهم إليه أن يأتيه فأبى أن يأتيه، فأعاد ثم أعاد إليه فأبى أن يأتيه وقال ماله ومالي، قال فركب الملك فلما رآه الرجل ولى هاربًا، فلما رأى ذلك الملك ركض في أثره فلم يدركه، قال فناداه يا عبد الله أنه ليس عليك مني بأس، فأقام حتى أدركه فقال له من أنت رحمك الله؟ قال أن فلان بن فلان صاحب ملك كذا وكذا تفكرت في أمري فعلمت أن ما أنا فيه منقطع فأنه قد شغلني عن عبادة ربي فتركته وجئت ههنا أعبد ربي عز وجل، فقال ما أنت بأحوج إلي ما صنعت مني، قال ثم نزل عن دابته فسيبها ثم تبعه فكانا جميعًا يعبدان الله عز وجل فدعوا الله أن يميتهما جميعا، قال فماتا، قال عبد الله لو كنت برميلة (2) مصر لأريتكم قبورهما بالنعت الذي نعت لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم