আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪১- হিবা তথা উপহার প্রদান, এর ফযীলত ও এতে উৎসাহ প্রদান

হাদীস নং: ২৪২৮
আন্তর্জাতিক নং: ২৬০০
- হিবা তথা উপহার প্রদান, এর ফযীলত ও এতে উৎসাহ প্রদান
১৬২৪. হাদিয়া পাঠালে অপরজন গ্রহণ করলাম (একথা) না বলেই যদি তা নিজ অধিকারে নিয়ে নেয়
২৪২৮। মুহাম্মাদ ইবনে মাহবুব (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এল এবং বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তা কি? সে বলল, রমাযানে (দিবাভাগে) আমি স্ত্রী সম্ভোগ করেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কোন গোলামের ব্যবস্থা করতে পারবে? সে বলল না, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি একাধারে দু’মাস রোযা পালন করতে পারবে? সে বলল না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে তুমি কি ষাট জন মিসকীকে খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। বর্ণনাকারী বলেন, ইতিমধ্যে জনৈক আনসারী এক আরক খেজুর নিয়ে হাযির হল। আরক হল নির্দিষ্ট মাপের খেজুরপাত্র। তখন তিনি বললেন, যাও, এটা নিয়ে গিয়ে সাদ্‌কা করে দাও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্থ কাউকে সাদ্‌কা করে দিব? যিনি আপনাকে সত্যাসহ পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম কংকরময় মরুভূমির মধ্যবর্তী স্থানে (অর্থাৎ মদীনায়) আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্থ কোন ঘর নেই। শেষে নবী (ﷺ) বললেন, আচ্ছা, যাও এবং তা তোমার পরিবার-পরিজনদের খাওয়াও।
كتاب الهبة وفضلها والتحريض عليها
باب إِذَا وَهَبَ هِبَةً فَقَبَضَهَا الآخَرُ، وَلَمْ يَقُلْ قَبِلْتُ
2600 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَحْبُوبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: هَلَكْتُ، فَقَالَ: «وَمَا ذَاكَ؟» ، قَالَ: وَقَعْتُ بِأَهْلِي فِي رَمَضَانَ، قَالَ: «تَجِدُ رَقَبَةً؟» ، قَالَ: لاَ، قَالَ: «فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ؟» ، قَالَ: لاَ، قَالَ: «فَتَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا؟» قَالَ: لاَ، قَالَ: فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ بِعَرَقٍ، وَالعَرَقُ المِكْتَلُ فِيهِ تَمْرٌ، فَقَالَ: «اذْهَبْ بِهَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ» ، قَالَ: عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا، قَالَ: «اذْهَبْ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কাফফারা আদায়ের নিয়ম
একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪

কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬

#সংগৃহীত
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)