কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ
৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ
হাদীস নং: ১৩৪৩
আন্তর্জাতিক নং: ১৩৪৩
নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ
যে ব্যক্তি রাতে নির্ধারিত ওজীফা আদায় না করে নিদ্রা যায়
১৩৪৩। আহমদ ইবন 'আমর ইবন সারহ মিসরী (রাহঃ).........'উমর ইবন খাত্তাব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার নির্ধারিত ওজীফা অথবা তার কিছু অংশ আদায় না করে নিদ্রা যায়, তারপর সে তা ফজর ও যোহরের সালাতের মধ্যবর্তী সময়ে আদায় করে, সে যেন তা রাতেই পড়লো— এরূপ সওয়াব তার জন্য লেখা হয়।
أبواب إقامة الصلوات والسنة فيها
بَاب مَا جَاءَ فِيمَنْ نَامَ عَنْ حِزْبِهِ مِنْ اللَّيْلِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَنَا يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، وَعُبَيْدَ اللَّهِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَاهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدٍ الْقَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ نَامَ عَنْ جُزْئِهِ أَوْ عَنْ شَىْءٍ مِنْهُ فَقَرَأَهُ فِيمَا بَيْنَ صَلاَةِ الْفَجْرِ وَصَلاَةِ الظُّهْرِ - كُتِبَ لَهُ كَأَنَّمَا قَرَأَهُ مِنَ اللَّيْلِ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
نَامَ عَنْ حِزْبِهِ ঘুমিয়ে পড়ে হিয্ব আদায় না করে'। হিয্ব حِزْبِ অর্থ অংশ। পরিভাষায় হিয্ব বলা হয় কোনও ব্যক্তির ওই আমলকে, যা সে নিয়মিত করার জন্য নিজের উপর ধার্য করে নেয়। তা যিকর, তিলাওয়াত, নামায ইত্যাদি যে-কোনও আমলই হতে পারে। এরূপ আমলকে আমরা সাধারণত ওযিফা বলে থাকি। সে হিসেবেই আমরা হাদীছটির অর্থে 'ওযিফা' শব্দ ব্যবহার করেছি।
এ হাদীছে বোঝানো উদ্দেশ্য, কোনও ব্যক্তি রাতের বেলা নিয়মিতভাবে করার জন্য যে আমল নির্দিষ্ট করে নেয়, তার তো উচিত নিয়মিতভাবেই তা করা। অলসতার কারণে যাতে কখনও ছুটে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। এতে করে নিয়মিতভাবে তার আমলনামায় ছাওয়াব লেখা হতে থাকবে। কিন্তু কখনও যদি এমন হয়ে যায় যে, ওযরবশত সে তার ওযিফা আদায় করতে পারেনি, তখন কী করণীয়? ঘুমও একটি ওযর বটে। কাজেই কেউ যদি ঘুম থেকে জাগতে না পারে, ফলে ওযিফা আদায় করা না হয়, সে ওযিফা তাহাজ্জুদ বা তিলাওয়াত যা-ই হোক, তবে কি সে ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত থাকবে? এ হাদীছ বলছে যে, এরূপ ক্ষেত্রেও ছাওয়াব হাসিলের উপায় আছে। সে যদি ফজরের নামাযের পর যোহরের নামাযের আগ পর্যন্ত যে-কোনও সময় তার ছুটে যাওয়া ওযিফা আদায় করে নেয়, তবে রাতের বেলা আদায় করলে যে ছাওয়াব লেখা হত সে পরিমাণ ছাওয়াবই তার আমলনামায় লেখা হবে। ধরে নেওয়া হবে যেন সে রাতেই তা আদায় করেছে।
সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ তাআলা কতই না মেহেরবান! রাতের নির্জন পরিবেশে বান্দার "ইবাদত-বন্দেগী তাঁর খুবই প্রিয়। এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তা'আলার অকল্পনীয় নৈকট্য হাসিলে সক্ষম হয়। তাই তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদের কাছে এ সময়ের ইবাদত- বন্দেগী প্রিয় করে তোলেন। ফলে তারা শেষরাতে আরামের ঘুম বিসর্জন দিয়ে উঠে পড়ে এবং নামায ও তিলাওয়াতে রত হয়ে যায়। প্রতি রাতেই এটা তাদের সাধারণ নিয়ম। কিন্তু মানুষ বড় দুর্বল। কখনও কখনও ঘুমের চাপ বা অন্য কোনও ওযরবশত এ আমল ছুটে যায়। তখন তাদের বড় আফসোস হয়। আহা, আজকের ওযিফা ছুটে গেল! আজ আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়া গেল না। আমলনামায় নিয়মিত যে ছাওয়াব হত, আজ তো তা লেখা হবে না। মেহেরবান আল্লাহ বান্দার মনের এ কষ্ট নিবারণের জন্য দিনের বেলা কাযার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সমপরিমাণ আমল দিনের বেলা করলে ওই ক্ষতির প্রতিকার হয়ে যায়। কোনও কোনও বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায়, আক্ষেপের কারণে দ্বিগুণ ছাওয়াব দেওয়া হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যায়, মু'মিন বান্দার উচিত রাতের জন্য কোনও ওযিফা নির্ধারণ করে নেওয়া।
খ. কোনও ওযিফা নির্ধারণের পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য।
অলসতাবশত কখনও যাতে ছুটে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
গ. কখনও কোনও ওযিফা ছুটে গেলে দিনের বেলা তার কাযা করে নেওয়া চাই, যদিও কাযা করা ওয়াজিব নয়।
এ হাদীছে বোঝানো উদ্দেশ্য, কোনও ব্যক্তি রাতের বেলা নিয়মিতভাবে করার জন্য যে আমল নির্দিষ্ট করে নেয়, তার তো উচিত নিয়মিতভাবেই তা করা। অলসতার কারণে যাতে কখনও ছুটে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। এতে করে নিয়মিতভাবে তার আমলনামায় ছাওয়াব লেখা হতে থাকবে। কিন্তু কখনও যদি এমন হয়ে যায় যে, ওযরবশত সে তার ওযিফা আদায় করতে পারেনি, তখন কী করণীয়? ঘুমও একটি ওযর বটে। কাজেই কেউ যদি ঘুম থেকে জাগতে না পারে, ফলে ওযিফা আদায় করা না হয়, সে ওযিফা তাহাজ্জুদ বা তিলাওয়াত যা-ই হোক, তবে কি সে ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত থাকবে? এ হাদীছ বলছে যে, এরূপ ক্ষেত্রেও ছাওয়াব হাসিলের উপায় আছে। সে যদি ফজরের নামাযের পর যোহরের নামাযের আগ পর্যন্ত যে-কোনও সময় তার ছুটে যাওয়া ওযিফা আদায় করে নেয়, তবে রাতের বেলা আদায় করলে যে ছাওয়াব লেখা হত সে পরিমাণ ছাওয়াবই তার আমলনামায় লেখা হবে। ধরে নেওয়া হবে যেন সে রাতেই তা আদায় করেছে।
সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ তাআলা কতই না মেহেরবান! রাতের নির্জন পরিবেশে বান্দার "ইবাদত-বন্দেগী তাঁর খুবই প্রিয়। এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তা'আলার অকল্পনীয় নৈকট্য হাসিলে সক্ষম হয়। তাই তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদের কাছে এ সময়ের ইবাদত- বন্দেগী প্রিয় করে তোলেন। ফলে তারা শেষরাতে আরামের ঘুম বিসর্জন দিয়ে উঠে পড়ে এবং নামায ও তিলাওয়াতে রত হয়ে যায়। প্রতি রাতেই এটা তাদের সাধারণ নিয়ম। কিন্তু মানুষ বড় দুর্বল। কখনও কখনও ঘুমের চাপ বা অন্য কোনও ওযরবশত এ আমল ছুটে যায়। তখন তাদের বড় আফসোস হয়। আহা, আজকের ওযিফা ছুটে গেল! আজ আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়া গেল না। আমলনামায় নিয়মিত যে ছাওয়াব হত, আজ তো তা লেখা হবে না। মেহেরবান আল্লাহ বান্দার মনের এ কষ্ট নিবারণের জন্য দিনের বেলা কাযার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সমপরিমাণ আমল দিনের বেলা করলে ওই ক্ষতির প্রতিকার হয়ে যায়। কোনও কোনও বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায়, আক্ষেপের কারণে দ্বিগুণ ছাওয়াব দেওয়া হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা ইঙ্গিত পাওয়া যায়, মু'মিন বান্দার উচিত রাতের জন্য কোনও ওযিফা নির্ধারণ করে নেওয়া।
খ. কোনও ওযিফা নির্ধারণের পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য।
অলসতাবশত কখনও যাতে ছুটে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
গ. কখনও কোনও ওযিফা ছুটে গেলে দিনের বেলা তার কাযা করে নেওয়া চাই, যদিও কাযা করা ওয়াজিব নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)