আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

২. রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩০৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৩
রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত নামাযের অধ্যায়
নামাযের বিবরণ।
৩০৩. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) একদিন মসজিদে এসে প্রবেশ করলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এল এবং নামায আদায় করে রাসূল (ﷺ)-কে সালাম জানাল। রাসূল (ﷺ) সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেনঃ ফিরে যাও, তুমি পুনরায় নামায আদায় কর, কারণ তুমি তো নামায আদায় করনি। লোকটি ফিরে গেল এবং আগে যে ধরনের নামায পড়েছিল সে ধরনের নামায পড়ল। পরে রাসূল (ﷺ)-কে এসে সালাম জানাল। রাসূল (ﷺ) সালামের উত্তর দিলেন, বললেনঃ ফিরে যাও, আবার নামায আদায় কর, কারণ তুমি তো নামায আদায় করনি। তিনবার এমন ঘটল। শেষে লোকটি বললঃ যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন সেই সত্তার কসম, আমি তো এর চেয়ে ভাল জানি না। আমাকে আপনি শিখিয়ে দিন।

রাসূল (ﷺ) বললেনঃ যখন নামাযে দাঁড়াবে প্রথমে তাকবীর বলবে। পরে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। এর পর সিজদায় যাবে এবং ধীর-স্থিরভাবে সিজদা করবে। পরে উঠে ধীর-স্থির হয়ে বসবে। তোমার সম্পূর্ণ নামাযেই এইরূপ করবে।
أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
باب مَا جَاءَ فِي وَصْفِ الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ الرَّجُلُ فَصَلَّى كَمَا كَانَ صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . فَقَالَ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَقَدْ رَوَى ابْنُ نُمَيْرٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَرِوَايَةُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَصَحُّ . وَسَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ قَدْ سَمِعَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَرَوَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبُو سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ اسْمُهُ كَيْسَانُ وَسَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ يُكْنَى أَبَا سَعْدٍ وَكَيْسَانُ عَبْدٌ كَانَ مُكَاتَبًا لِبَعْضِهِمْ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রুকু-সিজদায় স্থির হওয়া ওয়াজিব। রুকু-সিজদায় গিয়ে সর্বনি্ম কতটুকু সময় অপেক্ষা করলে ওয়াজিব আদায় হয় এ ব্যাপারে উপরিউক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ইমাম ত্বহাবী রহ. বলেন, مِقْدَارُ الرُّكُوعِ أَنْ يَرْكَعَ حَتَّى يَسْتَوِيَ رَاكِعًا وَمِقْدَارُ السُّجُودِ أَنْ يَسْجُدَ حَتَّى يَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ، فَهَذَا مِقْدَارُ الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ الَّذِي لَا بُدَّ مِنْهُ . রুকু এবং সিজদায় যে পরিমাণ দেরি না করলেই নয় তা হলো, রুকু-সিজদায় গিয়ে স্থির হওয়া। (ত্বহাবী শরীফ-১৩৯২ নং হাদীসের আলোচনায়, খ--১, পৃষ্ঠা-১৬৭) ইমাম ত্বহাবীর এ বক্তব্য থেকেও সর্বসাধারণের নিকট ধীরস্থিরের পরিমাণ নির্ধারণ করা কষ্টকর হতে পারে। তাই তাদের জন্য আরো সহজ করে বলা যেতে পারে যে, একবার তাসবীহ পাঠ করা যায় এই পরিমাণ সময় রুকু-সিজদায় অপেক্ষা করলে সেটাকে স্থিরতা বলা যায় এবং এর দ্বারা রুকু-সিজদা পূর্ণ হয়ে যায়। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ৪৬৪) তবে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে এ ধরণের তাড়াহুড়া কোনক্রমে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করার মতো সময় অপেক্ষা করা উচিত।
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)