আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
হাদীস নং: ৩৩৫৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬১৫
- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল
২০৭৫. ইসলাম আগমনের পর নবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৩৩৫৭। মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) .... বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আবু বকর (রাযিঃ) আমার পিতার নিকট আমাদের বাড়িতে আসলেন। তিনি আমার পিতার নিকট থেকে একটি হাওদা ক্রয় করলেন এবং আমার পিতাকে বললেন, তোমার ছেলে বারাকে আমার সাথে হাওদাটি বয়ে নিয়ে যেতে বল। আমি হাওদাটি বহন করে তাঁর সাথে চললাম। আমার পিতাও উহার মূল্য গ্রহণ করার জন্য আমাদের সঙ্গী হলেন। আমার পিতা তাঁকে বললেন, হে আবু বকর, দয়া করে আপনি আমাদেরকে বলুন, আপনারা কি করেছিলেন, যে রাতে (হিজরতের সময়) আপনি নবী কারীম (ﷺ)- এর সাথী ছিলেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। আমরা (সাওর গুহা থেকে বের হয়ে) সারারাত চলে পরদিন দুপুর পর্যন্ত চললাম। যখন রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ল, রাস্তায় কোন মানুষের যাতায়াত ছিল না। হঠাৎ একটি লম্বা ও চওড়া পাথর আমাদের নযরে পড়লো, যার পতিত ছায়ায় সূর্যের তাপ প্রবেশ করছিল না। আমরা সেখানে গিয়ে অবতরণ করলাম।
আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিলাম, যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন। আমি ঐ স্থানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে দিলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় নিযুক্ত রইলাম। তিনি শুয়ে পড়লেন। আর আমি চারপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, একজন মেষ রাখাল তার মেষপাল নিয়ে পাথরের দিকে ছুটে আসছে। সেও আমাদের মত পাথরের ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়। আমি বললাম, হে যুবক, তুমি কার অধীনস্থ রাখাল? সে মদীনার কি মক্কার এক ব্যক্তির নাম বলল, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার মেষপালে কি দুগ্ধবতী মেষ আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। আমি বললাম, তুমি কি দোহন করে দিবে? সে বলল, হ্যাঁ। তারপর সে একটি বকরী ধরে নিয়ে এল। আমি বললাম, এর স্তন ধুলা-বালু, পশম ও ময়লা থেকে পরিষ্কার করে নাও।
রাবী আবু ইসহাক (রাহঃ) বলেন, আমি বারা (রাযিঃ)-কে দেখলাম এক হাত অপর হাতের উপর রেখে ঝাড়ছেন। তারপর ঐ যুবক একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল। আমার সাথেও একটি চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর উযুর পানি ও পান করার পানি রাখার জন্য নিয়েছিলাম। আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট আসলাম। (তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন) তাঁকে জাগানো উচিৎ মনে করলাম না। কিছুক্ষণ পর তিনি জেগে উঠলেন। আমি দুধ নিয়ে হাজির হলাম। আমি দুধের মধ্যে সামান্য পানি ঢেলেছিলাম তাতে দুধের নীচ পর্যন্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি দুধ পান করুন। তিনি পান করলেন, আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। তারপর নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এখনও কি আমাদের যাত্রা শুরুর সময় হয়নি? আমি বললাম, হ্যাঁ হয়েছে।
পুনরায় শুরু হল আমাদের যাত্রা। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইবনে মালিক (অশ্বারোহণে) আমাদের পশ্চাদ্ধাবন করছিল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের অনুধাবনে কে যেন আসছে। তিনি বললেন, চিন্তা করোনা, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমাদের সাথে রয়েছেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) তাঁর বিরুদ্ধে দুআ করলেন। তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তাঁর পেট পর্যন্ত মাটিতে ধেবে গেল, শক্ত মাটিতে। রাবী যুহাইর এই শব্দটি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, আমার ধারণা এরূপ শব্দ বলেছিলেন।
সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস আপনারা আমার বিরুদ্ধে দুআ করেছেন। আমার (উদ্ধারের) জন্য আপনারা দু'আ করে দিন। আল্লাহর কসম আপনাদের অনুসন্ধানকারীদেরকে আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। নবী কারীম (ﷺ) তার জন্য দু'আ করলেন। সে রেহাই পেল। ফিরে যাওয়ার পথে যার সাথে তার সাক্ষাত হতো, সে বলত (এদিকে গিয়ে পশুশ্রম করো না।) আমি সব দেখে এসেছি। যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে নিয়েছে। আবু বকর (রাযিঃ) বলেন, সে আমাদের সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করেছে।
আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিলাম, যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন। আমি ঐ স্থানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে দিলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় নিযুক্ত রইলাম। তিনি শুয়ে পড়লেন। আর আমি চারপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, একজন মেষ রাখাল তার মেষপাল নিয়ে পাথরের দিকে ছুটে আসছে। সেও আমাদের মত পাথরের ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়। আমি বললাম, হে যুবক, তুমি কার অধীনস্থ রাখাল? সে মদীনার কি মক্কার এক ব্যক্তির নাম বলল, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার মেষপালে কি দুগ্ধবতী মেষ আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। আমি বললাম, তুমি কি দোহন করে দিবে? সে বলল, হ্যাঁ। তারপর সে একটি বকরী ধরে নিয়ে এল। আমি বললাম, এর স্তন ধুলা-বালু, পশম ও ময়লা থেকে পরিষ্কার করে নাও।
রাবী আবু ইসহাক (রাহঃ) বলেন, আমি বারা (রাযিঃ)-কে দেখলাম এক হাত অপর হাতের উপর রেখে ঝাড়ছেন। তারপর ঐ যুবক একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল। আমার সাথেও একটি চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর উযুর পানি ও পান করার পানি রাখার জন্য নিয়েছিলাম। আমি নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট আসলাম। (তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন) তাঁকে জাগানো উচিৎ মনে করলাম না। কিছুক্ষণ পর তিনি জেগে উঠলেন। আমি দুধ নিয়ে হাজির হলাম। আমি দুধের মধ্যে সামান্য পানি ঢেলেছিলাম তাতে দুধের নীচ পর্যন্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি দুধ পান করুন। তিনি পান করলেন, আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। তারপর নবী কারীম (ﷺ) বললেন, এখনও কি আমাদের যাত্রা শুরুর সময় হয়নি? আমি বললাম, হ্যাঁ হয়েছে।
পুনরায় শুরু হল আমাদের যাত্রা। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইবনে মালিক (অশ্বারোহণে) আমাদের পশ্চাদ্ধাবন করছিল। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের অনুধাবনে কে যেন আসছে। তিনি বললেন, চিন্তা করোনা, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমাদের সাথে রয়েছেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) তাঁর বিরুদ্ধে দুআ করলেন। তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তাঁর পেট পর্যন্ত মাটিতে ধেবে গেল, শক্ত মাটিতে। রাবী যুহাইর এই শব্দটি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, আমার ধারণা এরূপ শব্দ বলেছিলেন।
সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস আপনারা আমার বিরুদ্ধে দুআ করেছেন। আমার (উদ্ধারের) জন্য আপনারা দু'আ করে দিন। আল্লাহর কসম আপনাদের অনুসন্ধানকারীদেরকে আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। নবী কারীম (ﷺ) তার জন্য দু'আ করলেন। সে রেহাই পেল। ফিরে যাওয়ার পথে যার সাথে তার সাক্ষাত হতো, সে বলত (এদিকে গিয়ে পশুশ্রম করো না।) আমি সব দেখে এসেছি। যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে নিয়েছে। আবু বকর (রাযিঃ) বলেন, সে আমাদের সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করেছে।
كتاب المناقب
باب عَلاَمَاتِ النُّبُوَّةِ فِي الإِسْلاَمِ
3615 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ أَبُو الحَسَنِ الحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، سَمِعْتُ البَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ، يَقُولُ: جَاءَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، إِلَى أَبِي فِي مَنْزِلِهِ، فَاشْتَرَى مِنْهُ رَحْلًا، فَقَالَ لِعَازِبٍ: ابْعَثِ ابْنَكَ يَحْمِلْهُ مَعِي، قَالَ: فَحَمَلْتُهُ مَعَهُ، وَخَرَجَ أَبِي يَنْتَقِدُ ثَمَنَهُ، فَقَالَ لَهُ أَبِي: يَا أَبَا بَكْرٍ، حَدِّثْنِي كَيْفَ صَنَعْتُمَا حِينَ سَرَيْتَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: نَعَمْ، أَسْرَيْنَا لَيْلَتَنَا وَمِنَ الغَدِ، حَتَّى قَامَ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ وَخَلاَ الطَّرِيقُ لاَ يَمُرُّ فِيهِ أَحَدٌ، فَرُفِعَتْ لَنَا صَخْرَةٌ [ص:202] طَوِيلَةٌ لَهَا ظِلٌّ، لَمْ تَأْتِ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، فَنَزَلْنَا عِنْدَهُ، وَسَوَّيْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَانًا بِيَدِي يَنَامُ عَلَيْهِ، وَبَسَطْتُ فِيهِ فَرْوَةً، وَقُلْتُ: نَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَأَنَا أَنْفُضُ لَكَ مَا حَوْلَكَ، فَنَامَ وَخَرَجْتُ أَنْفُضُ مَا حَوْلَهُ، فَإِذَا أَنَا بِرَاعٍ مُقْبِلٍ بِغَنَمِهِ إِلَى الصَّخْرَةِ، يُرِيدُ مِنْهَا مِثْلَ الَّذِي أَرَدْنَا، فَقُلْتُ لَهُ: لِمَنْ أَنْتَ يَا غُلاَمُ، فَقَالَ: لِرَجُلٍ مِنْ أَهْلِ المَدِينَةِ، أَوْ مَكَّةَ، قُلْتُ: أَفِي غَنَمِكَ لَبَنٌ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: أَفَتَحْلُبُ، قَالَ: نَعَمْ، فَأَخَذَ شَاةً، فَقُلْتُ: انْفُضِ الضَّرْعَ مِنَ التُّرَابِ وَالشَّعَرِ وَالقَذَى، قَالَ: فَرَأَيْتُ البَرَاءَ يَضْرِبُ إِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الأُخْرَى يَنْفُضُ، فَحَلَبَ فِي قَعْبٍ كُثْبَةً مِنْ لَبَنٍ، وَمَعِي إِدَاوَةٌ حَمَلْتُهَا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْتَوِي مِنْهَا، يَشْرَبُ وَيَتَوَضَّأُ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُ، فَوَافَقْتُهُ حِينَ اسْتَيْقَظَ، فَصَبَبْتُ مِنَ المَاءِ عَلَى اللَّبَنِ حَتَّى بَرَدَ أَسْفَلُهُ، فَقُلْتُ: اشْرَبْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: فَشَرِبَ حَتَّى رَضِيتُ، ثُمَّ قَالَ: «أَلَمْ يَأْنِ لِلرَّحِيلِ» قُلْتُ: بَلَى، قَالَ: فَارْتَحَلْنَا بَعْدَمَا مَالَتِ الشَّمْسُ، وَاتَّبَعَنَا سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكٍ، فَقُلْتُ: أُتِينَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَقَالَ: «لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا» فَدَعَا عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَارْتَطَمَتْ بِهِ فَرَسُهُ إِلَى بَطْنِهَا - أُرَى - فِي جَلَدٍ مِنَ الأَرْضِ، - شَكَّ زُهَيْرٌ - فَقَالَ: إِنِّي أُرَاكُمَا قَدْ دَعَوْتُمَا عَلَيَّ، فَادْعُوَا لِي، فَاللَّهُ لَكُمَا أَنْ أَرُدَّ عَنْكُمَا الطَّلَبَ، فَدَعَا لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَجَا، فَجَعَلَ لاَ يَلْقَى أَحَدًا إِلَّا قَالَ: قَدْ كَفَيْتُكُمْ مَا هُنَا، فَلاَ يَلْقَى أَحَدًا إِلَّا رَدَّهُ، قَالَ: وَوَفَى لَنَا