মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১২- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৮৭৬
- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায়
৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তসমূহ
২৮৭৬। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একদা তিনি তাহার একটি উটের উপর আরোহণ করিয়া চলিতেছিলেন; উটটি নিতান্তই ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এমতাবস্থায় নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার নিকট দিয়া গেলেন এবং উটটিকে আঘাত করিলেন। তাহাতে উটটি এমন দ্রুত গতিতে চলিতে লাগিল যে, ঐরূপ চলিতে সে সক্ষম ছিল। না। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) বলিলেন, উটটি আমার নিকট চল্লিশ দেরহামে (রৌপ্য মুদ্রায়) বিক্রি করিয়া ফেল। তিনি বলেন, সেমতে আমি উহা বিক্রি করিলাম, কিন্তু এই শর্ত করিলাম যে, আমি বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছিতে ইহার উপর আরোহণ করিব।

মদীনায় পৌঁছিবার পর আমি উট টি লইয়া নবীজীর নিকট উপস্থিত হইলাম; তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন। অপর এক বর্ণনায় আছে—তিনি আমাকে উহার মূল্য আদায় করিয়া দিলেন এবং তারপর উটটিও আমাকে ফেরত দিয়া দিলেন। – মোত্তাঃ

বোখারীর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বেলাল (রাঃ)-কে বলিলেন, তাহাকে তাহার প্রাপ্য আদার করিয়া দাও এবং কিছু অতিরিক্তও প্রদান কর। সেমতে বেলাল (রাঃ) জাবের (রাঃ)-কে তাঁহার প্রাপ্য (চল্লিশ দেরহাম পরিমাণ রৌপ্য) প্রদান করিলেন এবং অতিরিক্ত এক কীরাত (পরিমাণ বিশেষ) দিলেন।
كتاب البيوع
وَعَنْ جَابِرٍ: أَنَّهُ كَانَ يَسِيرُ عَلَى جَمَلٍ لَهُ قد أعيي فَمَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهِ فَضَرَبَهُ فَسَارَ سَيْرًا لَيْسَ يَسِيرُ مِثْلَهُ ثُمَّ قَالَ: «بِعْنِيهِ بِوُقِيَّةٍ» قَالَ: فَبِعْتُهُ فَاسْتَثْنَيْتُ حُمْلَانَهُ إِلَى أَهْلِي فَلَمَّا قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ أَتَيْتُهُ بِالْجَمَلِ وَنَقَدَنِي ثَمَنَهُ وَفِي رِوَايَةٍ فَأَعْطَانِي ثَمَنَهُ وَرَدَّهُ عَلَيَّ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِلْبُخَارِيِّ أَنَّهُ قَالَ لِبِلَالٍ: «اقْضِهِ وَزِدْهُ» فَأَعْطَاهُ وَزَادَهُ قِيرَاطًا

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কোন বস্তু বিক্রয় করাকালে বিক্রেতা কর্তৃক উহা ব্যবহারের শর্ত রাখিলে হানাফী মাযহাব মতে উক্ত ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হয় না। আলোচ্য ঘটনায় বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা প্রমাণ করা হইয়াছে যে, ঐ ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল না। তাই তো হুযূর (ﷺ) মূল্য পরিশোধের পর উটটি বিক্রেতা জাবের (রাঃ)-কেই দান করিলেন; মূল্য প্রদানেও নির্ধারিত পরিমাণ অপেক্ষা বেশী দিয়াছিলেন। ইহাতে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, নবী করীম (ﷺ) কর্তৃক জাবের (রাঃ)-কে ক্রয়ের নামে সাহায্য করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল। প্রকৃত ক্রয়-বিক্রয় উদ্দেশ্য ছিল না, তাই উহার শুদ্ধাশুদ্ধির লক্ষ্য করা হয় নাই ।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান