মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৪- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৩৭৬
- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
১৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - শিশুর বালেগ হওয়া ও ছোট বেলায় তাদের প্রতিপালন প্রসঙ্গে
৩৩৭৬। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, ওহুদ যুদ্ধের সময় আমাকে যুদ্ধে যোগদানের জন্য রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত করা হইল—তখন আমি চৌদ্দ বৎসরের ছেলে। তিনি আমাকে ফিরাইয়া দিলেন। অতঃপর খন্দকের যুদ্ধের সময় উপস্থিত করা হইল—তখন আমি পনর বৎসরের ছেলে, এবার তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন। (পরবর্তীকালে ঘটনা শুনিয়া) হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আযীয় বলিলেন, ইহাই হইল যোদ্ধা এবং বালকের বয়সের সীমা। মোত্তা
كتاب النكاح
بَابُ بُلُوْغِ الصَّغِيْرِ وَحَضَانَتِه فِى الصِّغَرِ: الْفَصْلُ الأول
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: عُرِضْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ أُحُدٍ وَأَنَا ابْنُ أَرْبَعَ عَشْرَةَ سَنَةً فَرَدَّنِي ثُمَّ عُرِضْتُ عَلَيْهِ عَامَ الْخَنْدَقِ وَأَنَا ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ سَنَةً فَأَجَازَنِي فَقَالَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ: هَذَا فَرْقُ مَا بَين الْمُقَاتلَة والذرية
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ছোটদের বালেগ হওয়া ও ছোটকালে তাহার লালন-পালন
(ক) পুরুষ ছেলেকে বালেগ বুঝায় স্বপ্নদোষ বা তাহার সহবাস দ্বারা, নারীর গর্ভধারণ অথবা বীর্যপাত দ্বারা। ইহাদের কোনটি না পাওয়া গেলে পনর বৎসর বয়স পূর্ণ হইলে তাহাকে বালেগ ধরা যাইবে। ইমাম শাফেয়ী, আহমদ ও আমাদের ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ ছাহেবের মতও ইহার অনুরূপ, কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে আঠার বৎসর পূর্ণ হইলে তবেই তাহাকে বালেগ ধরা যাইবে। আর মেয়েদের বালেগত্ব বুঝায় ঋতু, স্বপ্নদোষ ও গর্ভধারণ দ্বারা। ইহাদের কোনটি না পাওয়া গেলে উপরোক্ত চারি ইমামের মতে পুরুষের ন্যায় তাহার বয়স পনর পূর্ণ হইলেই তাহাকে বালেগ ধরা হইবে। কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে সতর বৎসর হইলে তবেই মেয়েকে বালেগ ধরা হইবে।
(খ) পুরুষ-ছেলে বার বৎসরে বালেগ হইতে পারে আর মেয়ে-ছেলে নয় বৎসরে। (কিন্তু স্থান, কাল, ও সংসর্গভেদে ইহার ব্যতিক্রমও হইতে পারে। শীতপ্রধান দেশে বালেগ সাধারণত দেরীতে হয়। আর গ্রীষ্মপ্রধান দেশে সকালে আবার কুসংসর্গেও সকালে হয়।)
(গ) পুরুষ-ছেলের লালন-পালন অন্যের উপর ন্যস্ত থাকিবে—যাবৎ না সে খাইতে পরিতে, আবদস্ত করিতে ও অযু করিতে পারে। ফকীহ খাচ্ছাফ ইহার জন্য সাত বৎসর বয়স নির্ধারণ করিয়াছেন। আর হানাফী মাযহাবের ফতওয়া ইহারই উপর। মেয়ে ছেলের তত্ত্বাবধান ভার অন্যের উপর থাকিবে তাহার বালেগ হওয়া পর্যন্ত।
(ঘ) সন্তান পালনের অধিকার প্রথমত মায়ের, কিন্তু মা সন্তানের গায়রে মাহরাম ব্যক্তির নিকট শাদী বসিয়া গেলে তাহার আর এ অধিকার থাকে না। মায়ের পর যথাক্রমে নানী, দাদী, সহোদরা ভগিনী, পেট ভগিনী, সৎ ভগিনী, খালা ও ফুফুর। ইহারা পারিশ্রমিক চাহিলে তাহা বাপের দিতে হইবে। তালাকের পর সন্তান পালনের ভার মা গ্রহণ করিলে মায়ের খোরপোষ ও বাপের যিম্মায়। কোরআনে রহিয়াছে—
وَعَلَى الْمَوْلُودِ لَهُ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
“বাপের যিম্মায়ই তাহাদের (মায়েদের) খাওয়ানো পরানোর ভার ন্যায়সঙ্গতভাবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৩ )
(ঙ) দুধ খাওয়ানোর মুদ্দত হইল ইমাম আ'যম আবু হানীফার মতে আড়াই বৎসর। কোরআনে বলা হইয়াছে— وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا “সন্তানের গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানো (প্রত্যেকটি) ত্রিশ মাস। তাঁহার মতে এখানে সর্বাধিক গর্ভধারণ মুদ্দত ও সর্বাধিক দুধ ছাড়ানোর মুদ্দতকেই বুঝাইয়াছে। আর ইমাম শাফেয়ীর মতে এখানে এক সাথে উভয়ের মুদ্দতকেই বুঝাইয়াছে। অর্থাৎ, গর্ভধারণের ন্যূনতম মুদ্দত ছয় মাস এবং দুধ ছাড়ানোর সর্বাধিক মুদ্দত চব্বিশ মাস । মোটকথা, তাঁহার মতে দুধ খাওয়ানোর মুদ্দত এখানে দুই বৎসরই বুঝাইয়াছে। যেমন, অন্য আয়াতে পরিষ্কারভাবে রহিয়াছে—
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ ۖ لِمَنْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ
“এবং মায়েরা তাহাদের সস্তানদিগকে দুধ পান করাইবে পূর্ণ দুই বৎসর, যে বাপ দুধ পূর্ণ করাইতে চাহে তাহার জন্য।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৩)
এই হাদীস হইতে ইমাম শাফেয়ী প্রমুখ ইমামগণ বলেন, যে, বালেগ হওয়ার শেষ বয়স পনর বৎসর। এ বয়সে পৌঁছিলেই তাহাকে বালেগ ধরা এবং তাহার নাম যোদ্ধাদের দপ্তরে লিখা ও যুদ্ধ বৃত্তি দেওয়া হইবে।
(ক) পুরুষ ছেলেকে বালেগ বুঝায় স্বপ্নদোষ বা তাহার সহবাস দ্বারা, নারীর গর্ভধারণ অথবা বীর্যপাত দ্বারা। ইহাদের কোনটি না পাওয়া গেলে পনর বৎসর বয়স পূর্ণ হইলে তাহাকে বালেগ ধরা যাইবে। ইমাম শাফেয়ী, আহমদ ও আমাদের ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ ছাহেবের মতও ইহার অনুরূপ, কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে আঠার বৎসর পূর্ণ হইলে তবেই তাহাকে বালেগ ধরা যাইবে। আর মেয়েদের বালেগত্ব বুঝায় ঋতু, স্বপ্নদোষ ও গর্ভধারণ দ্বারা। ইহাদের কোনটি না পাওয়া গেলে উপরোক্ত চারি ইমামের মতে পুরুষের ন্যায় তাহার বয়স পনর পূর্ণ হইলেই তাহাকে বালেগ ধরা হইবে। কিন্তু ইমাম আবু হানীফার মতে সতর বৎসর হইলে তবেই মেয়েকে বালেগ ধরা হইবে।
(খ) পুরুষ-ছেলে বার বৎসরে বালেগ হইতে পারে আর মেয়ে-ছেলে নয় বৎসরে। (কিন্তু স্থান, কাল, ও সংসর্গভেদে ইহার ব্যতিক্রমও হইতে পারে। শীতপ্রধান দেশে বালেগ সাধারণত দেরীতে হয়। আর গ্রীষ্মপ্রধান দেশে সকালে আবার কুসংসর্গেও সকালে হয়।)
(গ) পুরুষ-ছেলের লালন-পালন অন্যের উপর ন্যস্ত থাকিবে—যাবৎ না সে খাইতে পরিতে, আবদস্ত করিতে ও অযু করিতে পারে। ফকীহ খাচ্ছাফ ইহার জন্য সাত বৎসর বয়স নির্ধারণ করিয়াছেন। আর হানাফী মাযহাবের ফতওয়া ইহারই উপর। মেয়ে ছেলের তত্ত্বাবধান ভার অন্যের উপর থাকিবে তাহার বালেগ হওয়া পর্যন্ত।
(ঘ) সন্তান পালনের অধিকার প্রথমত মায়ের, কিন্তু মা সন্তানের গায়রে মাহরাম ব্যক্তির নিকট শাদী বসিয়া গেলে তাহার আর এ অধিকার থাকে না। মায়ের পর যথাক্রমে নানী, দাদী, সহোদরা ভগিনী, পেট ভগিনী, সৎ ভগিনী, খালা ও ফুফুর। ইহারা পারিশ্রমিক চাহিলে তাহা বাপের দিতে হইবে। তালাকের পর সন্তান পালনের ভার মা গ্রহণ করিলে মায়ের খোরপোষ ও বাপের যিম্মায়। কোরআনে রহিয়াছে—
وَعَلَى الْمَوْلُودِ لَهُ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
“বাপের যিম্মায়ই তাহাদের (মায়েদের) খাওয়ানো পরানোর ভার ন্যায়সঙ্গতভাবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৩ )
(ঙ) দুধ খাওয়ানোর মুদ্দত হইল ইমাম আ'যম আবু হানীফার মতে আড়াই বৎসর। কোরআনে বলা হইয়াছে— وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا “সন্তানের গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানো (প্রত্যেকটি) ত্রিশ মাস। তাঁহার মতে এখানে সর্বাধিক গর্ভধারণ মুদ্দত ও সর্বাধিক দুধ ছাড়ানোর মুদ্দতকেই বুঝাইয়াছে। আর ইমাম শাফেয়ীর মতে এখানে এক সাথে উভয়ের মুদ্দতকেই বুঝাইয়াছে। অর্থাৎ, গর্ভধারণের ন্যূনতম মুদ্দত ছয় মাস এবং দুধ ছাড়ানোর সর্বাধিক মুদ্দত চব্বিশ মাস । মোটকথা, তাঁহার মতে দুধ খাওয়ানোর মুদ্দত এখানে দুই বৎসরই বুঝাইয়াছে। যেমন, অন্য আয়াতে পরিষ্কারভাবে রহিয়াছে—
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ ۖ لِمَنْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ
“এবং মায়েরা তাহাদের সস্তানদিগকে দুধ পান করাইবে পূর্ণ দুই বৎসর, যে বাপ দুধ পূর্ণ করাইতে চাহে তাহার জন্য।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৩)
এই হাদীস হইতে ইমাম শাফেয়ী প্রমুখ ইমামগণ বলেন, যে, বালেগ হওয়ার শেষ বয়স পনর বৎসর। এ বয়সে পৌঁছিলেই তাহাকে বালেগ ধরা এবং তাহার নাম যোদ্ধাদের দপ্তরে লিখা ও যুদ্ধ বৃত্তি দেওয়া হইবে।