মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬০৩
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - চোরের হাত কাটা প্রসঙ্গ
৩৬০৩। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, একবার নবী (ﷺ)-এর নিকট একটি চোর আনা হইল। তিনি বলিলেনঃ তোমরা তাহার (ডান) হাত কাটিয়া দাও, সুতরাং উহা কাটা হইল। পরে আবার চুরির দায়ে তাহাকে দ্বিতীয়বার আনা হইল। এইবারও তিনি বলিলেন, তাহার (বাম) পা কাটিয়া দাও। সুতরাং উহা কাটা হইল। পরে আবার তৃতীয়বার চুরির দায়ে তাহাকে আনা হইল। এইবারও তিনি বলিলেনঃ তাহার (বাম) হাত কাটিয়া দাও। সুতরাং তাহাও কাটা হইল। পরে চতুর্থবার চুরির দায়ে তাহাকে আনা হইল। এইবার তিনি বলিলেনঃ তাহার (ডান) পাখানা কাটিয়া দাও। এইবারও তাহা কাটা হইল। অবশেষে চুরির দায়ে পঞ্চমবার তাহাকে আনা হইল। এইবার তিনি বলিলেন, ইহাকে (এই বদ্ নসীবকে) কতল করিয়া দাও। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তাহাকে লইয়া গেলাম এবং তাহাকে কতল করিয়া ফেলিলাম। অতঃপর আমরা তাহাকে টানিয়া আনিয়া একটি কূপের মধ্যে ফেলিয়া দিলাম এবং উপর হইতে তাহার উপর পাথর নিক্ষেপ করিলাম। –আবু দাউদ ও নাসায়ী।
كتاب الحدود
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: جِيءَ بِسَارِقٍ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الثَّانِيَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الثَّالِثَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ ثُمَّ جِيءَ بِهِ الرَّابِعَةَ فَقَالَ: «اقْطَعُوهُ» فَقُطِعَ فَأُتِيَ بِهِ الْخَامِسَةَ فَقَالَ: «اقْتُلُوهُ» فَانْطَلَقْنَا بِهِ فَقَتَلْنَاهُ ثُمَّ اجْتَرَرْنَاهُ فَأَلْقَيْنَاهُ فِي بِئْرٍ وَرَمَيْنَا عَلَيْهِ الحجارةَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ইমাম খাত্তাবী বলেন, চোর যতবারই চুরি করুক না কেন, কিন্তু কোন ইমাম বা ফকীহর মতে তাহাকে হত্যা করা জায়েয নাই। অতএব, বর্ণিত হাদীসে 'কতল' করার নির্দেশ এই জন্য দেওয়া হয় নাই যে, সে চোর চুরি করিয়াছে; বরং সে দেশে ফাসাদ এবং সমাজের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি সৃষ্টি করিয়াছে। সুতরাং শাসক এমন দুষ্কৃতকারীর জন্য দৃষ্টান্ত মূলক কোন শাস্তি কার্যকরী করিতে পারেন। আবার কেহ কেহ বলিয়াছেন, এই হাদীসটি لا يحل دم امرى مسلم الا باحدى ثلث দ্বারা মনসুখ (রহিত) হইয়া গিয়াছে। আবার কেহ কেহ বলেন, ঐ লোকটি কেবলমাত্র চোর ছিল না; বরং সে ধর্ম ত্যাগ করিয়া মুরতাদ হইয়া গিয়াছিল, সেহেতু তাহাকে 'কতল' করার পর লাঞ্ছিতভাবে হেঁচড়াইয়া কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করার পর পাথরও বর্ষণ করা হইয়াছে। অথচ কোন মুসলমান অপরাধ করিলে 'শরয়ী হ্দ' কার্যকরী করার পর সে পবিত্র হইয়া যায়। তখন আর তাহার সাথে এমন ন্যক্কারজনক ব্যবহার করা চলে না। মোটকথা, উল্লিখিত কোন কারণে তাহাকে হত্যা করা হইয়াছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান