মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৮- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৬১৪
- শরীআতের দন্ড বিধি অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদ পানের দণ্ডবিধি
৩৬১৪। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ্যপানের জন্য খুরমা গাছের ডাল ও জুতার দ্বারা প্রহার করিয়াছেন এবং আবু বকর (রাঃ) চল্লিশ চাবুক মারিয়াছেন। — মোত্তাঃ
كتاب الحدود
بَابُ حَدِّ الْخَمْرِ: الْفَصْل الأول
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَرَبَ فِي الْخَمْرِ بِالْجَرِيدِ والنِّعالِ وجلَدَ أَبُو بكرٍ رَضِي الله عَنهُ أربعينَ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

الخمر (খামর)-এর আভিধানিক অর্থ হইল, 'আচ্ছন্ন করা'। মহিলাদের মাথা, চুল ইত্যাদি যেই কাপড় দ্বারা আবৃত ও আচ্ছাদিত করা হয়, উহাকে বলা হয় خمار 'খিমার', তবে ইসলামী পরিভাষায় 'মদ'কে বলা হয় 'খামর'। কথিত আছে الخمر ما خامر العقل অর্থাৎ, 'খামর' উহাকে বলে, যাহা পান করিলে জ্ঞান ও বুদ্ধি আচ্ছাদিত হইয়া পড়ে।
আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেনঃ

إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অর্থঃ “নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ও লটারি অপবিত্র, আর এই সব হইল শয়তানের কাজ সুতরাং এইগুলি হইতে দূরে থাক যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।” ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেন, কোরআনের মধ্যে الخمر বলিয়া যেই মদকে হারাম করা হইয়াছে তাহা হইল التي من ماء العنب اذا غلا واشتد وبلغ حد الإسكار অর্থঃ “আঙ্গুরের কাঁচা রস যখন তাহার মধ্যে ফোস্কা ফেনা ধরিয়া যায় এবং পান করিলে নেশাগ্রস্ত হয়, জ্ঞান-বুদ্ধির বিলুপ্তি ঘটায়।” অন্যান্য অধিকাংশ ইমামগণের মতে যেই জিনিসই মাদকতা সৃষ্টি করে উহাকেই মদ বলা হয়। মদ হারাম হওয়ার মধ্যে সমস্ত ওলামা ও ইমামদের মধ্যে ঐকমত্য রহিয়াছে। চাই উহাকে যে কোন নামেই পান করা হউক না কেন। সহীহ হাদীসের মধ্যে উল্লেখ রহিয়াছে ما اسكر كثيره فقليله حرام অর্থঃ “যেই জিনিস অধিক পরিমাণে নেশা সৃষ্টি করে উহার সামান্য পরিমাণও হারাম।” মূলতঃ নেশা সৃষ্টিকারী প্রত্যেকটি বস্তুই হারাম। আরবের লোকেরা স্বাভাবিকভাবে মদ্যপানে অভ্যস্ত ছিল। সুতরাং উহা পর্যায়ক্রমে হারাম করা হইয়াছে এবং মদ্যপায়ীর জন্য শাস্তির বিধান প্রবর্তন করা হইয়াছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান