মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৯- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৭৫৮
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান
৩৭৫৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন। যদি কেবল বাদী পক্ষের দাবীর ভিত্তিতেই তাহার পক্ষে রায় প্রদান করা হয়, তাহা হইলে অনেকেই লোকদের জান ও মাল হরণের সুযোগ পাইবে। কিন্তু (বাদী সাক্ষী উপস্থিত করিতে ব্যর্থ হইলে) বিবাদীর উপর শপথ করা অনিবার্য হইবে। (যদি বিবাদী শপথ করিতে অস্বীকার করে, তবে সে দোষী সাব্যস্ত হইবে।) — মুসলিম, তবে মুসলিমের শরাহ্ নববীতে রহিয়াছে, ইমাম নববী (রঃ) বলেন, বায়হাকী হাসান কিংবা সহীহ সনদ দ্বারা আরও কিছু অতিরিক্ত শব্দ মারফু পর্যায়ে ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। আর তাহা হইল, সাক্ষ্য-প্রমাণ বাদী পক্ষ পেশ করিবে এবং বিবাদী বা প্রতিপক্ষের উপর কসম বর্তিবে।
كتاب الإمارة والقضاء
بَابُ الْأَقْضِيَةِ وَالشَّهَادَاتِ: الْفَصْل الأول
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لَادَّعَى نَاسٌ دِمَاءَ رِجَالٍ وَأَمْوَالَهُمْ وَلَكِنَّ الْيَمِينَ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَفِي «شَرْحِهِ لِلنَّوَوِيِّ» أَنَّهُ قَالَ: وَجَاءَ فِي رِوَايَةِ «الْبَيْهَقِيِّ» بِإِسْنَادٍ حَسَنٍ أَوْ صَحِيحٍ زِيَادَةٌ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ مَرْفُوعًا: «لَكِنَّ الْبَيِّنَةَ على المدَّعي واليمينَ على مَنْ أنكر»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

পরস্পরের মধ্যে যে ঝগড়া-বিবাদ বাধিয়া যায়, উহাকে কাযিয়্যা বা আকযিয়্যা বলা হয়। বিচার-বিধানের সম্পর্ককে মোয়ামালাত বা সামাজিক জীবন-বিধান বলা হয়; যাহা রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র পরিচালকের অপরিহার্য কর্তব্য ও দায়িত্ব। আর শাহাদাতের আভিধানিক অর্থ হইল—চাক্ষুষ দেখা, কোন ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করা। তাই বলা হয়, শাহাদাত شهادة -এর উৎপত্তি হইয়াছে مشاهدة হইতে। আর উহার ব্যবহারিক অর্থ হইল, শাহাদাত বা শপথ শব্দ দ্বারা কাযী বা বিচারকের সম্মুখে সত্য ঘটনা বর্ণনা করা। সুতরাং মিথ্যা বর্ণনাকে শাহাদাত বা সাক্ষ্য বলা যায় না। সাক্ষ্য দান করা ফরয এবং তাহা গোপন করা হারাম, যদি ঘটনা প্রমাণ করা তাহারই উপর নির্ভর করে এবং বাদী সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আহ্বান করে। আল্লাহর বাণীঃ وَلَا يَأْبَ الشُّهَدَاءُ إِذَا مَا دُعُوا وَلَا تَكْتُمُوا الشَّهَادَةَ ۚ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُ آثِمٌ قَلْبُهُ "যখন সাক্ষ্যদানের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন যেন সাক্ষ্যদানকারী তাহা প্রকাশ করিতে অস্বীকার বা অনীহা প্রকাশ না করে। আর সাক্ষ্য কখনও গোপন করিও না। যে ব্যক্তি সাক্ষ্য গোপন করে, তাহার হৃদয়-মন গুনাহ্ দ্বারা কলুষিত।”
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান