মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৯৪৩
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৯৪৩। হযরত হেযাম ইবনে হেশাম তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হোবাইশ ইবনে খালেদ (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন, হোবাইশ ছিলেন উম্মে মা'বাদের ভাই। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মক্কা হইতে বহিষ্কৃত হইলেন, তখন তিনি মদীনার দিকে হিজরত করিলেন। তাঁহার সঙ্গে ছিলেন হযরত আবু বকর (রাঃ) ও আবু বকরের আযাদকৃত গোলাম আমের ইবনে ফুহাইরা এবং পথ-প্রথদর্শক আব্দুল্লাহ্ আল-লাইসী। পথ অতিক্রমকালে তাঁহারা উম্মে মা'বাদের দুই তাবুর নিকটে পৌঁছিলেন। তাঁহারা উম্মে মা'বাদ হইতে গোশত এবং খেজুর খরিদ করিতে চাহিলেন, কিন্তু তাহার কাছে ইহার কিছুই পান নাই। মূলত সেই সময় লোকেরা অনাহার ও দুর্ভিক্ষে লিপ্ত ছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁবুর এক পার্শ্বে একটি বকরী দেখিতে পাইলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, হে উম্মে মা'বাদ ! এই বকরীটির কি হইয়াছে ? সে বলিল, ইহা এতই দুর্বল যে, দলের বকরীগুলির সাথে যাওয়ার মত শক্তি নাই। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইহাতে কি দুধ আছে? উম্মে মা'বাদ বলিল, বেচারী নিজেই বিপদগ্রস্তা, সুতরাং দুধ দিবে কিভাবে? তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তুমি কি আমাকে এই অনুমতি দিবে যে, আমি উহার দুধ দোহন করি? উম্মে মা'বাদ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলিল, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হউক! আপনি যদি উহার স্তনে দুধ দেখিতে পান, তাহা হইলে উহা দোহন করুন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বকরীটিকে কাছে আনাইলেন, তারপর বকরীটির স্তনে হাত বুলাইলেন এবং বিসমিল্লাহ্ পড়িয়া উম্মে মা'বাদের জন্য তাহার বকরীর ব্যাপারে ( বরকতের) দো'আ করিলেন। তখন বকরীটি দোহনের জন্য নিজের রান দুইটি প্রশস্ত করিয়া হুযূর (ﷺ)-এর সম্মুখে দাঁড়াইয়া জাবর কাটিতে লাগিল। এইদিকে দুধ দোহনের জন্য নবী (ﷺ) এত বড় একটি পাত্র চাহিলেন, যাহা দ্বারা একদল লোক তৃপ্তির সহিত পান করিতে পারে। প্রবাহিত ঢলের মত তিনি উহাতে দুধ দোহন করিলেন, এমন কি উহার উপর ফেনাও জমিয়া গেল। অতঃপর তিনি উম্মে মা'বাদকে পান করিতে দিলেন। সে পরিতৃপ্ত হইয়া পান করিল। পরে তিনি সঙ্গীদিগকে পান করাইলেন, তাহারাও পরিতৃপ্তি লাভ করিলেন এবং সকলের শেষে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিজে পান করিলেন। ইহার অল্পক্ষণ পরেই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দ্বিতীয়বার দোহন করিলেন, এমন কি সেই পাত্রটি এইবারও দুধে পরিপূর্ণ হইয়া গেল। অতঃপর তিনি সেই দুধ উম্মে মা'বাদের নিকট রাখিয়া দিলেন। [যেন তাহার স্বামীও নবী (ﷺ)-এর মু'জেযাকে প্রত্যক্ষ করিতে পারে] এবং উম্মে মা'বাদের পক্ষ হইতে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করিয়া তাঁহারা সম্মুখের দিকে রওয়ানা হইলেন । —শরহে সুন্নাহ্। আর ইবনে আব্দুল বার্র এস্তিআব গ্রন্থে এবং ইবনে জাওযী আল-ওয়াফা কিতাবে বর্ণনা করিয়াছেন এবং অত্র হাদীসটির মধ্যে আরও কিছু ঘটনা রহিয়াছে।
كتاب الفضائل والشمائل
وَقد يرقى إِلَى الْحسن بِتَعَدُّد طرقه) وَعَن حَازِم بْنِ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ حُبَيْشِ بن خَالِد - وَهُوَ أَخُو أمِّ مَعْبَد - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ أُخْرِجَ مِنْ مَكَّةَ خَرَجَ مُهَاجِرًا إِلَى الْمَدِينَةِ هُوَ وَأَبُو بَكْرٍ وَمَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ وَدَلِيلُهُمَا عَبْدُ اللَّهِ اللَّيْثِي مَرُّوا عَلَى خَيْمَتَيْ أُمِّ مَعْبَدٍ فَسَأَلُوهَا لَحْمًا وَتَمْرًا لِيَشْتَرُوا مِنْهَا فَلَمْ يُصِيبُوا عِنْدَهَا شَيْئًا من ذَلِك وَكَانَ الْقَوْمُ مُرْمِلِينَ مُسْنِتِينَ فَنَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَاةٍ فِي كِسْرِ الْخَيْمَةِ فَقَالَ: «مَا هَذِهِ الشَّاةُ يَا أُمَّ معبد؟» قَالَتْ: شَاةٌ خَلَّفَهَا الْجَهْدُ عَنِ الْغَنَمِ. قَالَ: «هَلْ بِهَا مِنْ لَبَنٍ؟» قَالَتْ: هِيَ أَجْهَدُ مِنْ ذَلِكَ. قَالَ: «أَتَأْذَنِينَ لِي أَنْ أَحْلِبَهَا؟» قَالَتْ: بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي إِنْ رَأَيْتَ بِهَا حَلباً فاحلبها. فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَسَحَ بِيَدِهِ ضَرْعَهَا وَسَمَّى اللَّهَ تَعَالَى وَدَعَا لَهَا فِي شَاتِهَا فتفاجت عَلَيْهِ وَردت وَاجْتَرَّتْ فَدَعَا بِإِنَاءٍ يُرْبِضُ الرَّهْطَ فَحَلَبَ فِيهِ ثجَّاً حَتَّى علاهُ الْبَهَاءُ ثُمَّ سَقَاهَا حَتَّى رَوِيَتْ وَسَقَى أَصْحَابَهُ حَتَّى رَوُوا ثُمَّ شَرِبَ آخِرَهُمْ ثُمَّ حَلَبَ فِيهِ ثَانِيًا بَعْدَ بَدْءٍ حَتَّى مَلَأَ الْإِنَاءَ ثُمَّ غَادَرَهُ عِنْدَهَا وَبَايَعَهَا وَارْتَحَلُوا عَنْهَا. رَوَاهُ فِي «شَرْحِ السُّنَّةِ» وَابْنُ عَبْدِ الْبَرِّ فِي «الِاسْتِيعَابِ» وَابْنُ الْجَوْزِيِّ فِي كِتَابِ «الْوَفَاءِ» وَفِي الحَدِيث قصَّةٌ