মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল

হাদীস নং: ৬২২৫
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২৫। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে এবং যোবায়র ও মিকদাদকে অপর এক বর্ণনায় মিকদাদের পরিবর্তে আছে, আবু মারসাদকে পাঠাইলেন এবং বলিলেন: তোমরা "রওযায়ে খাখ" নামক স্থানে যাও, তথায় যাইয়া এক উষ্ট্রারোহী মহিলাকে পাইবে। তাহার নিকট একখানা চিঠি আছে। সুতরাং তোমরা তাহার নিকট হইতে উক্ত পত্রখানা লইয়া আসিবে। [হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমরা সকলে খুব দ্রুত ঘোড়া দৌড়াইয়া রওয়ানা হইলাম। অবশেষে উক্ত রওযা নামক স্থানে পৌঁছিয়া আমরা উষ্ট্রারোহী মহিলাকে পাইলাম। অতঃপর আমরা বলিলাম, "পত্রখানা বাহির কর।” সে বলিল, আমার কাছে কোন পত্র নাই। আমরা বলিলাম, স্বেচ্ছায় পত্রখানা বাহির করিয়া দাও, নতুবা আমরা তোমাকে উলঙ্গ করিয়া তল্লাশি চালাইব। শেষ পর্যন্ত সে তাহার চুলের বেণীর ভিতর হইতে পত্রখানা বাহির করিয়া দিল। অতঃপর আমরা উহা লইয়া নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আসিয়া পৌঁছিলাম। চিঠিখানা খুলিতেই দেখা গেল, (উক্ত চিঠিখানা) মক্কার মুশরিকদের কতিপয় লোকদের প্রতি হযরত হাতেব ইবনে আবু বালতাআর পক্ষ হইতে। ইহাতে তিনি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাহাদিগকে অবহিত করিতেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতেবকে (ডাকিয়া) জিজ্ঞাসা করিলেন, হে হাতেব। ইহা কি ব্যাপার? তিনি বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার বিরুদ্ধে ত্বরিত কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না। প্রকৃত ব্যাপার হইল, আমি হইলাম কোরাইশদের মধ্যে একজন বহিরাগত ব্যক্তি। আমি তাহাদের বংশের অন্তর্ভুক্ত নই। আর আপনার সাথে যেইসমস্ত মুহাজির রহিয়াছেন, তাহাদের বংশীয় আত্মীয়-স্বজন সেইখানে (মক্কায়) রহিয়াছে, ফলে মক্কার মুশরিকগণ উক্ত আত্মীয়তার প্রেক্ষিতে ঐ সমস্ত মুহাজিরদের মাল-সম্পদ এবং অবশিষ্ট আপনজনদের হেফাযত করিয়া থাকে। কোরাইশদের মধ্যে যখন আমার কোন আত্মীয়-আপনজন নাই, তখন আমি ইহাই চাহিয়াছি যে, মক্কার শত্রু কওমের প্রতি কিছু এহসান করি, যাহাতে তাহারা আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয় এবং তাহাদের অনিষ্ট হইতে আমার আত্মীয়-স্বজন নিরাপদে থাকে। আমি এই কাজটি এই জন্য করি নাই যে, আমি কাফের কিংবা দ্বীন হইতে মুরতাদ হইয়া গিয়াছি। আর না ইসলাম গ্রহণ করিবার পর আমি কুফরীর দিকে আকৃষ্ট থাকিয়া এইরূপ করিয়াছি।
তাহার বক্তব্য শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হাতেব তোমাদের সম্মুখে সত্য কথাই বলিয়াছে। ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমাকে অনুমতি দিন, আমি এক্ষুণি এই মুনাফেকের গর্দান উড়াইয়া দেই। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [ওমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করিয়া] বলিলেন, নিশ্চয় ইনি একজন বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী। তুমি প্রকৃত ব্যাপারটি কি জান? সম্ভবত আল্লাহ তা'আলা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি লক্ষ্য করিয়াই বলিয়াছেন তোমরা যাহা ইচ্ছা কর, তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত। অন্য বর্ণনায় রহিয়াছে, আমি তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়া দিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা (হাতেব ও অন্যান্যদিগকে সতর্ক করার জন্য) নাযিল করিলেন- “হে ঈমানদারগণ! আমার ও তোমাদের শত্রুদের (কাফের-মুশরিকদের) সহিত কোন প্রকারের বন্ধুত্ব স্থাপন করিও না..মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا وَالزُّبَيْر والمقداد - وَفِي رِوَايَة: أَبَا مَرْثَدٍ بَدَلَ الْمِقْدَادِ - فَقَالَ: «انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِينَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوا مِنْهَا» فَانْطَلَقْنَا تَتَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا الرَّوْضَة فَإِذا نَحن بِالظَّعِينَةِ قُلْنَا لَهَا: أَخْرِجِي الْكتاب قَالَت: مَا معي كِتَابٍ. فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا فَأَتَيْنَا بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا فِيهِ: مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا حَاطِبُ مَا هَذَا؟» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَا تَعْجَلْ عَلَيَّ إِنِّي كُنْتُ امْرَأً مُلْصَقًا فِي قُرَيْشٍ وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهِمْ وَكَانَ مَنْ مَعَك من الْمُهَاجِرين من لَهُم قَرَابَات يحْمُونَ بهَا أَمْوَالهم وأهليهم بِمَكَّةَ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِي ذَلِكَ مِنَ النَّسَبِ فِيهِمْ يَدًا يَحْمُونَ بِهَا قَرَابَتِي وَمَا فَعَلْتُ كفرا وَلَا ارْتِدَادًا عَن ديني وَلَا رضى بِالْكُفْرِ بَعْدَ الْإِسْلَامِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكُمْ» فَقَالَ عُمَرُ: دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ: اعْمَلُوا مَا شِئْتُم فقد وَجَبت لكم الجنةُ « وَفِي رِوَايَة فقد غَفَرْتُ لَكُمْ» فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى [يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ] . مُتَّفق عَلَيْهِ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৬২২৫ | মুসলিম বাংলা