আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫৫- ভরণ পোষণ বাসস্থান অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৯৭৭
আন্তর্জাতিক নং: ৫৩৬৮
- ভরণ পোষণ বাসস্থান অধ্যায়
২৮৩৩. নিজ পরিবারের জন্য অসচ্ছল ব্যক্তির খরচ
৪৯৭৭। আহমাদ ইবনে ইউনুস (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী করীম (ﷺ) -এর নিকট এক ব্যক্তি এলো এবং বললো, আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কেন? সে বললোঃ রমযান মাসে আমি (দিবসে) স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটি দাস মুক্ত করে দাও। সে বললোঃ আমার কাছে কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু’মাস রোযা রাখ। সে বললঃ সে ক্ষমতাও আমার নেই। তিনি বলেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও। সে বললোঃ সে সামর্থ্যও আমার নেই।

এ সময় নবী করীম (ﷺ) -এর কাছে এক ঝুড়ি খেজুর এল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বললোঃ আমি এখানে। তিনি বললেনঃ এগুলো দিয়ে সাদ্‌কা কর। সে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্তকে দিব? সেই সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, মদীনার প্রস্তরময় দু’পার্শ্বের মধ্যে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কোন পরিবার নেই। তখন নবী করীম (ﷺ) হাসলেন এমন কি তার চোয়ালের দাঁত মোবারক পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল এবং বললেনঃ তবে তোমাদেরই অনুমতি দেওয়া হল।
كتاب النفقات
باب نَفَقَةِ الْمُعْسِرِ عَلَى أَهْلِهِ
5368 - حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ، فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَلِمَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى أَهْلِي فِي رَمَضَانَ، قَالَ: «فَأَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَيْسَ عِنْدِي، قَالَ: «فَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لاَ أَسْتَطِيعُ، قَالَ: «فَأَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا» قَالَ: لاَ أَجِدُ، فَأُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ، فَقَالَ: «أَيْنَ السَّائِلُ؟» قَالَ: هَا أَنَا ذَا، قَالَ: «تَصَدَّقْ بِهَذَا» قَالَ: عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَوَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ، مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ، قَالَ: «فَأَنْتُمْ إِذًا»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কাফফারা আদায়ের নিয়ম
একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪

কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬

#সংগৃহীত
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)