মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১৯. পানাহারের দ্রব্যাদি, কুরবানী, শিকার এবং যবেহ সম্পর্কে বর্ণনা

হাদীস নং: ৩৯৪
পানাহারের দ্রব্যাদি, কুরবানী, শিকার এবং যবেহ সম্পর্কে বর্ণনা
পানাহারের দ্রব্যাদি, কুরবানী, শিকার এবং যবেহ সম্পর্কে বর্ণনা
হাদীস নং- ৩৯৪

হযরত ইব্ন উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে সব পশু দাঁত দ্বারা শিকার করে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা খেতে নিষেধ করেছেন।
كتاب الأطعمة والأشربة والشرب والضحايا والصيد والذبائح
عَنْ مُحَارِبٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ أَكْلِ كُلِّ ذِي نَابٍ مِنَ السِّبَاعِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

যে সব পশু দাঁত দ্বারা শিকার করে, এগুলো খাওয়া নিষেধ। যেমন বাঘ, সিংহ, চিতা, শিয়াল, হাতি, বানর ইত্যাদি। এ হাদীস হযরত ইব্ন আব্বাস (রা), হযরত খালিদ ইব্‌ন ওয়ালীদ, হযরত আলী ইব্ন আবী তালিব, জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ আবু সা'লাবা আল খুশানী, আবূ হুরায়রা (রা) প্রমুখ ছ'জন সম্মানিত সাহাবা থেকে সিহাহ সিত্তাহ গ্রন্থে বর্ণিত আছে এবং এগুলোর অর্থ সাধারণ হওয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে অকাট্য প্রমাণ বহন করে। রিওয়ায়েতের দৃষ্টিতেও অকাট্যের নিকটবর্তী, সুতরাং গণ্ডার এবং খেকশিয়াল এ সাধারণ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এটাও দাঁত দ্বারা শিকারকারী জন্তুর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এটাই হলো ইমাম আবূ হানীফা (রা)-এর মাযহাব।
ইমাম শাফিঈ ও মালিক (রা) এ দুটোকে হালাল মনে করেন। দলীল হিসেবে তিরমিযী, ইব্ন মাজাহ ও নাসাঈ শরীফে আবদুর রহমান ইব্‌ন আবী আম্মার সূত্রে বর্ণিত হাদীস পেশ করে থাকেন।
একই বিষয়ে আবদুর রহমান হযরত জাবির (রা)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করেন, গণ্ডার শিকার করা। কি জায়েয? তিনি বললেন, হাঁ। এরপর জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কি আমরা খেতে পারি? হযরত জাবির (রা) বললেন, হাঁ। অতঃপর আবদুর রহমান (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) কি এ ব্যাপারে বলেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। এখানে গভীরভাবে বিষয়টি চিন্তা করা উচিত যে, একদিকে অকাট্য প্রমাণিত হাদীসের সাধারণ বিধান, অপরপক্ষে এ হাদীস এবং এর দ্বারা বিশেষ অনুমতি কিভাবে সমান হতে পারে? এ হাদীস সনদ ও রিওয়ায়েতের দিক থেকে প্রথম হাদীস থেকে দুর্বল, সুতরাং এটা কিভাবে পূর্ববর্তী হাদীসের প্রতিপক্ষ হতে পারে। যদি কিছু সময়ের জন্য এটা মেনে নেয়া হয়, তাহলে এটা সর্বজন স্বীকৃত যে, সন্দেহের সময় হারামকে হালালের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়। অতঃপর এটা বলা যায় যে, এ বিধান ইসলামের প্রারম্ভে ছিল এবং অকাট্য প্রমাণিত হাদীস দ্বারা তা রহিত করা হয়ে গিয়েছে। মোট কথা এ হাদীস স্বীয় স্থানে অটল এবং খন্ডন করার যোগ্য নয়। খেকশিয়ালকে ইমাম শাফিঈ (র) গন্ডারের উপর কিয়াস করে এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান