আখলাকুন্নবী (ﷺ)
কিতাবের পরিচ্ছেদ সমূহ
হাদীস নং: ১৭
কিতাবের পরিচ্ছেদ সমূহ
নবী (ﷺ) -এর চারিত্রিক সৌন্দর্য
১৭।  হযরত হাসান ইব্ন আলী ইব্ন আবু তালিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে [হযরত আলী (রাযিঃ)-কে) নবী (ﷺ) -এর গৃহ-মধ্যকার কাজকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর এ অনুমতি ছিল যে, যখনই ইচ্ছা করতেন, তখনই তিনি গৃহে প্রবেশ করতে পারতেন।১ (তবুও) তাঁর অভ্যাস ছিল, যখনই গৃহে গমন করতেন, তাঁর সময়কে তিন ভাগ করতেন। এক ভাগ আল্লাহ্র ইবাদতের জন্য, দ্বিতীয় ভাগ নিজ পরিবার-পরিজনের জন্য এবং তৃতীয় ভাগ নিজের আরামের জন্য। আবার নিজ আরামের সময়টুকুও লোকজনকে দিয়ে দিতেন। আর তা এইভাবে যে, বিশেষদের মাধ্যমে তার উপকারিতাও সাধারণদের মধ্যে ফিরিয়ে দিতেন। অর্থাৎ ঐ সময় বিশেষ বিশেষ সাহাবা কিরাম প্রবেশ করতেন এবং তাঁর কাছে দীনী মাসায়েল ও মর্মকথা শ্রবণ করে সাধারণ লোকদের মধ্যে পৌঁছে দিতেন। তাঁদের কাছে কোনো কথা গোপন রাখতেন না অর্থাৎ দীন ও দুনিয়ার লাভজনক সব কথাই বলতেন। তাঁর অভ্যাস ছিল, উম্মতের জন্য নির্ধারিত সময়ে স্বীয় ইচ্ছা অনুযায়ী জ্ঞানীদেরকে প্রাধান্য দিতেন এবং ঐ সময়ের বণ্টনে দীনী মর্যাদা হিসাবে তারতম্য ঘটতো।২ তাদের মধ্যে কারো থাকতো একটি কাজ, কারো দু’টি কাজ এবং কারো কয়েকটি কাজ। তিনি তাদের কাজে লেগে যেতেন এবং তাদেরকেও ঐসব কাজে মশগুল রাখতেন। তাতে তাদের এবং উম্মতের সংশোধন হতো। তিনি তাদের সমস্যাবলি জানতে চাইতেন এবং তাদের অবস্থা অনুযায়ী তাদেরকে পরামর্শ দিতেন। বলতেন, যারা এখানে উপস্থিত আছে, তারা যেন তা অনুপস্থিতদেরকে পৌঁছে দেয়। (তিনি বলতেন) আমাকে সেই ব্যক্তির প্রয়োজন অবগত করো, যে তার প্রয়োজন আমার কাছে পৌঁছাতে পারে না। কেননা যে ব্যক্তি আমীর (প্রশাসক) পর্যন্ত এমন কোনো ব্যক্তির প্রয়োজনকে পৌঁছে দিয়েছে, যে তার নিজের প্রয়োজন ঐ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা ঐ ব্যক্তিকে দৃঢ়পদ রাখবেন। এ কথাই তাঁর কাছে আলোচিত হতো এবং এ ছাড়া তিনি কারো কোনো কথা পছন্দ করতেন না।
সুফিয়ান ইব্ন ওয়াকী’র রিওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবা তাঁর (নবী (ﷺ)) কাছে ইল্ম ও দীন অন্বেষী হয়ে যেতেন এবং স্বাদ না নিয়ে সেখান থেকে ফিরতেন না। আর যখন বের হতেন, তখন পথ-প্রদর্শক হয়ে বের হতেন। বর্ণনাকারী পথ-প্রদর্শকের ব্যাখ্যা করেছেন ‘ফুকাহা’ শব্দ দ্বারা (অর্থাৎ দ্বীনের অগাধ পাণ্ডিত্য নিয়ে উঠে আসতেন)।
হযরত হুসাইন (রাযিঃ)৩ বলেন, তারপর আমি (আমার পিতাকে) জিজ্ঞেস করলাম, তাঁর (নবী (ﷺ) ) গৃহের বাইরের কাজকর্ম সম্পর্কে কিছুটা বলুন। অর্থাৎ গৃহের বাইরে তিনি কি কাজকর্ম করতেন ? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অনর্থক কথাবার্তা থেকে স্বীয় রসনা মুবারককে রক্ষা করতেন। মানুষকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করতেন। বিচ্ছিন্ন হতে দিতেন না। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিকে সম্মান করতেন এবং তাকেই তাদের নেতা ও অভিভাবক বানাতেন। তিনি মানুষের সাথে মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে সব সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতেন। কিন্তু কারো সাথে স্বীয় আন্তরিকতা ও প্রফুল্লচিত্ততার ক্ষেত্রে তারতম্য করতেন না। স্বীয় সঙ্গীদের খোঁজ-খবর নিতেন। মানুষকে তাদের হাল অবস্থা জিজ্ঞেস করতেন। ভাল কথাকে ভাল বলতেন এবং তার প্রশংসা করতেন। আর মন্দ কথাকে মন্দ বলতেন এবং তার নিন্দা করতেন। প্রত্যেক কাজে তাঁর ভারসাম্য বজায় থাকতো, এদিকে-ওদিকে ঝুঁকে পড়তেন না। তিনি মানুষের প্রতি সর্বদা খেয়াল রাখতেন যাতে তারা অমনোযোগী না হয়ে পড়ে কিংবা অতিষ্ঠ হয়ে না ওঠে। প্রত্যেক অবস্থার জন্যই তাঁর নিকট তার উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকতো। সত্য গ্রহণেও ত্রুটি করতেন না এবং সত্য ত্যাগ করেও অন্য দিকে চলে যেতেন না। তাঁর সঙ্গী-সাথীরা ছিলেন উত্তম লোক। তাঁর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি সবার মঙ্গল কামনা করতেন। এবং তাঁর কাছে সবচেয়ে উচ্চ মর্যাদাশীল ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি তাদের সমব্যথী ও সাহায্য-সহায়তার ব্যাপারে সবচেয়ে উত্তম।
[হযরত হুসাইন (রাযিঃ) বলেন], এরপর আমি (আমার পিতাকে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মজলিস ও উঠাবসার অবস্থা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) আল্লাহ্র যিকর করতেন। তিনি কোনো স্থানকে নিজের জন্য নির্ধারিত করতেন না এবং অন্য লোককেও এরূপ করতে নিষেধ করতেন।৪ তিনি যখন মানুষের সাথে বসতেন, তখন -এর উঠতে বসতে যেখানেই বসার স্থান পেতেন বসে পড়তেন এবং মানুষকেও এরূপ করতে নির্দেশ দিতেন। তিনি তাঁর মজলিসের প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দান করতেন। কেউ একথা অনুভব করতো না যে, সে ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি তাঁর বেশী প্রিয় ব্যক্তি। যে ব্যক্তি (কোনো প্রয়োজন) তাঁর কাছে এসে বসতো কিংবা উঠে যেত তিনি তার সাথে নিজেকে সেই সময় পর্যন্ত আটকে রাখতেন যে পর্যন্ত সে নিজেই চলে না যেত। কেউ যদি তাঁর কাছে কোনো কিছু চাইতে আসতো, সে তার বাসনা পূরণ করে ফিরে যেতো কিংবা কোমল ব্যবহার ও সান্ত্বনা নিয়ে ফিরে যেতো। তাঁর ব্যবহার সমস্ত লোকের জন্য সমান ছিল। (স্নেহ-মমতার ক্ষেত্রে) তিনি ছিলেন তাঁদের পিতা। আর লোকেরা সব (অধিকারের ক্ষেত্রে) তাঁর কাছে ছিল সমান। তাঁর মজলিস ছিল ধৈর্যশীলতা, লজ্জাশীলতা, সত্যতা ও আমানতের মজলিস । সেখানে উচ্চঃস্বরে কথাবার্তা হতো না। কারো ইযযত-আব্রুর উপর কলংক আরোপ করা হতো না। কারো দোষত্রুটি সমালোচিত হতো না। সভার সদস্যদের মধ্যে সংযত ভাব ছিল। তাক্ওয়া বজায় থাকতো। পরস্পরে ভদ্রতা ও নম্র আচরণ করতো। বড়দের শ্রদ্ধা করতো, ছোটদের স্নেহ করতো। অভাবগ্রস্তদের প্রাধান্য দিতো। অপরিচিত আগন্তুকদের প্রতি খেয়াল রাখতো।
হযরত হুসাইন (রাযিঃ) বলেন, তারপর আমি (আমার পিতাকে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি তাঁর সভার সদস্যদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করতেন ? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁদের সাথে আনন্দচিত্তে মিলিত হতেন। তিনি নম্র ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ও দুর্বিনীত ছিলেন না। তিনি হাট-বাজারে হৈহুল্লোড় করতেন না। অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করতেন না। কাউকে দোষারোপ করতেন না। কারো অহেতুক প্রশংসাও করতেন না। অপছন্দনীয় জিনিস থেকে তিনি দূরে থাকতেন এবং এ ব্যাপারে মানুষ তাঁর সম্পর্কে নিরাশ হতো। তিনি সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্যও করতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি নিজকে দূরে রেখেছিলেন। এক. ঝগড়া-বিবাদ থেকে, দুই. বেশী কথা বলা থেকে, তিন. অর্থহীন কাজ থেকে। তিনটি বিষয় থেকে তিনি অন্য মানুষকে রক্ষা করেছিলেন। এক. কারো কুৎসা রটনা করতেন না। দুই. কাউকে লজ্জা দিতেন না। তিন. কারো দোষ অন্বেষণ করতেন না। যে কথা বললে সাওয়াবের আশা করা যেতো, তিনি তাই বলতেন। তিনি যখন কথা বলতেন, তখন সভাসদগণ তাঁদের গর্দান এমনভাবে ঝুঁকিয়ে রাখতেন যেনো তাঁদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তিনি যখন কথা বন্ধ করতেন তখন অন্যরা কথা বলতেন। তাঁর সামনে কেউ কারো কথার প্রতিবাদ করতেন না। যখন কেউ কোনো কথা শুরু করতেন, তখন অন্যরা তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকতেন। তাদের মধ্যে প্রত্যেকের কথাই তাঁর কাছে ততটুকু গুরুত্বের অধিকারী হতো, যতটুকু গুরুত্ব পেতো প্রথম ব্যক্তির কথা। সবাই যে কথা শুনে হাসতো, তিনিও তাতে হাসতেন। সবাই যাতে আশ্চর্য হতো, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন। আগন্তুকের অসংলগ্ন কথাবার্তা ও প্রশ্নাবলি তিনি ধৈর্যসহকারে শ্রবণ করতেন। তাঁর সাহাবীগণ এরূপ লোকদেরকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতেন (যাতে তাদের প্রশ্নাবলি থেকে নতুন বিষয় জানা যায়)। তিনি বলতেন, তোমরা যখন কোনো অভাবগ্রস্তকে তার অভাব দূর করার প্রার্থনা করতে দেখো, তখন তাকে সাহায্য করো। কেউ তাঁর প্রশংসা করুক, তিনি তা পছন্দ করতেন না। তবে কেউ কৃতজ্ঞতা বশত কিছু বললে তা ছিল স্বতন্ত্র। তিনি কারো কথার প্রতিবাদ করতেন না। অবশ্য সে যদি সীমা অতিক্রম করে যেতো, তবে তার কথার প্রতিবাদ করতেন। হয়তো তাকে নিষেধ করতেন কিংবা সেখান থেকে তিনি উঠে দাঁড়াতেন।
[হযরত হাসান (রাযিঃ) বলেন] এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর চুপ থাকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চুপ থাকা ছিল চারটি কারণে। এক. সহনশীলতার কারণে দুই. সাবধানতার দরুন, তিন. আন্দাজ করার উদ্দেশ্যে ও চার. চিন্তা-ভাবনা করার জন্য। তাঁর আন্দাজ করা ছিল অবস্থার উপর পূর্ণ চিন্তা-ভাবনা করা এবং মানুষের আলাপ-আলোচনা শ্রবণ করা। আর তিনি চিন্তা-ভাবনা করতেন সেসব বিষয়ে, যা অবশিষ্ট থাকে এবং বিলীন হয় না। আর সহনশীলতা তাঁর ধৈর্যের মধ্যেই একত্র করা হয়েছিল। অর্থাৎ কোনো বিষয় তাঁকে ক্রুদ্ধও করতে পারতো না এবং অস্থিরও করতে পারতো না। আর সাবধানতা তাঁর জন্য চারটি জিনিসের মধ্যে একত্র করা হয়েছে। (আর তা হচ্ছে) তিনি উত্তম বস্তুটি গ্রহণ করতেন, যাতে মানুষ তাঁকে গ্রহণ করে এবং তিনি মন্দ বস্তু পরিত্যাগ করতেন, যাতে মানুষ তা থেকে বিরত থাকে। এবং যে জিনিসে তাঁর উম্মতের সংশোধন হতো, তিনি তার পক্ষে জোরালো মত প্রকাশ করতেন আর যাতে তাদের কল্যাণ হতো, তিনি সে বিষয়ে সক্রিয় থাকতেন। এভাবে তিনি তাঁর উম্মতের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের কল্যাণকে সমন্বিত করেছিলেন।
সুফিয়ান ইব্ন ওয়াকী’র রিওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবা তাঁর (নবী (ﷺ)) কাছে ইল্ম ও দীন অন্বেষী হয়ে যেতেন এবং স্বাদ না নিয়ে সেখান থেকে ফিরতেন না। আর যখন বের হতেন, তখন পথ-প্রদর্শক হয়ে বের হতেন। বর্ণনাকারী পথ-প্রদর্শকের ব্যাখ্যা করেছেন ‘ফুকাহা’ শব্দ দ্বারা (অর্থাৎ দ্বীনের অগাধ পাণ্ডিত্য নিয়ে উঠে আসতেন)।
হযরত হুসাইন (রাযিঃ)৩ বলেন, তারপর আমি (আমার পিতাকে) জিজ্ঞেস করলাম, তাঁর (নবী (ﷺ) ) গৃহের বাইরের কাজকর্ম সম্পর্কে কিছুটা বলুন। অর্থাৎ গৃহের বাইরে তিনি কি কাজকর্ম করতেন ? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অনর্থক কথাবার্তা থেকে স্বীয় রসনা মুবারককে রক্ষা করতেন। মানুষকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করতেন। বিচ্ছিন্ন হতে দিতেন না। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিকে সম্মান করতেন এবং তাকেই তাদের নেতা ও অভিভাবক বানাতেন। তিনি মানুষের সাথে মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে সব সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতেন। কিন্তু কারো সাথে স্বীয় আন্তরিকতা ও প্রফুল্লচিত্ততার ক্ষেত্রে তারতম্য করতেন না। স্বীয় সঙ্গীদের খোঁজ-খবর নিতেন। মানুষকে তাদের হাল অবস্থা জিজ্ঞেস করতেন। ভাল কথাকে ভাল বলতেন এবং তার প্রশংসা করতেন। আর মন্দ কথাকে মন্দ বলতেন এবং তার নিন্দা করতেন। প্রত্যেক কাজে তাঁর ভারসাম্য বজায় থাকতো, এদিকে-ওদিকে ঝুঁকে পড়তেন না। তিনি মানুষের প্রতি সর্বদা খেয়াল রাখতেন যাতে তারা অমনোযোগী না হয়ে পড়ে কিংবা অতিষ্ঠ হয়ে না ওঠে। প্রত্যেক অবস্থার জন্যই তাঁর নিকট তার উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকতো। সত্য গ্রহণেও ত্রুটি করতেন না এবং সত্য ত্যাগ করেও অন্য দিকে চলে যেতেন না। তাঁর সঙ্গী-সাথীরা ছিলেন উত্তম লোক। তাঁর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি সবার মঙ্গল কামনা করতেন। এবং তাঁর কাছে সবচেয়ে উচ্চ মর্যাদাশীল ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি তাদের সমব্যথী ও সাহায্য-সহায়তার ব্যাপারে সবচেয়ে উত্তম।
[হযরত হুসাইন (রাযিঃ) বলেন], এরপর আমি (আমার পিতাকে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মজলিস ও উঠাবসার অবস্থা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) আল্লাহ্র যিকর করতেন। তিনি কোনো স্থানকে নিজের জন্য নির্ধারিত করতেন না এবং অন্য লোককেও এরূপ করতে নিষেধ করতেন।৪ তিনি যখন মানুষের সাথে বসতেন, তখন -এর উঠতে বসতে যেখানেই বসার স্থান পেতেন বসে পড়তেন এবং মানুষকেও এরূপ করতে নির্দেশ দিতেন। তিনি তাঁর মজলিসের প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দান করতেন। কেউ একথা অনুভব করতো না যে, সে ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি তাঁর বেশী প্রিয় ব্যক্তি। যে ব্যক্তি (কোনো প্রয়োজন) তাঁর কাছে এসে বসতো কিংবা উঠে যেত তিনি তার সাথে নিজেকে সেই সময় পর্যন্ত আটকে রাখতেন যে পর্যন্ত সে নিজেই চলে না যেত। কেউ যদি তাঁর কাছে কোনো কিছু চাইতে আসতো, সে তার বাসনা পূরণ করে ফিরে যেতো কিংবা কোমল ব্যবহার ও সান্ত্বনা নিয়ে ফিরে যেতো। তাঁর ব্যবহার সমস্ত লোকের জন্য সমান ছিল। (স্নেহ-মমতার ক্ষেত্রে) তিনি ছিলেন তাঁদের পিতা। আর লোকেরা সব (অধিকারের ক্ষেত্রে) তাঁর কাছে ছিল সমান। তাঁর মজলিস ছিল ধৈর্যশীলতা, লজ্জাশীলতা, সত্যতা ও আমানতের মজলিস । সেখানে উচ্চঃস্বরে কথাবার্তা হতো না। কারো ইযযত-আব্রুর উপর কলংক আরোপ করা হতো না। কারো দোষত্রুটি সমালোচিত হতো না। সভার সদস্যদের মধ্যে সংযত ভাব ছিল। তাক্ওয়া বজায় থাকতো। পরস্পরে ভদ্রতা ও নম্র আচরণ করতো। বড়দের শ্রদ্ধা করতো, ছোটদের স্নেহ করতো। অভাবগ্রস্তদের প্রাধান্য দিতো। অপরিচিত আগন্তুকদের প্রতি খেয়াল রাখতো।
হযরত হুসাইন (রাযিঃ) বলেন, তারপর আমি (আমার পিতাকে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি তাঁর সভার সদস্যদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করতেন ? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁদের সাথে আনন্দচিত্তে মিলিত হতেন। তিনি নম্র ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ও দুর্বিনীত ছিলেন না। তিনি হাট-বাজারে হৈহুল্লোড় করতেন না। অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করতেন না। কাউকে দোষারোপ করতেন না। কারো অহেতুক প্রশংসাও করতেন না। অপছন্দনীয় জিনিস থেকে তিনি দূরে থাকতেন এবং এ ব্যাপারে মানুষ তাঁর সম্পর্কে নিরাশ হতো। তিনি সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্যও করতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি নিজকে দূরে রেখেছিলেন। এক. ঝগড়া-বিবাদ থেকে, দুই. বেশী কথা বলা থেকে, তিন. অর্থহীন কাজ থেকে। তিনটি বিষয় থেকে তিনি অন্য মানুষকে রক্ষা করেছিলেন। এক. কারো কুৎসা রটনা করতেন না। দুই. কাউকে লজ্জা দিতেন না। তিন. কারো দোষ অন্বেষণ করতেন না। যে কথা বললে সাওয়াবের আশা করা যেতো, তিনি তাই বলতেন। তিনি যখন কথা বলতেন, তখন সভাসদগণ তাঁদের গর্দান এমনভাবে ঝুঁকিয়ে রাখতেন যেনো তাঁদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তিনি যখন কথা বন্ধ করতেন তখন অন্যরা কথা বলতেন। তাঁর সামনে কেউ কারো কথার প্রতিবাদ করতেন না। যখন কেউ কোনো কথা শুরু করতেন, তখন অন্যরা তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নীরব থাকতেন। তাদের মধ্যে প্রত্যেকের কথাই তাঁর কাছে ততটুকু গুরুত্বের অধিকারী হতো, যতটুকু গুরুত্ব পেতো প্রথম ব্যক্তির কথা। সবাই যে কথা শুনে হাসতো, তিনিও তাতে হাসতেন। সবাই যাতে আশ্চর্য হতো, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন। আগন্তুকের অসংলগ্ন কথাবার্তা ও প্রশ্নাবলি তিনি ধৈর্যসহকারে শ্রবণ করতেন। তাঁর সাহাবীগণ এরূপ লোকদেরকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতেন (যাতে তাদের প্রশ্নাবলি থেকে নতুন বিষয় জানা যায়)। তিনি বলতেন, তোমরা যখন কোনো অভাবগ্রস্তকে তার অভাব দূর করার প্রার্থনা করতে দেখো, তখন তাকে সাহায্য করো। কেউ তাঁর প্রশংসা করুক, তিনি তা পছন্দ করতেন না। তবে কেউ কৃতজ্ঞতা বশত কিছু বললে তা ছিল স্বতন্ত্র। তিনি কারো কথার প্রতিবাদ করতেন না। অবশ্য সে যদি সীমা অতিক্রম করে যেতো, তবে তার কথার প্রতিবাদ করতেন। হয়তো তাকে নিষেধ করতেন কিংবা সেখান থেকে তিনি উঠে দাঁড়াতেন।
[হযরত হাসান (রাযিঃ) বলেন] এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর চুপ থাকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চুপ থাকা ছিল চারটি কারণে। এক. সহনশীলতার কারণে দুই. সাবধানতার দরুন, তিন. আন্দাজ করার উদ্দেশ্যে ও চার. চিন্তা-ভাবনা করার জন্য। তাঁর আন্দাজ করা ছিল অবস্থার উপর পূর্ণ চিন্তা-ভাবনা করা এবং মানুষের আলাপ-আলোচনা শ্রবণ করা। আর তিনি চিন্তা-ভাবনা করতেন সেসব বিষয়ে, যা অবশিষ্ট থাকে এবং বিলীন হয় না। আর সহনশীলতা তাঁর ধৈর্যের মধ্যেই একত্র করা হয়েছিল। অর্থাৎ কোনো বিষয় তাঁকে ক্রুদ্ধও করতে পারতো না এবং অস্থিরও করতে পারতো না। আর সাবধানতা তাঁর জন্য চারটি জিনিসের মধ্যে একত্র করা হয়েছে। (আর তা হচ্ছে) তিনি উত্তম বস্তুটি গ্রহণ করতেন, যাতে মানুষ তাঁকে গ্রহণ করে এবং তিনি মন্দ বস্তু পরিত্যাগ করতেন, যাতে মানুষ তা থেকে বিরত থাকে। এবং যে জিনিসে তাঁর উম্মতের সংশোধন হতো, তিনি তার পক্ষে জোরালো মত প্রকাশ করতেন আর যাতে তাদের কল্যাণ হতো, তিনি সে বিষয়ে সক্রিয় থাকতেন। এভাবে তিনি তাঁর উম্মতের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের কল্যাণকে সমন্বিত করেছিলেন।
أبواب الكتاب
فَأَمَّا حُسْنُ خُلُقِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
17 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَبَّاسِ بْنِ أَيُّوبَ، نَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْهَبَّارِيُّ، مِنْ كِتَابِهِ، وَحَدَّثَنَا ابْنُ جَمِيلٍ، نَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، قَالَا: حَدَّثَنَا جُمَيْعُ بْنُ عُمَرَ الْعِجْلِيُّ، حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ، مِنْ وَلَدِ أَبِي هَالَةَ زَوْجِ خَدِيجَةَ، عَنِ ابْنٍ لِأَبِي هَالَةَ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلَيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَلَيْهِمَا السَّلَامُ، قَالَ: " سَأَلْتُ أَبِي عَنْ دُخُولِ النَّبِيِّ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: كَانَ دُخُولُهُ لِنَفْسِهِ، مَأْذُونًا لَهُ فِي ذَلِكَ، وَكَانَ إِذَا أَتَى إِلَى مَنْزِلِهِ جَزَّأَ دُخُولَهُ ثَلَاثَةَ أَجْزَاءٍ: جُزْءٌ لِلَّهِ، وَجُزْءٌ لِأَهْلِهِ، وَجُزْءٌ لِنَفْسِهِ، ثُمَّ يَجْعَلُ جُزْأَهُ بَيْنَ النَّاسِ، فَيَرُدُّ ذَلِكَ عَلَى الْعَامَّةِ بِالْخَاصَّةِ، وَلَا يَدَّخِرُ عَنْهُمْ شَيْئًا، فَكَانَ مِنْ سِيرَتِهِ فِي جُزْءِ الْأُمَّةِ إِيثَارُ أَهْلِ الْفَضْلِ بِإِذْنِهِ وَقِسْمَتِهِ، عَلَى قَدْرِ فَضْلِهِمْ فِي الدِّينِ، مِنْهُمْ ذُو الْحَاجَةِ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَاجَتَيْنِ، وَمِنْهُمْ ذُو الْحَوَائِجِ، فَيَتَشَاغَلُ بِهِمْ، وَيَشْغَلُهُمْ فِيمَا يُصْلِحُهُمْ وَالْأَمَةَ مِنْ مَسْأَلَتِهِ عَنْهُمْ، وَإِخْبَارِهِمْ بِالَّذِي يَنْبَغِي لَهُمْ، وَيَقُولُ: لِيُبَلِّغُ الشَّاهِدُ مِنْكُمُ الْغَائِبَ، وَأَبْلِغُونِي حَاجَةَ مَنْ لَا يَسْتَطِيعُ إِبْلَاغِي حَاجَتَهُ، فَإِنَّهُ مَنْ أَبْلَغَ سُلْطَانًا حَاجَةَ مَنْ لَا يَسْتَطِيعُ إِبْلَاغَهَا ثَبَّتَ اللَّهُ قَدَمَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، لَا يُذْكَرُ عِنْدَهُ إِلَّا ذَلِكَ، وَلَا يُقْبَلُ مِنْ أَحَدٍ غَيْرُهُ. قَالَ فِي حَدِيثِ سُفْيَانَ بْنِ وَكِيعٍ: يَدْخُلُونَ رُوَّادًا وَلَا يَتَفَرَّقُونَ إِلَّا عَنْ ذَوَاقٍ، وَيَخْرُجُونَ أَدَلَّةً - يَعْنِي فُقَهَاءَ. قُلْتُ: فَأَخْبِرْنِي عَنُ مَخْرَجِهِ كَيْفَ كَانَ يَصْنَعُ فِيهِ؟ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْزِنُ لِسَانَهُ إِلَّا مِمَّا يَعْنِيهِمْ وَيُؤَلِّفُهُمْ، وَلَا يُفَرِّقُهُمْ، يُكْرِمُ كَرِيمَ كُلِّ قَوْمٍ، وَيُوَلِّيهِ عَلَيْهِمْ، وَيُحَذِّرُ النَّاسَ وَيَحْتَرِسُ عَنْهُمْ، مِنْ غَيْرِ أَنْ يُطْوَيَ عَنْ أَحَدٍ بِشْرَهُ وَخُلُقَهُ، وَيَتَفَقَّدُ أَصْحَابَهُ، وَيَسْأَلُ النَّاسَ عَمَّا فِي النَّاسِ، وَيُحَسِّنُ الْحَسَنَ وَيُصَوِّبُهُ، وَيُقَبِّحُ الْقَبِيحَ وَيُوَهِّنُهُ، مُعْتَدِلُ الْأَمْرِ غَيْرُ مُخْتَلِفٍ، لَا يَغْفُلُ مَخَافَةَ أَنْ يَغْفُلُوا، أَوْ يَمَلُّوا، لِكُلِّ حَالٍ عِنْدَهُ عَتَادٌ، لَا يُقَصِّرُ عَنِ الْحَقِّ، وَلَا يُجَاوِزَهُ إِلَى غَيْرِهِ، الَّذِينَ يَلُونَهُ مِنَ النَّاسِ خِيَارُهُمْ، وَأَفْضَلُهُمْ عِنْدَهُ أَعَمُّهُمْ نَصِيحَةً وَأَعْظَمُهُمْ عِنْدَهُ مَنْزِلَةً: أَحْسَنُهُمْ مُوَاسَاةً وَمُؤَازَرَةً. وَسَأَلْتُهُ عَنْ مَجْلِسِهِ؟ فَقَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَجْلِسُ وَلَا يَقُومُ إِلَّا ذَكَرَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ، وَلَا يُوَطِّنُ الْأَمَاكِنَ، وَيَنْهَى عَنْ إِيطَانِهَا، وَإِذَا جَلَسَ إِلَى قَوْمٍ جَلَسَ حَيْثُ يَنْتَهِي بِهِ الْمَجْلِسُ، وَيَأْمُرُ بِذَلِكَ، وَيُعْطَى كُلَّ جُلَسَائِهِ بِنَصِيبِهِ، لَا يَحْسِبُ أَحَدٌ مِنْ جُلَسَائِهِ أَنَّ أَحَدًا أَكْرَمُ عَلَيْهِ مِنْهُ مَنْ جَالَسَهُ أَوْ قَاوَمَهُ لِحَاجَةٍ، صَابَرَهُ حَتَّى يَكُونَ هُوَ الْمُنْصَرِفُ، وَمَنْ سَأَلَهُ حَاجَةً لَمْ يَنْصَرِفْ إِلَّا بِهَا أَوْ بِمَيْسُورٍ مِنَ الْقَوْلِ قَدْ وَسِعَ النَّاسَ مِنْهُ خُلُقَهُ فَصَارَ لَهُمْ أَبًا، وَصَارُوا عِنْدَهُ فِي الْحَقِّ سَوَاءٌ مَجْلِسُهُ مَجْلِسُ حِلْمٍ، وَحَيَاءٍ، وَصِدْقٍ، وَأَمَانَةٍ لَا تُرْفَعُ فِيهِ الْأَصْوَاتُ، وَلَا تُؤْبَنُ فِيهِ الْحَرُمُ، وَلَا تُنْثَى فَلَتَاتُهُ مُعْتَدِلِينَ يَتَوَاصَلُونَ فِيهِ بِالتَّقْوَى، مُتَوَاضِعِينَ، يُوَقِّرُونَ فِيهِ الْكَبِيرَ، وَيَرْحَمُونَ فِيهِ الصَّغِيرَ وَيُؤْثِرُونَ ذَا الْحَاجَةِ، وَيَحْفَظُونَ الْغَرِيبَ. قُلْتُ: كَيْفَ كَانَتْ سِيرَتُهُ فِي جُلَسَائِهِ؟ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَائِمُ الْبِشْرِ، سَهْلُ الْخُلُقِ، لَيِّنُ الْجَانِبِ، لَيْسَ بِفَظٍّ، وَلَا غَلِيظٍ وَلَا صَخَّابٍ فِي الْأَسْوَاقِ، وَلَا فَاحِشٍ وَلَا عَيَّابٍ، وَلَا مَدَّاحٍ يَتَغَافَلُ عَمَّا لَا يَشْتَهِي، وَيُؤْيَسُ مِنْهُ، وَلَا يُجِيبُ فِيهِ قَدْ تَرَكَ نَفْسَهُ مِنْ ثَلَاثٍ: الْمِرَاءِ، وَالْإِكْثَارِ، وَمَالَا يُعْنيِهِ وَتَرَكَ النَّاسَ مِنْ ثَلَاثٍ: كَانَ لَا يَذُمُّ أَحَدًا، وَلَا يُعَيِّرُهُ، وَلَا يَطْلُبُ عَوْرَاتِهِ، وَلَا يَتَكَلَّمُ إِلَّا فِيمَا رَجَا ثَوَابَهُ إِذَا تَكَلَّمَ أَطْرَقَ جُلَسَاؤُهُ، كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِهِمُ الطَّيْرُ، وَإِذَا سَكَتَ تَكَلَّمُوا، وَلَا يَتَنَازَعُونَ عِنْدَهُ الْحَدِيثَ مَنْ تَكَلَّمَ أَنْصَتُوا لَهُ، حَتَّى يَفْرُغَ حَدِيثُهُمْ عِنْدَهُ حَدِيثُ أَوَّلِهِمْ، يَضْحَكُ مِمَّا يَضْحَكُونَ، وَيَتَعَجَّبُ مِمَّا يَتَعَجَّبُونَ وَيَصْبِرُ لِلْغَرِيبِ عَلَى الْجَفْوَةِ فِي مَنْطِقِهِ، وَمَسْأَلَتِهِ حَتَّى إِنْ كَانَ أَصْحَابُهُ لَيَسْتَجْلِبُونَهُمْ، فَيَقُولُ: إِذَا رَأَيْتُم طَالِبَ الْحَاجَةِ يَطْلُبُهَا فَارْفِدُوهُ، وَلَا يَقْبَلُ الثَّنَاءَ إِلَّا مِنْ مُكَافٍ، وَلَا يَقْطَعُ عَلَى أَحَدٍ حَدِيثَهُ، حَتَّى يَجُوزَ فَيَقْطَعَهُ بِنَهْي، أَوْ قِيَامٍ. فَسَأَلْتُ: كَيْفَ كَانَ سُكُوتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: كَانَ سُكُوتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى أَرْبَعٍ: عَلَى الْحِلْمِ، وَالْحَذَرِ، وَالتَّقْدِيرِ، وَالتَّفْكِيرِ، فَأَمَّا تَقْدِيرُهُ فَفِي تَسْوِيَةِ النَّظَرِ، وَالِاسْتِمَاعِ مِنَ النَّاسِ، وَأَمَّا تَفْكِيرُهُ فَفِيمَا يَبْقَى، وَلَا يَفْنَى وَجُمِعَ لَهُ الْحِلْمَ فِي الصَّبْرِ، فَكَانَ لَا يُغْضِبُهُ شَيْءٌ، وَلَا يَسْتَفِزُّهُ وَجُمِعَ لَهُ الْحَذَرُ فِي أَرْبَعٍ: أَخْذِهِ بِالْحَسَنِ لِيُقْتَدَى بِهِ، وَتَرْكِهِ الْقَبِيحَ لِيُنْتَهَى عَنْهُ، وَاجْتِهَادِهِ الرَّأْيَ فِيمَا أَصْلَحَ أُمَّتَهُ، وَالْقِيَامِ فِيمَا هُوَ خَيْرٌ لَهُمْ، جَمَعَ لَهُمْ خَيْرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ "