রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৫
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায়: ১
পরিচ্ছেদঃ সমস্ত কাজ ও কথায় এবং প্রকাশ্য ও গুপ্ত যাবতীয় অবস্থায় ইখলাস ও সহীহ নিয়তের গুরুত্ব।
পরিচ্ছেদঃ সমস্ত কাজ ও কথায় এবং প্রকাশ্য ও গুপ্ত যাবতীয় অবস্থায় ইখলাস ও সহীহ নিয়তের গুরুত্ব।
৫। পিতার দান পুত্রের হাতে পড়লেও ছওয়াব নষ্ট হয় না:
হযরত আবু ইয়াযীদ মা'ন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাস রাযি. থেকে বর্ণিত। প্রকাশ থাকে যে, হযরত মা'ন, তার পিতা ইয়াযীদ এবং দাদা আখনাস তিনজনই প্রসিদ্ধ সাহাবী ছিলেন। হযরত মা'ন রাযি. বলেন, একদা আমার পিতা ইয়াযীদ সদকা করার জন্য কিছু দীনার বের করলেন এবং তা মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে রাখলেন। তারপর আমি মসজিদে আসলাম এবং (সেই ব্যক্তির কাছ থেকে) সেগুলো গ্রহণ করলাম। তারপর তা নিয়ে আমি বাড়িতে পিতার কাছে আসলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তো তোমাকে দেওয়ার ইচ্ছা করিনি। অগত্যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার বিরুদ্ধে নালিশ করলাম। তিনি বললেন, হে ইয়াযীদ, তুমি যা নিয়ত করেছ তা পাবে এবং হে মা'ন, তুমি যা গ্রহণ করেছ তা তোমার - বুখারী। (বুখারী হাদীস নং ১৪২২)
হযরত আবু ইয়াযীদ মা'ন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাস রাযি. থেকে বর্ণিত। প্রকাশ থাকে যে, হযরত মা'ন, তার পিতা ইয়াযীদ এবং দাদা আখনাস তিনজনই প্রসিদ্ধ সাহাবী ছিলেন। হযরত মা'ন রাযি. বলেন, একদা আমার পিতা ইয়াযীদ সদকা করার জন্য কিছু দীনার বের করলেন এবং তা মসজিদে এক ব্যক্তির কাছে রাখলেন। তারপর আমি মসজিদে আসলাম এবং (সেই ব্যক্তির কাছ থেকে) সেগুলো গ্রহণ করলাম। তারপর তা নিয়ে আমি বাড়িতে পিতার কাছে আসলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তো তোমাকে দেওয়ার ইচ্ছা করিনি। অগত্যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার বিরুদ্ধে নালিশ করলাম। তিনি বললেন, হে ইয়াযীদ, তুমি যা নিয়ত করেছ তা পাবে এবং হে মা'ন, তুমি যা গ্রহণ করেছ তা তোমার - বুখারী। (বুখারী হাদীস নং ১৪২২)
مقدمة الامام النووي
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
بَابُ الْإِخْلَاصِ وَإِحْضَارِ النَّيَّةِ فِي جَمِيعِ الْأَعْمَالِ وَ الْأَقْوَالِ وَالْأَحْوَالِ الْبَارِزَةِ وَالْخَفِيَّةِ
بَابُ الْإِخْلَاصِ وَإِحْضَارِ النَّيَّةِ فِي جَمِيعِ الْأَعْمَالِ وَ الْأَقْوَالِ وَالْأَحْوَالِ الْبَارِزَةِ وَالْخَفِيَّةِ
5 - وعن أبي يَزيدَ مَعْنِ بنِ يَزيدَ بنِ الأخنسِ - رضي الله عنهم - وهو وأبوه وَجَدُّه صحابيُّون، قَالَ: كَانَ أبي يَزيدُ أخْرَجَ دَنَانِيرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا، فَوَضعَهَا عِنْدَ رَجُلٍ في الْمَسْجِدِ، فَجِئْتُ فأَخذْتُها فَأَتَيْتُهُ بِهَا. فقالَ: واللهِ، مَا إيَّاكَ أرَدْتُ، فَخَاصَمْتُهُ إِلى رسولِ اللهِ - صلى الله عليه وسلم - فقَالَ: «لكَ مَا نَوَيْتَ يَا يزيدُ، ولَكَ ما أخَذْتَ يَا مَعْنُ». رواهُ البخاريُّ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
বাহ্যত বোঝা যায় হযরত ইয়াযীদ ইবনুল আখনাস রাযি.-এর এ সদাকা ছিল নফল সাদাকা অর্থাৎ সাধারণ দান-খয়রাত, যা নিজ পিতা, পুত্রসহ যে-কোনও আত্মীয়- স্বজনকে দেওয়া যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার নিয়ত পুত্রকে দেওয়ার ছিল না, অন্য কোনও গরীব ব্যক্তিকে দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল। যখন দেখতে পেলেন তার সে দান নিজ পুত্রের হাতে পৌঁছে গেছে, তখন সন্দেহ জাগল, বুঝি বা এ দান সহীহ হয়নি। এজন্যই তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুত্র যেহেতু গরীব ছিলেন আর গরীবকে দেওয়াই তার উদ্দেশ্য ছিল, সে হিসেবে পুত্রের মনে হয়েছিল তার তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এভাবে পিতা-পুত্রের মধ্যে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। শেষে বিষয়টা যখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত গড়াল, তিনি দিলেন যে, সে সদাকা কার্যকর হয়ে গেছে এবং পুত্রের পক্ষে তা নেওয়া হালাল হয়েছে। পুত্রের হাতে পৌঁছার কারণে পিতা ইয়াযীদের সদাকা বাতিল হয়ে যায়নি। পুত্রকে দেওয়ার নিয়ত না থাকলেও যেহেতু কোনও গরীবকে দেওয়ার নিয়ত ছিল আর গরীবের হাতেই তা পৌঁছেছে, সেহেতু সে তার নিয়ত অনুযায়ী সদাকার ছওয়াব ঠিকই পেয়ে যাবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
(ক) এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল যে, একজনকে দান-খয়রাত করার নিয়ত করার পর অন্য কাউকে দিয়ে ফেললে তাতে দানের ছওয়াব নষ্ট হয় না।
(খ) পিতা-পুত্রের মধ্যে কোনও বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিলে এবং নিজেরা মীমাংসা করতে সক্ষম না হলে অন্য কোনও গণ্যমান্য লোক দ্বারা মীমাংসা করিয়ে নেওয়া উচিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
(ক) এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল যে, একজনকে দান-খয়রাত করার নিয়ত করার পর অন্য কাউকে দিয়ে ফেললে তাতে দানের ছওয়াব নষ্ট হয় না।
(খ) পিতা-পুত্রের মধ্যে কোনও বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিলে এবং নিজেরা মীমাংসা করতে সক্ষম না হলে অন্য কোনও গণ্যমান্য লোক দ্বারা মীমাংসা করিয়ে নেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)