রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
ভূমিকা অধ্যায়
হাদীস নং: ৫২২
ভূমিকা অধ্যায়
অধ্যায় : ৫৭ অল্পেতুষ্টি, অন্যের কাছে চাওয়া বা আশা করা হতে নিজেকে রক্ষা করা, জীবনযাত্রায় মধ্যপন্থা ও মিতব্যয়ের প্রতি উৎসাহদান এবং অপ্রয়োজনে মানুষের কাছে চাওয়ার নিন্দা
দোজাহানে সফলতা লাভের উপায়
হাদীছ নং: ৫২২
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর্ ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি সফল হয়েছে, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তার কাছে প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা আছে এবং আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন তাতে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছেন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম : ১০৫৪; মুসনাদে আহমাদ: ৬৫৭২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর : ৪৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ৭৮৬৮; শু'আবুল ঈমান: ৯৮৬২; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ: ৪০৪৩)
হাদীছ নং: ৫২২
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর্ ইবনুল আস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি সফল হয়েছে, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তার কাছে প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা আছে এবং আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন তাতে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছেন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম : ১০৫৪; মুসনাদে আহমাদ: ৬৫৭২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর : ৪৪; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা: ৭৮৬৮; শু'আবুল ঈমান: ৯৮৬২; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ: ৪০৪৩)
مقدمة الامام النووي
57 - باب القناعة والعَفاف والاقتصاد في المعيشة والإنفاق وذم السؤال من غير ضرورة
522 - وعن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «قَدْ أفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ، وَرُزِقَ كَفَافًا، وقَنَّعَهُ اللهُ بِمَا آتَاهُ». رواه مسلم. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়কে সফলতার উৎস বলেছেন। তার মধ্যে প্রথমটি হল ইসলামগ্রহণ। তিনটির মধ্যে এটিই আসল। কেননা যে-কোনও নেক আমল আল্লাহ তা'আলার কাছে কবুল হওয়ার জন্য ইসলাম ও ঈমান শর্ত। এখানে ইসলাম বলতে কেবল মৌখিক আনুগত্যস্বীকারকে বোঝানো হয়নি; বরং আন্তরিক বিশ্বাসের সঙ্গে গোটা দীন ও শরী'আত মেনে নেওয়াকে বোঝানো উদ্দেশ্য।
সফলতা লাভের দ্বিতীয় ভিত্তি হল প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা। হাদীছে এর জন্য শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে كَفَافا (প্রয়োজন পরিমাণ)। অর্থাৎ এমন কমও নয় যে, মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। আবার এমন বেশিও নয়, যা অহংকার ও ঔদ্ধত্য সৃষ্টি করে। বরং মাঝামাঝি পরিমাণ, যা দ্বারা ক্ষুধা ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মিটে যায়। এ পরিমাণ জীবিকাই নিরাপদ। কেননা একদিকে এর দ্বারা জীবন রক্ষা হয় এবং অন্যের কাছে হাত পাতার লাঞ্ছনা থেকে ইজ্জতের হেফাজত হয়, অপরদিকে ঐশ্বর্যের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের পেরেশানি থেকে বাঁচা যায় এবং লোভ-লালসা ও অহংকার-অহমিকার মতো নিন্দনীয় চরিত্রের শিকার হওয়া থেকেও আত্মরক্ষা হয়।
তৃতীয়ত বলা হয়েছে- و قَنَّعَه اللهُ بما آتاه (আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন তাতে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছেন)। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন সে বিশ্বাস রাখে যে, এটাই তার তাকদীরে ছিল। তাই সে এতে খুশি থাকে। সে তাকে কম মনে করে না; বরং আল্লাহর দান হিসেবে মহা নি'আমত গণ্য করে। তাই বেশির জন্য লালায়িত হয় না। ফলে যার আরও বেশি আছে তাকে হিংসা করে না।
বাক্যটিতে দু'টি কথা। এক তো যার যা আছে তা আল্লাহ তা'আলারই দান, কেবলই চেষ্টার ফল নয়। আল্লাহ তা'আলা দিয়েছেন বলেই তার তা আছে। আল্লাহ তা'আলা না দিলে নিজ চেষ্টায় তা অর্জিত হতো না। তাই অল্প-বিস্তর যাই থাকুক, সেজন্য আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা জরুরি। দ্বিতীয় কথা হল, আল্লাহ তা'আলার দানে সন্তুষ্ট থাকতে পারাটাও আল্লাহ তা'আলার এক নি'আমত। আল্লাহ তা'আলা যাকে সন্তুষ্ট থাকার তাওফীক না দেন, সে কোনওকিছুতেই সন্তুষ্ট হতে পারে না। তাই আল্লাহর দেওয়া নি'আমতে সন্তুষ্টিলাভের জন্য আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আ করা উচিত। এক হাদীছে দু'আ শেখানো হয়েছে-
اللهُمَّ اهْدِنِي فِيْمَنْ هَدَيْتَ ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَرَضنِي بِمَا قَضَيْتَ
হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন, আমাকেও তাদের সঙ্গে হিদায়াত দান করুন। আপনি আমাকে যা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন। এবং আমার জন্য যা ফয়সালা করেছেন, তাতে আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন।(আবু আব্দুল্লাহ মারওয়াযী, মুখতাসারু কিয়ামিল লায়ল, ১ খণ্ড, ৩২১ পৃষ্ঠা।)
বস্তুত কানা'আত ও পরিতুষ্টি অনেক বড় গুণ। দুনিয়ায় সুখী হওয়ার চাবিকাঠি। নিজের যা আছে তাতে অতৃপ্ত ব্যক্তি কোনওদিন সুখী হতে পারে না। সে হীনম্মন্যতায় ভোগে। সর্বদা ঈর্ষার আগুনে জ্বলতে থাকে। পরিণামে দুনিয়া ও আখিরাত সব বরবাদ হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলাম অতি মূল্যবান সম্পদ। এর মূল্যায়ন করা ও এর জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা অবশ্যকর্তব্য।
খ. কারও প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ থাকা তার জন্য আল্লাহর রহমত। এর মধ্যেই ঈমান-আমলের নিরাপত্তা।
গ. অর্থ-সম্পদ আল্লাহ তা'আলারই দান। তাই এর কোনও পরিমাণকেই তুচ্ছ মনে করতে নেই।
ঘ. আল্লাহ তা'আলা যাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকা জরুরি। এটা সুখ ও সাফল্যের চাবিকাঠি।
সফলতা লাভের দ্বিতীয় ভিত্তি হল প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকা। হাদীছে এর জন্য শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে كَفَافا (প্রয়োজন পরিমাণ)। অর্থাৎ এমন কমও নয় যে, মানুষের কাছে হাত পাততে হয়। আবার এমন বেশিও নয়, যা অহংকার ও ঔদ্ধত্য সৃষ্টি করে। বরং মাঝামাঝি পরিমাণ, যা দ্বারা ক্ষুধা ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মিটে যায়। এ পরিমাণ জীবিকাই নিরাপদ। কেননা একদিকে এর দ্বারা জীবন রক্ষা হয় এবং অন্যের কাছে হাত পাতার লাঞ্ছনা থেকে ইজ্জতের হেফাজত হয়, অপরদিকে ঐশ্বর্যের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের পেরেশানি থেকে বাঁচা যায় এবং লোভ-লালসা ও অহংকার-অহমিকার মতো নিন্দনীয় চরিত্রের শিকার হওয়া থেকেও আত্মরক্ষা হয়।
তৃতীয়ত বলা হয়েছে- و قَنَّعَه اللهُ بما آتاه (আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন তাতে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছেন)। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা তাকে যা দিয়েছেন সে বিশ্বাস রাখে যে, এটাই তার তাকদীরে ছিল। তাই সে এতে খুশি থাকে। সে তাকে কম মনে করে না; বরং আল্লাহর দান হিসেবে মহা নি'আমত গণ্য করে। তাই বেশির জন্য লালায়িত হয় না। ফলে যার আরও বেশি আছে তাকে হিংসা করে না।
বাক্যটিতে দু'টি কথা। এক তো যার যা আছে তা আল্লাহ তা'আলারই দান, কেবলই চেষ্টার ফল নয়। আল্লাহ তা'আলা দিয়েছেন বলেই তার তা আছে। আল্লাহ তা'আলা না দিলে নিজ চেষ্টায় তা অর্জিত হতো না। তাই অল্প-বিস্তর যাই থাকুক, সেজন্য আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা জরুরি। দ্বিতীয় কথা হল, আল্লাহ তা'আলার দানে সন্তুষ্ট থাকতে পারাটাও আল্লাহ তা'আলার এক নি'আমত। আল্লাহ তা'আলা যাকে সন্তুষ্ট থাকার তাওফীক না দেন, সে কোনওকিছুতেই সন্তুষ্ট হতে পারে না। তাই আল্লাহর দেওয়া নি'আমতে সন্তুষ্টিলাভের জন্য আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আ করা উচিত। এক হাদীছে দু'আ শেখানো হয়েছে-
اللهُمَّ اهْدِنِي فِيْمَنْ هَدَيْتَ ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَرَضنِي بِمَا قَضَيْتَ
হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন, আমাকেও তাদের সঙ্গে হিদায়াত দান করুন। আপনি আমাকে যা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন। এবং আমার জন্য যা ফয়সালা করেছেন, তাতে আমাকে সন্তুষ্ট রাখুন।(আবু আব্দুল্লাহ মারওয়াযী, মুখতাসারু কিয়ামিল লায়ল, ১ খণ্ড, ৩২১ পৃষ্ঠা।)
বস্তুত কানা'আত ও পরিতুষ্টি অনেক বড় গুণ। দুনিয়ায় সুখী হওয়ার চাবিকাঠি। নিজের যা আছে তাতে অতৃপ্ত ব্যক্তি কোনওদিন সুখী হতে পারে না। সে হীনম্মন্যতায় ভোগে। সর্বদা ঈর্ষার আগুনে জ্বলতে থাকে। পরিণামে দুনিয়া ও আখিরাত সব বরবাদ হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ইসলাম অতি মূল্যবান সম্পদ। এর মূল্যায়ন করা ও এর জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা অবশ্যকর্তব্য।
খ. কারও প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ থাকা তার জন্য আল্লাহর রহমত। এর মধ্যেই ঈমান-আমলের নিরাপত্তা।
গ. অর্থ-সম্পদ আল্লাহ তা'আলারই দান। তাই এর কোনও পরিমাণকেই তুচ্ছ মনে করতে নেই।
ঘ. আল্লাহ তা'আলা যাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকা জরুরি। এটা সুখ ও সাফল্যের চাবিকাঠি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)