রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

২. বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬৮৪
বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
গোপন বিষয়ের গোপনীয়তা রক্ষা করা

অন্যের গোপনীয় বিষয় আমানতস্বরূপ। তা প্রকাশ করলে আমানতের খেয়ানত হয়। খেয়ানত করা জায়েয নয়। তাই অন্যের গোপনীয় বিষয় প্রকাশ করাও জায়েয নয়। এ ক্ষেত্রে আপন-পর, শত্রু-মিত্রের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। স্বামী-স্ত্রীরও কর্তব্য পরস্পরের গোপন বিষয় গোপন রাখা। এমনিভাবে শত্রুরও কোনও গোপন বিষয় জানতে পারলে তা প্রকাশ করে দেওয়া বৈধ নয়।
অন্যের গোপনীয় বিষয় যেভাবে জানতে পারা যাক, তা গোপন রাখা কর্তব্য। গোপনীয় বিষয়টি যার, সে তাকে সরাসরি তা বলুক বা অন্য কোনও উপায়ে জানতে পারুক। যেমন অন্যের কোনও গোপন বিষয় কারও চোখে পড়ে গেল। বিষয়টি যার, সে কিছুতেই চায় না অন্য কেউ তা জানতে পারুক। জানলে হয়তো তার মান-সম্মান নষ্ট হবে বা অন্য কোনও ক্ষতি হবে। এ অবস্থায় যার চোখে তা পড়ল তার জন্য তা প্রকাশ করা কিছুতেই জায়েয হবে না। তা প্রকাশ করা যেমন আমানতের খেয়ানত, তেমনি এক রকম চোগলখোরিও বটে। চোগলখোরি করাও মহাপাপ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ
‘চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
(সহীহ বুখারী: ৬০৫৬; সহীহ মুসলিম: ১০৫; সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৭১; জামে' তিরমিযী: ২০২৬; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ১১৫৫০; সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৭৬৫; মুসনাদে আবূ দাউদ তয়ালিসী ৪২২; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৬৫৮৫; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৩০২১)
মজলিসে যেসব গোপন আলোচনা হয়, তাও সকলের জন্য আমানত। কারও জন্যই তা প্রকাশ করা জায়েয নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- إِنَّمَا يُجَالِسُ الْمُتَجَالِسَوْنَ بِأَمَانَةِ اللَّهِ، فَلَا يَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يُفْشِيَ عَنْ صَاحِبِهِ مَا يَكْرَهُ 'বৈঠকে অংশগ্রহণকারীগণ আল্লাহ তা'আলার আমানতের সঙ্গেই অংশগ্রহণ করে। সুতরাং তাদের কারও জন্যই অন্যে যা অপসন্দ করে তা প্রকাশ করা বৈধ নয়।(জামে' মা'মার ইবন রাশিদ: ১৯৭৯১)
অবশ্য মজলিসে যদি অন্যের কোনও অধিকার খর্ব করা সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং সে সম্পর্কে কোনও পরিকল্পনাও নেওয়া হয়, তবে তা প্রকাশ করাই জরুরি। সুতরাং এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে- الْمَجَالِسُ بِالْأَمَانَةِ إِلَّا ثَلَاثَةَ مَجَالِسَ : سَفْكُ دَمٍ حَرَامٍ، أَوْ فَرْجٌ حَرَامٌ، أَوْ اقْتَطَاعُ مَالٍ بِغَيْرِ حَقٌّ
‘বৈঠকের কথাবার্তা আমানতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে তিন রকম বৈঠক আলাদা। যে বৈঠকে অন্যায় রক্তপাতের আলোচনা হয়, যে বৈঠকে সতীত্ব হরণের আলোচনা হয় এবং যে মজলিসে অন্যায়ভাবে কারও সম্পদ কেড়ে নেওয়ার আলোচনা হয়।(সুনানে আবূ দাউদ : ৪৮৬৯; খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক: ৭০৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ২১১৬২; শু'আবুল ঈমান: ১০৬৭৯)
অন্যের অধিকার খর্ব হয় না এমন কোনও বৈধ বিষয়ে যদি কথা বলা হয় আর যে ব্যক্তি তা বলে সে এদিক-ওদিক লক্ষ করে, যা দ্বারা অনুমান করা যায় যে সে চায় কথাটি গোপন থাকুক, তবে সে কথাও আমানত হয়ে যায়, যা প্রকাশ করা জায়েয নয়। সুতরাং এক হাদীছে ইরশাদ-
إِذَا حَدَّثَ الرَّجُلُ الْحَدِيثَ ثُمَّ الْتَفَتَ فَهِيَ أَمَانَةٌ
‘যখন ব্যক্তি কোনও কথা বলে, তারপর এদিক-ওদিক তাকায়, তখন তা আমানত হয়ে যায়।(জামে' তিরমিযী: ১৯৫৯; সুনানে আবূ দাউদ: ৪৮৬৮; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৫৫৯৮; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ২২১২; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ২৪৫৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ২১১৬১)
কারও গোপন বিষয় তার মৃত্যুর পর প্রকাশ করা জায়েয কি না? উলামায়ে কেরাম এ ক্ষেত্রে বিষয়টিকে কয়েক ভাগে ভাগ করেছেন। যেমন এক ব্যক্তি বিশেষ কোনও নেক আমল করে, যেমন তাহাজ্জুদ পড়া, গোপনে দান-খয়রাত করা ইত্যাদি। সুনাম ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে বা ছাওয়াব কমে যাওয়ার আশঙ্কায় সে তার প্রকাশ পসন্দ করে না। এ ক্ষেত্রে তার মৃত্যুর পর তা প্রকাশ করাতে কোনও দোষ নেই।
আর যে গোপন বিষয় প্রকাশ পেলে মৃত্যুর পরও তার মান-সম্মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তা তার জীবদ্দশায় যেমন প্রকাশ করা জায়েয নয়, তেমনি তার মৃত্যুর পরও জায়েয নয়।
তার কাছে যদি অন্যের কোনও পাওনা থাকে কিংবা অন্যের কাছে তার কোনও পাওনা থাকে, তবে যার তা জানা আছে তার উচিত তার মৃত্যুর পর অবশ্যই তা প্রকাশ করা। এটা জরুরি এ কারণে যে, তা প্রকাশ না করা হলে তার উপর দেনার দায় থেকে যাবে, যে জন্য আখিরাতে সে আটকা পড়ে যাবে। যদি সে নিজেই পাওনাদার হয়, সে ক্ষেত্রে তা প্রকাশ করা না হলে তার ওয়ারিছগণ বঞ্চিত হবে। উভয় ক্ষেত্রে প্রকাশ করা হলে তার দেনা পরিশোধ করা বা পাওনা উসুল করার ব্যবস্থা করা যাবে।
মোটকথা, সাধারণভাবে অন্যের গোপনীয় বিষয় গোপন রাখা শরী'আতের এক গুরুত্বপূর্ণ বিধান। শরী'আতসম্মত কারণ ছাড়া তা প্রকাশ করা কিছুতেই সমীচীন নয়। কুরআন ও হাদীছে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আলোচ্য পরিচ্ছেদটি সে সম্পর্কেই।

‘গোপন বিষয়ের গোপনীয়তা রক্ষা করা’ সম্পর্কিত একটি আয়াত
وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا
অর্থ: আর অঙ্গীকার পূরণ করো। নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে (তোমাদের) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।(সূরা বনী ইসরাঈল (১৭), আয়াত ৩৪)

ব্যাখ্যা
এ আয়াতে অঙ্গীকার রক্ষা করার আদেশ করা হয়েছে। অঙ্গীকার দু'রকম। এক হল আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার, যা কালেমা তায়্যিবার মাধ্যমে আমরা করে থাকি। আমরা যখন সাক্ষ্য দিয়েছি আল্লাহ ছাড়া কোনও মা'বুদ নেই, তখন এর দ্বারা প্রকারান্তরে এই অঙ্গীকারও করে ফেলেছি যে, আমরা তাঁর সকল আদেশ-নিষেধ পরিপূর্ণরূপে মেনে চলব। এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সে অঙ্গীকার রক্ষার হুকুম দিয়েছেন। এছাড়া মানবসৃষ্টির সূচনায় রূহানী জগতেও আমাদের থেকে তাঁকে প্রতিপালকরূপে মেনে চলার অঙ্গীকার নেওয়া হয়েছে। সে অঙ্গীকার রক্ষার বিষয়টিও এ আয়াতের আদেশের অন্তর্ভুক্ত।
আরেক অঙ্গীকার হল মানুষের পারস্পরিক অঙ্গীকার। শরী'আতসম্মতভাবে একজন অন্যজনের সঙ্গে যে অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তা রক্ষা করাও জরুরি। তাও এ আয়াতের হুকুমের মধ্যে এসে গেছে। কাজেই শরী'আতসম্মত কারণ ছাড়া সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করা জায়েয নয়। আখিরাতে উভয় প্রকার অঙ্গীকার সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা জিজ্ঞেস করবেন। যেমন এ আয়াতের শেষ বাক্যে বলা হয়েছে- إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا 'নিশ্চয়ই অঙ্গীকার সম্পর্কে (তোমাদের) জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে'। অর্থাৎ জিজ্ঞেস করা হবে, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার কতটুকু রক্ষা করেছ? এমনিভাবে তোমরা একে অন্যের সঙ্গে যে অঙ্গীকার করেছিলে, তা যথাযথভাবে রক্ষা করেছিলে তো? সুতরাং বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর হক আদায়ের যে অঙ্গীকারে উভয়ে আবদ্ধ হয়ে থাকে, সে সম্পর্কেও আখিরাতে জিজ্ঞেস করা হবে। এমনিভাবে নির্বাচনকালে প্রার্থীগণ যে অঙ্গীকার করে থাকে, নির্বাচিত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রী, এমপি, বিচারপতি প্রভৃতি পদধারীদের থেকে যে শপথ নেওয়া হয় তা কতটুকু রক্ষা করা হয়েছে, সে সম্পর্কেও আখিরাতে জবাব দিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে যে শর্তে নিয়োগদান ও গ্রহণ করা হয়, তাও অঙ্গীকারের মধ্যে পড়ে। চাকরিদাতা ও চাকরিগ্রহীতা উভয়ের সে শর্ত রক্ষা করা জরুরি। বেচাকেনা, ইজারা, বন্ধক, আমানত প্রভৃতি চুক্তির শর্তসমূহও এর অন্তর্ভুক্ত। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে যেসকল চুক্তি হয়, তা যদি মুসলিম ও অমুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যেও হয়, তাও অঙ্গীকারের মর্যাদা রাখে। গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া তা ভঙ্গ করা জায়েয নয়। খাস মজলিসে যেসব কথাবার্তা হয় এবং যা গোপন রাখার ব্যাপারে সকলে দায়বদ্ধ থাকে, এমনিভাবে একজন অন্যজনের সঙ্গে যে গোপন কথাবার্তা বলে, তাও গোপন রাখা জরুরি। এটাও অঙ্গীকার রক্ষার অন্তর্ভুক্ত, যে সম্পর্কে আখিরাতে জবাবদিহিতা রয়েছে।
মোটকথা, অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির বিষয়টি অনেক ব্যাপক। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বিষয়াদি থেকে শুরু করে দ্বিপাক্ষিক যত ক্ষেত্র আছে এবং অন্যের সঙ্গে দায়বদ্ধতার যত বিষয় আছে সবই এর অন্তর্ভুক্ত। সেইসঙ্গে শরী'আতের বিধানাবলি মেনে চলার অঙ্গীকার তো রয়েছেই। এর কোনওটিকেই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। আখিরাতে যেহেতু আল্লাহর সামনে জবাব দিতে হবে বলে এ আয়াতে জানানো হয়েছে, সেহেতু সকল ক্ষেত্রের সকল অঙ্গীকার রক্ষার ব্যাপারে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে।

আয়াতটির শিক্ষা
কোনও অঙ্গীকার ও গোপন কথাকে তুচ্ছ মনে করতে নেই। অন্তরে আখিরাতে জবাবদিহিতার ভয় রেখে ছোট-বড় এবং প্রকাশ্য ও গুপ্ত সকল অঙ্গীকার রক্ষার ব্যাপারে আমাদেরকে যত্নবান থাকতে হবে।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ প্রকাশ না করা
হাদীছ নং: ৬৮৪

হযরত আবু সা'ঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মর্যাদায় সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট লোকদের একজন সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং সেও তার সঙ্গে মিলিত হয়, তারপর সে লোকটি তার গোপনীয় বিষয় মানুষের কাছে প্রকাশ করে।-মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ১৪৩৭; সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৭০; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ১৭৫৫৯; ইবনুস সুন্নী, আমালুল ইয়াওম ওয়াল লায়লা ৬১৪)
كتاب الأدب
بابُ حفظ السِّر
قَالَ الله تَعَالَى: {وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ إنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْؤُولًا} [الإسراء: 34].
684 - وعن أَبي سعيد الخدري - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّ مِنْ أَشَرِّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ القِيَامَةِ الرَّجُلَ يُفْضِي إِلَى الْمَرْأةِ وتُفْضِي إِلَيْهِ، ثُمَّ يَنْشُرُ سِرَّهَا». رواه مسلم. (1)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

বিবাহের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা দুই নারী-পুরুষের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন, অতটা ঘনিষ্ঠতা অন্য কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয় না। অন্যসব ক্ষেত্রে দুই ব্যক্তি যতই কাছাকাছি হোক, একটা আড়াল ও অন্তরাল উভয়ের মধ্যে থাকেই, যা ভেদ করার কোনও সুযোগ তাদের নেই। এক দাম্পত্য সম্পর্কই এমন, যেখানে আল্লাহ তা'আলা দু'জনের মধ্যে কোনও আড়াল রাখেননি। সে নিবিড় ঘনিষ্ঠতা একান্তই তাদের নিজস্ব ভূবন। এখানে যেমন অন্যের কোনও প্রবেশাধিকার নেই, তেমনি তাদেরও সেখানে অন্য কাউকে টেনে আনার সুযোগ নেই। সে সুযোগ নেই কথাবার্তার ভেতর দিয়েও। অর্থাৎ তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠতা ও অন্যসব গোপনীয় বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করে দিয়ে তাকে এ অঙ্গনের সঙ্গে পরিচিত করা কোনওক্রমেই জায়েয নয়। এটা এক রকম বিশ্বাসঘাতকতা। এটা অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত। এটা যেমন স্বামীর জন্য জায়েয নয়, তেমনি জায়েয নয় স্ত্রীর জন্যও। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একে অন্যের কাছে দায়বদ্ধ। বৈবাহিক চুক্তির মাধ্যমেই যেন তারা পরস্পরে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে যায় যে, তাদের মধ্যকার গোপনীয় কোনওকিছুই তারা অন্যের কাছে প্রকাশ করবে না।

তা প্রকাশ করা যেমন অঙ্গীকার ভঙ্গের অন্তর্ভুক্ত, তেমনি তা চরম নির্লজ্জতাও বটে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্বামী-স্ত্রী তাদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতার কথা অন্যের কাছে প্রকাশ করে, কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহ তা'আলার কাছে মর্যাদার দিক থেকে সবচে নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তার মানে তারা নিকৃষ্টদের কাতারভুক্ত হয়ে জাহান্নামে চলে যাবে। কী কঠিন সতর্কবাণী! প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর এ বিষয়ে খুব সতর্ক থাকা দরকার। যত অন্তরঙ্গ বন্ধু বা প্রাণের বান্ধবীই হোক, স্বামী বা স্ত্রী কেউই তাদের কাছে নিজেদের একান্ত বিষয়সমূহ কিছুতেই প্রকাশ করবে না।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার গোপনীয় বিষয়সমূহ অন্যের কাছে প্রকাশ করা কঠিন পাপ। এর থেকে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)