রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৬. সালাম-মুসাফাহার আদব
হাদীস নং: ৮৭৬
সালাম-মুসাফাহার আদব
পরিচ্ছেদ:১১ অনুমতিপ্রার্থীকে 'তুমি কে' জিজ্ঞেস করা হলে 'আমি' বা এরূপ কিছু না বলে সে যে নামে পরিচিত তাই বলে জবাব দেওয়া
পরিচয়দানের ক্ষেত্রে 'আমি' না বলে নিজের নাম বলা
হাদীছ নং: ৮৭৬
হযরত জাবির রাযি. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে দরজায় টোকা দিলাম। তিনি বললেন, কে? বললাম, আমি। তিনি বললেন, আমি, আমি! যেন তিনি এটা অপসন্দ করলেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৬২৫০; সহীহ মুসলিম: ২১৫৫; সুনানে আবূ দাউদ: ৫১৮৭; জামে’ তিরমিযী: ২৭১১; সুনানে ইবন মাজাহ: ৩৭০৯; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৮০৮; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ২২৬৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৭০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৩২৩; ইবনুস সুন্নী, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লা: ৬৬৫)
হাদীছ নং: ৮৭৬
হযরত জাবির রাযি. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে দরজায় টোকা দিলাম। তিনি বললেন, কে? বললাম, আমি। তিনি বললেন, আমি, আমি! যেন তিনি এটা অপসন্দ করলেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৬২৫০; সহীহ মুসলিম: ২১৫৫; সুনানে আবূ দাউদ: ৫১৮৭; জামে’ তিরমিযী: ২৭১১; সুনানে ইবন মাজাহ: ৩৭০৯; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৮০৮; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ২২৬৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৭০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৩২৩; ইবনুস সুন্নী, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লা: ৬৬৫)
كتاب السلام
باب بيان أنَّ السنة إِذَا قيل للمستأذن: من أنت؟ أن يقول: فلان، فيسمي نفسه بما يعرف به من اسم أَوْ كنية وكراهة قوله: «أنا» ونحوها
876 - وعن جابر - رضي الله عنه - قَالَ: أتَيْتُ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - فَدَقَقْتُ البَابَ، فَقَالَ: «مَنْ هَذَا؟» فَقُلتُ: أَنَا، فَقَالَ: «أنَا، أنَا!» كَأنَّهُ كَرِهَهَا (1). متفقٌ عَلَيْهِ. (2)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে লক্ষণীয় যে, হযরত জাবির রাযি. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরজায় টোকা দিয়েছেন। সালাম দেওয়ার কোনও উল্লেখ নেই। এবং না আছে অনুমতি প্রার্থনার উল্লেখ। অনুমতি প্রার্থনার উল্লেখ না থাকার এক কারণ হতে পারে এই যে, ঘরে প্রবেশের কোনও উদ্দেশ্য হযরত জাবির রাযি.-এর ছিল না। তিনি কেবল জানাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি উপস্থিত হয়েছেন। অন্যান্য হাদীছ দ্বারা জানা যায়, বিশেষ একটা কাজে তাঁর আসার কথা ছিল। আবার এমনও হতে পারে যে, টোকা দেওয়াটাই অনুমতি প্রার্থনার বদল। অর্থাৎ মুখে অনুমতি না চেয়ে টোকা দেওয়ার দ্বারাও তা বোঝানো যেতে পারে।
যাহোক হাদীছটিতে যখন টোকা দেওয়ার উল্লেখ আছে, তখন এতটুকু বোঝা গেল যে, কারও বাড়িতে গিয়ে দরজায় টোকা দেওয়া বা করাঘাত করা কিংবা কড়ায় নাড়া দেওয়া জায়েয আছে। তবে করাঘাত বা কড়ায় নাড়া দেওয়াটা অবশ্যই সংযতভাবে হতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যাতে তীব্র শব্দ না হয়। তীব্র শব্দ হলে হয়তো কারও ঘুম ভেঙে যাবে কিংবা অসুস্থ ব্যক্তির বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটবে। তাছাড়া তীব্র শব্দ এমনিতেও কষ্টদায়ক ও বিরক্তিকর। কাউকে বিরক্ত করা বা কষ্ট দেওয়া জায়েয নয়।
হাদীছটিতে দ্বিতীয় লক্ষণীয় বিষয় হল সালামের উল্লেখ না থাকা। কুরআন মাজীদের আয়াত ও হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, কারও ঘরে প্রবেশ ও সাক্ষাতের জন্য সালামের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হয়। তা হযরত জাবির রাযি, কেন সালাম দিলেন না? এর উত্তর হল, তিনি হয়তো সালাম দিয়েছেন কিন্তু হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে সংক্ষেপে। তাই সালামের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এমনও হতে পারে যে, এ ঘটনা সালামের বিধান দেওয়ার আগের, যেমনটা ইমাম দাউদী রহ.-এর মত।
হাদীছটির দ্বিতীয় বিষয় হল পরিচয় জিজ্ঞাসার জবাবে আমি না বলে নাম বলা। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জিজ্ঞেস করলেন ‘কে’ আর হযরত জাবির রাযি. উত্তরে বললেন 'আমি', তখন তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন, আমি আমি! অর্থাৎ তিনি এ উত্তর পসন্দ করেননি। কেননা 'কে' জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্য অনুমতিপ্রার্থী ব্যক্তিটি কে তা জানা। 'আমি' বলার দ্বারা তা জানা যায় না। কেননা একজনের আওয়াজের সঙ্গে আরেকজনের আওয়াজ অনেক সময় মিলে যায়। তাছাড়াও আওয়াজ দ্বারা সবসময় ব্যক্তিকে নিরূপণ করা যায় না। তাই প্রয়োজন হল স্পষ্টভাবে নিজের নাম বলা। এমনকি নাম বলার দ্বারাও যদি পরিচয় পরিষ্কার না হয়, যেমনটা একই নামের একাধিক ব্যক্তি থাকলে হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিশেষণও উল্লেখ করা যেতে পারে, যেমন আমি মাওলানা আব্দুল কারীম, চৌধুরী আব্দুল হামীদ, সাবের চেয়ারম্যান ইত্যাদি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সাক্ষাৎপ্রার্থী প্রয়োজনে দরজায় করাঘাত করতে পারে।
খ. ঘরের ভেতর থেকে সাক্ষাৎপ্রার্থীর পরিচয় জিজ্ঞেস করলে উত্তরে 'আমি' না বলে নিজের নাম বলতে হবে।
গ. কারও কোনও কথা বা আচরণ সঠিক না হলে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে সে বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করা যেতে পারে।
যাহোক হাদীছটিতে যখন টোকা দেওয়ার উল্লেখ আছে, তখন এতটুকু বোঝা গেল যে, কারও বাড়িতে গিয়ে দরজায় টোকা দেওয়া বা করাঘাত করা কিংবা কড়ায় নাড়া দেওয়া জায়েয আছে। তবে করাঘাত বা কড়ায় নাড়া দেওয়াটা অবশ্যই সংযতভাবে হতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যাতে তীব্র শব্দ না হয়। তীব্র শব্দ হলে হয়তো কারও ঘুম ভেঙে যাবে কিংবা অসুস্থ ব্যক্তির বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটবে। তাছাড়া তীব্র শব্দ এমনিতেও কষ্টদায়ক ও বিরক্তিকর। কাউকে বিরক্ত করা বা কষ্ট দেওয়া জায়েয নয়।
হাদীছটিতে দ্বিতীয় লক্ষণীয় বিষয় হল সালামের উল্লেখ না থাকা। কুরআন মাজীদের আয়াত ও হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, কারও ঘরে প্রবেশ ও সাক্ষাতের জন্য সালামের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হয়। তা হযরত জাবির রাযি, কেন সালাম দিলেন না? এর উত্তর হল, তিনি হয়তো সালাম দিয়েছেন কিন্তু হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে সংক্ষেপে। তাই সালামের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এমনও হতে পারে যে, এ ঘটনা সালামের বিধান দেওয়ার আগের, যেমনটা ইমাম দাউদী রহ.-এর মত।
হাদীছটির দ্বিতীয় বিষয় হল পরিচয় জিজ্ঞাসার জবাবে আমি না বলে নাম বলা। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জিজ্ঞেস করলেন ‘কে’ আর হযরত জাবির রাযি. উত্তরে বললেন 'আমি', তখন তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন, আমি আমি! অর্থাৎ তিনি এ উত্তর পসন্দ করেননি। কেননা 'কে' জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্য অনুমতিপ্রার্থী ব্যক্তিটি কে তা জানা। 'আমি' বলার দ্বারা তা জানা যায় না। কেননা একজনের আওয়াজের সঙ্গে আরেকজনের আওয়াজ অনেক সময় মিলে যায়। তাছাড়াও আওয়াজ দ্বারা সবসময় ব্যক্তিকে নিরূপণ করা যায় না। তাই প্রয়োজন হল স্পষ্টভাবে নিজের নাম বলা। এমনকি নাম বলার দ্বারাও যদি পরিচয় পরিষ্কার না হয়, যেমনটা একই নামের একাধিক ব্যক্তি থাকলে হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিশেষণও উল্লেখ করা যেতে পারে, যেমন আমি মাওলানা আব্দুল কারীম, চৌধুরী আব্দুল হামীদ, সাবের চেয়ারম্যান ইত্যাদি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সাক্ষাৎপ্রার্থী প্রয়োজনে দরজায় করাঘাত করতে পারে।
খ. ঘরের ভেতর থেকে সাক্ষাৎপ্রার্থীর পরিচয় জিজ্ঞেস করলে উত্তরে 'আমি' না বলে নিজের নাম বলতে হবে।
গ. কারও কোনও কথা বা আচরণ সঠিক না হলে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে সে বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করা যেতে পারে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)