মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
২. ঈমান ও ইসলামের বর্ণনা
হাদীস নং: ১৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৩১২৭
ঈমান ও ইসলামের বর্ণনা
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদঃ আরব বেদুঈনদের কিছু লোকের প্রতিনিধিত্ব
(১৭) রিব‘য়ী বিন হিরাশ বনী আমির গোত্রের জনৈক সাহাবী (রা)-এর নিকট থেকে বর্ণনা করেন; সে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট সাহ্মাতের অনুমতি প্রার্থনা করলো এবং বললো, আমি প্রবেশ করবো কী? তখন নবী (ﷺ) তাঁর খাদেমকে বললেন, বের হয়ে লোকটিকে বলে দাও।সে অনুমতি প্রার্থনার পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করছে না।তাকে বলে দাও, সে যেন বলে, আস্সালামু আলাইকুম, আমি প্রবেশ করবো কি? বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাকে ঐরূপই বলতে শুনলাম।তখন আমি বললাম, আস্সালামু আলাইকুম, আমি প্রবেশ করবো কি? তখন তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন, অথবা বললেন, আমি প্রবেশ করলাম এবং রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আমাদের কাছে কী নিয়ে আগমন করেছেন? তিনি বললেন, আমি তোমাদের কাছে যা কিছু নিয়ে এসেছি, তা সবই কল্যাণকর।আমি তোমাদের কাছে (বার্তা) নিয়ে এসেছি যে, তোমার একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে।তাঁর কোন শরীক নেই।শু‘বা বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন وحده لا شريك له (তিনি একক এবং তাঁর কোন শরীক নেই) এবং তোমার লাত ও উযযাকে পরিত্যাগ করবে এবং তোমার রাত-দিনে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করবে, বছরে একমাস সিয়াম পালন করবে, বায়তুল্লাহর হজ্জ পালন করবে।তোমাদের ধনীদের নিকট থেকে তাদের সম্পদের কিছু অংশ আদায় করে তোমাদের দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করবে।লোকটি বললো, আরো কোন ইল্ম জানার বাকী আছে কি? তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে কল্যাণকর ইল্ম শিহ্মা দিয়েছেন এবং কিছু ইল্ম এমন আছে যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ অবগত নয়।…..ان الله عنده علم الساعة
“কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট আছে।তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবংতিনি জানেন যা জরায়ুতে আছে।কেউ জানে না সে আগামীকাল কি অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন, স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে।আল্লাহ সর্বজ্ঞ সর্ব বিষয়ে অবহিত। (আল কুরআন)
“কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট আছে।তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবংতিনি জানেন যা জরায়ুতে আছে।কেউ জানে না সে আগামীকাল কি অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন, স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে।আল্লাহ সর্বজ্ঞ সর্ব বিষয়ে অবহিত। (আল কুরআন)
كتاب الإيمان والإسلام
الفصل السادس في وفادة رجال من العرب لم يسموا
(17) وعن ربعي بن حراش عن رجل من بني عامر رضى الله عنه أنه استأذن النبى صلى الله عليه وسلم فقال أألج (1) فقال النبى صلى الله عليه وسلم لخادمه أخرجي اليه فانه لا يحسن الاستئذان فليقل السلام عليكم أأدخل قال فسمعته
يقول ذلك فقلت السلام عليكم أأدخل قال فأذن لي أو قال فدخلت فقلت بم آتينا به قال لم آتكم الا بخير أتيتكم بأن تعبدوا الله وحده لا شريك له قال شعبة وأحسبه قال وحده لا شريك له وأن تدعوا اللات والعزةى وأن تصلوا بالليل والنهار خمس صلوات وأن تصوموا من السنة شهرا وأن تحجوا البيت وأن تأخذوا من مال أغنيائكم فتردوها على فقرائكم قال فقال هل بقى من العلم شئ لا تعلمه قال قد علمني الله عز وجل خيرا وان من العلم ما لا يعلمه الا الله (ان الله عنده علم الساعة وينزل الغيث ويعلم ما في الارحام وما تدري نفس ماذا تكسب غدا وما تدري نفس بأى أرض تموت ان الله عليم خبير)
يقول ذلك فقلت السلام عليكم أأدخل قال فأذن لي أو قال فدخلت فقلت بم آتينا به قال لم آتكم الا بخير أتيتكم بأن تعبدوا الله وحده لا شريك له قال شعبة وأحسبه قال وحده لا شريك له وأن تدعوا اللات والعزةى وأن تصلوا بالليل والنهار خمس صلوات وأن تصوموا من السنة شهرا وأن تحجوا البيت وأن تأخذوا من مال أغنيائكم فتردوها على فقرائكم قال فقال هل بقى من العلم شئ لا تعلمه قال قد علمني الله عز وجل خيرا وان من العلم ما لا يعلمه الا الله (ان الله عنده علم الساعة وينزل الغيث ويعلم ما في الارحام وما تدري نفس ماذا تكسب غدا وما تدري نفس بأى أرض تموت ان الله عليم خبير)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
রিব'ঈ ইবন হিরাশ একজন বিখ্যাত ও উচ্চস্তরের তাবি'ঈ। তাঁর সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তিনি জীবনে কখনও মিথ্যা কথা বলেননি। হিজরী ১০০ সনে তিনি ইন্তিকাল করেন। তিনি এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন যে সাহাবী থেকে, তাঁর নাম তিনি উল্লেখ করেননি। কেবল এতটুকু বলেছেন যে, তিনি আমির গোত্রের এক ব্যক্তি। নাম জানা না থাকায় কোনও অসুবিধা নেই। সমস্ত সাহাবী বিশ্বস্ত। ওই ব্যক্তি একজন সাহাবী ছিলেন, যেমনটা আলোচ্য হাদীছেই স্পষ্ট। কাজেই রিব'ঈ ইবন হিরাশ যখন একজন সাহাবী থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, তখন এটি বিশ্বাসযোগ্য এবং এর শিক্ষাও অনুসরণীয়।
বর্ণনাটির সারকথা হল, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমির গোত্রীয় একজন সাহাবী এসে তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি সালাম না দিয়ে সরাসরি বলেছিলেন- প্রবেশ করব? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদেমকে হুকুম দিলেন, তুমি তার কাছে যাও এবং তাকে অনুমতি চাওয়ার তরিকা শেখাও। তাকে বলবে - قُلِ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، أَأَدْخُلُ (তুমি বলো- আসসালামু আলাইকুম, প্রবেশ করব)? অর্থাৎ প্রথমে সালাম দেবে, তারপর প্রবেশের অনুমতি চাইবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হুকুম বাইর থেকে ওই সাহাবী শুনে ফেললেন। ফলে খাদেমের আর তার কাছে যেতে হল নাঃ তার আগে আগেই সেই সাহাবী বলে উঠলেন- اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ، أَدْخُل (আসসালামু আলাইকুম, প্রবেশ করব)? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং তিনি প্রবেশ করলেন। বোঝা গেল অনুমতি চাওয়ার জন্য আগে সালাম দেওয়া জরুরি। প্রথমে সালাম দিয়ে তারপর প্রবেশের অনুমতি চাইতে হবে। অবশ্য কেবল সালাম দেওয়ার দ্বারাও অনুমতি প্রার্থনা হয়ে যায়, যদি অনুমতিদাতা বুঝতে পারে যে, সালাম দেওয়ার উদ্দেশ্য প্রবেশের অনুমতি চাওয়া। সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে 'প্রবেশ করতে পারি?' বলা দরকার পড়ে না। কিন্তু এর বিপরীতটা চলবে না। অর্থাৎ সালাম না দিয়ে কেবল 'প্রবেশ করতে পারি?' বলাটা যথেষ্ট হবে না।
لَا تَأْذَنُوا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأ بِالسَّلَامِ
'তোমরা তাকে অনুমতি দেবে না, যে প্রথমে সালাম দেবে না।' (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৪৩৩; মুসনাদে আবু ইয়া'লা : ১৮০৯)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার সময় প্রথমে সালাম দিতে হবে।
খ. কেউ কোনও কাজ সঠিকভাবে করতে না পারলে তাকে তা শিখিয়ে দেওয়া উচিত।
গ. শিক্ষাদানের কাজটি খাদেম বা অন্য কারও মাধ্যমেও করা যেতে পারে।
ঘ. কেউ যথানিয়মে অনুমতি চাইলে বিশেষ ওজর না থাকলে তাকে অনুমতি দেওয়া উচিত।
বর্ণনাটির সারকথা হল, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ অবস্থায় আমির গোত্রীয় একজন সাহাবী এসে তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি সালাম না দিয়ে সরাসরি বলেছিলেন- প্রবেশ করব? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদেমকে হুকুম দিলেন, তুমি তার কাছে যাও এবং তাকে অনুমতি চাওয়ার তরিকা শেখাও। তাকে বলবে - قُلِ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، أَأَدْخُلُ (তুমি বলো- আসসালামু আলাইকুম, প্রবেশ করব)? অর্থাৎ প্রথমে সালাম দেবে, তারপর প্রবেশের অনুমতি চাইবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হুকুম বাইর থেকে ওই সাহাবী শুনে ফেললেন। ফলে খাদেমের আর তার কাছে যেতে হল নাঃ তার আগে আগেই সেই সাহাবী বলে উঠলেন- اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ، أَدْخُل (আসসালামু আলাইকুম, প্রবেশ করব)? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং তিনি প্রবেশ করলেন। বোঝা গেল অনুমতি চাওয়ার জন্য আগে সালাম দেওয়া জরুরি। প্রথমে সালাম দিয়ে তারপর প্রবেশের অনুমতি চাইতে হবে। অবশ্য কেবল সালাম দেওয়ার দ্বারাও অনুমতি প্রার্থনা হয়ে যায়, যদি অনুমতিদাতা বুঝতে পারে যে, সালাম দেওয়ার উদ্দেশ্য প্রবেশের অনুমতি চাওয়া। সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে 'প্রবেশ করতে পারি?' বলা দরকার পড়ে না। কিন্তু এর বিপরীতটা চলবে না। অর্থাৎ সালাম না দিয়ে কেবল 'প্রবেশ করতে পারি?' বলাটা যথেষ্ট হবে না।
لَا تَأْذَنُوا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأ بِالسَّلَامِ
'তোমরা তাকে অনুমতি দেবে না, যে প্রথমে সালাম দেবে না।' (বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৪৩৩; মুসনাদে আবু ইয়া'লা : ১৮০৯)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার সময় প্রথমে সালাম দিতে হবে।
খ. কেউ কোনও কাজ সঠিকভাবে করতে না পারলে তাকে তা শিখিয়ে দেওয়া উচিত।
গ. শিক্ষাদানের কাজটি খাদেম বা অন্য কারও মাধ্যমেও করা যেতে পারে।
ঘ. কেউ যথানিয়মে অনুমতি চাইলে বিশেষ ওজর না থাকলে তাকে অনুমতি দেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)