আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৮৩- তাওহীদ অধ্যায় ও জাহমিয়্যাসহ ভ্রান্ত দলগুলোর অপনোদন
হাদীস নং: ৬৯৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ৭৪৫৩
- তাওহীদ অধ্যায় ও জাহমিয়্যাসহ ভ্রান্ত দলগুলোর অপনোদন
৩১৩০. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে (৩৭ঃ ১৭১)।
৬৯৪৫। ইসমাঈল (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন (সৃষ্টির) কাজ সম্পূর্ণ করলেন, তখন তার নিকটে তাঁর আরশের উপর লিপিবদ্ধ করে দিলেন, ″আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল হয়েছে।″
كتاب الرد على الجهمية و غيرهم و التوحيد
باب قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا الْمُرْسَلِينَ}
7453 - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " لَمَّا قَضَى اللَّهُ الخَلْقَ، كَتَبَ عِنْدَهُ فَوْقَ عَرْشِهِ: إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ غَضَبِي "
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উলামায়ে কেরাম বলেন, বান্দার প্রতি আল্লাহ তা'আলার দয়া ও ক্রোধ দ্বারা মূলত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁর ইচ্ছাকে বোঝানো হয়ে থাকে। সুতরাং বাধ্য ও অনুগত বান্দাকে ছাওয়াব ও প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে তাঁর রহমত এবং অবাধ্যকে শাস্তিদান ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে তাঁর ক্রোধ।
এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার রহমতের ব্যাপকতা বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ বান্দা অপরাধ করলে আল্লাহ তা'আলা যত না দ্রুত শাস্তিদান করেন, তারচে' সৎকর্ম করলে অনেক বেশি দ্রুত পুরস্কৃত করেন। বরং আল্লাহ তা'আলা শাস্তিদানের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া আদৌ করেন না। বান্দা পাপ করলে তিনি ফিরিশতাকে অপেক্ষা করতে বলেন যাতে তাড়াহুড়া করে তা লেখা না হয়; বরং তাকে তাওবার সুযোগ দেওয়া হয়। তারপর আবার একটি অপরাধের ক্ষেত্রে একটি পাপই লেখা হয়। অপরদিকে সৎকর্মের ক্ষেত্রে লেখা হয় দশগুণ নেকী। আবার পার্থিব নি'আমতরাশিতে সাধারণভাবে তিনি কে বাধ্য কে অবাধ্য সে পার্থক্যও করেন না। এখানে তাঁর রহমত ও দয়া সকলের জন্য অবারিত। তিনি তাঁর আলো-বাতাস, মাটি-পানি, খাদ্যসামগ্রী প্রভৃতি কাফের-মুশরিককেও ভোগ করতে দিচ্ছেন। এই অবারিত রহমতের প্রতি ইঙ্গিত করে আল্লাহ তা আলা সূরা আ'রাফে ইরশাদ করেন
وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ
আর আমার দয়া, সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত।
তবে তাঁর খাস রহমত অর্থাৎ আখিরাতের নাজাত ও জান্নাতের অফুরন্ত নি'আমতরাজি কেবল মু'মিন-মুত্তাকীর জন্যই নির্ধারিত। সূরা আ'রাফের এ আয়াতেই এর পরে ইরশাদ হয়েছে-
فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ
‘সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।'
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা আমরা আল্লাহ তা'আলার রহমতের ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা পাই । কাজেই কোনও অবস্থায়ই তাঁর রহমত থেকে হতাশ হতে নেই।
এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার রহমতের ব্যাপকতা বোঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ বান্দা অপরাধ করলে আল্লাহ তা'আলা যত না দ্রুত শাস্তিদান করেন, তারচে' সৎকর্ম করলে অনেক বেশি দ্রুত পুরস্কৃত করেন। বরং আল্লাহ তা'আলা শাস্তিদানের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া আদৌ করেন না। বান্দা পাপ করলে তিনি ফিরিশতাকে অপেক্ষা করতে বলেন যাতে তাড়াহুড়া করে তা লেখা না হয়; বরং তাকে তাওবার সুযোগ দেওয়া হয়। তারপর আবার একটি অপরাধের ক্ষেত্রে একটি পাপই লেখা হয়। অপরদিকে সৎকর্মের ক্ষেত্রে লেখা হয় দশগুণ নেকী। আবার পার্থিব নি'আমতরাশিতে সাধারণভাবে তিনি কে বাধ্য কে অবাধ্য সে পার্থক্যও করেন না। এখানে তাঁর রহমত ও দয়া সকলের জন্য অবারিত। তিনি তাঁর আলো-বাতাস, মাটি-পানি, খাদ্যসামগ্রী প্রভৃতি কাফের-মুশরিককেও ভোগ করতে দিচ্ছেন। এই অবারিত রহমতের প্রতি ইঙ্গিত করে আল্লাহ তা আলা সূরা আ'রাফে ইরশাদ করেন
وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ
আর আমার দয়া, সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত।
তবে তাঁর খাস রহমত অর্থাৎ আখিরাতের নাজাত ও জান্নাতের অফুরন্ত নি'আমতরাজি কেবল মু'মিন-মুত্তাকীর জন্যই নির্ধারিত। সূরা আ'রাফের এ আয়াতেই এর পরে ইরশাদ হয়েছে-
فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُمْ بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ
‘সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেইসব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে।'
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
এ হাদীছ দ্বারা আমরা আল্লাহ তা'আলার রহমতের ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা পাই । কাজেই কোনও অবস্থায়ই তাঁর রহমত থেকে হতাশ হতে নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)