আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৮৩- তাওহীদ অধ্যায় ও জাহমিয়্যাসহ ভ্রান্ত দলগুলোর অপনোদন

হাদীস নং: ৭০৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ৭৫৫৫
- তাওহীদ অধ্যায় ও জাহমিয়্যাসহ ভ্রান্ত দলগুলোর অপনোদন
৩১৫৮. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)।
আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)।
ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরী করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। জগতসমূহের মহিমাময় প্রতিপালক আল্লাহ (৭ঃ ৫৪)।
ইবনে উয়াইনা (রাহঃ) বলেন, আল্লাহ খালককে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই।
নবী (ﷺ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবু যর (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা, তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আব্দুল কায়সের প্রতিনিধিদল নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন।
৭০৪৫। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব (রাহঃ) ......... যাহদাম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জারমের এ গোত্রটির সাথে আশআরী গোত্রের গভীর ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্ব ছিল। এক সময় আমরা আবু মুসা আশআরী (রাযিঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তার কাছে খাবার আনা হল। এতে মুরগীর গোশতও ছিল। এ সময় তার নিকট বনু তায়মুল্লাহর এক ব্যক্তি ছিল। সে (দেখতে) যেন আযাদকৃত গোলাম (অনারব)। তাকেও আবু মুসা (রাযিঃ) খেতে ডাকলেন। সে বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু জিনিস খেতে দেখেছি, যার ফলে এটি খেতে আমি ঘৃণা করি। এই জন্য কসম করেছি, আমি তা আর খাব না। আবু মুসা (রাযিঃ) বললেনঃ তুমি এদিকে এসো, এ সম্পর্কে আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব। আমি এক সময় আশআরী গোত্রের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নবী (ﷺ) এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য উপস্থিত হলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের বাহন দেব না। আর তোমাদের দেওয়ার মত আমার কাছে বাহন নেই। তারপর নবী (ﷺ) এর কাছে গনিমতের কিছু উট আনা হলে তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং বললেনঃ আশআরীদের দলটি কোথায়? তারপর তিনি পাঁচটি মোটা তাজা ও উত্তম উট আমাদের দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। আমরা এগুলো নিয়ে ফিরার পথে বলতে লাগলাম, আমরা যে কি করলাম! নবী (ﷺ) কসম করে বললেন, আমাদের বাহন দেবেন না এবং তাঁর কাছে দেওয়ার মত বাহন নেই। তারপরও তো তিনি আমাদের বাহন দিয়ে দিলেন। হয়ত আমরা তাকে তাঁর কসম সম্পর্কে অজ্ঞাত অবস্থায় পেয়েছিলাম। আল্লাহর কসম! আমরা কখনো সফলকাম হবো না। তাই আমরা তাঁর কাছে আবার গেলাম এবং তা তাকে বললাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের বাধা দেইনি, বরং দিয়েছেন আল্লাহ। আল্লাহর কসম! আমি কোন বিষয়ে কসম করে এরপর যদি তার বিপরীতে মঙ্গল দেখতে পাই, তবে তা করে নেই এবং (কাফফারা দিয়ে) কসম থেকে বের হয়ে আসি।
كتاب الرد على الجهمية و غيرهم و التوحيد
باب قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى {وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ} {إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ}. وَيُقَالُ لِلْمُصَوِّرِينَ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ. {إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ}. قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ بَيَّنَ اللَّهُ الْخَلْقَ مِنَ الأَمْرِ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ}. وَسَمَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الإِيمَانَ عَمَلاً. قَالَ أَبُو ذَرٍّ وَأَبُو هُرَيْرَةَ سُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ: ‘إِيمَانٌ بِاللَّهِ وَجِهَادٌ فِي سَبِيلِهِ. وَقَالَ: {جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ}’. وَقَالَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْنَا بِجُمَلٍ مِنَ الأَمْرِ إِنْ عَمِلْنَا بِهَا دَخَلْنَا الْجَنَّةَ. فَأَمَرَهُمْ بِالإِيمَانِ وَالشَّهَادَةِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، فَجَعَلَ ذَلِكَ كُلَّهُ عَمَلاً
7555 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، وَالقَاسِمِ التَّمِيمِيِّ، عَنْ زَهْدَمٍ، قَالَ: كَانَ بَيْنَ هَذَا الحَيِّ مِنْ جُرْمٍ وَبَيْنَ الأَشْعَرِيِّينَ وُدٌّ وَإِخَاءٌ، فَكُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ الطَّعَامُ، فِيهِ لَحْمُ دَجَاجٍ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ كَأَنَّهُ مِنَ المَوَالِي، فَدَعَاهُ إِلَيْهِ فَقَالَ: إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا فَقَذِرْتُهُ فَحَلَفْتُ لاَ آكُلُهُ، فَقَالَ: هَلُمَّ فَلْأُحَدِّثْكَ عَنْ ذَاكَ: إِنِّي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفَرٍ مِنَ الأَشْعَرِيِّينَ نَسْتَحْمِلُهُ، قَالَ: «وَاللَّهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ وَمَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ» ، فَأُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِنَهْبِ إِبِلٍ، فَسَأَلَ عَنَّا، فَقَالَ: «أَيْنَ النَّفَرُ الأَشْعَرِيُّونَ؟» ، فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ غُرِّ الذُّرَى، ثُمَّ انْطَلَقْنَا قُلْنَا: مَا صَنَعْنَا حَلَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنْ لاَ يَحْمِلَنَا وَمَا عِنْدَهُ مَا يَحْمِلُنَا؟ ثُمَّ حَمَلَنَا تَغَفَّلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمِينَهُ وَاللَّهِ لاَ نُفْلِحُ أَبَدًا، فَرَجَعْنَا إِلَيْهِ فَقُلْنَا لَهُ: فَقَالَ: «لَسْتُ أَنَا أَحْمِلُكُمْ، وَلَكِنَّ اللَّهَ حَمَلَكُمْ، وَإِنِّي وَاللَّهِ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلَّا أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ وَتَحَلَّلْتُهَا»
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)