আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১২- জানাযা-কাফন-দাফন সম্পর্কিত অধ্যায়
হাদীস নং: ২০২০
আন্তর্জাতিক নং: ৯২৯-১
- জানাযা-কাফন-দাফন সম্পর্কিত অধ্যায়
৭. মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারবর্গের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেওয়া হয়
২০২০। দাউদ ইবনে রুশায়দ (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে আবু মুলায়কা (রাহঃ) বলেন, আমি ইবনে উমর (রাযিঃ) এর পাশে বসা ছিলাম। আমরা উসমান (রাযিঃ) এর কন্যা উম্মে আবান বিনতে উসমানের জানাযার অপেক্ষা করছিলাম। তার নিকট উসমান (রাযিঃ) এর পুত্র আমরও বসা ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) কে হাতে ধরে নিয়ে আসলেন। আমার মনে হয় তাঁকে ইবনে উমর (রাযিঃ) এর অবস্থান সম্পর্কে বলা হয়েছিল। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন, আমি তাদের দু’জনের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ গৃহ হতে (কান্নার) আওয়াজ আসল, তখন ইবনে উমর (রাযিঃ), তিনি যেন আমরকে ইঙ্গিত করে নিষেধ করতে বললেন। তিনি উঠে গিয়ে তাদেরকে নিষেধ করলেন এবং ইবনে উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি মৃত ব্যক্তিকে আযাব দেয়া হয় তার পরিবারবর্গের মাতম বিলাপের কারণে।
ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়িশা (রাযিঃ) এর ন্যায় বলেননি যে, এ কথাটি বিশেষ করে ইয়াহুদি সম্পর্কে। তখন ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমরা আমিরুল মু'মিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা বায়দা নামক স্থানে পৌছলাম তখন দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি বৃক্ষের ছায়ায় অবতরণ করে বিশ্রাম করছে। তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার পক্ষ হতে গিয়ে জেনে এসো ঐ ব্যক্তি কে? আমি গিয়ে জানতে পারলাম ঐ ব্যক্তি সুহায়ব (রাযিঃ)। আমি তাঁর নিকট এসে বললাম আপনি আমাকে আদেশ করেছিলেন, জেনে আসার জন্য আমি জেনে এসেছি ঐ ব্যক্তি কে? ঐ ব্যক্তি সূহায়ব। তিনি বললেন তাকে বল, আমাদের সঙ্গে মিলিত হতে। আমি বললাম, তার সাথে তাঁর পরিবার রয়েছেন। তিনি বললেন, থাকুক না পরিবারসহ আসতে বল।
কখনো আইয়ুব বলেছেন, তাকে আমার সাথে সাক্ষাত করতে আদেশ কর। যখন আমরা মদীনায় পৌঁছলাম, তার কিছু কাল পরেই আমীরুল মু'মিনীন (রাযিঃ) আক্রান্ত হলেন। সুহায়ব (রাযিঃ) আসলেন এবং -ওয়া আখাহ (হে ভাই) ওয়া সাহিবাহ (হে আমাদের সাথী), বলে চিৎকার করতে লাগলেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, তুমি কি জানো নি, তুমি কি শোনোনি? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারবর্গের কোন কোন কান্নাকাটির কারণে আযাব দেয়া হয়।
রাবী বলেন, আব্দুল্লাহ কিন্তু শর্তহীনভাবে বলেছেন, শুধু ইয়াহুদীদের জন্য এ হুকুম তা যুক্ত করে বলেন নি। আর উমর (রাযিঃ) বলেছেন, কোন কোন কান্না। তখন আমি উঠে আয়িশা (রাযিঃ) এর নিকট গমন করলাম এবং ইবনে উমর (রাযিঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করলাম। আয়িশা (রাযিঃ) বললেন, না না আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ কথা কখনো বলেন নি যে, মৃত ব্যক্তিকে কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেয়া হবে। বরং তিনি বলেছেন, কাফিরের উপর আল্লাহ শাস্তি বৃদ্ধি করে দেন তার পরিবাবর্গের বিলাপের কারণে।
আল্লাহ তাআলাই হাসি কান্না দিয়ে থাকেন। একজনের পাপের বোঝা আরেক জনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন না। আয়িশা (রাযিঃ) এর নিকট যখন উমর ও ইবনে উমর (রাযিঃ) এর বক্তব্য পৌছলো, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন দু’ ব্যক্তি হতে হাদীস বর্ণনা করছ যারা মিথ্যা বলেন না এবং তাদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা যায় না। কিন্তু শ্রুতিতে ভুল হতে পারে।
ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়িশা (রাযিঃ) এর ন্যায় বলেননি যে, এ কথাটি বিশেষ করে ইয়াহুদি সম্পর্কে। তখন ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, আমরা আমিরুল মু'মিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা বায়দা নামক স্থানে পৌছলাম তখন দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি বৃক্ষের ছায়ায় অবতরণ করে বিশ্রাম করছে। তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার পক্ষ হতে গিয়ে জেনে এসো ঐ ব্যক্তি কে? আমি গিয়ে জানতে পারলাম ঐ ব্যক্তি সুহায়ব (রাযিঃ)। আমি তাঁর নিকট এসে বললাম আপনি আমাকে আদেশ করেছিলেন, জেনে আসার জন্য আমি জেনে এসেছি ঐ ব্যক্তি কে? ঐ ব্যক্তি সূহায়ব। তিনি বললেন তাকে বল, আমাদের সঙ্গে মিলিত হতে। আমি বললাম, তার সাথে তাঁর পরিবার রয়েছেন। তিনি বললেন, থাকুক না পরিবারসহ আসতে বল।
কখনো আইয়ুব বলেছেন, তাকে আমার সাথে সাক্ষাত করতে আদেশ কর। যখন আমরা মদীনায় পৌঁছলাম, তার কিছু কাল পরেই আমীরুল মু'মিনীন (রাযিঃ) আক্রান্ত হলেন। সুহায়ব (রাযিঃ) আসলেন এবং -ওয়া আখাহ (হে ভাই) ওয়া সাহিবাহ (হে আমাদের সাথী), বলে চিৎকার করতে লাগলেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, তুমি কি জানো নি, তুমি কি শোনোনি? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারবর্গের কোন কোন কান্নাকাটির কারণে আযাব দেয়া হয়।
রাবী বলেন, আব্দুল্লাহ কিন্তু শর্তহীনভাবে বলেছেন, শুধু ইয়াহুদীদের জন্য এ হুকুম তা যুক্ত করে বলেন নি। আর উমর (রাযিঃ) বলেছেন, কোন কোন কান্না। তখন আমি উঠে আয়িশা (রাযিঃ) এর নিকট গমন করলাম এবং ইবনে উমর (রাযিঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করলাম। আয়িশা (রাযিঃ) বললেন, না না আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ কথা কখনো বলেন নি যে, মৃত ব্যক্তিকে কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেয়া হবে। বরং তিনি বলেছেন, কাফিরের উপর আল্লাহ শাস্তি বৃদ্ধি করে দেন তার পরিবাবর্গের বিলাপের কারণে।
আল্লাহ তাআলাই হাসি কান্না দিয়ে থাকেন। একজনের পাপের বোঝা আরেক জনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন না। আয়িশা (রাযিঃ) এর নিকট যখন উমর ও ইবনে উমর (রাযিঃ) এর বক্তব্য পৌছলো, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন দু’ ব্যক্তি হতে হাদীস বর্ণনা করছ যারা মিথ্যা বলেন না এবং তাদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা যায় না। কিন্তু শ্রুতিতে ভুল হতে পারে।
كتاب الجنائز
باب الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ رُشَيْدٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ، أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ كُنْتُ جَالِسًا إِلَى جَنْبِ ابْنِ عُمَرَ وَنَحْنُ نَنْتَظِرُ جَنَازَةَ أُمِّ أَبَانٍ بِنْتِ عُثْمَانَ وَعِنْدَهُ عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ فَجَاءَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُودُهُ قَائِدٌ فَأُرَاهُ أَخْبَرَهُ بِمَكَانِ ابْنِ عُمَرَ، فَجَاءَ حَتَّى جَلَسَ إِلَى جَنْبِي فَكُنْتُ بَيْنَهُمَا فَإِذَا صَوْتٌ مِنَ الدَّارِ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ - كَأَنَّهُ يَعْرِضُ عَلَى عَمْرٍو أَنْ يَقُومَ فَيَنْهَاهُمْ - سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ " . قَالَ فَأَرْسَلَهَا عَبْدُ اللَّهِ مُرْسَلَةً . فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كُنَّا مَعَ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ إِذَا هُوَ بِرَجُلٍ نَازِلٍ فِي شَجَرَةٍ فَقَالَ لِيَ اذْهَبْ فَاعْلَمْ لِي مَنْ ذَاكَ الرَّجُلُ . فَذَهَبْتُ فَإِذَا هُوَ صُهَيْبٌ . فَرَجَعْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ إِنَّكَ أَمَرْتَنِي أَنْ أَعْلَمَ لَكَ مَنْ ذَاكَ وَإِنَّهُ صُهَيْبٌ . قَالَ مُرْهُ فَلْيَلْحَقْ بِنَا . فَقُلْتُ إِنَّ مَعَهُ أَهْلَهُ . قَالَ وَإِنْ كَانَ مَعَهُ أَهْلُهُ - وَرُبَّمَا قَالَ أَيُّوبُ مُرْهُ فَلْيَلْحَقْ بِنَا - فَلَمَّا قَدِمْنَا لَمْ يَلْبَثْ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ أَنْ أُصِيبَ فَجَاءَ صُهَيْبٌ يَقُولُ وَاأَخَاهْ وَاصَاحِبَاهْ . فَقَالَ عُمَرُ أَلَمْ تَعْلَمْ أَوْ لَمْ تَسْمَعْ - قَالَ أَيُّوبُ أَوْ قَالَ أَوَلَمْ تَعْلَمْ أَوَلَمْ تَسْمَعْ - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِهِ " . قَالَ فَأَمَّا عَبْدُ اللَّهِ فَأَرْسَلَهَا مُرْسَلَةً وَأَمَّا عُمَرُ فَقَالَ بِبَعْضٍ . فَقُمْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَحَدَّثْتُهَا بِمَا، قَالَ ابْنُ عُمَرَ فَقَالَتْ لاَ وَاللَّهِ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَطُّ " إِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَحَدٍ " . وَلَكِنَّهُ قَالَ " إِنَّ الْكَافِرَ يَزِيدُهُ اللَّهُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَذَابًا وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى " . قَالَ أَيُّوبُ قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ حَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ لَمَّا بَلَغَ عَائِشَةَ قَوْلُ عُمَرَ وَابْنِ عُمَرَ قَالَتْ إِنَّكُمْ لَتُحَدِّثُونِّي عَنْ غَيْرِ كَاذِبَيْنِ وَلاَ مُكَذَّبَيْنِ وَلَكِنَّ السَّمْعَ يُخْطِئُ .
বর্ণনাকারী: