প্রশ্নঃ ১১৬২৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সামনে আমার স্বামির মৃত্যু বার্ষিকি ১ বছর হবে মৃত্যু বার্ষিকি হিসেবে আমি কি করতে পারি
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামে জন্মবার্ষিকি বা মৃত্যুবার্ষিকির কোনো গুরুত্ব নেই। নিয়মিত আপনি আপনার স্বামীর জন্য কুরআনুল কারীম তেলাওয়াত করে দোয়া করতে পারেন। তার জন্য নফল সদকা করুন। নিজে ইসলাম ও দ্বীন মেনে পর্দাপুশিদার সাথে চলুন।
জন্মবার্ষিকি ও মৃত্যু বার্ষিকি সম্পর্কে জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরগুলো দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের এলাকায় কারও জন্মবার্ষিকী এবং মৃত্যুবার্ষিকী পালন করার প্রচলন খুবই কম। কিছুদিন আগে ঢাকার একজন আলেম বয়ানের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ সকল মানুষের মৃত্যুবার্ষিকী ও জন্মবার্ষিকী পালন করা জায়েয বলে ফতোয়া দেন। এতে আমাদের এলাকায় সকলে একটা দ্বিধা-দ্ব›েদ্ব পড়ে যায়। সুতরাং উক্ত সমস্যার সমাধানকল্পে শরীয়াতের দলীল উল্লেখ করে আমাদেরকে উপকৃত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রশ্নোক্ত আলেমের কথা ঠিক নয়। জন্মবার্ষিকী-মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা এবং একে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ইসলামের শিক্ষা নয়। এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এসকল অহেতুক কাজ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকা আবশ্যক। শরীয়তে জন্ম দিবস বা মৃত্যু দিবসের আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই। বিশেষভাবে এই দিনে কোনো ধরনের আমল বা ইবাদতের বিধান নেই।
আর মৃতব্যক্তিদের জন্য ঈসালে সাওয়াব করা শরীয়ত স্বীকৃত। তবে এর জন্য কোনো দিনক্ষণ নির্দিষ্ট নেই। বরং যে কোনো সময় বা দিনে নফল নামায, দান-সদকা, দুআ ইত্যাদির মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা যেতে পারে। কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে করলে বিশেষ সাওয়াব পাওয়া যাবে- এমন নয়। সালাফে সালেহীন তথা স্বর্ণযুগেও নির্দিষ্ট দিনে মৃতের জন্য এ ধরনের ঈসালে সাওয়াবের আয়োজন করার কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস পালন বা এ সংক্রান্ত কোনো অনুষ্ঠান শরীয়তসম্মত নয়।
তেমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্মদিবস ও ওয়াফাতদিবস পালন করাটাও শরীয়তের কোনো দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়। এটা যদি জায়েয হত তাহলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পরে সাহাবায়ে কেরামই সর্বাগ্রে করতেন। কারণ নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তাঁদের মহব্বত পরবর্তীদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি ছিল। কিন্তু এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের পদ্ধতি যেহেতু তাদের ভালোভাবে জানা ছিল তাই তারা এর জন্য ঐসকল পন্থাই অবলম্বন করেছেন, যেগুলো সুন্নাহ-নির্দেশিত। কোনো একজন সাহাবী থেকেও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য জন্মদিবস ও ওফাতদিবস পালন করার কথা প্রমাণিত নেই। তদ্রূপ তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের যুগেও এর কোনো চর্চা ছিল না।
প্রকাশ থাকে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় রহমত ও সাআদাত। তাঁকে স্মরণ করে তাঁর জন্য দুআ করা এবং দরূদ ও সালাম প্রেরণ করা একদিকে যেমন ইবাদত অপরদিকে আমাদের জীবনে বরকতেরও কারণ। এবং তাঁর জীবনাদর্শ আলোচনা করে আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করা তাঁর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু তা হতে হবে সে পদ্ধতিতে, যা সাহাবায়ে কেরাম তাদের জীবনে বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আর কোনোক্রমেই এ আমলগুলোকে কোনো নির্দিষ্ট মাস বা দিনের সাথে সম্পৃক্ত করে নেয়া যাবে না; বরং তা হবে মুমিনের জীবনের অংশ। সে প্রতিদিনই নামাযের বাইরেও সাধ্যানুযায়ী আল্লাহর রাসূলের উপর দরূদ শরীফ পড়বে। এবং নিজ জীবনকে তাঁর আদর্শ ও এবং সুন্নাহ অনুযায়ী পরিচালিত করবে। এতেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি তার মহব্বতের প্রমাণ মিলবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেন-
قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ یُحْبِبْكُمُ اللهُ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْم.
আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরা আলে ইমরান (৩) : ৩১)]
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
প্রশ্নঃ ৮৭০৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম, জন্মদিন পালন করা নাকি বিদআত?আবার একটা পেইজে দেখলাম এটা পালন করতে কোন সমস্যা নেই। আসল মত কোনটা জানাবেন। এখন বন্ধুদের মাঝে বা আত্মীয়রা যদি জন্মদিন উপলক্ষে দাওয়াত দেয় তাহলে কি সেখানে যাওয়া ঠিক হবে? সেই জন্মদিনের কেক বা অন্যান্য খাবার খাওয়া কি উচিত হবে? যদি না যাই তাহলে যদি আত্মীয়দের মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হয় তখন কি করাণীয়? এ সংক্রান্ত দলিল থাকলে জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জন্মদিন/মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা কাফির-মুশরিকদের কাছ থেকে এ অপসংস্কৃতি মুসলমানদের মাঝে অনুপ্রবেশ হয়েছে। ইসলামের কোথাও জন্মবার্ষিকী/মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা শেখানো হয়নি।
অতএব এই অনৈসলামিক রীতি পালন করা মুসলমানদের জন্য কিছুতেই শোভনীয় নয়। কাফির-মুশরিকদের অনুসরণে এ ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা কবিরা গুনাহ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي مُنِيبٍ الْجُرَشِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ " .
ইবনু ‘উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে।
—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪০৩১
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন