পণ্য আদান প্রদানের আড়ালে সুদের “অভিনব” পদ্ধতি !!
প্রশ্নঃ ৩৭৯০২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মানিত মুহতারাম কোন এক ব্যক্তি সৌদিতে মোবাইলের কার্ডের ব্যবসা করে ওই ব্যক্তির কাছে কোন ব্যক্তি টাকা ধার নিতে আসলে ওই ব্যক্তি তাকে টাকা না দিয়ে মোবাইলের কার্ডের দোকানে নিয়ে যায় সেখান থেকে তিনি ২০০০ টাকার মোবাইলের কার্ড কিনে এবং ওই ব্যক্তিকে দুই হাজার টাকার মোবাইলের কার্ড দিয়ে দেয় আর ওই ব্যক্তিকে বলে একমাস পরে তুমি আমাকে ২০০০ টাকার কার্ডের পরিবর্তে ২২০০ টাকা আমাকে দিতে হবে তখন ওই ব্যক্তি এই কার্ডগুলো এই দোকানদার নিকট বিক্রি করে দোকানদার তার থেকে ২০০০ টাকার কার্ড ১৯০০ টাকাতে কিনে নেয় সে তার কাছে ১০০ টাকা কমে বিক্রি করে দেয় কার্ডগুলো সুতরাং সম্মানিত শায়খ আমার কথা হল এই ব্যবসা ইসলামে হালাল না হারাম তা জানালে অনেক উপকৃত হব
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নিচের প্রশ্নের সাথে আপনার প্রশ্নের শতভাগ মিল থাকায় আমরা নতুন কিছু না লিখে ওই প্রশ্নোত্তরটিই আপনার জন্য পেশ করছি। দেখুন।
প্রশ্ন:
আমি নিজ তহবিল থেকে মুনাফার জন্য বিশ্বস্ত লোকদেরকে ঋণ প্রদান করে থাকি। ঋণগ্রহীতাকে নগদ টাকা না দিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে কোনো পণ্য (ধান, চাল, আটা ইত্যাদি পণ্য বস্তা হিসেবে) কিনে মূল্য পুনঃনির্ধারণ করে নির্দিষ্ট মেয়াদে কিস্তিতে অথবা মেয়াদান্তে সকল টাকা পরিশোধের শর্তে পণ্য প্রদান করে থাকি। উক্ত গ্রহীতার পণ্যের প্রয়োজন না থাকলে তিনি পণ্য পুনরায় বিক্রি করে দিতে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, ঋণ গ্রহীতার সাথে চুক্তি হওয়ার পর আমি তাকে নিয়ে বাজারে কোনো পাইকারি দোকানে গিয়ে বর্তমান বাজারদরে ১,০০,০০০/- টাকার চাল ক্রয় করি। অতপর তা ১,২০,০০০/- টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ঋণগ্রহীতাকে প্রদান করি। ঋণ গ্রহীতা স্বস্থানে রেখেই পণ্যগুলো বাজারদর (১,০০,০০০/-) থেকে সামান্য কমবেশি (বস্তা প্রতি ১/২ টাকা) করে দোকানির নিকট বিক্রি করে দেন। উল্লেখ্য যে, এ পদ্ধতিতে একই পণ্য তিনবার বিক্রি করা হচ্ছে এবং সর্বাবস্থায় পণ্য স্বস্থানে থাকছে। তবে পণ্য চিহ্নিত করা হয়। জানার বিষয় হল,উপরোক্ত পদ্ধতিতে বিনিয়োগ প্রদান করা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত পদ্ধতির লেনদেনের সাথে জড়িত সকলের নিকট একথা স্পষ্ট যে, এখানে তাদের কারোই পণ্য আদান-প্রদান ও ক্রয়বিক্রয় উদ্দেশ্য নয়। এক পক্ষ টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণের জন্য ক্রয়-বিক্রয়ের ছুতা অবলম্বন করেছে। আর অন্য পক্ষ নগদ টাকার জন্য বাধ্য হয়ে তা গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে দুই তিন হাত বদল হলেও পণ্য যার কাছে ছিল তার কাছেই থেকে যাচ্ছে। যা শরীয়ত নিষিদ্ধ বাইয়ে ঈনার অন্তর্ভুক্ত। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে লেনদেন করা সম্পূর্ণ নাজায়েয।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য হালাল উপার্জনের অনেক পথ খোলা রেখেছেন। সুতরাং মুসলমানের কর্তব্য হল, হিলা-বাহানা করে শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ পথে না চলে উপার্জনের হালাল পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৬২; ইলাউস সুনান ১৪/১৭৮; আননিহায়া ফী গারীবিল হাদীস ৩/৩৩৪
(মাসিক আলকাউসার:এপ্রিল ২০১৫)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন