তিনদিন চুলায় আগুন না জালিয়ে শোক পালন
প্রশ্নঃ ৯০২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রিয় ভাই আমার প্রশ্নটি হলোঃ- ঘরের কর্তা যেমন বাবা, দাদা, মারা গেলে ঘরে ৩ দিন আগুন জ্বালায় না। এটা কি কুরআন এবং হাদিসে আছে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পরিবারের কোন সদস্য মারা গেলে ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবস্থা, তাদের মন-মানসিকতার অবস্থা কেমন থাকে তা আমরা সকলে ভালো করে জানি, এই মুহূর্তে তাদের কাছে খাওয়া-দাওয়া রান্না-বান্না কোন কিছুই ভালো লাগবে না, এটাই স্বাভাবিক! এজন্যই ইসলামের নির্দেশনা হলো পাড়া-প্রতিবেশী যারা থাকবে তারা যেন এই শোকাহত ফ্যামিলির খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করে! যেমনি ভাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হযরত সা'দ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর ইন্তেকালের পর অন্যান্য সাহাবীদেরকে উৎসাহ প্রদান করে বলেছিলেন তোমরা তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য খাবার পাঠাও! এটা শোকাহত পরিবারের বিপদের সময় তাদের পাশে দাঁড়ানোর অন্তর্ভুক্ত! এটা ইসলামের একটা সুন্দরতা, অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির শোকে শোকাহত ফ্যামিলির জন্য অন্যরা খাবার পাঠাবে, এটা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত! তবে কেউ যদি এই পরিবারের জন্য খাবার না পাঠায় অথবা এই পরিবার যদি নিজেরাই রান্নাবান্না করে তাতে কোন অসুবিধা নেই! তবে আমাদের দেশে চুলায় আগুন জালানো যাবে না বলে যে আকিদা লালন করা হয়, তা সম্পূর্ণ বিবর্জিত, যার কোনো ভিত্তি নেই, এরূপ আকিদা পরিহার করা অত্যন্ত জরুরি!
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৩৭৭৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কোনো মাইয়েত হলে যে আত্মীয় স্বজনরা আসে তাদের জন্য যে খানা তৈরি করা হয় মহল্লার মানুষরা চাদা তুলে আয়োজন করে এটা মাইয়েতের ঘর থেকে পয়সা নেওয়া হয় না। (এই পদ্ধতিটা যখন অন্য মাইয়েত হয় এভাবে মহল্লার মানুষরা চাদা তুলে করে) আত্মীয় স্বজন খানা খাওয়া নোর পর বেচে গেলে তা মহল্লার মানুষ খানা খেতে পারবে যারা খানা তৈরি করে তাদের জন্য বা যারা টুকটাক কাজ করে, যারা করে না খানাটা খাওয়া যাবে কি স?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে চুলা জ্বালানো বা রান্নাবান্না করা ইসলামে নিষিদ্ধ নয়। যেদিন বাড়ীতে কোনো মুরব্বী বা অন্য কেউ মারা যাবেন অন্যান্য দিনের ন্যায় সেদিনও রান্নাবান্না করা যাবে। তবে প্রতিবেশীদের দায়িত্ব হলো মৃতের বাড়ীর লোকদের খাবারের ব্যবস্থা করা।
ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন যে মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে দু-এক বেলা প্রতিবেশীর বাড়ী থেকে উপহারস্বরূপ রান্না করা খাবার পাঠানো এটা ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ ও সমবেদনার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এতে দোষের কিছু নেই বরং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের রান্না বান্নার ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখার একটি প্রশংসনীয় মানবিক উদ্যোগ।
তবে এটাকে নিয়মে পরিণত করা বা বাধ্যতামূলক মনে করা কু-সংস্কার। এর থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। এমনিভাবে চাঁদা তুলে খাবারের আয়োজন করাও নিম্ন মানসিকতার পরিচায়ক। কেননা যাদের ঘরে ইন্তেকাল হয়েছে তারা হয়তো স্বচ্ছল-স্বাবলম্বী কিন্তু শোকাহত হওয়ায় তারা এখন রান্নার মুডে নাই। তাই প্রতিবেশীদের উচিত স্বপ্রণোদিত হয়ে খাবারের ব্যবস্থা করা। আর চাঁদার খাবার অন্যদের জন্য খাওয়া বৈধ হবে না। কেননা এতে চাঁদা প্রদানকারীদের সন্তুষ্টি নাও থাকতে পারে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন