প্রশ্নঃ ৯৪৩২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আমার প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে ,
সারা দিন পেরেশানিতে ভুগি ।ঋনের চিন্তা , চাকরির চিন্তা পারিবারিক চিন্তা হতাশা মন টা প্রফুল্ল থাকে না।এই থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন আমল রয়েছে
দ্বিতীয় প্রশ্ন
ইমান বাড়ানোর আমল জানতে চাই ।
তৃতীয় প্রশ্ন
আমাদের প্রবাসী ভাই রা অমুসলিম দেশে নানা সমস্যায় ভোগেন ,তেমন সেখানে হালাল মাংস পাওয়া যায় না ,এখন তারা যদি বাধ্য হয়ে হারাম মাংস খেয়ে ফেলেন এতে কি তাদের গুনাহ হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيم
সম্মানিত ভাই!
1.অাপনার প্রশ্নের প্রথম অংশের জণ্য নিচের রেফারেন্স উত্তরটি অনুসরণ করতে পারেন।
2.কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে এটা বুঝা যায়, মানুষের ঈমান বাড়ে এবং কমে। তার বিভিন্ন উপায় আছে
প্রথম উপায়: আল্লাহর সমস্ত নাম ও গুণাবলীসহ আল্লাহতায়ালার পরিচয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। এ বিষয়ের জ্ঞান যতো বৃদ্ধি পাবে, নিঃসন্দেহে তার ঈমানও ততো বৃদ্ধি পাবে।
দ্বিতীয় উপায়: আল্লাহর নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে গবেষণা করা এবং মানব জাতিকে যে জীবন বিধান দিয়েছেন, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা। মানুষ আল্লাহর সৃষ্টিরাজি নিয়ে যতো চিন্তা করবে, ততোই তার ঈমান বাড়বে।
এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘বিশ্বাসীদের জন্য পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও। তোমরা কি অনুধাবন করবে না?’ -সূরা যারিয়াত: ২০
তৃতীয় উপায়: বেশি করে সৎ কাজ সম্পাদন করা। সৎ আমল বেশি বেশি সম্পাদনের কারণে ঈমান বৃদ্ধি পায়। এমন সৎ আমল মুখের মাধ্যমে হোক, কিংবা কাজের মাধ্যমে হোক।
চতৃর্থ উপায়: সর্বাবস্থায় নিজের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার ধ্যান-খেয়াল পয়দা করা।
এককথায় নিজেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ নিষেধের সামনে সঁপে দিলেই ইমান বৃদ্ধি পাবে ইনশআল্লাহ।
৩. প্রবাস মানেই একটা কষ্টের জিনিষ। আবাসে কিংবা প্রবাসে যারাই থাকেন তারা এটা খুবসহজেই উপলব্ধী করতে পারেন। কিন্তু প্রবাসে থাকা অথবা হালাল মাংস না পেলেই হারাম মাংস খাওয়া জায়েজ-বিষয়টা এমন নয়। বরং কোনো মুসলিমের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত হারাম ভক্ষণ করা জায়েজ নাই যতক্ষণ পর্যন্ত তার এই ধারণা না হবে যে, যদি আমি এই হারাম ভক্ষণ না করি তাহলে নিশ্চিত আমি মৃত্যু বরণ করবো কিংবা আমার অঙ্গহানী হয়ে যাবে।
সুতরাং হালাল মাংস না পেলে আপনি মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যদি মনের সাথে কুলিয়ে ওঠতে না পারেন, তখন কবরের আজাবে কথা স্মরণ করবেন। আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৮৬৯৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মানিত হুজুরের কাছে আমার প্রশ্ন টি হলবিষন্নতা থেকে বাঁচার উপায় কি? মাঝে মাঝে এমন মনে হয় যেন আত্মহত্যা করতে মন চায়। মন দিয়ে ইবাদাত করতে পারিনা এই সমস্যার কারণে। ইসলামিক কোন কিতাব থাকলেও বলতে পারেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এই ধরনের সমস্যায় এক সাহাবী নিপতিত হয়েছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দোয়া শিখিয়েছেন।
ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার তিনবার পড়ুন-
চিন্তা, পেরেশানি, ঋণ, অলসতা ও কাপুরুষতার দূরীকরন
اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَ الْكَسَلِ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَ الْبُخْلِ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَ قَهْرِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজাজি ওয়াল কাসালি ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবুনি ওয়াল বুখুলি ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিত দিনি ওয়া কাহরির রিজাল।
অনুবাদ:
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই চিন্তা পেরেশানি থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপারগতা ও অলসতা থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কাপুরুষতার ও কৃপণতা থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের ক্ষোভ থেকে।
—সুনানু আবী দাঊদ ১৫৫৫
উদ্ধৃতি:
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রাসুল তাকে বললেন, আবু উমামা! ব্যাপার কী, নামাজের সময় ছাড়াও তোমাকে মসজিদে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে? আবু উমামা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! অনেক ঋণ এবং দুনিয়ার চিন্তা আমাকে গ্রাস করে রেখেছে। তখন রাসুল (সা.) তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু কালেমা শিখিয়ে দেব, যেগুলো বললে আল্লাহ তোমার চিন্তাকে দূর করে দেবেন এবং তোমার ঋণগুলো আদায় করে দেবেন। তিনি বলেন, জি হ্যাঁ ইয়া রাসুলাল্লাহ! অবশ্যই বলুন, তখন রাসুল (সা.) তাকে উপর্যুক্ত দোয়াটি শিখিয়ে দেন এবং তা সকাল-সন্ধ্যায় পড়তে বলেন। আবু উমামা বলেন, আমি রাসুল (সা.) এর এ দোয়াটি পড়তে লাগলাম। ফলে আল্লাহ আমার চিন্তা দূর করে দিলেন এবং আমার ঋণগুলোও আদায় করে দিলেন।
—সুনানু আবী দাঊদ ১৫৫৫
বিশ্বে বহুল সমাদৃত একটি কিতাব "লা তাহযান" "হতাশ হবেন না" বাংলা ভাষায় বইটি অনূদিত হয়েছে। রকমারি ডট কম থেকে অথবা বাংলাবাজার ইসলামী টাওয়ারে গিয়ে বইটি কিনতে পাবেন।
বইটি পড়ুন, ইনশাআল্লাহ উপকার হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন