আলফিয়্যাতুল হাদীস
যে ওজর ব্যতীত ইচ্ছা করে রমজানের রোজা ভঙ্গ করে -এর বিষয়সমূহ
১ টি হাদীস
মিশকাতুল মাসাবীহ
হাদীস নং: ২০০৪
- রোযার অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - সওম পবিত্র করা
২০০৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমরা নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসাছিলাম, এমন সময় তাঁহার নিকট এক ব্যক্তি আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ধ্বংস হইয়াছি। হুযুর বলিলেন: তোমার কি হইয়াছে? সে বলিল, আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করিয়াছি, তখন আমি রোযাদার ছিলাম। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, তোমার কি কোন গোলাম আছে যাহা আযাদ করিয়া দিতে পার ? সে বলিল, না। অতঃপর হুযুর বলিলেন, তোমার কি শক্তি আছে এক সাথে দুই মাস রোযা রাখিতে পার? সে বলিল, না। তৎপর হুযুর বলিলেন, তোমার কি সঙ্গতি আছে যে, তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াইতে পার ? সে বলিল, না। হুযূর বলিলেন, আচ্ছা তুমি বস! (রাবী বলেন,) নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা করিতে লাগিলেন এবং আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম, এমন সময় নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খেজুরপূর্ণ একটি ঝুড়ি (হাদিয়া) দেওয়া হইল। তখন হুযূর বলিলেন, প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলিল, হুযূর এই যে, আমি। হুযূর বলিলেন, এইটি লও এবং দান করিয়া দাও ! সে বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আমাদের অপেক্ষাও অধিকতর মিসকীন কে? খোদার কসম মদীনার এই প্রস্তরময় দুই প্রান্তের মধ্যে আমাদের পরিবার অপেক্ষা অধিকতর মিসকীন পরিবার আর নাই। ইহা শুনিয়া নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসিয়া দিলেন যাহাতে তাঁহার সম্মুখের দাঁতসমূহ প্রকাশিত হইয়া গেল। অতঃপর বলিলেন, আচ্ছা তবে তুমি তোমার পরিবারকেই খাওয়াও। – মোত্তাঃ
كتاب الصوم
وَعَن أبي هُرَيْرَة قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُول الله هَلَكت. قَالَ: «مَالك؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا؟» . قَالَ: لَا قَالَ: «فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ؟» قَالَ: لَا. قَالَ: «هَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا؟» قَالَ: لَا. قَالَ: «اجْلِسْ» وَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَبينا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ الضَّخْمُ قَالَ: «أَيْنَ السَّائِلُ؟» قَالَ: أَنَا. قَالَ: «خُذْ هَذَا فَتَصَدَّقْ بِهِ» . فَقَالَ الرَّجُلُ: أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَوَاللَّهِ مَا بَيْنَ لَابَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتِ أَفْقَرُ م أَهْلِ بَيْتِي. فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ: «أَطْعِمْهُ أهلك»
তাহকীক:
সুনানে আবু দাউদ
হাদীস নং: ২৩৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৯৫
রোযার অধ্যায়
যে ব্যক্তি রমযানের দিনে স্বীয় স্ত্রীর সাথে সহবাস করে, তার কাফ্ফারা।
২৩৮৭. মুহাম্মাদ ইবনে আওফ ...... আয়িশা (রাযিঃ) হতে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, তাকে এমন একটি খেজুরের থলে প্রদান করা হয়, যাতে বিশ সা’ পরিমাণ খেজুর ছিল।
كتاب الصوم
باب كَفَّارَةِ مَنْ أَتَى أَهْلَهُ فِي رَمَضَانَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَائِشَةَ، بِهَذِهِ الْقِصَّةِ قَالَ فَأُتِيَ بِعَرَقٍ فِيهِ عِشْرُونَ صَاعًا .
তাহকীক:
জামে' তিরমিযী
হাদীস নং: ৭১৯
আন্তর্জাতিক নং: ৭১৯
নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত রোযার অধ্যায়
রোযাদারের অনিচ্ছাকৃত বমি।
৭১৭. মুহাম্মাদ ইবনে উবাইদ মুহারিবী (রাহঃ) .... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ তিনটি বিষয় রোযাদারের রোযা ভঙ্গ হয় না। (১) সিঙ্গা লাগান (২) বমি এবং (৩) স্বপ্নদোষ।
ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত এই রিওয়ায়াতটি নির্ভরযোগ্য নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ ইবনে আসলাম, আব্দুল আযীয ইবনে মুহাম্মাদ প্রমূখ এই হাদীসটিকে যায়দ ইবনে আসলাম (রাহঃ) থেকে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। এতে তারা আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) এর উল্লেখ করেননি। আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ ইবনে আসলাম হাদীস বর্ণনায় যইফ। আবু দাউদ সিজাযী (রাহঃ) কে বলতে শুনেছি, আমি ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রাহঃ) কে আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ ইবনে আসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি বললেন, তার ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ সম্বন্ধে কোন দোষ নাই। মুহাম্মাদ (বুখারী) (রাহঃ) কে আলী ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে তিনি বলেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনে যায়দ ইবনে আসলাম হলেন নির্ভরযোগ্য। আর আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ ইবনে আসলাম হলেন যইফ। মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমি তার থেকে কি কিছুই রিওয়ায়াত করব না।
أبواب الصوم عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
باب مَا جَاءَ فِي الصَّائِمِ يَذْرَعُهُ الْقَىْءُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ لاَ يُفْطِرْنَ الصَّائِمَ الْحِجَامَةُ وَالْقَىْءُ وَالاِحْتِلاَمُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ حَدِيثٌ غَيْرُ مَحْفُوظٍ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ وَعَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ مُرْسَلاً . وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ . قَالَ سَمِعْتُ أَبَا دَاوُدَ السِّجْزِيَّ يَقُولُ سَأَلْتُ أَحْمَدَ بْنَ حَنْبَلٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ فَقَالَ أَخُوهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ لاَ بَأْسَ بِهِ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَذْكُرُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمَدِينِيِّ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ ثِقَةٌ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ ضَعِيفٌ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَلاَ أَرْوِي عَنْهُ شَيْئًا .
জামে' তিরমিযী
হাদীস নং: ৭২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৭২৬
নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত রোযার অধ্যায়
রোযা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার।
৭২৪. আব্দুল আ‘লা ইবনে ওয়াসিল আল-কুফী (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বলল, আমার চোখ দু‘টিতে কষ্ট পাচ্ছি। আমি রোযাদার অবস্থায় তাতে সুরমা ব্যবহার করতে পারি কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
এই বিষয়ে আবু রাফি (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, আনাস (রাযিঃ) বর্ণিত এই হাদীসটির সনদ শক্তিশালী নয়। এই বিষয়ে নবী (ﷺ) থেকে সহীহ কিছু বর্ণিত নাই। রাবী আবু আতিকাকে যঈফ বলা হয়। রোযা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করার বিষয়ে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ মাকরূহ মনে করেন। এ হল সুফিয়ান, ইবনে মুবারক, আহমাদ ও ইসহাক (রাহঃ) এর অভিমত। কতক আলিম রোযা অবস্থায় সুরমা ব্যবহারের অনুমতি দেন। এ হল ইমাম শাফিঈ (রাহঃ) এর অভিমত।
أبواب الصوم عن رسول الله صلى الله عليه وسلم
باب مَا جَاءَ فِي الْكُحْلِ لِلصَّائِمِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَطِيَّةَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاتِكَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اشْتَكَتْ عَيْنِي أَفَأَكْتَحِلُ وَأَنَا صَائِمٌ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِالْقَوِيِّ وَلاَ يَصِحُّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْبَابِ شَيْءٌ . وَأَبُو عَاتِكَةَ يُضَعَّفُ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْكُحْلِ لِلصَّائِمِ فَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْكُحْلِ لِلصَّائِمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .