আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৫০- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৪০৭৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪৪১৫
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২৪২. গাযওয়ায়ে তাবুক- আর তা কষ্টের যুদ্ধ
৪০৭৩। মুহাম্মাদ ইবনে আলা (রাহঃ) .... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার সাথীরা আমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কাছে পাঠালেন তাদের জন্য যানবাহন চাওয়ার জন্য। কারণ তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সঙ্গে কঠিনতর যুদ্ধ অর্থাৎ তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণেচ্ছু ছিলেন। অনন্তর আমি এসে বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমার সাথীরা আমাকে আপনার সমীপে এ জন্য পাঠিয়েছেন যে, আপনি যেন তাদের জন্য যানবাহনের ব্যাবস্থা করেন। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি রাগান্বিত। অথচ আমি তা অবগত নই। আর আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর যানবাহন না দেয়ার কারণে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ফিরে আসি।
আবার এ ভয়ও ছিল যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর হৃদয়ে আমার প্রতি না আবার অসন্তোষ আসে। তাই আমি সাথীদের কাছে ফিরে যাই এবং নবী কারীম (ﷺ) যা বলেছেন তা আমি তাদের অবহিত করি। পরক্ষণেই শুনতে পেলাম যে বিলাল (রাযিঃ) ডাকছেন এ বলে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে কায়স কোথায়? তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপনাকে ডাকছেন, আপনি উপস্থিত হোন। আমি যখন তাঁর কাছে উপস্থিত হলাম তখন তিনি বললেন, এই জোড়া এবং ঐ জোড়া এমনি ছয়টি উটনী যা সা‘দ থেকে ক্রয় করা হয়েছে, তা গ্রহণ কর। এবং সেগুলো তোমার সাথীদের কাছে নিয়ে যাও।
এবং বল যে, আল্লাহ্ তাআলা (রাবীর সন্দেহ) অথবা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এগুলো তোমাদের যানবাহনের জন্য ব্যবস্থা করেছেন, তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর। এরপর আমি সেগুলোসহ তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এগুলোকে তোমাদের বাহন হিসেবে দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কথা যারা শুনেছিল আমার সাথে তোমাদের কেউ এমন কারো কাছে না যাওয়া পর্যন্ত আমি তোমাদের চলে যেতে দিতে পারি না- যাতে তোমরা এমন ধারণা না কর যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যা বলেননি, আমি তা তোমাদের বর্ণনা করেছি। তখন তারা আমাকে বললেন, আল্লাহর কসম, আপনি আমাদের কাছে সত্যবাদী বলে খ্যাত। তবুও আপনি যা পছন্দ করেন, আমরা অবশ্য করব। অনন্তর আবু মুসা (রাযিঃ) তাদের মধ্যকার একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হন এবং যারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কর্তৃক অপারগতা প্রকাশ এবং পরে তাদেরকে দেয়ার কথা শুনেছিলেন, তাদের কাছে আসেন। এরপর তাদের কাছে সেরূপ ঘটনা বর্ণনা করলেন যেমন আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) বর্ণনা করেছিলেন।
كتاب المغازى
بَابُ غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهِيَ غَزْوَةُ العُسْرَةِ
4415 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ العَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَرْسَلَنِي أَصْحَابِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْأَلُهُ الحُمْلاَنَ لَهُمْ، إِذْ هُمْ مَعَهُ فِي جَيْشِ العُسْرَةِ، وَهِيَ غَزْوَةُ تَبُوكَ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، إِنَّ أَصْحَابِي أَرْسَلُونِي إِلَيْكَ لِتَحْمِلَهُمْ، فَقَالَ «وَاللَّهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ عَلَى شَيْءٍ وَوَافَقْتُهُ، وَهُوَ غَضْبَانُ وَلاَ أَشْعُرُ» وَرَجَعْتُ حَزِينًا مِنْ مَنْعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمِنْ مَخَافَةِ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَدَ فِي نَفْسِهِ عَلَيَّ، فَرَجَعْتُ إِلَى أَصْحَابِي فَأَخْبَرْتُهُمُ الَّذِي قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ أَلْبَثْ إِلَّا سُوَيْعَةً، إِذْ سَمِعْتُ بِلاَلًا يُنَادِي: أَيْ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ قَيْسٍ، فَأَجَبْتُهُ، فَقَالَ: أَجِبْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُوكَ، فَلَمَّا أَتَيْتُهُ قَالَ: " خُذْ هَذَيْنِ القَرِينَيْنِ، وَهَذَيْنِ القَرِينَيْنِ - لِسِتَّةِ أَبْعِرَةٍ ابْتَاعَهُنَّ حِينَئِذٍ مِنْ سَعْدٍ -، فَانْطَلِقْ بِهِنَّ إِلَى أَصْحَابِكَ، فَقُلْ: إِنَّ اللَّهَ، أَوْ قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْمِلُكُمْ عَلَى هَؤُلاَءِ فَارْكَبُوهُنَّ ". فَانْطَلَقْتُ إِلَيْهِمْ بِهِنَّ، فَقُلْتُ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْمِلُكُمْ عَلَى هَؤُلاَءِ، وَلَكِنِّي وَاللَّهِ لاَ أَدَعُكُمْ حَتَّى يَنْطَلِقَ مَعِي بَعْضُكُمْ إِلَى مَنْ سَمِعَ مَقَالَةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:3]، لاَ تَظُنُّوا أَنِّي حَدَّثْتُكُمْ شَيْئًا لَمْ يَقُلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا لِي: وَاللَّهِ إِنَّكَ عِنْدَنَا لَمُصَدَّقٌ، وَلَنَفْعَلَنَّ مَا أَحْبَبْتَ، فَانْطَلَقَ أَبُو مُوسَى بِنَفَرٍ مِنْهُمْ، حَتَّى أَتَوُا الَّذِينَ سَمِعُوا قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْعَهُ إِيَّاهُمْ، ثُمَّ إِعْطَاءَهُمْ بَعْدُ فَحَدَّثُوهُمْ بِمِثْلِ مَا حَدَّثَهُمْ بِهِ أَبُو مُوسَى
হাদীস নং: ৪০৭৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪৪১৬
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২৪২. গাযওয়ায়ে তাবুক- আর তা কষ্টের যুদ্ধ
৪০৭৪। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... মুসআব ইবনে সা‘দ তাঁর পিতা (আবু ওয়াক্কাস) (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাবুক যুদ্ধাভিযানে রওয়ানা হন। আর আলী (রাযিঃ)- কে খলীফা মনোনীত করেন। আলী (রাযিঃ) বলেন, আপনি কি আমাকে শিশু ও মহিলাদের মধ্যে ছেড়ে যাচ্ছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি কি এ কথায় রাযী নও যে, তুমি আমার কাছে সে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে যেমন হারুন (আলাইহিস সালাম) মুসা (আলাইহিস সালাম)- এর পক্ষ থেকে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে এতোটুকু পার্থক্য যে, (তিনি নবী ছিলেন আর) আমার পরে আর কোন নবী নেই। আবু দাউদ (রাহঃ) বলেন, শু‘বা (রাহঃ) আমাকে হাকাম (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি মুসআব (রাহঃ) থেকে শুনেছি।
كتاب المغازى
بَابُ غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهِيَ غَزْوَةُ العُسْرَةِ
4416 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ الحَكَمِ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى تَبُوكَ، وَاسْتَخْلَفَ عَلِيًّا، فَقَالَ: أَتُخَلِّفُنِي فِي الصِّبْيَانِ وَالنِّسَاءِ؟ قَالَ: «أَلاَ تَرْضَى أَنْ تَكُونَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ، مِنْ مُوسَى إِلَّا أَنَّهُ لَيْسَ نَبِيٌّ بَعْدِي» ، وَقَالَ أَبُو دَاوُدَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الحَكَمِ، سَمِعْتُ مُصْعَبًا
হাদীস নং: ৪০৭৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৪১৭
- নবীজীর সাঃ যুদ্ধাভিযানসমূহ
২২৪২. গাযওয়ায়ে তাবুক- আর তা কষ্টের যুদ্ধ
৪০৭৫। উবাইদুল্লাহ্ ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... সাফওয়ান এর পিতা ইয়ালা ইবনে উমাইয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সঙ্গে উসরা এর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। ইয়ালা বলতেন যে, উক্ত যুদ্ধ আমার কাছে নির্ভরযোগ্য আমলের অন্যতম বলে বিবেচিত হতো। আতা (রাহঃ) বলেন যে, সাফওয়ান বলেছেন, ইয়ালা (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, আমার একজন (দিনমজুর) চাকর ছিল, সে একবার এক ব্যক্তির সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হল এবং এক পর্যায়ে একজন অন্যজনের হাতে দাঁত দ্বারা কামড় দিলো।
আতা (রাহঃ) বলেন, আমাকে সাফওয়ান (রাহঃ) অবহিত করেছেন যে, উভয়ের মধ্যে কে কার হাত দাঁত দ্বারা কেটেছিল তার নাম আমি ভুলে গেছি। রাবী বলেন, আহত ব্যক্তি ঘাতকের মুখ থেকে নিজ হাত মুক্ত করার পর দেখা গেল, তার সম্মুখের দুটো দাঁত উৎপাটিত হয়ে গেছে। তারপর তারা এ মামলা নবী কারীম (ﷺ)- এর সমীপে পেশ করে। তখন নবী কারীম (ﷺ) তার দাঁতের ক্ষতিপূরনের দাবি বাতিল করেছেন। আতা (রাহঃ) বলেন যে, আমার ধারণা যে, বর্ণনাকারী এ কথাও বলেছেন যে, নবী কারীম (ﷺ) বলেন, তবে কি সে তার হাত তোমার মুখে চিবানোর জন্য ছেড়ে দিবে? যেমন উটের মুখে চিবানোর জন্য ছেড়ে দেয়া হয়?
كتاب المغازى
بَابُ غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهِيَ غَزْوَةُ العُسْرَةِ
4417 - حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ: سَمِعْتُ عَطَاءً، يُخْبِرُ قَالَ: أَخْبَرَنِي صَفْوَانُ بْنُ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العُسْرَةَ، قَالَ: كَانَ يَعْلَى يَقُولُ: تِلْكَ الغَزْوَةُ أَوْثَقُ أَعْمَالِي عِنْدِي، قَالَ عَطَاءٌ: فَقَالَ صَفْوَانُ: قَالَ يَعْلَى: فَكَانَ لِي أَجِيرٌ، فَقَاتَلَ إِنْسَانًا فَعَضَّ أَحَدُهُمَا يَدَ الآخَرِ، قَالَ عَطَاءٌ: فَلَقَدْ أَخْبَرَنِي صَفْوَانُ: أَيُّهُمَا عَضَّ الآخَرَ فَنَسِيتُهُ، قَالَ: فَانْتَزَعَ المَعْضُوضُ يَدَهُ مِنْ فِي العَاضِّ، فَانْتَزَعَ إِحْدَى ثَنِيَّتَيْهِ، فَأَتَيَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَهْدَرَ ثَنِيَّتَهُ، قَالَ عَطَاءٌ: وَحَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفَيَدَعُ يَدَهُ فِي فِيكَ تَقْضَمُهَا، كَأَنَّهَا فِي فِي فَحْلٍ يَقْضَمُهَا»