মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ১১৪৬
- নামাযের অধ্যায়
২৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মোকতাদীর কর্তব্য ও মসবুকের করণীয়
১১৪৬। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি (মসজিদে) আসিল, অথচ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নামায সম্পন্ন করিয়া ফেলিয়াছেন। ইহা দেখিয়া তিনি বলিলেন, কেহ কি নাই যে, ইহাকে (জামাআতের) সওয়াব দান করে অর্থাৎ, ইহার সহিত নামায় পড়ে? অতঃপর এক ব্যক্তি দাঁড়াইল এবং তাহার সহিত নামায পড়িল। — তিরমিযী ও আবু দাউদ
كتاب الصلاة
وَعَن أبي سعيد الْخُدْرِيّ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ وَقَدْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «أَلَا رَجُلٌ يَتَصَدَّقُ عَلَى هَذَا فَيُصَلِّيَ مَعَهُ؟» فَقَامَ رَجُلٌ فيصلى مَعَه . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ১১৪৭
- নামাযের অধ্যায়
২৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মোকতাদীর কর্তব্য ও মসবুকের করণীয়
১১৪৭। তাবেয়ী হযরত ওবায়দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, একদা আমি হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট যাইয়া বলিলাম, (আম্মা!) আপনি কি আমাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর এন্তেকালের রোগ সম্পর্কে কোন বর্ণনা দান করিবেন না ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ (নিশ্চয়ই করিব, শুন,) নবী করীম (ﷺ)-এর রোগ যখন গুরুতর আকার ধারণ করিল, তিনি একবার বলিলেন, লোকেরা কি নামায পড়িয়া ফেলিয়াছে ? আমরা বলিলাম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহারা আপনার অপেক্ষা করিতেছে। হুযূর বলিলেনঃ আমার জন্য গামলায় পানি ঢাল। হযরত আয়েশা বলেন, আমরা তাহা করিলাম। হুযূর গোসল করিলেন এবং খুব কষ্টে দাঁড়াইতে চাহিলেন; কিন্তু অজ্ঞান হইয়া গেলেন। অতঃপর জ্ঞান লাভ করিলেন এবং পুনঃ জিজ্ঞাসা করিলেন, লোকেরা কি নামায পড়িয়া ফেলিয়াছে ? আমরা বলিলাম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহারা আপনার অপেক্ষা করিতেছে। হুযূর বলিলেন, আমার জন্য গামলায় পানি ঢাল। হযরত আয়েশা বলেন, হুযূর উঠিয়া বসিলেন এবং পুনঃ গোসল করিলেন। অতঃপর দাঁড়াইতে চেষ্টা করিলেন; কিন্তু আবার অজ্ঞান হইয়া গেলেন। পুনরায় জ্ঞান লাভ করিলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, লোকেরা কি নামায পড়িয়া ফেলিয়াছে ? আমরা বলিলাম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহারা আপনার অপেক্ষায় আছে। হুযূর আবার বলিলেন, আমার জন্য গামলায় পানি ঢাল। হুযূর উঠিয়া বসিলেন এবং তৃতীয়বার গোসল করিলেন। অতঃপর দাঁড়াইতে চেষ্টা করিলেন; কিন্তু এবারও অজ্ঞান হইয়া গেলেন। অতঃপর জ্ঞান লাভ করিলেন এবং আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, লোকেরা কি নামায পড়িয়া ফেলিয়াছে ? আমরা বলিলাম, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহারা আপনার অপেক্ষায় আছে।
(হযরত আয়েশা বলেন,) লোকেরা তখন দ্বিতীয় এশার নামাযের জন্য নবী করীম (ﷺ)-এর অপেক্ষায় মসজিদে অবস্থান করিতেছিল। নবী করীম (ﷺ) হযরত আবু বকরের নিকট লোক পাঠাইলেন, তিনি যেন লোকদের নামায পড়াইয়া দেন। বার্তাবাহক আবু বকরের নিকট পৌঁছিয়া বলিল, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আপনাকে নির্দেশ দিতেছেন, আপনি যেন লোকদের নামায পড়াইয়া দেন। (হযরত আয়েশা বলেন,) হযরত আবু বকর (রাঃ) একজন কোমল হৃদয় ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বলিলেন, হে ওমর! আপনি লোকদের নামায পড়াইয়া দিন। হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আপনিই ইহার জন্য অধিকতর যোগ্য। (হযরত আয়েশা বলেন,) সুতরাং হযরত আবু বকরই সেই কয়দিনের (১৭ দিনের) নামায পড়াইলেন। অতঃপর একদিন নবী করীম (ﷺ) কিছুটা উপশম বোধ করিলেন এবং দুই ব্যক্তির সাহায্যে — যাহাদের মধ্যে একজন হযরত আব্বাস ছিলেন—যোহরের নামাযের জন্য বাহির হইলেন, আর তখন হযরত আবু বকর লোকদের নামায পড়াইতেছিলেন। হযরত আবু বকর যখন হুযূরকে দেখিলেন, পিছনে সরিয়া যাইতে উদ্যত হইলেন, তখন নবী করীম (ﷺ) তাঁহাকে ইশারা করিলেন যেন পিছনে না সরেন এবং সাথীদ্বয়কে বলিলেন, আমাকে আবু বকরের পাশে বসাও। সুতরাং তাঁহার তাঁহাকে তাঁহার পাশে বসাইলেন এবং নবী করীম (ﷺ) বসিয়া রহিলেন। (অর্থাৎ, দাঁড়াইতে পারিলেন না)।
রাবী ওবায়দুল্লাহ্ বলেন, একবার আমি (হযরত আব্বাসের পুত্র) হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাসের নিকট গেলাম এবং তাঁহাকে বলিলাম, হযরত আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর এন্তেকালের রোগ সম্পর্কে আমাকে যে বিবরণ দান করিয়াছেন, তাহা কি আপনার নিকট পেশ করিব না ? তিনি বলিলেন, করুন। অতঃপর আমি তাঁহার নিকট হযরত আয়েশার বিবৃত বিবরণ পেশ করিলাম। তিনি উহার কোন অংশই অস্বীকার করিলেন না। শুধুমাত্র একথাই জিজ্ঞাসা করিলেন, যে ব্যক্তি হযরত আব্বাসের সহিত ছিলেন, হযরত আয়েশা কি আপনাকে তাঁহার নাম বাতলাইয়াছেন? আমি বলিলাম, না। তিনি বলিলেন, সেই ব্যক্তি ছিলেন হযরত আলী (রাঃ)। — মোত্তাঃ
كتاب الصلاة
عَن عبيد الله بن عبد الله بن عتبَة قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ أَلَا تُحَدِّثِينِي عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ بَلَى ثَقُلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: «أصلى النَّاس؟» قُلْنَا لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهُمْ يَنْتَظِرُونَكَ فَقَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ» قَالَتْ فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ فَذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» قُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ» قَالَتْ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: «أَصَلَّى النَّاسُ؟» قُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ: «ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ» فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ: «أَصَلَّى النَّاسُ» . قُلْنَا لَا هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَالنَّاسُ عُكُوفٌ فِي الْمَسْجِدِ يَنْتَظِرُونَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصَلَاةِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ. فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ بِأَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُكَ أَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ رَجُلًا رَقِيقًا يَا عُمَرُ صَلِّ بِالنَّاسِ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَنْتَ أَحَقُّ بِذَلِكَ فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الْأَيَّامَ ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وجد من نَفْسِهِ خِفَّةً وَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا الْعَبَّاسُ لِصَلَاةِ الظُّهْرِ وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِيَتَأَخَّرَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَنْ لَا يَتَأَخَّرَ قَالَ: «أَجْلِسَانِي إِلَى جَنْبِهِ» فَأَجْلَسَاهُ إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَاعد. قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ: فَدَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَهُ أَلَا أَعْرِضُ عَلَيْكَ مَا حَدَّثتنِي بِهِ عَائِشَةُ عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ هَاتِ فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَدِيثَهَا فَمَا أَنْكَرَ مِنْهُ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ أَسَمَّتْ لَكَ الرَّجُلَ الَّذِي كَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ قلت لَا قَالَ هُوَ عَليّ رَضِي الله عَنهُ
হাদীস নং: ১১৪৮
- নামাযের অধ্যায়
২৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মোকতাদীর কর্তব্য ও মসবুকের করণীয়
১১৪৮। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলিতেন, যে রুকু পাইয়াছে সে পূর্ণ রাকআতই পাইয়াছে, আর যাহার সূরা ফাতেহা ছুটিয়া গিয়াছে তাহার বহু কল্যাণই ছুটিয়া গিয়াছে। — মালেক
كتاب الصلاة
وَعَن أبي هُرَيْرَة أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ: «مَنْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ فَقَدْ أَدْرَكَ السَّجْدَةَ وَمَنْ فَاتَتْهُ قِرَاءَةُ أُمِّ الْقُرْآنِ فقد فَاتَهُ خير كثير» . رَوَاهُ مَالك