১৮২৫। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, বরীরাতে, শরীআতের তিনটি কথা রহিয়াছে। প্রথম কথা হইল যে, বরীরাকে আযাদ করা হয় অতঃপর তাহাকে (তাহার স্বামীকে রাখা বা ত্যাগ করা সম্পর্কে) এখতিয়ার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কথা হইল, তাহার ঘটনায় রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন মীরাস যিনি আযাদ করেন, তাঁহার প্রাপ্য। তৃতীয় কথা হইল, একবার রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করিলেন (এবং দেখিলেন) ডেগ্‌চীতে গোশত জোশ যাইতেছে। অতঃপর খাওয়ার জন্য তাঁহার নিকট রুটি ও ঘরের তরকারী উপস্থিত করা হইল। তখন তিনি বলিলেন, আমি না দেখিলাম একটি ডেগচীতে গোশত রহিয়াছে? তাহারা উত্তর করিলেন, হা, কিন্তু উহা বরীরাকে সদকারূপে দেওয়া হইয়াছে অথচ আপনি সদকার জিনিস খান না। হুযুর বলিলেন, উহা তাহার জন্য সদকা অতঃপর আমাদের জন্য হাদিয়া। মোত্তাঃ

১৮২৬। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিয়া কবুল করিতেন এবং উহার প্রতিদান করিতেন। —বুখারী

১৮২৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যদি আমাকে গরু ছাগলের একটি খুর খাইতেও দাওয়াত করা হয়, নিশ্চয় আমি উহা গ্রহণ করি এবং যদি আমাকে একটি ছাগলের বাহুও হাদিয়া দেওয়া হয়, নিশ্চয় তাহা আমি কবুল করি। —বুখারী

১৮২৮। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন সেই ব্যক্তি মিসকীন নহে, যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে এবং এক দুই লোকমা খাদ্য বা এক দুইটি খেজুর পাইলে ঘরে ফিরে। প্রকৃত মিসকীন সে-ই, যাহার এমন কোন সংস্থান নাই যাহা তাহার জন্য যথেষ্ট হয়, অথচ (তাহার নীরবতার কারণে) তাহাকে চিনাও যায় না, যাহাতে লোক তাহাকে সদকা দান করে এবং সে নিজে উঠিয়া কাহারও নিকট যাজ্ঞাও করে না। – মোত্তাঃ

১৮২৯। হযরত আবু রাফে (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বনী মাখযুম গোত্রের এক ব্যক্তিকে যাকাত উসূলের জন্য কর্মচারী নিযুক্ত করিয়া পাঠাইলেন। (কর্মস্থলে গমনকালে) তিনি আবু রাফে'কে বলিলেন, আমার সাথে চল যাহাতে তুমিও উহার কিছু পাইতে পার। তিনি বলিলেন, না, যে পর্যন্ত না আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাইয়া তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করি। অতঃপর তিনি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট গেলেন এবং তাঁহাকে ইহা জিজ্ঞাসা করিলেন। নবী করীম (ﷺ) উত্তরে বলিলেনঃ আমাদের (বনী হাশেম গোত্রের) জন্য যাকাত হালাল নহে আর কোন গোত্রের দাস তাহাদের মধ্যেই গণ্য। (আর তুমি আমাদেরই দাস।) — তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসায়ী

১৮৩০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যাকাত হালাল নহে অবস্থাপন্ন ব্যক্তির জন্য আর না শক্তিবান পূর্ণাঙ্গ (অবিকলাঙ্গ) ব্যক্তির জন্য। – তিরমিযী, আবু দাউদ, দারেমী,

১৮৩১। এ হাদীসটিকে আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।

১৮৩২। উবায়দুল্লাহ্ ইবনে আদী ইবনে থিয়ার তাবেয়ী বলেন, আমাকে দুই (সাহাবী) ব্যক্তি ইহা জ্ঞাপন করিয়াছেন যে, বিদায় হজ্জকালে (মক্কায়) তাঁহারা উভয়ে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট গেলেন, তখন তিনি যাকাত বণ্টন করিতেছেন এবং তাঁহার নিকট তাঁহারা উহার কিছু চাহিলেন। তাঁহারা বলেন, তখন হুযূর আমাদের প্রতি দৃষ্টি উঠাইলেন অতঃপর দৃষ্টি নীচু করিলেন এবং দেখিলেন যে, আমরা কর্মক্ষম। তখন বলিলেনঃ যদি তোমরা চাও আমি তোমাদের দিতে পারি; কিন্তু মনে রাখিও যে, ইহাতে অবস্থাপন্ন ব্যক্তি অথবা শক্তিবান রোযগারক্ষম ব্যক্তির কোন অংশ নাই। –আবু দাউদ ও নাসায়ী