মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

১৯- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৭৪১
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা
৩৭৪১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আবু আওফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত শাসক তাহার শাসনে (বিচার-আচারে) যুল্‌ম বা অন্যায় করিবে না, ততক্ষণ নাগাদ আল্লাহর সাহায্য তাহার সঙ্গে বহাল থাকে। কিন্তু সে যখন যুলম বা অন্যায় করিতে লাগে, তখন আল্লাহর সাহায্য তাহার উপর হইতে সরিয়া যায় এবং তদস্থলে শয়তান তাহার সঙ্গী হয়। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্ (ইবনে মাজাহর) আরেক রেওয়ায়তে আছে, যখন সে যুলম করে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে তাহার নফসের উপর সোপর্দ করিয়া দেন।
كتاب الإمارة والقضاء
وَعَنْ عَبْدُ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ مَعَ الْقَاضِي مَا لَمْ يَجُرْ فَإِذَا جَارَ تَخَلَّى عَنْهُ وَلَزِمَهُ الشَّيْطَانُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَفِي رِوَايَةٍ: «فَإِذَا جارَ وَكله إِلَى نَفسه»
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৭৪২
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা
৩৭৪২। সায়ীদ ইবনে মুসাইয়াব (রঃ) হইতে বর্ণিত, একদা এক মুসলমান ও এক ইহুদী তাহাদের উভয়ের এক বিবাদ লইয়া হযরত ওমর (রাঃ)-এর নিকট আসিল। হযরত ওমর (রাঃ) ইহুদীর দাবীটাকে সত্য বুঝিলেন এবং তাহার পক্ষে রায় দিয়া দিলেন। ইহার পর ইহুদী হযরত ওমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করিয়া বলিল, খোদার কসম! আপনি সত্য বিচারই করিয়াছেন। এই কথা শোনার পর হযরত ওমর তাহাকে চাবুক দিয়া আঘাত করিলেন এবং বলিলেন, তুমি কিরূপে জানিতে পারিয়াছ যে, ইহা সত্য বিচার হইয়াছে ? উত্তরে ইহুদী বলিল, খোদার কসম! আমরা তওরাত কিতাবে পাইয়াছি যে, যেই শাসক ন্যায়বিচার করে, তাহার ডানে ও বামে দুই পার্শ্বে দুইজন ফেরেশ্তা থাকেন। তাহারা তার কাজটিকে দুরুস্ত করিয়া দেন এবং ন্যায় কাজ করার মধ্যে সাহায্য করেন আর যতক্ষণ তিনি এই ন্যায়ের মধ্যে থাকেন, ফিরিশতারাও তাহার সঙ্গে থাকেন। কিন্তু তিনি যখন ন্যায়ের পথ বর্জন করেন, তখন ফিরিশতারা উভয়েই উপরে চলিয়া যান এবং তাহার সঙ্গ পরিহার করেন। —মালেক
كتاب الإمارة والقضاء
وَعَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ: أَنَّ مُسْلِمًا وَيَهُودِيًّا اخْتَصَمَا إِلَى عُمَرَ فَرَأَى الْحَقَّ لِلْيَهُودِيِّ فَقَضَى لَهُ عُمَرُ بِهِ فَقَالَ لَهُ الْيَهُودِيُّ: وَاللَّهِ لَقَدْ قَضَيْتَ بِالْحَقِّ فَضَرَبَهُ عُمَرُ بِالدِّرَّةِ وَقَالَ: وَمَا يُدْريكَ؟ فَقَالَ الْيَهُودِيُّ: وَاللَّهِ إِنَّا نَجِدُ فِي التَّوْرَاةِ أَنَّهُ لَيْسَ قَاضٍ يَقْضِي بِالْحَقِّ إِلَّا كَانَ عَنْ يَمِينِهِ مَلَكٌ وَعَنْ شِمَالِهِ مَلَكٌ يُسَدِّدَانِهِ وَيُوَفِّقَانِهِ لِلْحَقِّ مَا دَامَ مَعَ الْحَقِّ فَإِذَا تركَ الحقَّ عرَجا وترَكاهُ. رَوَاهُ مَالك
হাদীস নং: ৩৭৪৩
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা
৩৭৪৩। হযরত ইবনে মাওয়াহব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা হযরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) ইবনে ওমর (রাঃ)-কে বলিলেন, আপনি মানুষের মাঝে বিচার করুন! (অর্থাৎ, আপনি বিচারকের পদ গ্রহণ করুন।) উত্তরে ইবনে ওমর (রাঃ) বলিলেন, বরং হে আমীরুল মু'মিনীন! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। হযরত ওসমান (রাঃ) বলিলেন, আপনি উক্ত পদটিকে কেন অপছন্দ করিতেছেন? অথচ আপনার পিতা তো (খলীফা নিযুক্ত হওয়া ছাড়াও অন্য সময় বিচারক নিযুক্ত হইয়া বিচার করিয়াছেন। এইবার ইবনে ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি শাসক নিযুক্ত হইয়া ন্যায়পরায়ণতার সহিত বিচার করে, তাহার জন্য ইহাই শ্রেয়ঃ যে, সে উহা হইতে সমান সমানভাবে অব্যাহতি লাভ করিতে পারে। (অর্থাৎ, উক্ত পদে থাকিয়া ফযীলত ও মর্যাদা লাভের আশা করা তো দূরের কথা, তাহার জন্য ইহাই সৌভাগ্য বলিয়া গণ্য হইবে যে, সে পারিতোষিকের অধিকারী না হইলেও অন্ততঃপক্ষে শাস্তি হইতে মুক্ত থাকিতে পারিয়াছে। সমান সমানভাবে অব্যাহতির দ্বারা ইহাই বুঝান হইয়াছে যে, লাভ না হইলে কমপক্ষে লোকসানেরও সম্মুখীন হয় নাই।) বর্ণনাকারী বলেন, ইবনে ওমরের এই কথা শুনিয়া হযরত ওসমান (রাঃ) এই সম্পর্কে তাঁহার সাথে আর কোন কথাবার্তা বলেন নাই। – তিরমিযী
كتاب الإمارة والقضاء
وَعَنِ ابْنِ مَوْهَبٍ: أَنَّ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ لِابْنِ عُمَرَ: اقْضِ بَين النَّاس قَالَ: أَو تعاقبني يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ قَالَ: وَمَا تَكْرَهُ مِنْ ذَلِك وَقد كَانَ أَبوك قَاضِيا؟ قَالَ: لِأَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ كَانَ قَاضِيًا فَقَضَى بِالْعَدْلِ فَبِالْحَرِيِّ أَنْ يَنْقَلِبَ مِنْهُ كَفَافًا» . فَمَا راجعَه بعدَ ذَلِك. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৭৪৪
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা
৩৭৪৪। আর রাযীনের এক রেওয়ায়ত নাফে' হইতে বর্ণিত হইয়াছে যে, হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) হযরত ওসমান (রাঃ)-কে বলিলেন, হে আমীরুল মু'মিনীন! আমি দুই ব্যক্তির মধ্যেও বিচার করিব না (বা বিচারক হইব না)। তখন হযরত ওসমান (রাঃ) বলিলেন, কেন? আপনার পিতা তো বিচারকের দায়িত্ব পালন করিয়াছেন। উত্তরে ইবনে ওমর (রাঃ) বলিলেন, অবশ্য আপনার কথা ঠিক। তবে এই সম্পর্কে আমার পিতা যদি কোন সমস্যায় পড়িতেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করিতেন, আর যদি হযরত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিজেই কোন ব্যাপারে সমস্যায় পড়িতেন, তখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিসসালামকে জিজ্ঞাসা করিতেন। আর এখন আমি সমস্যায় পড়িলে কাহার নিকট জিজ্ঞাসা করিব? আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে পানাহ্ চায়, সে বিরাট সত্তার আশ্রয় নিল। আর আমি হুযূর (ﷺ)-কে এই কথা বলিতেও শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর দোহাই দিয়া পানাহ্ চায়, তোমরা তাহাকে পানাহ্ দাও। সুতরাং আমি আল্লাহ্র দোহাই দিয়া বলিতেছি যে, আপনি আমাকে কাযী বা বিচারক নিযুক্ত করিবেন না। অতঃপর হযরত ওসমান (রাঃ) ইবনে ওমরকে অব্যাহতি দিলেন এবং বলিলেন, আপনি এই কথাগুলি আর কাহারও নিকট প্রকাশ করিবেন না। (অন্যথায় কোন ব্যক্তিই এই কাজে নিয়োগ হইতে রাযী হইবে না।)
كتاب الإمارة والقضاء
وَفِي رِوَايَةِ رَزِينٍ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ لِعُثْمَانَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ لَا أَقْضِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ: قَالَ: فَإِنَّ أَبَاكَ كَانَ يَقْضِي فَقَالَ: إِنَّ أَبِي لَوْ أُشْكِلَ عَلَيْهِ شَيْءٌ سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَوْ أُشْكِلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْءٌ سَأَلَ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَإِنِّي لَا أَجِدُ مَنْ أَسْأَلُهُ وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ عَاذَ بِاللَّهِ فَقَدْ عَاذَ بِعَظِيمٍ» . وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: «مَنْ عَاذَ بِاللَّهِ فَأَعِيذُوهُ» . وَإِنِّي أَعُوذُ باللَّهِ أنْ تجعلَني قاضِياً فأعْفاهُ وَقَالَ: لَا تُخبرْ أحدا
tahqiq

তাহকীক: