মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
হাদীস নং: ৩৯৩০
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - কাফির রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট পত্র প্রেরণ ও ইসলামের প্রতি আহবান
৩৯৩০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আবু আওফা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, জেহাদের কোন এক অভিযানে শত্রু পক্ষের মুখোমুখি হইয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষায় থাকিলেন, অবশেষে যখন সূর্য ঢলিয়া পড়িল, তখন তিনি লোকদের উদ্দেশ্যে দাঁড়াইয়া বলিলেনঃ হে লোকসকল। শত্রুর মোকাবিলার আকাঙ্ক্ষা করিও না; বরং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার প্রার্থনা কর। তবে শত্রুর বিরুদ্ধে) মোকাবিলা সংঘটিত হইয়া গেলে তখন ধৈর্যধারণ কর এবং জানিয়া রাখ, তলোয়ারের ছায়ার নীচেই জান্নাত অবস্থিত। অতঃপর হুযুর (ছাঃ) দো'আ করিলেন, আয় আল্লাহ্। কিতাব (কোরআন) নাযিলকারী, মেঘমালা পরিচালনকারী এবং শত্রুদলকে পরাস্তকারী। তুমি তাহাদিগকে পরাস্ত করিয়া দাও এবং তাহাদের বিরুদ্ধে আমাদেরে সাহায্য কর। মোত্তাঃ
كتاب الجهاد
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أوفى: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ أَيَّامِهِ الَّتِي لَقِيَ فِيهَا الْعَدُوَّ انْتَظَرَ حَتَّى مَالَتِ الشَّمْسُ ثُمَّ قَامَ فِي النَّاسِ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ لَا تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ وَاسْأَلُوا اللَّهَ الْعَافِيَةَ فَإِذَا لَقِيتُمْ فَاصْبِرُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ ظِلَالِ السُّيُوفِ» ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ وهازم الْأَحْزَاب واهزمهم وَانْصُرْنَا عَلَيْهِم»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩১
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - কাফির রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট পত্র প্রেরণ ও ইসলামের প্রতি আহবান
৩৯৩১। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখনই আমাদিগকে লইয়া কোন সম্প্রদায়ের সহিত জেহাদ করিতে যাইতেন, ভোর না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ করিতেন না। আর তাহাদের ব্যাপারে অপেক্ষা করিতেন। যদি আযান শুনিতে পাইতেন, তখন তাহাদের উপর আক্রমণ হইতে বিরত থাকিতেন। আর আযান না শুনিলে আক্রমণ করিতেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা খায়বারের লড়াইয়ের জন্য রওয়ানা হইলাম এবং রাত্রের বেলায় আমরা তথায় গিয়া পৌঁছিলাম। যখন ভোর হইল এবং কোন আযানও শুনা গেল না, তখন নবী (ছাঃ) সওয়ার হইলেন এবং আমিও হযরত আবু তালহার পিছনে সওয়ার হইলাম এবং (সওয়ারী -দ্বয় পাশাপাশি চলার কারণে) আমার পা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদ মুবারক স্পর্শ করিতেছিল। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, এই সময় খায়বারের বাসিন্দারা তাহাদের (খেত খামারে কাজকর্ম করিবার উদ্দেশ্যে) কাস্তে কোদাল ও ঝুড়ি লইয়া বাহির হইয়া আমাদের দিকে আগাইয়া আসিল এবং রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখিয়াই বলিয়া উঠিল, এই যে মুহাম্মাদ ! আল্লাহর কসম, মুহাম্মাদ এবং তাঁহার পঞ্চবাহিনী আসিয়া গিয়াছে। (ইহাতে তাহাদের মনে ভীতির সঞ্চার হইল,) অতঃপর দৌড়াইয়া গিয়া দুর্গের ভিতরে আশ্রয় গ্রহণ করিল। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদেরে দেখামাত্র বলিয়া উঠিলেন, আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর। খায়বার ধ্বংস হউক। আমরা যখন কোন জাতির দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হই, তখন সতর্ককৃতদের প্রভাত খুবই মন্দ হইয়া থাকে। — মোত্তাঃ
كتاب الجهاد
وَعَنْ أَنَسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا غَزَا بِنَا قَوْمًا لَمْ يَكُنْ يَغْزُو بِنَا حَتَّى يُصْبِحَ وَيَنْظُرَ إِلَيْهِمْ فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا كَفَّ عَنْهُمْ وَإِنْ لَمْ يَسْمَعْ أَذَانًا أَغَارَ عَلَيْهِمْ قَالَ: فَخَرَجْنَا إِلَى خَيْبَرَ فَانْتَهَيْنَا إِلَيْهِمْ لَيْلًا فَلَمَّا أَصْبَحَ وَلَمْ يسمَعْ أذاناً رِكبَ ورَكِبْتُ خلفَ أبي طلحةَ وَإِنَّ قَدَمِي لَتَمَسُّ قَدِمَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: فَخَرَجُوا إِلَيْنَا بَمَكَاتِلِهِمْ ومساحيهم فَلَمَّا رأى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوا: مُحَمَّدٌ واللَّهِ محمّدٌ والخميسُ فلَجؤوا إِلَى الْحِصْنِ فَلَمَّا رَآهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قومٍ فساءَ صباحُ المُنْذَرينَ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩২
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - কাফির রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট পত্র প্রেরণ ও ইসলামের প্রতি আহবান
৩৯৩২। হযরত নোমান ইবনে মুকাররিন ( রাঃ) বলেন, আমি অনেক যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে শরীক ছিলাম। হুযূর (ছাঃ)-এর নিয়ম ছিল, যদি তিনি কোন সময় দিনের প্রথম ভাগে যুদ্ধ শুরু না করিতেন, তবে স্নিগ্ধ বায়ু প্রবাহিত হওয়া পর্যন্ত এবং নামাযের ওয়াক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করিতেন। -বুখারী
كتاب الجهاد
وَعَن النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ قَالَ: شَهِدْتُ الْقِتَالَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ إِذَا لَمْ يُقَاتِلْ أَوَّلَ النَّهَارِ انْتَظَرَ حَتَّى تهب الْأَرْوَاح وتحضر الصَّلَاة. رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩৩
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কাফির রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট পত্র প্রেরণ ও ইসলামের প্রতি আহবান
৩৯৩৩। হযরত নো'মান ইবনে মুকাররিন (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাথে (যুদ্ধে) উপস্থিত ছিলাম। হুযূর (ﷺ)-এর নিয়ম ছিল, তিনি কোন যুদ্ধে দিনের প্রথম ভাগে লড়াই শুরু করিতে না পারিলে অপেক্ষা করিতেন, যতক্ষণ না সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলিয়া পড়ে ও স্নিগ্ধ বায়ু প্রবাহিত হয় এবং আল্লাহর সাহায্য নাযিল হয়। —আবু দাউদ
كتاب الجهاد
الْفَصْل الثَّانِي
عَن النُّعْمَان بن مقرن قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ إِذَا لَمْ يُقَاتِلْ أَوَّلَ النَّهَارِ انْتَظَرَ حَتَّى تَزُولَ الشَّمْسُ وَتَهُبَّ الرِّيَاحُ وينزِلَ النَّصرُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৯৩৪
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কাফির রাষ্ট্রপ্রধানদের নিকট পত্র প্রেরণ ও ইসলামের প্রতি আহবান
৩৯৩৪। কাতাদাহ্ (রহঃ) হইতে বর্ণিত, নো'মান ইবনে মুকাররিন (রাঃ) বলিয়াছেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাথে যুদ্ধ করিয়াছি। তাঁহার অভ্যাস ছিল, যখন ফজরের সময় হইয়া যাইত, তখন সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত (যুদ্ধ হইতে) বিরত থাকিতেন। যখন সূর্য উদয় হইয়া যাইত, তখন যুদ্ধ আরম্ভ করিতেন। আবার মধ্যাহ্ন হইলে লড়াই বন্ধ রাখিতেন যতক্ষণ না সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলিয়া পড়ে। আবার যখন সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলিয়া পড়িত, তখন (যোহরের নামায আদায় করিয়া) আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত যুদ্ধ চালাইয়া যাইতেন। আবার আসরের নামাযের জন্য বিরতি দিতেন। নামায শেষে পুনরায় যুদ্ধ আরম্ভ করিতেন। বর্ণনাকারী কাতাদাহ্ বলেন, (সূর্য ঢলিয়া যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার কারণ হিসাবে) সাহাবায়ে কেরামগণ বলিতেন, সেই সময় আল্লাহর পক্ষ হইতে বিজয়-বায়ু প্রবাহিত হয়। আর মু'মিনগণ তাহাদের নামাযে নিজ সৈন্যদের জন্য দো'আ করেন। —তিরমিযী
كتاب الجهاد
وَعَن قتادةَ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ قَالَ: غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ أَمْسَكَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَإِذَا طَلَعَتْ قَاتَلَ فَإِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ أَمْسَكَ حَتَّى تَزُولَ الشَّمْسُ فَإِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ قَاتَلَ حَتَّى الْعَصْرِ ثُمَّ أَمْسَكَ حَتَّى يُصَلَّى الْعَصْرُ ثُمَّ يُقَاتِلُ قَالَ قَتَادَةُ: كَانَ يُقَالُ: عِنْدَ ذَلِكَ تُهِيجُ رِيَاحُ النَّصْرِ وَيَدْعُو الْمُؤْمِنُونَ لِجُيُوشِهِمْ فِي صلَاتهم. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
তাহকীক: