মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৪ টি
হাদীস নং: ৪০২১
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২১। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর যমানায় একটি সেনাদল গনীমতের মালে কিছু খাদ্যদ্রব্য ও কিছু মধু লাভ করিল। কিন্তু তাহাদের নিকট হইতে খুমুস লওয়া হয় নাই। –আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَن ابنِ عُمَرَ: أَنَّ جَيْشًا غَنِمُوا فِي زَمَنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا وَعَسَلًا فَلَمْ يُؤخذْ منهمُ الْخمس. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২২
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২২। আব্দুর রহমান ইবনে খালেদের গোলাম হযরত কাসেম নবী (ﷺ)-এর জনৈক সাহাবী হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, যুদ্ধের সময় আমরা উটের গোশত খাইতাম, কিন্তু (গনীমতের মালের ন্যায়) উহাকে বণ্টন করিতাম না। এমন কি যখন আমরা নিজেদের তাঁবুতে ফিরিয়া আসিতাম, তখন দেখিতাম, আমাদের খাদ্যভাণ্ডগুলি পরিপূর্ণ হইয়া আছে। –আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَنِ الْقَاسِمِ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كنَّا نأكلُ الجَزورَ فِي الغزْوِ وَلَا نُقَسِّمُهُ حَتَّى إِذَا كُنَّا لَنَرْجِعُ إِلَى رِحَالِنَا وأخْرِجَتُنا مِنْهُ مَمْلُوءَة. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৩
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৩। হযরত উবাদাহ্ ইবনে ছামেত (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিতেনঃ গনীমতের সূতা এবং সূঁচও জমা দিয়া দাও। সাবধান! গনীমতের মাল আত্মসাৎ করা হইতে বাঁচিয়া থাক। কেননা, আত্মসাৎ কিয়ামতের দিন তাহার জন্য চরমভাবে অপমানের কারণ হইবে। —দারেমী।
كتاب الجهاد
وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «أَدُّوا الْخِيَاطَ وَالْمِخْيَطَ وَإِيَّاكُمْ وَالْغُلُولَ فَإِنَّهُ عَارٌ عَلَى أَهْلِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৪
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৪। আর নাসায়ী এই হাদীসটি আমর ইবনে শোআয়ব হইতে, তিনি তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الجهاد
وَرَوَاهُ النَّسَائِيُّ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৫
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৫। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাহার পিতা হইতে, তিনি তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একদা নবী (ﷺ) একটি উটের কাছে গেলেন এবং উহার কুঁজের পশম ধরিয়া বলিলেনঃ হে লোকসকল! এই সমস্ত গনীমতের সম্পদ হইতে আমি কিছুরই মালিক নই। এমন কি ইহার (এই পশমের)-ও আমি মালিক নই। এবং (এই কথা বলার পর) তিনি তাঁহার অঙ্গুলী উঠাইয়া বলিলেন, শুধু এক পঞ্চমাংশ (-এর উপর আমার অধিকার রহিয়াছে)। আর সেই পঞ্চমাংশও অবশেষে তোমাদের মধ্যে বিতরণ করা হইবে। সুতরাং (গনীমতের মাল যাহাকিছুই তোমাদের কাছে আছে, এমন কি) সূঁচ এবং সূতা (থাকিলে)-ও জমা দিয়া দাও। এই কথা শুনিয়া এক ব্যক্তি হাতের মধ্যে পশমের এক খণ্ড রশি লইয়া দাঁড়াইয়া বলিল, (ইয়া রাসূলাল্লাহ্ !) আমি আমার সওয়ারীর উপরে বসিবার গদির নীচের কম্বল বা ছালাটি সিলাইবার জন্য ইহা লইয়াছি। তখন নবী (ﷺ) বলিলেন, অবশ্য ইহার মধ্যে আমার ও বনী আব্দুল মোত্তালিবের যেই পরিমাণ অংশ রহিয়াছে, তাহা তোমার (অর্থাৎ উহা তোমাকে দান করিলাম। কিন্তু অন্যান্য লোকের অংশগুলি তোমাকে দান করিবে কে?) এই কথা শুনিয়া লোকটি বলিয়া উঠিল, এই এক গুচ্ছ পশমের অবস্থা যখন এই পর্যায়ে পৌঁছিয়াছে, তবে আর আমার ইহার প্রয়োজন নাই। এই বলিয়া সে উহা (পশমের রশিটি) ছুঁড়িয়া ফেলিল। –আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: دَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَعِيرٍ فَأَخَذَ وَبَرَةً مِنْ سَنَامِهِ ثُمَّ قَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَيْسَ لِي مِنْ هَذَا الْفَيْءِ شَيْءٌ وَلَا هَذَا وَرَفَعَ إِصْبَعَهُ إِلَّا الْخُمُسَ وَالْخُمُسُ مَرْدُودٌ عَلَيْكُمْ فَأَدُّوا الْخِيَاطَ وَالْمِخْيَطَ» فَقَامَ رَجُلٌ فِي يَدِهِ كُبَّةٌ شَعَرٍ فَقَالَ: أَخَذْتُ هَذِهِ لِأُصْلِحَ بِهَا بَرْدَعَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَّا مَا كانَ لي ولبني عبدِ المطلبِ فهوَ لكَ» . فَقَالَ: أمّا إِذا بَلَغَتْ مَا أَرَى فَلَا أَرَبَ لِي فِيهَا ونبَذَها. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৬
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৬। হযরত আমর ইবনে আবাসাহ্ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) গনীমতের একটি উটকে সম্মুখে রাখিয়া আমাদিগকে নিয়া নামায পড়িলেন। সালাম ফিরাইবার পর উটটির পাঁজরের পশম ধরিয়া বলিলেনঃ তোমাদের এই গনীমতের সম্পদ হইতে এক পঞ্চমাংশ ব্যতীত এই (পশম) পরিমাণও আমার জন্য হালাল নহে। আর সেই পঞ্চমাংশও তোমাদের মধ্যে ফিরাইয়া দেওয়া হইবে। –আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَن عمْرو بن عَبَسةَ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى بَعِيرٍ مِنَ الْمَغْنَمِ فَلَمَّا سَلَّمَ أَخَذَ وَبَرَةً مِنْ جَنْبِ الْبَعِيرِ ثُمَّ قَالَ: «وَلَا يَحِلُّ لِي مِنْ غَنَائِمِكُمْ مِثْلُ هَذَا إِلَّا الْخُمُسُ وَالْخُمُسُ مَرْدُودٌ فِيكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৭
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৭। হযরত জুবায়র ইবনে মুতয়িম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার নিকটতম আত্মীয়ের অংশটি বনী হাশেম এবং বনী মুত্তালিবের মধ্যে বণ্টন করিলেন, তখন আমি ও ওসমান ইবনে আফফান তাঁহার নিকট যাইয়া বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। বনী হাশেম আমাদের ভাই, আমরা তাহাদের (আমাদের এই সমস্ত হাশেমী ভাইদের) সামাজিক মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অস্বীকার করিতেছি না। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে তাহাদের মধ্যেই পয়দা করিয়াছেন। তবে (অনুগ্রহপূর্বক) বলুন, আপনি আমাদের মোত্তালিবী ভাইদিগকে তো প্রদান করিলেন, কিন্তু আমাদিগকে বাদ দিয়া দিলেন, অথচ আমাদের আত্মীয়তা ও তাহাদের আত্মীয়তা একই পর্যায়ের। উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ প্রকৃতপক্ষে বনী হাশেম ও বনী মোত্তালিব এইরূপ এক ও অভিন্ন। এই বলিয়া তিনি তাঁহার হাতের অঙ্গুলীগুলি একটির মধ্যে আরেকটি প্রবেশ করাইয়া দেখাইলেন । —শাফেয়ী। আর আবু দাউদ ও নাসায়ীর বর্ণনা প্রায় অনুরূপই। তবে সেই রেওয়ায়তের মধ্যে আছে, হুযূর (ﷺ) বলিয়াছেন, আমি ও বনী মোত্তালিব কখনও বিচ্ছিন্ন হই নাই। জাহিলী যুগেও না এবং ইসলামের মধ্যেও না; বরং আমরা ও তাহারা বস্তুত এক ও অভিন্ন। এই বলিয়া তিনি তাঁহার হাতের অঙ্গুলীগুলিকে তাশ্বীক করিলেন।
كتاب الجهاد
وَعَن جُبير بنُ مُطعِمٍ قَالَ: لَمَّا قَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَهْمَ ذَوِي الْقُرْبَى بَيْنَ بَنِي هَاشِمٍ وَبَنِي الْمُطَّلِبِ أَتَيْتُهُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَؤُلَاءِ إِخْوَانُنَا مِنْ بَنِي هَاشِمٍ لَا نُنْكِرُ فَضْلَهُمْ لِمَكَانِكَ الَّذِي وضعكَ اللَّهُ مِنْهُمْ أَرَأَيْتَ إِخْوَانَنَا مِنْ بَنِي الْمُطَّلِبِ أَعْطَيْتَهُمْ وَتَرَكْتَنَا وَإِنَّمَا قَرَابَتُنَا وَقَرَابَتُهُمْ وَاحِدَةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وَبَنُو الْمُطَّلِبِ شَيْءٌ وَاحِدٌ هَكَذَا» . وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ. رَوَاهُ الشَّافِعِيُّ وَفِي رِوَايَةِ أَبِي دَاوُدَ وَالنَّسَائِيِّ نَحْوُهُ وَفِيهِ: «إِنَّا وَبَنُو الْمُطَّلِبِ لَا نَفْتَرِقُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلَا إِسْلَامٍ وَإِنَّمَا نَحْنُ وَهُمْ شَيْءٌ وَاحِدٌ» وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৮
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৮। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন সারিতে (ব্যূহে) দাঁড়াইয়া আমার ডানে ও বামে তাকাইলাম। দেখিলাম, আমি দুইজন অল্প বয়স্ক তরুণ আনসারীর মাঝে দাঁড়াইয়া আছি। তখন আমি মনে মনে এই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করিলাম, কতই না উত্তম হইত যদি আমি এই দুইজন তরুণ অপেক্ষা বীর যোদ্ধার মাঝখানে দাঁড়াইতাম। ইত্যবসরে তাহাদের একজন আমাকে টোকা দিয়া বলিল, চাচাজান! আপনি কি আবু জাহলকে চিনেন? আমি বলিলাম, হ্যাঁ, চিনি। তবে হে বৎস! তাহাকে তোমার কি প্রয়োজন? সে বলিল, আমাকে সংবাদ দেওয়া হইয়াছে যে, সে নাকি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে গালি দেয়। যাঁহার অধিকারে আমার প্রাণ, তাঁহার শপথ করিয়া বলিতেছি, যদি আমি তাহাকে দেখিতে পাই, তাহা হইলে আমাদের (অর্থাৎ, আমার ও আবু জাহলের) মধ্যে যাহার মৃত্যু আগে নির্ধারিত সে মৃত্যুবরণ না করা পর্যন্ত তাহার ও আমার দেহ পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইবে না। আব্দুর রহমান বলেন, তাহার কথা শুনিয়া আমি বিস্মিত হইলাম। তিনি আরও বলেন, ইত্যবসরে অপর তরুণটিও আমাকে টোকা দিয়া একই ধরনের কথা বলিল । আমাদের কথাবার্তা শেষ না হইতেই দেখিতে পাইলাম, আবু জাহল লোকদের মাঝে ঘোরাফেরা করিতেছে। তখন আমি তরুণদ্বয়কে বলিলাম, তোমরা উভয়ে যাহার সম্পর্কে আমার কাছে জানিতে চাহিয়াছ, ঐ সেই ব্যক্তি। আব্দুর রহমান বলেন, আমার কথা শুনামাত্রই তাহারা উভয়েই তরবারি হাতে দ্রুতবেগে যাইয়া তাহাকে আক্রমণ করিল, এমন কি তাহাকে হত্যা করিয়াই ফেলিল। অতঃপর তাহারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে ফিরিয়া আসিয়া তাহাকে ঘটনাটি অবহিত করিল। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমাদের মধ্যে কে তাহাকে হত্যা করিয়াছে? তাহারা উভয়েই বলিল, “আমিই তাহাকে হত্যা করিয়াছি।” এইবার তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা, তোমরা কি নিজ নিজ তরবারিখানা মুছিয়া ফেলিয়াছ? তাহারা বলিল, না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাদের উভয়ের তলোয়ার দুইখানা দেখিয়া বলিলেনঃ তোমরা উভয়েই তাহাকে হত্যা করিয়াছ। এই বলিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহার (আবু জাহলের) পরিত্যক্ত বস্তুগুলি মুআয ইবনে আমর ইবনে জমুহ্ পাইবে বলিয়া রায় দিলেন। এই তরুণদ্বয় ছিল মুআয ইবনে আমর ইবনে জমুহ্ ও মুআয ইবনে আফরা। —মোত্তাঃ
كتاب الجهاد
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ: إِنِّي وَاقِفٌ فِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي فَإِذَا بِغُلَامَيْنِ مِنَ الْأَنْصَارِ حَدِيثَة أسنانها فتمنيت أَنْ أَكُونَ بَيْنَ أَضْلَعَ مِنْهُمَا فَغَمَزَنِي أَحَدُهُمَا فَقَالَ: يَا عَمِّ هَلْ تَعْرِفُ أَبَا جَهْلٍ؟ قُلْتُ: نَعَمْ فَمَا حَاجَتُكَ إِلَيْهِ يَا ابْنَ أَخِي؟ قَالَ: أُخْبِرْتُ أَنَّهُ يَسُبُّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَئِنْ رَأَيْتُهُ لَا يُفَارِقُ سَوَادِي سَوَادَهُ حَتَّى يَمُوتَ الْأَعْجَلُ مِنَّا فَتَعَجَّبْتُ لِذَلِكَ قَالَ: وَغَمَزَنِي الْآخَرُ فَقَالَ لِي مِثْلَهَا فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ نَظَرْتُ إِلَى أَبِي جَهْلٍ يَجُولُ فِي النَّاسِ فَقُلْتُ: أَلَا تَرَيَانِ؟ هَذَا صَاحِبُكُمَا الَّذِي تَسْأَلَانِي عَنْهُ قَالَ: فابتدراه بسيفهما فَضَرَبَاهُ حَتَّى قَتَلَاهُ ثُمَّ انْصَرَفَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فأخبراهُ فَقَالَ: «أَيُّكُمَا قَتَلَهُ؟» فَقَالَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا: أَنَا قَتله فَقَالَ: «هلْ مسحتُما سيفَيكما؟» فَقَالَا: لَا فَنَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى السَّيْفَيْنِ فَقَالَ: «كِلَاكُمَا قَتَلَهُ» . وَقَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِسَلَبِهِ لِمُعَاذِ بن عَمْرِو بن الْجَمُوحِ وَالرَّجُلَانِ: مُعَاذُ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ ومعاذ بن عفراء
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০২৯
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০২৯। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন (যুদ্ধ শেষে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ কে আছ যে আবু জাহলের অবস্থা জানিয়া আসিতে পারে ? ইহা শুনিয়া হযরত ইবনে মাসউদ চলিয়া গেলেন এবং যাইয়া দেখিলেন, আফরার দুই পুত্র তাহাকে (আবু জাহলকে এমনভাবে আঘাত করিয়াছে যে, সে অচেতন অবস্থায় পড়িয়া আছে। হযরত আনাস বলেন, অতঃপর হযরত ইবনে মাসউদ তাহার দাড়ি ধরিয়া বলিলেন, তুমিই কি আবু জাহল ? (এই অপমান ও তিরস্কারকে চাপা দেওয়ার জন্য) আবু জাহল বলিল, এক ব্যক্তিকে তোমরা কতল করিয়াছ, ইহার চেয়ে বেশী (কৃতিত্ব) আর কি? অন্য এক রেওয়ায়তে বর্ণিত আছে, আবু জাহল (অনুশোচনার সাথে আক্ষেপ করিয়া) বলিল, যদি আমাকে চাষীরা ব্যতীত অন্য কেহ হত্যা করিত। — মোত্তাঃ
كتاب الجهاد
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ بَدْرٍ: «مَنْ يَنْظُرُ لَنَا مَا صَنَعَ أَبُو جَهْلٍ؟» فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ قَالَ: فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ فَقَالَ: أَنْتَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالَ: وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوهُ. وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ: فَلَوْ غَيْرُ أَكَّارٍ قتلني
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০৩০
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০৩০। হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একদল লোককে কিছু দান করিলেন, আর আমি তথায় উপবিষ্ট ছিলাম, কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উহাদের একজনকে দিলেন না। অথচ আমার ধারণা মতে সেই লোকটিই ছিল সর্বাপেক্ষা উত্তম ও যোগ্য ব্যক্তি। সুতরাং আমি দাঁড়াইলাম এবং বলিলাম, অমুক লোকটিকে আপনি বাদ দিলেন কেন? আল্লাহর কসম, আমি তো তাহাকে মু'মিন বলিয়া জানি। জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ বরং মুসলমান (বল)। এইভাবে হযরত সা'দ উক্ত কথাটিকে তিনবার পুনরাবৃত্তি করিলেন, আর হুযূর (ﷺ)-ও তাহাকে অনুরূপ উত্তর দিলেন। অতঃপর হুযূর (ﷺ) বলিলেন, (হে সা'দ!) আমি অবশ্য ব্যক্তিবিশেষকে দান করি, অথচ অন্য লোক (যাহাকে আমি দান করিতেছি না) সে আমার নিকট ঐ লোক অপেক্ষা অধিক প্রিয়। (তবুও আমি এই আশংকায় এইরূপ করি, যেন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে উল্টা মুখে আগুনে ফেলিয়া না দেন। – মোত্তাঃ
বুখারী ও মুসলিমের অন্য রেওয়ায়তে আছে, ইমাম যুহরী বলিয়াছেন, আমরা মনে করি, ইসলাম হইল মুখে কালেমা উচ্চারণ করা। আর ঈমান হইল নেক আমল করা।
বুখারী ও মুসলিমের অন্য রেওয়ায়তে আছে, ইমাম যুহরী বলিয়াছেন, আমরা মনে করি, ইসলাম হইল মুখে কালেমা উচ্চারণ করা। আর ঈমান হইল নেক আমল করা।
كتاب الجهاد
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَهْطًا وَأَنَا جَالِسٌ فَتَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مِنْهُم رَجُلًا وَهُوَ أَعْجَبُهُمْ إِلَيَّ فَقُمْتُ فَقُلْتُ: مَا لَكَ عَنْ فُلَانٍ؟ وَاللَّهِ إِنِّي لَأُرَاهُ مُؤْمِنًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أوْ مُسلما» ذكرَ سَعْدٌ ثَلَاثًا وَأَجَابَهُ بِمِثْلِ ذَلِكَ ثُمَّ قَالَ: «إِنِّي لَأُعْطِي الرَّجُلَ وَغَيْرُهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْهُ خَشْيَةَ أَنْ يُكَبَّ فِي النَّارِ عَلَى وَجْهِهِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: قَالَ الزُّهْرِيُّ: فترى: أَن الْإِسْلَام الْكَلِمَة وَالْإِيمَان الْعَمَل الصَّالح
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০৩১
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা
৪০৩১। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বদর যুদ্ধের দিন দাঁড়াইয়া বলিলেনঃ ওসমান আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের প্রয়োজনে গিয়াছে। সুতরাং আমি তাহার পক্ষ হইতে বায়আত করিতেছি। অতঃপর (যুদ্ধ শেষে) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁহার জন্যও গনীমতের একভাগ নির্ধারণ করিয়াছেন। অথচ তিনি ব্যতীত যুদ্ধে শরীক হয় নাই এমন কোন ব্যক্তিকে গনীমতের অংশ দেন নাই। –আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ يَعْنِي يَوْمَ بَدْرٍ فَقَالَ: «إِنَّ عُثْمَانَ انْطَلَقَ فِي حَاجَةِ اللَّهِ وَحَاجَةِ رَسُولِهِ وَإِنِّي أُبَايِعُ لَهُ» فَضَرَبَ لَهُ رسولُ الله بِسَهْمٍ وَلَمْ يَضْرِبْ بِشَيْءٍ لِأَحَدٍ غَابَ غَيْرَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০৪২
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - সন্ধি স্থাপন
৪০৪২। হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা ও মারওয়ান ইবনে হাকাম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তাহারা উভয়ে বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হোদাইবিয়ার বৎসর এক হাজারেরও অধিক সঙ্গী সাথে লইয়া রওয়ানা হইলেন এবং যুল-হোলাইফা নামক স্থানে আসিয়া কোরবানীর পশুর গলায় কিলাদাহ্ (বিশেষ হার চামড়া ঝুলাইলেন এবং এশআর করিলেন (অর্থাৎ, উটের গলার পাশে কোন কিছুর দ্বারা হাল্কা জখম করিয়া উক্ত স্থানে রক্ত মাখাইয়া দিলেন।) আর তথা হইতে ওমরার এহরাম বাধিয়া রওয়ানা দিলেন। অবশেষে তাহার উষ্টী সেই গিরিপথে বসিয়া পড়িল, যেই স্থান হইতে লোকেরা মক্কায় যাতায়াত করে। এই সময় উটকে উঠিবার জন্য) লোকেরা হাল- হাল বলিতে লাগিল; (কিন্তু সে উঠিল না। এই সময় তাহারা বলিল,) কাছওয়া জিদ করিয়াছে, কাছওয়া জিদ করিয়াছে। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলিলেন: কাছওয়া জিদ করে নাই এবং ইহা তাহার স্বভাবও নহে; বরং যিনি হাতীকে আটকাইয়াছিলেন তিনিই উহাকে আটকাইয়াছেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, সেই সত্তার কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ তাহারা (অর্থাৎ, কুরাইশরা) আল্লাহর সম্মানিত বিষয়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে যে কোন শর্ত আরোপ করিতে চাহিবে, আমি উহা অবশ্যই মানিয়া লইব। তার পর তিনি উষ্টীকে ধমক দিলে সে সঙ্গে সঙ্গে উঠিয়া দাড়াইল (এবং দ্রুত চলিতে লাগিল ); বরং এইবার তিনি মক্কার সরাসরি পথ হইতে সরিয়া অন্য পথে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। অবশেষে হোদাইবিয়ার প্রান্তে একটি স্বল্প পানির কূপের নিকট অবতরণ করিলেন। লোকেরা উহা হইতে অল্প অল্প করিয়া পানি লইতেছিল। অল্পক্ষণ পরেই তাহাও শেষ করিয়া ফেলিল এবং রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া পিপাসার অভিযোগ করিল। এই কথা শুনিয়া তিনি স্বীয় থলি হইতে একটি তীর বাহির করিয়া তাহাদিগকে আদেশ করিলেন, ইহাকে কূপটির মধ্যে ফেলিয়া দাও। আল্লাহর কসম! তৎক্ষণাৎ পানি উপচাইয়া উঠিতে থাকিল তাহারা তথা হইতে ফিরিয়া যাওয়া পর্যন্ত (এবং তাহারা উহা হইতে পানি ব্যবহার করিল)। তাহারা এই অবস্থায় ছিলেন, এমন সময় বোদাইল ইবনে ওরাকা খোযাযী খোযাআ গোত্রের কতিপয় লোকজনসহ তথায় উপস্থিত হইল। অতঃপর ওরওয়া ইবনে মাসউদ আসিল। পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করিতে যাইয়া বর্ণনাকারী বলেন, পরিশেষে সোহাইল ইবনে আমর আসিয়া উপস্থিত হইল। অতঃপর হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [হযরত আলী (রাঃ)-কে] বলিলেন, লিখ, “ইহা আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পক্ষ হইতে সম্পাদিত সন্ধিপত্র।” এই কথা শুনিয়া সোহাইল বলিয়া উঠিল, আল্লাহর কসম! যদি আমরা আপনাকে আল্লাহর রাসূল বলিয়া জানিতাম, তাহা হইলে কখনো আপনাকে বায়তুল্লাহ্ হইতে বাধা দিতাম না এবং আপনার সাথে যুদ্ধও করিতাম না; বরং আপনি এইভাবে লিখুন, “আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদের পক্ষ হইতে।” রাবী বলেন, তাহার কথা শুনিয়া নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর সত্য রাসূল, যদিও তোমরা আমাকে মিথ্যাবাদী বলিয়া প্রতিপন্ন কর। আচ্ছা। (হে আলী!) মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ই লিখ। (সন্ধিপত্র লিখা হইতেছিল, এমন সময় সোহাইল বলিল, অন্যান্য শর্তাবলীর সাথে ইহাও লিখা হউক, যদি (মক্কা হইতে) আমাদের কোন লোক আপনার নিকট আসে তাহাকে অবশ্যই (মক্কায়) আমাদের নিকট ফেরত পাঠাইয়া দিতে হইবে, যদিও সে আপনার ধর্মে বিশ্বাসী হয়। (বর্ণনাকারী বলেন,) সন্ধিপত্র লিখা শেষ হইলে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সঙ্গীদিগকে বলিলেন, উঠ, তোমরা নিজেদের পশু কোরবানী করিয়া দাও। অতঃপর মাথা মুড়াইয়া ফেল। (অর্থাৎ, এহরাম হইতে হালাল হইয়া যাও।) ইহার পর কতিপয় মহিলা ইসলাম গ্রহণ করিয়া (তাহার নিকট) আসিল। এই সময় আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াত নাযিল করিলেন: অর্থ: “হে মু'মিনগণ! কোন মু'মিন মুসলমান নারী হিজরত করিয়া তোমাদের নিকট আসিলে তাহাদিগকে ভালোভাবে পরীক্ষা করিয়া লও।” এই আয়াত দ্বারা সেই সমস্ত মুসলমান রমণীদিগকে ফেরত পাঠাইতে আল্লাহ্ তা'আলা নিষেধ করিলেন এবং নির্দেশ দিলেন যে, (যদি সেই সমস্ত মহিলাদের কাফের স্বামীগণ তাহাদের মহর পরিশোধ করিয়া থাকে, তাহা হইলে তোমরা) তাহাদের মহর ফেরত দিয়া দাও। অতঃপর নবী (ছাঃ) মদীনায় প্রত্যাবর্তন করিলেন। এই সময় আবু বাছীর নামে কুরাইশ বংশীয় এক ব্যক্তি মুসলমান হইয়া (মক্কা হইতে মদীনায়) নবী (ছাঃ)-এর নিকট আসিল। আর কুরাইশরাও তাহার সন্ধানে দুইজন লোক পাঠাইল। হুযুর (ছাঃ) তাহাকে সেই ব্যক্তিদ্বয়ের নিকট সোপর্দ করিলেন। তাহারা আবু বাছীরকে সঙ্গে লইয়া রওয়ানা হইল এবং যুল-হোলাইফা নামক স্থানে পৌঁছিয়া তাহারা নিজেদের খেজুর খাওয়ার জন্য এক জায়গায় নামিল। এই সময় আবু বাছীর তাহাদের একজনকে বলিল, হে অমুক! আল্লাহর কসম! তোমার তলোয়ারখানি দেখিতে তো খুবই চমৎকার! আমাকে একটু দাও দেখি, আমি উহাকে ভালোভাবে দেখিয়া লই। লোকটি তলোয়ারখানি আবু বাছীরের হাতে দিতেই সে উহার দ্বারা তাহাকে এমনভাবে আঘাত করিল যে, সে সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুবরণ করিল। অপর লোকটি পালাইয়া শেষ পর্যন্ত মদীনায় আসিয়া মসজিদে নববীতে প্রবেশ করিল। তাহাকে দেখিয়াই নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, মনে হয় লোকটি ভীত, সন্ত্রস্ত। সে (হুযূর [ছাঃ ]-এর কাছে যাইয়া বলিল, আল্লাহর কসম! আমার সঙ্গীকে হত্যা করা হইয়াছে। সুযোগ পাইলে আমাকেও কতল করা হইত। এই সময় আবু বাছীরও সেইখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাহাকে দেখিয়া নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, আক্ষেপ তাহার মায়ের উপর, সে তো যুদ্ধের আগুন জ্বালাইয়া দিতে চায়, যদি তাহার সহিত তাহার সাহায্যকারী কেহ থাকিত। যখন সে এই কথা শুনিল, তখন সে বুঝিতে পারিল যে, নবী (ছাঃ) অচিরেই তাহাকে পুনরায় কাফেরদের নিকট ফেরত পাঠাইয়া দিবেন। তখন সে সেইখান হইতে বাহির হইয়া সরাসরি সাগরের উপকূলের দিকে চলিয়া গেল। বর্ণনাকারী বলেন, ইতিমধ্যে সোহাইলের পুত্র আবু জান্দাল বন্দীমুক্ত হইয়া আবু বাছীরের সাথে মিলিত হইল। এইভাবে মক্কার কুরাইশদের নিকট হইতে কোন মুসলমান পালাইয়া আসিতে সক্ষম হইলে সেও সরাসরি যাইয়া আবু বাছীরের সাথে মিলিত হইত। এইভাবে সেইখানে একটি দল সমবেত হইয়া গেল। আল্লাহর কসম! যখনই তাহারা শুনিতে পাইত যে, কুরাইশদের কোন তেজারতী কাফেলা সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হইয়াছে, তখনই তাহারা সেই কাফেলার উপর বাধা সৃষ্টি করিত এবং তাহাদিগকে হত্যা করিয়া তাহাদের মাল-সামান ইত্যাদি ছিনাইয়া লইত। ফলে অতিষ্ঠ হইয়া কুরাইশরা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এই প্রস্তাব পাঠাইল যে, তিনি যেন আত্মীয়তার সহানুভূতি ও আল্লাহর ওয়াস্তে আবু বাছীর ও তাহার সঙ্গীদিগকে লুটতরাজ হইতে বিরত রাখেন এবং এখন হইতে মক্কার কোন মুসলমান রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসিলে তাহাকে আর ফেরত দিতে হইবে না। অতঃপর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বাছীর ও তাহার সঙ্গীদিগকে (মদীনায়) ডাকিয়া পাঠাইলেন। -বুখারী
كتاب الجهاد
بَابُ الصُّلْحِ: الْفَصْل الأول
عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ وَمَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ قَالَا: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ فِي بِضْعَ عَشْرَةَ مِائَةً مِنْ أَصْحَابِهِ فَلَمَّا أَتَى ذَا الْحُلَيْفَةِ قَلَّدَ الْهَدْيَ وَأَشْعَرَ وَأَحْرَمَ مِنْهَا بِعُمْرَةٍ وَسَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ بِالثَّنِيَّةِ الَّتِي يُهْبَطُ عَلَيْهِمْ مِنْهَا بَرَكَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ فَقَالَ النَّاسُ: حَلْ حَلْ خَلَأَتِ القَصْواءُ خلأت الْقَصْوَاء فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ وَمَا ذَاكَ لَهَا بِخُلُقٍ وَلَكِنْ حَبَسَهَا حَابِسُ الْفِيلِ» ثُمَّ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يَسْأَلُونِي خُطَّةً يُعَظِّمُونَ فِيهَا حُرُمَاتِ اللَّهِ إِلَّا أَعْطَيْتُهُمْ إِيَّاهَا» ثُمَّ زَجَرَهَا فَوَثَبَتْ فَعَدَلَ عَنْهُمْ حَتَّى نَزَلَ بِأَقْصَى الْحُدَيْبِيَةِ عَلَى ثَمَدٍ قَلِيلِ الْمَاءِ يَتَبَرَّضُهُ النَّاسُ تَبَرُّضًا فَلَمْ يَلْبَثْهُ النَّاسُ حَتَّى نَزَحُوهُ وَشُكِيَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَطَشَ فَانْتَزَعَ سَهْمًا مِنْ كِنَانَتِهِ ثُمَّ أَمَرَهُمْ أَنْ يَجْعَلُوهُ فِيهِ فو الله مَا زَالَ يَجِيشُ لَهُمْ بِالرِّيِّ حَتَّى صَدَرُوا عَنْهُ فَبَيْنَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ جَاءَ بُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ الخزاعيُّ فِي نفَرٍ منْ خُزَاعَةَ ثُمَّ أَتَاهُ عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ وَسَاقَ الْحَدِيثَ إِلَى أَنْ قَالَ: إِذْ جَاءَ سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اكْتُبْ: هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ . فَقَالَ سُهَيْلٌ: وَاللَّهِ لَوْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ مَا صَدَدْنَاكَ عَنِ الْبَيْتِ وَلَا قَاتَلْنَاكَ وَلَكِنِ اكْتُبْ: مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَاللَّهِ إِنِّي لَرَسُولُ اللَّهِ وَإِنْ كَذَّبْتُمُونِي اكْتُبْ: مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ فَقَالَ سُهَيْلٌ: وَعَلَى أَنْ لَا يَأْتِيَكَ مِنَّا رَجُلٌ وَإِنْ كانَ على دينِكَ إِلاَّ ردَدْتَه علينا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قَضِيَّةِ الْكِتَابِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهِ: «قُومُوا فَانْحَرُوا ثُمَّ احْلِقُوا» ثُمَّ جَاءَ نِسْوَةٌ مُؤْمِنَاتٌ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذا جاءكُم المؤمناتُ مهاجِراتٌ)
الْآيَةَ. فَنَهَاهُمُ اللَّهُ تَعَالَى أَنْ يَرُدُّوهُنَّ وَأَمَرَهُمْ أَنْ يَرُدُّوا الصَّدَاقَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى الْمَدِينَةِ فَجَاءَهُ أَبُو بَصِيرٍ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ وَهُوَ مُسْلِمٌ فَأَرْسَلُوا فِي طَلَبِهِ رَجُلَيْنِ فَدَفَعَهُ إِلَى الرَّجُلَيْنِ فَخَرَجَا بِهِ حَتَّى إِذَا بَلَغَا ذَا الْحُلَيْفَةِ نَزَلُوا يَأْكُلُونَ مِنْ تَمْرٍ لَهُمْ فَقَالَ أَبُو بَصِيرٍ لِأَحَدِ الرَّجُلَيْنِ: وَاللَّهِ إِنِّي لَأَرَى سَيْفَكَ هَذَا يَا فُلَانُ جَيِّدًا أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْهِ فَأَمْكَنَهُ مِنْهُ فَضَرَبَهُ حَتَّى بَرَدَ وَفَرَّ الْآخَرُ حَتَّى أَتَى الْمَدِينَةَ فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ يَعْدُو فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ رأى هَذَا ذُعراً» فَقَالَ: قُتِلَ واللَّهِ صَحَابِيّ وَإِنِّي لَمَقْتُولٌ فَجَاءَ أَبُو بَصِيرٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَيْلَ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ» فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى سِيفَ الْبَحْرِ قَالَ: وَانْفَلَتَ أَبُو جَنْدَلِ بْنُ سُهَيْلٍ فَلَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ فَجَعَلَ لَا يَخْرُجُ مِنْ قُرَيْشٍ رَجُلٌ قَدْ أَسْلَمَ إِلَّا لَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ حَتَّى اجْتَمَعَتْ مِنْهُمْ عِصَابَةٌ فو الله مَا يَسْمَعُونَ بِعِيرٍ خَرَجَتْ لِقُرَيْشٍ إِلَى الشَّامِ إِلَّا اعْتَرَضُوا لَهَا فَقَتَلُوهُمْ وَأَخَذُوا أَمْوَالَهُمْ فَأَرْسَلَتْ قُرَيْشٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنَاشِدُهُ اللَّهَ وَالرَّحِمَ لَمَّا أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَمَنْ أَتَاهُ فَهُوَ آمِنٌ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم إِلَيْهِم. رَوَاهُ البُخَارِيّ
الْآيَةَ. فَنَهَاهُمُ اللَّهُ تَعَالَى أَنْ يَرُدُّوهُنَّ وَأَمَرَهُمْ أَنْ يَرُدُّوا الصَّدَاقَ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى الْمَدِينَةِ فَجَاءَهُ أَبُو بَصِيرٍ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ وَهُوَ مُسْلِمٌ فَأَرْسَلُوا فِي طَلَبِهِ رَجُلَيْنِ فَدَفَعَهُ إِلَى الرَّجُلَيْنِ فَخَرَجَا بِهِ حَتَّى إِذَا بَلَغَا ذَا الْحُلَيْفَةِ نَزَلُوا يَأْكُلُونَ مِنْ تَمْرٍ لَهُمْ فَقَالَ أَبُو بَصِيرٍ لِأَحَدِ الرَّجُلَيْنِ: وَاللَّهِ إِنِّي لَأَرَى سَيْفَكَ هَذَا يَا فُلَانُ جَيِّدًا أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْهِ فَأَمْكَنَهُ مِنْهُ فَضَرَبَهُ حَتَّى بَرَدَ وَفَرَّ الْآخَرُ حَتَّى أَتَى الْمَدِينَةَ فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ يَعْدُو فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ رأى هَذَا ذُعراً» فَقَالَ: قُتِلَ واللَّهِ صَحَابِيّ وَإِنِّي لَمَقْتُولٌ فَجَاءَ أَبُو بَصِيرٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَيْلَ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ» فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى سِيفَ الْبَحْرِ قَالَ: وَانْفَلَتَ أَبُو جَنْدَلِ بْنُ سُهَيْلٍ فَلَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ فَجَعَلَ لَا يَخْرُجُ مِنْ قُرَيْشٍ رَجُلٌ قَدْ أَسْلَمَ إِلَّا لَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ حَتَّى اجْتَمَعَتْ مِنْهُمْ عِصَابَةٌ فو الله مَا يَسْمَعُونَ بِعِيرٍ خَرَجَتْ لِقُرَيْشٍ إِلَى الشَّامِ إِلَّا اعْتَرَضُوا لَهَا فَقَتَلُوهُمْ وَأَخَذُوا أَمْوَالَهُمْ فَأَرْسَلَتْ قُرَيْشٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنَاشِدُهُ اللَّهَ وَالرَّحِمَ لَمَّا أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَمَنْ أَتَاهُ فَهُوَ آمِنٌ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم إِلَيْهِم. رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০৪৩
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - সন্ধি স্থাপন
৪০৪৩। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হোদাইবিয়ার দিন মুশরিকদের সঙ্গে তিনটি শর্তের উপর চুক্তি সম্পাদন করিয়াছিলেন। এক—মক্কার কোন মুশরিক (ইসলাম গ্রহণ করিয়া) তাহার নিকট (মদীনায় ) আসিলে তাহাকে কুরাইশদের নিকট ফেরত দিতে হইবে। আর মদীনা হইতে কোন মুসলমান (মুরতাদ হইয়া) তাহাদের কাছে (মক্কায় আসিলে তাহাকে মুসলমানদের কাছে ফেরত দিতে হইবে না। দুই—আগামী বৎসর মুসলমানেরা মাত্র তিন দিনের জন্য মক্কায় আসিতে পারিবেন। তিন—মক্কায় প্রবেশকালে সমরাস্ত্র, তলোয়ার এবং তীর-ধনুক ইত্যাদি কোষবদ্ধ রাখিতে হইবে। সন্ধিপত্র সম্পাদিত হওয়ার পরক্ষণেই (সোহাইল ইবনে আমরের পুত্র) আবু জান্দাল হাত-পায়ে বেড়ি পরা অবস্থায় সেইখানে আসিয়া উপস্থিত হইল। কিন্তু (সন্ধিপত্রের শর্ত মোতাবেক) নবী (ছাঃ) তাহাকে মুশরিকদের নিকট ফেরত দেন। -মোত্তাঃ
كتاب الجهاد
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: صَالَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُشْرِكِينَ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ عَلَى ثَلَاثَةِ أَشْيَاءَ: عَلَى أَنَّ مَنْ أَتَاهُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ رَدَّهُ إِلَيْهِمْ وَمَنْ أَتَاهُمْ مِنَ الْمُسْلِمِينَ لَمْ يَرُدُّوهُ وَعَلَى أَنْ يَدْخُلَهَا مِنْ قَابِلٍ وَيُقِيمَ بِهَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَا يَدْخُلَهَا إِلَّا بِجُلُبَّانِ السِّلَاحِ وَالسَّيْفِ وَالْقَوْسِ وَنَحْوِهِ فَجَاءَ أَبُو جَنْدَلٍ يَحْجِلُ فِي قُيُودِهِ فَرده إِلَيْهِم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৪০৪৪
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - সন্ধি স্থাপন
৪০৪৪। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, কুরাইশরা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সন্ধি করিল। উহাতে তাহারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এই শর্ত আরোপ করিল যে, যদি তোমাদের (মুসলমানদের) কোন লোক আমাদের কাছে (মক্কায়) আসে, তবে তাহাকে আমরা (তোমাদের কাছে) ফেরত দিব না। আর আমাদের (কুরাইশদের) কোন লোক তোমাদের কাছে (মদীনায়) গেলে তবে তোমরা তাহাকে (আমাদের কাছে) ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে। ইহা শুনিয়া সাহাবাগণ (ক্ষোভের সাথে) বলিয়া উঠিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আপনি কি এই শর্তও লিখিয়া লইবেন? হুযূর (ছাঃ) দৃঢ়তার সাথে জওয়াব দিলেন, হ্যাঁ। কেননা, আমাদের নিকট হইতে যে ব্যক্তি তাহাদের কাছে (স্বেচ্ছায় গিয়াছে তাহাকে আল্লাহ্ স্বীয় রহমত হইতে বঞ্চিত করিয়াছেন। (কারণ, মুরতাদ ব্যক্তিই এরূপে যাইতে পারে।) আর তাহাদের যেই লোক আমাদের কাছে আসিবে (তাহাকে ফেরত দিলেও) আশা করা যায়, আল্লাহ্ তা'আলা অচিরেই তাহার মুক্তির একটা পথ উন্মুক্ত করিয়া দিবেন। (কারণ, সে হইবে মুসলমান।) — মুসলিম
كتاب الجهاد
وَعَن أنس: أَنَّ قُرَيْشًا صَالَحُوا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاشْتَرَطُوا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ مَنْ جَاءَنَا مِنْكُمْ لَمْ نَرُدَّهُ عَلَيْكُمْ وَمَنْ جَاءَكُمْ مِنَّا رَدَدْتُمُوهُ عَلَيْنَا فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَكْتُبُ هَذَا؟ قَالَ: «نَعَمْ إِنه من ذهبَ منَّا إِليهم فَأَبْعَدَهُ اللَّهُ وَمَنْ جَاءَنَا مِنْهُمْ سَيَجْعَلُ اللَّهُ لَهُ فرجا ومخرجاً» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক: